ঢাকা ১২ শ্রাবণ ১৪৩১, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪

নারী তুমি অনন্যা

প্রকাশ: ০২ মার্চ ২০২৪, ০৪:০১ পিএম
আপডেট: ০২ মার্চ ২০২৪, ০৪:১৮ পিএম
নারী তুমি অনন্যা
নারী দিবসের বিশেষ আয়োজনে ‘ফ্যাশন প্লাস’-এর এবারের মডেল হয়েছেন বেঙ্গল কমার্শিয়াল ব্যাংক পিএরসির ব্রান্ড অ্যান্ড কমিউনিকেশন্স ডিপার্টমেন্টের ইনচার্জ এবং সফল নারী ব্যক্তিত্ব নাজিয়া খানম কণা । ছবি: শরিফ মাহমুদ

আগামী ৮ মার্চ বিশ্ব নারী দিবস। এবারের নারী দিবসের প্রতিপাদ্য হলো ‘নারীর সমঅধিকার, সমসুযোগ এগিয়ে নিতে হোক বিনিয়োগ’। এই দিনটিতে যেন নারীর ব্যক্তিত্ব ও স্বকীয়তা ফুটে ওঠে, সেই পরামর্শ নিয়ে এবারের আয়োজন। জানাচ্ছেন মেরিনা আহমেদ।

কথায় আছে, ‘যে রাঁধতে জানে, সে চুলও বাঁধতে জানে।’ যাদের ঘর ও বাহির- দুটিই সামলাতে হয়, তারা সবকিছু কীভাবে সামলান বলুন তো? কিন্তু সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে মানুষের রুচি, চাহিদা, প্রয়োজন, পছন্দ সবকিছুতেই এসেছে পরিবর্তন। আগে যেখানে অনেক বেশি কারুকাজ করা আসবাব, ভারী কাঠের আলমারি, লোহার সিন্দুকের প্রচলন ছিল; এখন  আধুনিক কোনো ঘরে এসবের স্থান হয় না। এখন আর ঘরে শাড়ি পেঁচিয়ে বসে থাকাটা খুব বেশি অর্থবোধক হয় না। সবাই চায় ঘরের জীবনের মতো বাইরেও যেন কাটানো যায় পরিপাটি সময়। এই পরিপাটি জীবনযাপনকেই বলে ‘টোটাল স্মার্টনেস’। তাই এবার স্মার্টনেস বজায় রাখার জন্য কিছু আলোচনা।

প্রথমেই বাচনভঙ্গি ও সাবলীল ভাষা

স্মার্টনেস ও ব্যক্তিত্বের প্রকাশ ঘটাতে সবার আগে যে বিষয়টির প্রতি খেয়াল রাখতে হবে, তা হলো কথাবার্তার ধরন। সুন্দর কথাবার্তা দিয়ে সহজেই অন্যকে আকৃষ্ট করা যায়। কথা বলার সময় অবশ্যই কিছু বিষয়ের প্রতি খেয়াল রাখতে হবে।

  কথা অবশ্যই গুছিয়ে সুন্দর করে সাবলীলভাবে উপস্থাপন করতে হবে।

  সব সময় হাসিমুখে কথা বলুন এবং কথা বলার সময় কখনোই মুখে ও কপালে বিরক্তির ছাপ রাখবেন না।

  অবশ্যই শুদ্ধ উচ্চারণের দিকে এবং কখনো আঞ্চলিক টান যেন না আসে সেদিকে খেয়াল হবে।

  চিৎকার করে কথা না বলা, যতটা সম্ভব নরম ও কোমল কণ্ঠে কথা বলুন।

  কথা বলার সময় অবশ্যই স্পষ্ট উচ্চারণ করতে হবে এবং মুদ্রাদোষগত শব্দ উচ্চারণ থেকে বিরত থাকতে হবে। 

আচরণে নমনীয় হোন

নিজেকে স্মার্টভাবে অন্যের কাছে প্রকাশ করার জন্য আচার-ব্যবহারের দিকে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে। নম্র, ভদ্র ও অমায়িক আচার-আচরণ দিয়ে একজন ব্যক্তি তার শত্রুকেও বন্ধুতে পরিণত করতে পারে।

  বিনা কারণে কখনোই কারও সঙ্গে ধমকের সুরে কথা না বলাই ভালো।

  যে যা-ই প্রশ্ন করুক তার উত্তর দিন সুন্দর, মার্জিত ও অমায়িক ভাষায়।

  যতটা সম্ভব চেষ্টা করুন মেজাজ ঠাণ্ডা রাখতে এবং উগ্র ও অভদ্র আচরণ পরিহার করতে।

  কেউ আপনার সঙ্গে অভদ্র ভাষায় কথা বললেও আপনি মাথা ঠাণ্ডা রেখে সুন্দরভাবে বুঝিয়ে তার উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করুন। এতে করে তার মধ্যেও ভালো হওয়ার অনুভূতি জন্ম নিতে পারে।

  নিচু মানসিকতা পরিহার করে এবং দৃষ্টিভঙ্গি সব সময় ইতিবাচক রেখে সবার সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ করুন।

