ঢাকা ২৮ কার্তিক ১৪৩১, বুধবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৪

পুঁজিবাজারে লেনদেন ছাড়িয়েছে ১১০০ কোটি টাকা

প্রকাশ: ০৮ মে ২০২৪, ০৩:৪৮ পিএম
পুঁজিবাজারে লেনদেন ছাড়িয়েছে ১১০০ কোটি টাকা

দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গতকাল মঙ্গলবার সূচক কমলেও বেড়েছে লেনদেন। এ নিয়ে দ্বিতীয় দিনের মতো প্রায় আড়াই মাস পর ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেন হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। একই সঙ্গে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) লেনদেন বেড়েছে। তবে উভয় স্টক এক্সচেঞ্জে লেনদেনে অংশ নেওয়া অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ার দর কমেছে।

টানা চার কার্যদিবস ঊর্ধ্বমুখী থাকার পর সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবস মঙ্গলবার দেশের পুঁজিবাজারে কিছুটা মূল্য সংশোধন হয়েছে। বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমার পাশাপাশি কমেছে মূল্যসূচক। তবে লেনদেনের পরিমাণ বেড়েছে।

মঙ্গলবার (৭ মে) ডিএসইতে লেনদেন বেড়ে ১১০০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে। এর মাধ্যমে চলতি বছরের ১৫ ফেব্রুয়ারির পর বা প্রায় আড়াই মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ লেনদেন হয়েছে।

গতকাল দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে প্রায় সবকটি ব্যাংক। এ দিন পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ৩৬টি ব্যাংকের মধ্যে ২৬টি বা ৭৯ শতাংশ ব্যাংকের শেয়ার দর বেড়েছে।

ফলে দাম বাড়ার থেকে দাম কমার তালিকায় প্রায় দ্বিগুণ প্রতিষ্ঠান থাকলেও সূচকের বড় পতন হয়নি।

গতকাল ডিএসইতে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে ওষুধ খাতের কোম্পানির শেয়ার। এ দিন ডিএসইর মোট লেনদেনের ২১ দশমিক ২৫ শতাংশই ছিল এ খাতের।

অন্য পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) দাম কমার তালিকায় বেশি প্রতিষ্ঠান থাকলেও বেড়েছে মূল্যসূচক। একই সঙ্গে বেড়েছে লেনদেনের পরিমাণ।

এ বিষয়ে পুঁজিবাজার বিশ্লেষক আবু আহমেদ খবরের কাগজকে বলেন, ‘বেশ কিছুদিন দেশের পুঁজিবাজার নেতিবাচক অবস্থায় ছিল। এ অবস্থায় যেসব বিনিয়োগকারী মার্জিন ঋণ নিয়ে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করেন তারা সক্রিয় হচ্ছেন। যার প্রভাবে বাজারে লেনদেন বেড়েছে।’

এর আগে গত সপ্তাহে লেনদেন হওয়া চার কার্যদিবসের মধ্যে তিন কার্যদিবসেই পুঁজিবাজারে ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মেলে। চলতি সপ্তাহের প্রথম দুই কার্যদিবসও ঊর্ধ্বমুখী থাকে পুঁজিবাজার।

গতকাল পুঁজিবাজারে লেনদেন শুরু হয় বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে লেনদেনের শুরুতেই ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মেলে। প্রথম ঘণ্টার লেনদেনে ডিএসইর প্রধান সূচক ৪০ পয়েন্ট বেড়ে যায়। একই সঙ্গে দাম বাড়ার সর্বোচ্চ সীমা স্পর্শ করে বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান।

তবে লেনদেনের শেষ দিকে মুনাফা তুলে নিতে এক শ্রেণির বিনিয়োগকারীরা শেয়ার বিক্রির চাপ বাড়ান। এতে দাম বাড়ার তালিকা থেকে দাম কমার তালিকায় চলে আসে দেড়শোর বেশি প্রতিষ্ঠান। ফলে সূচক ঋণাত্মক হয়ে দিনের লেনদেন শেষ হয়েছে।

দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে ১৩১টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। বিপরীতে দাম কমেছে ২২২টি প্রতিষ্ঠানের। আর ৪১টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

এতে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ১ পয়েন্ট কমে ৫ হাজার ৭২৫ পয়েন্টে নেমে এসেছে। অন্য দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৬ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ২৫৫ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৬ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ৪০ পয়েন্টে অবস্থান করছে।