  কথা বলার ক্ষেত্রে সব সময় হাসি মুখে কথা বলুন।

শরীর সুন্দর রাখতে

নিজের সৌন্দর্যের কথা কে না ভাবে? অন্যের কাছে নিজের ব্যক্তিত্ব প্রকাশ করার ক্ষেত্রে শারীরিক সৌন্দর্যও বিশেষ গুরুত্ব বহন করে। শারীরিক সৌন্দর্য বলতে শরীরের গঠন, ত্বক, হেয়ার স্টাইল, চলাফেরা ইত্যাদি বোঝায়। শারীরিক সৌন্দর্য দিয়ে সহজেই অন্যের দৃষ্টি আকর্ষণ করা যায়।

  অফিস বা বাইরে যাওয়ার আগে অবশ্যই ফেসওয়াশ দিয়ে নিয়মিত মুখ পরিষ্কার করতে হবে।

  হাত-পায়ের নখ ছোট রাখুন এবং নিয়মিত সুন্দর করে পরিষ্কার করুন।

  চেহারার সঙ্গে মিল রেখে হেয়ার কাট নিতে হবে। কারণ একেক কাট একেকজনের জন্য মানানসই।

  বাইরে বের হওয়ার আগে চুল সুন্দর করে ব্রাশ করে নিন।

  শরীর সুস্থ রাখতে প্রতিদিন ব্যায়ামের পাশাপাশি পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে।

মানানসই পোশাক পরুন

একজন ব্যক্তির রুচিবোধের পরিচয় পাওয়া যায় তার পোশাকের মাধ্যমে। শিক্ষা, কথাবার্তা, আচার-ব্যবহার যতই ভালো হোক না কেন, রুচিশীল পোশাক ব্যবহার না করার কারণে অনেক সময় বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হয়। আপনি কোথায় যাচ্ছেন সেই অনুযায়ী পোশাক নির্বাচন করুন। আসুন জেনে নিই, কোথায় কোন পোশাকে আপনি হতে পারেন আরও বেশি আকর্ষণীয়-

অফিস

পোশাক: এখানে সুতির পোশাকের বিকল্প নেই। হালকা রঙের ঢিলেঢালা সুতির সালোয়ার-কামিজ, কুর্তা বা টপস পরুন। সঙ্গে চুড়িদার, কাবলি সালোয়ার বা প্যান্ট। বৃষ্টিতে হাফসিঙ্কের পোশাকও আরামদায়ক। রঙের ক্ষেত্রে শাড়ি পরতে চাইলে কোটা বা শিফন। চিকন পাড়ের সাদা, উজ্জ্বল নীল, গোলাপি বা হালকা সবুজ রংকে প্রাধান্য দিন। তাঁতের শাড়িও পরতে পারেন।

সাজ: অফিসের সাজ হালকা হবে। মুখে শুধু ফেস পাউডার লাগান। চোখে চিকন করে কাজল বা আইলাইনার ও ঠোঁটে ম্যাট লিপস্টিক দিন। সামনের চুল টেনে পাঞ্চ ক্লিপ দিয়ে আটকান বা পনিটেল করুন অথবা খোঁপা করে কাঁটা গুঁজে দিন। ছোট চুল হলে ব্লো ড্রাই করে ছেড়েও রাখতে পারেন। অবশ্যই হালকা সুগন্ধি ব্যবহার করুন।

বাসা
পোশাক: আরামদায়ক সালোয়ার-কামিজ, টি-শার্ট, ট্রাউজার, কুর্তা বা সালোয়ার পরুন। তাঁত, সুতি বা নিট কাপড়কে প্রাধান্য দিন। হাতাকাটা বা বেবি হাতার ফ্রকও পরতে পারেন।

সাজ: অনেকে ভাবেন, বাড়িতে থাকলে সাজতে হয় না। তবে ফ্রেশ মুডের জন্য। পরিপাটি থাকতে তো বাধা নেই। সবাই ঘুম থেকে ওঠে ফ্রেশ হয়ে প্রথম কাজ হবে চুল আঁচড়ে বাঁধা। রাতের কাপড়টা পাল্টে নিন।

অনুষ্ঠান

দিন: দিনে অনুষ্ঠান হলে হালকা রঙের পোশাক নিন। ওয়েস্টার্ন পোশাক বা সালোয়ার-কামিজ পরুন। সুতি ও হাফসিল্কের গর্জিয়াস পোশাকও পরতে পারেন। টপস ও জিন্স সবচেয়ে ভালো। মসলিন, কাতান, জামদানি শাড়িও দিনের অনুষ্ঠানে ভালো মানায়।

রাত: রাতের অনুষ্ঠানে গাঢ় রং বেছে নিন। স্লিভলেস-হাইনেকের কামিজ ও ব্লাউজ পরুন। কামিজ ও ব্লাউজে ভারী কাজ হলে ভালো মানাবে। শাড়ি পরলে এক রঙের আঁচল ও পাড়ে নকশা আছে এমন শাড়ি বেছে নিন। মানানসই গয়না পরুন। বেশি নকশার পোশাকের সঙ্গে হালকা গয়না পরুন। যদি কামিজের নেক লাইনে ভারী কাজ থাকে, তবে গলায় কিছু না পরে কানে ভারী দুল, আঙুলে একটু বড় আংটি পরতে পারেন। পোশাকের সঙ্গে মানানসই ব্যাগ নিন।

সাজ: পোশাকের মতো সাজও অনেকটা নির্ভর করে শরীর সুন্দর রাখতে অনুষ্ঠানের ধরনের ওপর। দিনের দাওয়াতে হালকা মেকআপ নিন। আর রাতের অনুষ্ঠানে দিনের চেয়ে একটু গাঢ় মেকআপ নিন। তৈলাক্ত ত্বকের জন্য ওয়াটার বেজ ফাউন্ডেশন ও শুদ্ধ ত্বকে ক্রিম বেজ ফাউন্ডেশন ব্যবহার করুন।

শুষ্ক ত্বকে ফাউন্ডেশন দেওয়ার আগে মুখে একট লোশন দিয়ে নিন। এবার কমপ্যাক্ট পাউডার লাগান। চোখ সাজাতে মেরুন, কফি, সবুজ, নীলচে শেড ব্যবহার করুন। চোখে অবশ্যই পানি নিরোধক মাশকারা এবং পেন্সিল আইলাইনার ও পাউডার ব্লাশঅন ব্যবহার করুন। রাতে দুই গালে খুব হালকা গোলাপি, পিচ অথবা ব্রোঞ্জ রঙের ব্লাশঅন লাগান।

ময়েশ্চারসমৃদ্ধ পিংক, কোরাল, ব্রেজ রঙের ম্যাট লিপস্টিক ব্যবহার করুন। লিপস্টিক যেন আপনার স্কিন টোনের সঙ্গে মানায়। চুল টেনে বাঁধুন অথবা ছোট হলে বো ড্রাই করে ছেড়ে রাখুন। পছন্দমতো খোঁপাও করতে পারেন।

কলি

নীলুর ‘সেলাইঘর’

প্রকাশ: ২৫ জুলাই ২০২৪, ০৪:০৮ পিএম
আপডেট: ২৫ জুলাই ২০২৪, ০৪:১০ পিএম
নীলুর ‘সেলাইঘর’
তাসলিমা নীলু

তাসলিমা নীলু ২০০৭ সাল থেকে হোপ ইন্টারন্যাশনাল বিদ্যালয়ের শিক্ষকতা করছেন। ২০১৮ সালে শিক্ষকতার পাশাপাশি কিছু করার ইচ্ছায় উদ্যোক্তা হওয়ার চিন্তা করেন। সেই চিন্তা থেকে কিছু পোশাক এনে স্কুলের কলিগ ও আত্মীয়স্বজনদের কাছে বিক্রি করেন। ভালোই সাড়া পেয়েছিলেন। একটা ফেসবুকে পেজ খুলেছিলেন। কিন্তু কীভাবে পণ্যের ছবি তুলতে হয়, সে সম্পর্কে একেবারেই ধারণা ছিল না। যা বিক্রি হতো পরিচিতের মধ্যে।

কিন্তু চাকরি ও ব্যবসা একসঙ্গে করতে পারছিলেন না। তাই ২০১৯ সেটা বন্ধ করে দেন। এরপর ২০২০ সালে করোনাকালীন যখন সবকিছু বন্ধ হয়ে যায়। স্কুলের কাজে তেমন চাপ ছিল না। এ ছাড়া তার স্বামীর চাকরি চলে যাওয়ার কারণে তিনি তার ফেসবুক পেজটা আবার চালু করেন। পুরোনো পেজটা কাজ না করার কারণে সেটা খুলতে পারছিলেন না। তাই সেলাইঘর নাম দিয়ে আরেকটা পেজ খুলেন। একটু আলাদা ধরনের নাম দেওয়ার জন্য পেজটির নাম দিয়েছিলেন সেলাইঘর। যাতে সবার মুখে মুখে থাকে। অনেকভাবে সেলাইঘর মানে সেলাই শিখানো হয়, আসলে কিন্তু তা নয়। সেলাইঘর মানে পোশাক বিক্রি হয়। তিনি সেলাইয়ের কাজ জানতেন বলে এই নামটি দেওয়া। নীলু সবসময় নিজের এবং তার শাশুড়ির জন্য অনেক কাপড় ও লেইস কিনে রাখতেন। করোনাকালীন এটি কাজে দিয়েছিল। শিশুদের একটা পোশাক বানিয়ে হাতের কাজ করে প্রথম সেলাইঘরে পোস্ট করেন। পোশাকটি ছবি পোস্ট করার পর অনেকগুলো প্রি-অর্ডার পেয়ে গেলেন। তখন নিজের আত্মবিশ্বাস বেড়ে গেল, সবগুলো অর্ডারই সময়মতো নিজেরাই ডেলিভারি করলেন। যেহেতু পেজ থেকে সাড়া ভালোই পেলেন, তাই চিন্তা করলেন একটা শোরুম দেওয়ার। ২০২১ সালে দিয়েও ফেললেন। সেখানে নিজের তৈরি পোশাকের পাশাপাশি বাইরের পোশাকও বিক্রি করা শুরু করলেন।