দাম বাড়ার তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমলেও সূচক সামান্য কমার কারণে প্রায় সবকটি ব্যাংক দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। তালিকাভুক্ত ৩৬টি ব্যাংকের মধ্যে ২৬টির বা ৭৯ শতাংশ ব্যাংকের শেয়ার দর বেড়েছে।

এদিকে ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণ বেড়ে চলতি বছরের ১৫ ফেব্রুয়ারির পর সর্বোচ্চ হয়েছে। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ১০৮ কোটি ৩৪ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ১ হাজার ৯৫ কোটি ৬৪ লাখ টাকা। সে হিসাবে লেনদেন বেড়েছে ১২ কোটি ৭০ লাখ টাকা।

এ লেনদেনে সবচেয়ে বেশি অবদান রেখেছে বেস্ট হোল্ডিংয়ের শেয়ার। কোম্পানিটির ৫৫ কোটি ৮২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিসের ৪০ কোটি ৫৬ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ৩৮ কোটি ৮৪ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে গোল্ডেন সন।

এ ছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- লাভেলো আইসক্রিম, ওয়াইম্যাক্স ইলেকট্রোড, ওরিয়ন ইনফিউশন, ওরিয়ন ফার্মা, আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ, মালেক স্পিনিং এবং সি পার্ল বিচ রিসোর্ট।

এ দিন দরবৃদ্ধির তালিকায় শীর্ষে উঠে এসেছে আইসিবি এএমসিএল সিএমএসএফ গোল্ডেন জুবিলি মিউচুয়াল ফান্ড।

এ দিন গোল্ডেন জুবিলি মিউচুয়াল ফান্ডের শেয়ারদর আগের কার্যদিবসের তুলনায় বেড়েছে ১ টাকা ৪০ পয়সা বা ১০ শতাংশ। তাতে দরবৃদ্ধির শীর্ষে জায়গা নিয়েছে কোম্পানিটি।

দরবৃদ্ধির তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে উঠে আসা জিকিউ বলপেনের শেয়ারদর আগের দিনের তুলনায় ৯ দশমিক ৯৩ শতাংশ বেড়েছে। আর শেয়ারদর ৯ দশমিক ৬৪ শতাংশ বাড়ায় তালিকার তৃতীয় স্থানে অবস্থান নিয়েছে ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ বা আইসিবি।

গতকাল দরবৃদ্ধির শীর্ষ তালিকায় উঠে আসা অন্যান্য কোম্পানিগুলো হলো- ফিনিক্স ফাইন্যান্স ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড, সাইফ পাওয়ার, রহিম টেক্সটাইল, প্রাইম ব্যাংক ফার্স্ট আইসিবি এএমসিএল মিউচুয়াল ফান্ড, বেস্ট হোল্ডিংস, এসইএমএল লেকচার ইক্যুইটি ম্যানেজমেন্ট ফান্ড এবং এনআরবিসি ব্যাংক।

এ দিন দরপতনের শীর্ষে উঠে এসেছে সন্ধানী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড।

গতকাল এল আর সন্ধানী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের শেয়ারদর আগের কার্যদিবসের তুলনায় কমেছে ৮০ পয়সা বা ৩ শতাংশ। তাতে দরপতনের শীর্ষে জায়গা নিয়েছে কোম্পানিটি।

দর হারানোর তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে উঠে আসা ওরিয়ন ইনফিউশনের শেয়ারদর আগের দিনের তুলনায় ২ দশমিক ৯৯ শতাংশ কমেছে। আর শেয়ারদর ২ দশমিক ৯৯ শতাংশ কমে যাওয়ায় তালিকার তৃতীয় স্থানে অবস্থান নিয়েছে ফার্মা এইডস লিমিটেড।

এ দিন দরপতনের তালিকায় উঠে আসা অন্যান্য কোম্পানিগুলো হলো- নাভানা ফার্মা, মিরাকল ইন্ডাস্ট্রিজ, সাফকো স্পিনিং, সেন্ট্রাল ফার্মা, রতনপুর স্টিল রি-রোলিং মিলস, বিডি থাই এবং এমারেল্ড অয়েল লিমিটেড।

অন্য পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ৩৪ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ২৪৪টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১১১টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১১৩টির এবং ২০টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ১১৫ কোটি ৪০ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ১২ কোটি ৮৫ লাখ টাকা।