এই ক্ষেত্রে প্রথম যেটা হয়েছে সেটা হলো কাপড় সম্পর্কে তেমন কোনো ধারণা ছিল না। শোরুম দেওয়ার পর মার্কেটে মার্কেটে ঘুরেছেন, কোথায় ভালো শাড়ি পাওয়া যায়, কোথায় থ্রি-পিস পাওয়া যায়, সেখানে গিয়ে সেগুলো সংগ্রহ করেছেন। যত দিন গিয়েছে ততই অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন। এসএমই থেকে প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় ধাপে ফ্যাশন ডিজাইনারের কোর্স করে সার্টিফিকেট পেয়েছেন। এটা তার জীবনের একটা বড় প্রাপ্তি। এ ছাড়া ব্লক বাটিকের ওপরে অনেকগুলো কোর্স করেছেন। বিভিন্ন রকমের মেলায় অংশগ্রহণ করে অনেকের ভালোবাসা পেয়েছেন। উদ্যোক্তা হতে গিয়ে অনেক সমস্যায় সম্মুখীন হয়েছেন। পেজের লাইভ করার সময় অনেক নেতিবাচক মন্তব্য শুনতে হয়েছে। এ ছাড়া যেখানে শোরুম দিয়েছেন সেখান থেকে কটূক্তি শুনতে হয়েছিল। কিন্তু তার স্বামী এবং তার শাশুড়ি অনেক সাপোর্ট কারণে তাকে পারিবারিকভাবে তেমন কোনো বাধা পেরোতে হয়নি। বরং অনেক বেশি সাপোর্ট পেয়েছেন।

নীলু যেহেতু দেশীয় প্রোডাক্ট নিয়ে কাজ করেন। তিনি চান ক্রেতার চাহিদা অনুযায়ী ভালো মানের পোশাক দিতে। তাই তার মূল ফোকাস হচ্ছে দেশীয় পোশাক নিয়ে কাজ করা। দেশের পণ্যকেই তুলে ধরা। দেশের গণ্ডি পেরোনোর ইচ্ছা কার না থাকে, তারও ইচ্ছা আছে। কিন্তু তার আগে দেশের ভেতরেই নিজের একটা শক্ত অবস্থান গড়ে তুলতে চান। তিনি চান তার পোশাক দেশের প্রতিটি জেলায় ছড়িয়ে যাক। সবার মুখে মুখে সেলাই ঘরের নাম থাকুক। এরপর দেশের বাইরে যাওয়ার পরিকল্পনা করবেন। এখনই দেশের অনেক জেলায় তার অনেক ক্রেতা আছে। সেসব ক্রেতাও ইনবক্সে খোঁজখবর নেন। নীলু বলেন, নারীরা কেন বসে থাকবেন। সংসার চালানোর পাশাপাশি যেকোনো কিছু করতে পারেন। সে শিক্ষিত, অশিক্ষিত যেকোনো নারীই হতে পারে। যে বিষয় তিনি দক্ষ সেটা নিয়েই কিছু করতে পারেন। পারিপার্শ্বিক অবস্থার কারণে অনেকে শিক্ষার সুযোগ পায় না।

তারাও যেন পিছিয়ে না থাকে। তাদের উদ্যোক্তা হিসেবে তুলে পারি। এখন নারীরা অনেক আগ্রহী তাই অনেক উদ্যোক্তা তৈরি হচ্ছে। নারীরা যে যা পারেন তাই নিয়ে কাজ করেন। সেটা ক্রাফটের কাজ হোক, কিংবা গয়না তৈরি। নারীকে সৃজনশীল কাজ করতে হবে। নিজে স্বাধীনভাবে থাকতে চাইলে, নিজের যে গুণ আছে সেটা কাজে লাগাতে হবে। তারা কাজ করে আয় করে স্বনির্ভর হতে পারে। তাহলেই দেশ এগিয়ে যাবে। সরকারের কাছে নীলুর চাওয়া হলো স্বল্প সুদে ঋণের ব্যবস্থা করা। সরকার যদি আমাদের স্বল্প সুদে ক্ষুদ্র নারী উদ্যোক্তাদের ঋণ দেওয়ার ব্যবস্থা করেন থাকলে নারীরা আরও এগিয়ে যাবে।

কলি  

সামলে চলুন সংসারের খরচ

প্রকাশ: ২৫ জুলাই ২০২৪, ০১:৩১ পিএম
আপডেট: ২৫ জুলাই ২০২৪, ০২:১৭ পিএম
সামলে চলুন সংসারের খরচ
মডেল: উল্কা, সৌম্য। ছবি: শরিফ মাহমুদ

প্রমা ও সৌরভের টোনাটুনির সংসার, মাঝে মাঝে রেস্টুরেন্টে খাওয়া, কোথাও দুজন ঘুরতে চলে যাওয়া, অনলাইনে নতুন কোন পোশাক দেখলেই কিনে ফেলা, এভাবে চলে তাদের সংসার। তবে সৌরভের বেতন ভালো থাকলেও মাস শেষে হাতে একেবারের জমা কোন টাকা থাকে না। কোথাও কিভাবে খরচ হচ্ছে সেটা বুঝতে পারছে না। এখন দুইজন আছে, কিন্তু  সঞ্চয় করতে না পারলে তো সমস্যায় পরবে। এটা নিয়ে প্রমা বেশ চিন্তিত। বর্তমানে এখন অনেকের অবস্থাই প্রমা আর সৌরভের মতো। দৈনন্দিন জীবনে চাহিদার সঙ্গে জিনিসপত্রের দাম বেড়ে চলেছে, তাই  যথেষ্ট আয় থাকা স্বত্বেও খরচ মিটিয়ে সংসার চালানো এখন বেশ কঠিন। খাবার, স্বাস্থ্য,শিক্ষা, জামাকাপড়,যাতায়াত, বাসাভাড়া, বিনোদন  সংসারের খরচে বেতনের মোটা  একটা  অংশ  চলে যাচ্ছে। তবে একটু চেষ্টা করলেই প্রতি মাসের খরচ কমিয়ে আনা সম্ভব। সংসারের খরচ কীভাবে কমানো যায়, তা নিয়ে লিখেছেন শাহিনুর আলম কলি

প্রত্যেক মাসে বাজেট করুন
মাসের শুরুতেই বাজেট তৈরি করুন। সেই বাজেট থেকে  চাইলে কাটছাঁট করুন। অন্যান্য খরচের জন্যেও আলাদা টাকা বরাদ্দ করুন। যা বাজেট করেছেন চেষ্টা করুন সেই টাকার মধ্যেই খরচ করার। তার পরেও কিছু কেনার সময়ে দরদাম করে কিনলে দেখবেন কিছুটা টাকা বাঁচবে।চাইলে প্রতি সপ্তাহে খরচের জন্য নির্দিষ্ট অর্থ বরাদ্দ করুন এবং শুধু সেই পরিমাণ অর্থ ব্যয় করুন। এছাড়া প্রতি মাসে ভ্রমণের জন্যে, বিনোদনের জন্য আলাদা টাকা রাখতে পারেন।

যাতায়াত খরচ বাঁচান
অফিসে যাওয়ার সময় হেঁটেই বাসস্ট্যান্ডে যান। তাই চেষ্টা করবেন  কিছুটা সময় হাতে নিয়ে বের হওয়ার। এতে  রিকশা ভাড়া বাঁচবে এবং  সকালের হাঁটা হয়ে যাবে।  আবার অফিস থেকে ফেরার পথে বাস থেকে নেমে রিকশায় না চড়ে হেঁটেই বাড়ি ফিরুন।  এছাড়া যেখানে হেটে যাওয়ার রাস্তা সেখানে হেঁটে যান।  সিএনজি কিংবা পাঠাও এড়িয়ে চলে বাসে যাতায়াত করুন। এতে করে প্রতিদিনের সামান্য টাকা মাস শেষে বড়ই হবে।

কার্ডে নয়, নগদ লেনদেন
ডেবিট কার্ড, মোবাইল ব্যাংকিং ও ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের মাধ্যমে কেনাকাটা করা বাদ দিন। কার্ডে লেনদেন করলে আপনি নিজেও জানতে পারবেন না কত টাকা খরচ করে ফেলছেন। কেনাকাটার সময় বেশি মনে না হলেও মাস শেষে দেখা যায় বড় অংকের টাকা অপ্রয়োজনীয় জিনিস কিনে খরচ করে ফেলেছেন। তাই কার্ড নয় নগদ লেনদের করুন। তাহলে সহজে বুঝতে পারবেন কী পরিমাণ অর্থ ব্যয় হচ্ছে। যা আপনাকে খরচের ব্যাপারে সাবধানী করবে। এছাড়া অতি প্রয়োজন না হলে ক্রেডিট কার্ডে কেনাকাটা  করবেন না। কারণ সেখানে সুদের হার অনেক বেশি থাকে।

খরচের হিসেব রাখুন
দিনশেষে খরচের হিসেব রাখাটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। খাওয়া-দাওয়া, বাড়িভাড়া, বিদ্যুতের বিলের মতো কিছু খরচ নির্দিষ্ট থাকে। এগুলোর হিসাব ও নির্দিষ্ট। তবে প্রতিদিন কোথায় কত খরচ হল তার হিসেব একটা খাতায় লিখে রাখুন। মাস শেষে এটা নিয়ে বসুন। দেখুন কোন কোন খাতে খরচ বেশি হয়েছে এবং সেগুলো চেষ্টা করলেই কমানো সম্ভব কিনা। এছাড়া ব্যাংকের স্টেটমেন্ট খেয়াল করে দেখুন, সবচেয়ে বেশি কোন খাতে আপনি টাকা খরচ করছেন। সেখানে দাগ দিয়ে রাখু্ন। পরের মাসে সেই খাতে চেষ্টা করবেন খরচ কমিয়ে  আনতে। আর কোনটা বেশি প্রয়োজনীয়, কোনটা না হলেও চলবে সেগুলোর দিকেও খেয়াল রাখুন।