পূবালী ব্যাংকের ৪০০ কোটি টাকার বন্ড অনুমোদন

প্রকাশ: ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ১০:২৬ এএম
পূবালী ব্যাংকের ৪০০ কোটি টাকার বন্ড অনুমোদন
পূবালী ব্যাংক লিমিটেড

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ব্যাংক খাতের প্রতিষ্ঠান পূবালী ব্যাংক পিএলসির ৪০০ কোটি টাকার বন্ড ইস্যুর প্রস্তাব অনুমোদন করেছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মাদ রেজাউল করিম স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।

বিএসইসির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের সভাপতিত্বে কমিশনের সভা কক্ষে ৯৩১তম কমিশন সভায় প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়েছে। আলোচ্য বন্ডটি হবে রূপান্তর অযোগ্য। মেয়াদ শেষে এটি সম্পূর্ণ অবসায়িত হবে। এর বিপরীতে কোনো জামানত থাকবে না। বন্ডটির সুদের হার হবে ভাসমান। সুদের রেফারেন্স রেটের সঙ্গে ৩ শতাংশ সুদ যোগ করে এর কুপন রেট তা সুদের হার নির্ধারণ করা হবে।

বন্ডটির প্রতি ইউনিটের অভিহিত মূল্য হবে ১০ লাখ টাকা। প্রাইভেট প্লেসমেন্টের মাধ্যমে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী ও উচ্চ সম্পদশালী একক বিনিয়োগকারীদের মধ্যে এটি বরাদ্দ দেওয়া হবে।

এই বন্ড ইস্যুর মাধ্যমে অর্থ উত্তোলন করে পূবালী ব্যাংক পিএলসি ব্যাসেল-৩ বাস্তবায়নে টায়ার-২ মূলধনভিত্তি শক্তিশালী করবে। এই বন্ডের ট্রাস্টি হিসাবে দায়িত্ব পালন করছে ডিবিএইচ ফাইন্যান্স পিএলসি। এর অ্যারেঞ্জারের দায়িত্বে আছে ইউসিবি ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড। পূবালী ব্যাংকের এই বন্ডটি স্টক এক্সচেঞ্জের অলটারনেটিভ ট্রেডিং বোর্ডে তালিকাভুক্ত হবে।

আমদানি দায় পরিশোধে ব্যাংক ব্যর্থ হলে শাস্তি

প্রকাশ: ১২ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৪০ পিএম
আমদানি দায় পরিশোধে ব্যাংক ব্যর্থ হলে শাস্তি
বাংলাদেশ ব্যাংক

কোনো ব্যাংক আমদানি দায় সময়মতো পরিশোধ করতে ব্যর্থ হলে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। একই সঙ্গে বকেয়া হয়ে পড়া সব আমদানি দায় জরুরিভিত্তিতে পরিশোধেরও তাগিদ দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। 

মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) এক প্রজ্ঞাপনে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ ও সংশ্লিষ্ট বৈদেশিক বাণিজ্য শাখাকে এসব নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রা নীতি বিভাগ (এফইপিডি)। 

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, কতিপয় ব্যাংক আমদানি দায় পরিশোধে প্রতিশ্রুত সময়কাঠামো মানছে না। এতে করে একদিকে যেমন দেশের সুনাম নষ্ট হচ্ছে তেমনি অন্যদিকে আমদানি ব্যয় বৃদ্ধি পাচ্ছে। এফপিডি থেকে ব্যাংকগুলোকে জানানো হয়, এ ধরনের আচরণ ভবিষ্যতে গ্রহণযোগ্য নয়। সময়মতো আমদানি দায় পরিশোধ করতে প্রয়োজনে বায়ার্স বা সাপ্লায়ার্স ক্রেডিট জোগাড় করতে ব্যাংকগুলোকে পরামর্শ দেওয়া হলো। অন্যথায় ব্যাংক তার নিজস্ব তহবিল থেকে প্রতিশ্রুত সময়ের মধ্যে আমদানি দায় পরিশোধের ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেওয়া হলো।

এ ছাড়া যেসব ব্যাংকের আমদানি দায় পরিশোধের প্রতিশ্রুত সময়সীমা ইতোমধ্যে পার হয়ে গেছে, সেসব ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষকে জরুরিভিত্তিতে ওই সব বকেয়া পরিশোধের ব্যবস্থা নিতে এফইপিডি নির্দেশ দিয়েছে। 