ব্র্যান্ডের পণ্য এড়িয়ে চলুন
অনেক সময় বিভিন্ন পণ্যে ব্রান্ড থেকে কিনে থাকি। কিন্তু ব্রান্ডের পণ্য আর সাধারণ পণ্যে খুব বেশি পার্থক্য  থাকে না । এছাড়া সুপারশপে কিছু পণ্যে আপনি লোকাল মার্কেটে পাওয়া যায়, পাইকারি ধরে সেই পণ্যের দাম সুপারশপের চেয়ে ও কম পড়ে। তাই  চেষ্টা করুন খরচ কমিয়ে কেনাকাটা করতে। ব্রান্ডের কিনতে চাইলে মূল্য ছাড়ের সময় কেনাকাটা করতে পারেন। এছাড়া কোথায় কী কিনলে ছাড় মিলছে খোঁজ রাখুন। কুপন পেলে রেখে দিন। পরবর্তী সময়ে তা দিয়েই কেনাকাটা করুন।

বাসায় খাওয়া-দাওয়া করুন
অনেক সময় বাইরের খাবার খাই। দামি দামি রেস্তোরাঁয় খাওয়ার অভ্যাস অনেকের। প্রতিমাসে এর জন্য অতিরিক্ত টাকা খরচ করতে হয়। তাই এই অভ্যাস এড়িয়ে চলুন। কোনো বিশেষ কিছু খেতে ইচ্ছে হলে বাসায় রান্না করে খাওয়ার চেষ্টা করুন। এতে খরচ সাশ্রয় হবে আবার পরিবারের সবার সঙ্গে সম্পর্কটাও মজবুত হবে।

হুট করে কোন জিনিস কেনা থেকে দূরে থাকুন
অনেকেরই অভ্যাস হল রাস্তায় যেতে যেতে কোন দোকানে কিছু পছন্দ হলে হুট করে কিনে ফেলা। এটা করার ফলে বেশীরভাগ সময়েই আমরা অপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র দিয়ে ঘর বোঝাই করে ফেলি। অনলাইনের যুগে অনলাইন শপিংয়ের পেছনে অনেক টাকা খরচ করে ফেলি। সারা মাস খেয়াল রাখুন, কোথায় বেশি টাকা খরচ হচ্ছে। অযথা কোনও শখের জিনিস কিনে খরচ করবেন না। জিনিস পছন্দ হয়ে গেলেই হুট করে কিনে না ফেলে একটু ভেবে তারপর কিনবেন। প্রয়োজন হলে একটু সময় নিয়ে দুইদিন পরে কিনুন।

মাসের বাজার একসঙ্গে  করুন
মাসের মাছ ও মাংসের বাজার একসঙ্গে করুন। এ ছাড়া মসলাও পাইকারি দোকান থেকে একসঙ্গে কেনার চেষ্টা করুন। তাতে যেমন ফ্রেশ পাবেন, দামেও কম হবে। এছাড়া দিনশেষে বাজার করার চেষ্টা করুন। কারণ এ সময় সব পণ্যের কিছুটা কমে যায়। বাজার বন্ধ হওয়ার আগমুহূর্তে কিনলে কম দামে কিনতে পারবেন। তাই অফিস শেষে বাজার করতে পারেন।

দাওয়াতের দিন রান্না এড়িয়ে চলুন
যেদিন কোথায় দাওয়াত  থাকবে সেদিন বাড়িতে রান্নাবান্নার ঝামেলা কম করুন। এতে অনেকটা সাশ্রয়ী হবে। আর উপহাট কখনো বাজেটের বাইরে গিয়ে কিনবেন না। চেষ্টা করুন বাজেটের মধ্যে  উপহার কিনতে।

 কলি

উইমেন এন্টারপ্রেনার্স এসোসিয়েশনের "লিগাসি অ্যাওয়ার্ড ২০২৪" প্রদান

প্রকাশ: ১৫ জুলাই ২০২৪, ০৬:১১ পিএম
আপডেট: ১৫ জুলাই ২০২৪, ০৬:১৩ পিএম
উইমেন এন্টারপ্রেনার্স এসোসিয়েশনের

রাজধানীর ঢাকা ক্লাব লিমিটেডে উইমেন এন্টারপ্রেনার্স এসোসিয়েশনের উদ্যোগে গত শুক্রবার (১৪ জুলাই) এক জমকালো আয়োজনের মাধ্যমে আগামীতে নেতৃত্ব দিবেন এমন তরুণ উদ্যোক্তা সদস্যকে প্রথম বারের মতো "লিগাসি অ্যাওয়ার্ড ২০২৪" প্রদান অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।