এর আগে গতকাল সোমবার সরকারি ও বেসরকারি ১৭টি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তারা (সিইও) বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নর আহসান এইচ মনসুরের সঙ্গে দেখা করে এ বিষয়ে অভিযোগ করেছেন। 

তারা জানান, কতিপয় ব্যাংক ইচ্ছাকৃতভাবে আমদানি দায় সময়মতো পরিশোধ না করে খেলাপি হয়েছে। এতে করে বিদেশে যেসব ব্যাংকের সঙ্গে অংশীদারত্বের ভিত্তিতে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সম্পন্ন করতে হয়, সেসব ব্যাংক আর বাংলাদেশের ব্যাংকগুলোকে বিশ্বাস করছে না। এমডি ও সিইওরা গভর্নরকে এব্যা পারে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বাংলাদেশের সুনাম সুরক্ষায় উদ্যোগী হতে অনুরোধ জানান। গভর্নরকে এই অনুরোধ জানানোর পর দিন এফইপিডি থেকে আমদানি দায় পরিশোধ সম্পর্কিত নতুন এই কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হলো।

বন্ডের ক্ষেত্রে কোনো অনিয়ম গ্রহণ করা হবে না: কাস্টমস কমিশনার

প্রকাশ: ১২ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৩৩ এএম
আপডেট: ১২ নভেম্বর ২০২৪, ১২:০৩ পিএম
বন্ডের ক্ষেত্রে কোনো অনিয়ম গ্রহণ করা হবে না: কাস্টমস কমিশনার
ছবি : খবরের কাগজ

বন্ডের ক্ষেত্রে কোনো অনিয়ম গ্রহণযোগ্য হবে না বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস কমিশনার মো. জাকির হোসেন। 

সোমবার (১১ নভেম্বর) দুপুরে কাস্টম হাউসের সম্মেলনকক্ষে ব্যবসায়ীদের সিঅ্যান্ডএফ লাইসেন্সিং বিধিমালা সংস্কার, বন্ডের জরিমানা রোহিতকরণ, আমদানি করা গাড়ি খালাসে জটিলতা নিরসনসহ বিভিন্ন দাবি নিয়ে বঞ্চিত ব্যবসায়ী ফোরামের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন। 

মো. জাকির হোসেন বলেন, 'বন্ডের ক্ষেত্রে কোনো অনিয়ম গ্রহণযোগ্য হবে না। এখনই কর্মকর্তাদের এসব বিষয়ে জানিয়ে দিচ্ছি। আর কিছু কিছু বিষয়ে পলিসিগত ব্যাপার থাকবে, সেগুলো আমরা পর্যালোচনা করব।' 

তিনি বলেন, 'বাংলাদেশের ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ আমদানি হয় চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসে। বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ খাত। চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসে ব্যবসায়ীদের প্রতিনিধিত্ব থাকবে। সেই বিষয়ে আমিও আপনাদের সঙ্গে একমত। ঊর্ধ্বতন সবার কাছে আপনাদের এক্সেস থাকবে।'

এইচএস কোড পরিবর্তন করে ২০০ থেকে ৪০০ শতাংশ জরিমানা করার বিষয়টি তুলে ধরে তিনি বলেন, 'এইচএস কোডের ক্ষেত্রে যদি কোনো ধরনের বৈসাদৃশ্য দেখা যায়, সেটাও আমরা দেখব।'

তিনি আরও বলেন, পার্টনারশিপ বা কোম্পানি এক হলে লাইসেন্সের ক্ষেত্রে মূল মালিক পরিবর্তন হলেও সমস্যা হবে না। তবে নতুন রুলস কি রয়েছে, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কোনো নির্দেশনা আছে কি না, সেগুলো দেখে সমাধান করব। লাইসেন্স কখনো হস্তান্তরযোগ্য নয়। তবে এ সমস্যাটা সমাধানে আইনই প্রাধান্য পাবে।'