বাংলাদেশের নারী উদ্যোক্তাদের নিয়ে প্রথম এই এসোসিয়েশন উই এর ফাউন্ডার মেম্বার এবং সাধারণ সদস্যদের সন্তানদের মধ্যে থেকে মেধা, দক্ষতা , প্রতিভা ও উদ্যোগ যাছাই–বাছাই এর মাধ্যমে প্রথম বারের মতো ১০টা ক্যাটাগরিতে ১০ জন সদস্যকে এই পুরস্কার দেওয়া হয়।

উইমেন এন্টারপ্রেনার্স বিজনেস "ফুড এন্ড বেভারেজ" ক্যাটাগরিতে পুরস্কার পান সুমি'স কিচেন এর স্বত্বাধিকারী আফরোজা নাজনীন সুমি। বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে অন্য যারা এই লিগাসি অ্যাওয়ার্ড  ২০২৪ পেয়েছেন তারা হলেন ফাইজা রহমান, বেনোজীর আইনুন, ফারজিন খান, ফেরদৌস জাহান, ফারহানা মুন্না, নিশাত খান, রিজওয়ানা শেখ, সিরাজুম মাসুদ, জোয়ানা খান।

পুরস্কার প্রদান করেন বিশ্ব বরেণ্য ফ্যাশন ডিজাইনার এবং জনপ্রিয় ইন্টারন্যাশনাল মডেল বিবি রাসেল। আরও উপস্থিত ছিলেন মাইডাসের চেয়ারম্যান পারভীন মাহমুদ, ড: রুবিনা হুসেইন, উই এর বর্তমান প্রেসিডেন্ট সুলতানা সনিসহ আরও গণ্যমান্য ব্যক্তিরা। 

পুরস্কারপ্রাপ্ত সুমি বলেন, "যে কোন প্রাপ্তি কাজের প্রতি আগ্রহ আরও বাড়িয়ে তোলে।"তার উদ্যোক্তা মা লায়লা জালালের হাত ধরেই উই এর মেম্বার হওয়া। তাই এই লিগ্যাসি এওয়ার্ড  এর জন্য বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানান তার মা লায়লা জালাল এবং উই এর ফাউন্ডার প্রেসিডেন্ট প্রায়ত রোকেয়া আফজাল রহমানকে।

সুমি উইমেন এন্টারপ্রেনার্স এসোসিয়েশন (WEA) এর জয়েন্ট সেক্রেটারি, ই-কমার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (e-Cab) উইমেন এন্টারপ্রেনার্স ফোরামের কো-চেয়ারম্যান,বাংলাদেশ ফেডারেশন অব উইমেন এন্টারপ্রেনার্স (BFWE) এর বোর্ড মেম্বার এবং বাংলাদেশ উইমেন চেম্বার অব কমার্স (BWCCI) এর সদস্য হিসেবে উদ্যোক্তা উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছেন।

 কলি 

জেন-জিদের লাইফস্টাইল

প্রকাশ: ১৩ জুলাই ২০২৪, ০২:৫২ পিএম
আপডেট: ১৪ জুলাই ২০২৪, ০৬:১১ পিএম
জেন-জিদের লাইফস্টাইল
মডেল: প্রহেলিকা, রুদ্র, ঋতু। ছবি: শরিফ মাহমুদ

১৯৯৭ থেকে ২০১২ সালের মাঝামাঝি পর্যন্ত যাদের জন্ম, তাদের ‘জেন জেড’ বা ‘জেন-জি’ বলা হয়। জেন-জিরা অল্প বয়স থেকে ইন্টারনেট ও পোর্টেবল ডিজিটাল প্রযুক্তির মাধ্যমে বড় হওয়া প্রথম সামাজিক প্রজন্ম হিসেবে ধরা হয়। এই প্রজন্ম নিজেদের কঠোর পরিশ্রমী, আত্মনির্ভরশীল এবং সৃজনশীল হিসেবে বিবেচনা করে। তাদের ব্যক্তিগত ও পারিবারিক মূল্যবোধ, চিন্তাভাবনা, জীবনযাপন, ভবিষ্যতের লক্ষ্য অন্যদের তুলনায় আলাদা। এই প্রজন্মের জীবনযাপন নিয়ে লিখেছেন শাহিনুর আলম কলি 

জেন-জিদের ফ্যাশন 
জেন-জিদের সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য, তারা কোনো নির্দিষ্ট স্টাইলে আটকে থাকে না। আবার অতীতের কোনো স্টাইল ফিরিয়ে আনতেও কোনো কার্পণ্য করে না। তাদের কারণে অতীতের কিছু ফ্যাশন আর স্টাইল আবার ফিরে এসেছে। ফ্যাশন নিয়ে বিশেষ আগ্রহ থাকার জন্য তাদের দিনের বড় একটা সময় বিভিন্ন রকমের ম্যাগাজিন, ব্লগ ঘেঁটে ও ফ্যাশন সংক্রান্ত ভ্লগ দেখে কাটায়। বাইকার শর্টস, কম্ফি বা টার্টলনেক ও কিউবান কলার শার্ট রয়েছে তাদের ফ্যাশন তালিকায়। এই প্রজন্মের সবচেয়ে বড় অর্জন লিঙ্গনিরপেক্ষ পোশাক। কয়েক দশক আগেও বিষয়টি চিন্তা করা যেত না। এখন তারাই প্রমাণ করেছে, লিঙ্গনিরপেক্ষ পোশাক পরা যায়।