সভায় ব্যবসায়ী ফোরামের আহ্বায়ক এস এম সাইফুল আলম বলেন, 'চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসে এক সময় দুর্নীতি ও নানা অনিয়মের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দেশের শিল্প খাত, বিশেষত উৎপাদনমুখী শিল্পকারখানা। এই দুর্নীতির কারণে দেশের অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছিল। তাই বর্তমান পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে কাস্টম হাউসে ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ তৈরির আহ্বান জানাই। তা ছাড়া আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য আরও গতিশীল করে পূর্ণাঙ্গ অটোমেশন চালু, অযৌক্তিক শুল্ক নির্ধারণ বন্ধ, অনিয়ম ও হয়রানি বন্ধ করে দ্রুত পণ্য খালাসের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছি।'

ফোরামের সদস্যসচিব শহীদুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, 'কাস্টমসে বিদ্যমান শুল্ক মূল্যায়ন বিধিমালার সংশোধন ও সংস্কার হওয়া প্রয়োজন। তবে সবার আগে প্রয়োজন দুর্নীতির মূলোৎপাটন। চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসে ব্যবসায়ীদের হয়রানি বন্ধ করে সিঅ্যান্ডএফ লাইসেন্সিং বিধিমালা আইন সংস্কার করতে হবে।'

সিঅ্যান্ডএফ ব্যাবসায়ী শওকত আলী বলেন, 'কাস্টমসে হয়রানির একটি ধরন হলো পণ্য খালাসে বিলম্বসহ নানা অজুহাত দেখিয়ে পণ্যভর্তি কনটেইনারের ওপর ডেমারেজ চার্জ আরোপ বা বৃদ্ধি। দেশে ব্যবসাবান্ধব পরিবেশের স্বার্থে এ প্রবণতা বন্ধ হওয়া জরুরি।'

এ সময় উপস্থিত ছিলেন সিঅ্যান্ডএফ অ্যাসোসিয়েশনের নির্বাহী সদস্য আবু সালেহ, জামাল উদ্দিন বাবলু, অ্যাডভোকেট ওমর ফারুক, বন্দর ট্রাক কাভার্ডভ্যান মালিক অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির সোহেল প্রমুখ।

তারেক মাহমুদ/জোবাইদা/অমিয়/

১৫ দিনের মধ্যে বিধিমালা সংশোধন চায় রিহ্যাব

প্রকাশ: ১২ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৪২ এএম
১৫ দিনের মধ্যে বিধিমালা সংশোধন চায় রিহ্যাব
বোর্ডসভায় রিহ্যাবের নেতারা। ছবি:সংগৃহীত

আগামী ১৫ দিনের মধ্যে নির্মাণ বিধিমালা সংশোধন না করলে রিহ্যাব সদস্য ও জমির মালিকদের নিয়ে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছে রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (রিহ্যাব)। একই সঙ্গে এখন থেকে রিহ্যাব সদস্য বিদ্যমান বিধিমালা ২০০৮ এবং বিএনবিসি ২০২০ অনুসারে বিল্ডিং প্ল্যানের আলোকে ভবন নির্মাণ করবে বলেও জানায় রিহ্যাব।

সোমবার (১১ নভেম্বর) রিহ্যাবের বোর্ড সভায় এ সিদ্ধান্ত জানানো হয়। সভায় রিহ্যাব নেতারা ড্যাপ এবং বিধিমালা সংশোধনে সময় ক্ষেপণ করায় চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

আয়োজিত সভায় রিহ্যাব নেতারা বলেন, বিধিমালা সংশোধনে রাজউক এর চেয়ারম্যানসহ বিভিন্ন পর্যায়ে বিভিন্ন অংশীজনদের নিয়ে একাধিক সভা হয়। রাজউক চেয়ারম্যান ১০ কার্যদিবসের মধ্যে রিহ্যাবের কাছে প্রস্তাবনা চান। রিহ্যাবের পক্ষ থেকে দ্রুত সময়ের মধ্যে (৭ দিনের মধ্যে) বিধিমালা সংশোধনের বিস্তারিত প্রস্তাবনা দেওয়া হয়।

আবাসন ব্যবসায়ীরা বলেন, রিহ্যাব তার কথা রাখলেও বিভিন্ন সময় রাজউক বিধিমালা সংশোধনে একাধিকবার আশ্বাস দেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত এই বিষয়ে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করছে না। ফলে পুরো আবাসন খাতে স্থবিরতা নেমে এসেছে। বৈষম্যমূলক নতুন নিয়মে জমির মালিকরা জমি ডেভেলপ করার জন্য কোনো জমি দিতে রাজি হচ্ছে না। ফলে ফ্ল্যাটের শূন্যতা তৈরি হচ্ছে এবং দ্রুত ফ্ল্যাটের দাম বাড়ছে। সব ধরনের নাগরিকের মাথা গোঁজার স্বপ্ন ফিকে হয়ে আসছে।

ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়াতে কাজ করবেন নতুন বাণিজ্য উপদেষ্টা

প্রকাশ: ১২ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৩৫ এএম
ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়াতে কাজ
করবেন নতুন বাণিজ্য উপদেষ্টা
নতুন দায়িত্ব নেওয়া বাণিজ্য উপদেষ্টা সেখ বশির উদ্দিন(ডানে)।ছবি:সংগৃহীত

দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়াতে সবাইকে নিয়ে একসঙ্গে কাজ করবেন বলে জানিয়েছেন নতুন দায়িত্ব নেওয়া বাণিজ্য উপদেষ্টা সেখ বশির উদ্দিন। সামগ্রিকভাবে দেশের জনগণের জীবনযাত্রা সহজ করতে কাজ করার অঙ্গীকার করেছেন তিনি। গতকাল সোমবার বাণিজ্য উপদেষ্টা সেখ বশির উদ্দিন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এ কথা বলেন।

সোমবার (১১ নভেম্বর) সন্ধ্যায় উপদেষ্টা হিসেবে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের কাছে শপথ নেন সেখ বশির উদ্দিন। পরে সেখ বশির উদ্দিনকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার দায়িত্ব দেওয়া হয়। দায়িত্ব পাওয়ার পর গতকার ছিল উপদেষ্টা হিসেবে মন্ত্রণালয়ের তার প্রথম কার্যদিবস।
বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, মূল্যস্ফীতির ফলে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমেছে। শ্রমিকের দিকে তাকালে দেখা যাবে, তাকে জীবনমানের সঙ্গে আপস করতে হচ্ছে।

কর্মকর্তাদের উদ্দেশে উপদেষ্টা বলেন, ‘আমি আপনাদের কাছে ম্যাজিক প্রত্যাশা করছি না। আমরা সম্মিলিতভাবে কাজ করব। আপনারা আমাকে সহযোগী হিসেবে পাবেন। আপনাদের কাজ আরও কার্যকর করার জন্য ইনসাফের সঙ্গে আমার সক্ষমতা অনুযায়ী চেষ্টা করব।’

বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা যদি ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়াতে পারি, সর্বোচ্চ দক্ষতা প্রয়োগ করতে পারি, তাহলে ভালো করা সম্ভব। আমি কর্মকর্তাদের কাছে অতিরিক্ত পরিশ্রম প্রত্যাশা করি।’ কর্মকর্তাদের সঙ্গে তিনিও পরিশ্রম করবেন বলে প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

বাণিজ্য সচিব মোহাং সেলিম উদ্দিন ও চার অতিরিক্ত সচিব কাজী মোজাম্মেল হক, মোহাম্মদ নাভিদ শফিউল্লাহ, মো. আবদুর রহিম খান, নাজনীন কাওসার চৌধুরী প্রমুখ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

অক্টোবরে দেশে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ছিল ১২ দশমিক ৬৬ শতাংশ। আগের মাসেও খাদ্য মূল্যস্ফীতি ছিল দুই অঙ্কের ঘরে। দেড় বছরের বেশি সময় ধরে দেশে উচ্চ মূল্যস্ফীতি বিরাজ করছে।

এই বাস্তবতায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক একদিকে নীতি সুদহার বাড়াচ্ছে, আরেক দিকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) বিভিন্ন পণ্যের আমদানি শুল্ক হ্রাস করে দাম কমানোর চেষ্টা করছে। চাল আমদানিতে শুল্ক পুরোপুরি প্রত্যাহারও করা হয়েছে। বাজার ব্যবস্থাপনায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কেও ব্যস্ত সময় পার করতে হচ্ছে। টিসিবির মাধ্যমে ট্রাকে করে পণ্য বিক্রির পাশাপাশি বিভিন্ন নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য আমদানির অনুমতিও দিচ্ছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
এমন একসময় বাণিজ্য উপদেষ্টার দায়িত্ব নিলেন সেখ বশির উদ্দিন। এতদিন সালেহউদ্দিন আহমেদ অর্থ ও বাণিজ্য উভয় মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে ছিলেন।