এ ছাড়া মিনিমাল, অতিরিক্ত বড় ও আরামদায়ক সব ধরনের স্টাইলে তাদের দেখা যায়। পাশাপাশি তাদের নিজস্ব স্টাইল তো রয়েছে। এই প্রজন্মের প্রভাবে ডিজাইনাররা নতুন নতুন ডিজাইনের পোশাক তৈরি করছে। তাদের পোশাকে রঙের ক্ষেত্রে কোনো নিয়ম মানা হয় না। সব ধরনের রঙের পোশাক তাদের পরতে দেখা যায়। এখন তারা যা পরবে তাই ট্রেন্ডি। ছেলেরা বিভিন্ন নকশার শার্ট ও হাফপ্যান্ট এবং পায়ে কেডস অথবা লোফার পরে হাজির হয়ে যান যেকোনো অনুষ্ঠানে। এ ছাড়া কালো ট্রাউজার আর ঢিলেঢালা ম্যাচিং টি-শার্ট পরে সাবলীল ভঙ্গিতেই বাইরে বের হয়ে যান। লুজ-ফিটিং জর্জেট ফেব্রিকের টেরাকোটা রঙের শার্ট এবং সাদা রঙের ফুলহাতা ক্রপ টপ সঙ্গে আশি-নব্বইয়ের দশকের হাই ওয়েস্ট মম জিনস বেশ জনপ্রিয়।


 
জেন-জিদের মেকআপ ট্রেন্ড
ফ্যাশনের মতো মেকআপের ব্যাপারেও এই প্রজন্ম বেশ সচেতন। তাদের সাজে থাকে মিনিমাল ছোঁয়া। সাজের ক্ষেত্রে খুব বেশি মেকআপ পণ্যের ব্যবহার করে না। ভালো মানের ফাউন্ডেশন, কনসিলার, ব্লাশন, কাজল, মাসকারা, আইশ্যাডো তাদের জন্য যথেষ্ট। তাদের কাছে মেকআপ শুধু নিজেকে সুন্দর দেখানোর মাধ্যম নয়। বরং ব্যক্তিত্ব বা নিজস্বতা প্রকাশের হাতিয়ার। বর্তমানে ‘গ্র্যাডিয়েন্ট লিপ’ বেশ জনপ্রিয়। ডার্ক শেডের লিপস্টিক বা লিপ টিন্ট দেওয়ার পর, ঠোঁট হালকা শেডের লিপলাইনার দিয়ে এঁকে নেওয়াকে গ্র্যাডিয়েন্ট লিপ ট্রেন্ড বলা হয়। এ ছাড়া গ্রাফিক আইলাইনার ট্রেন্ডও বেশ জনপ্রিয়। প্রজাপতি, ডলফিন, জ্যামিতিক প্যাটার্নের চোখে ডিজাইন করে। ব্লাশের প্রতি জেন-জিদের দুর্বলতা আছে। প্রাকৃতিক গোলাপি আভা ফুটিয়ে তুলতে ব্লাশ ব্যবহার করে যাকে ‘বয়ফ্রেন্ড ব্লাশ’ বলা হয়। এ ছাড়া ফো ফ্রেকলস ও ডাম্পলিং স্কিনের জনপ্রিয়তা অনেক। গহনা হিসেবে হালকা কানের দুল গলায় সিম্পল লকেটসহ চেইন বেশি পরতে দেখা যায়।

জেন-জিরা রেস্টুরেন্টপ্রেমী
এদের একটা বড় অংশই রেস্টুরেন্টপ্রেমী। ইন্ডিয়ান, জাপানিজ, ফ্রেঞ্চ, ইতালিয়ান, রাশিয়ান কিংবা আমেরিকান সব খাবার সম্পর্কে তারা জ্ঞান রাখে। নতুন খাবার টেস্ট করার প্রতি তাদের আগ্রহ ব্যাপক। তাদের হাত ধরেই ‘ফাস্ট ফুড’ কালচারের ঢালাও প্রচলন হয়েছে। রেস্টুরেন্টের পাশাপাশি ফুডকোর্ট কিংবা মিনি ফুডকোর্টের খাবার ও তাদের পছন্দ করে। এ ছাড়া সময় কাটানোর জন্য ‘রেস্টুরেন্ট’ বেশ জনপ্রিয়। 

তাদের নিজস্ব পছন্দ 
জেনারেশনেই প্রযুক্তিগত উন্নয়ন এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের প্রভাব অনেক বেশি। জেন-জির অধিকাংশই স্মার্টফোন ব্যবহার করে। যেহেতু এরা স্ট্রিমিং কন্টেন্ট এবং সোশ্যাল মিডিয়াতেই বড় হয়েছে। তাই তাদের আর্ট অ্যান্ড কালচারেও পরিবর্তন এসেছে। ওয়ার্ল্ড মিউজিক, থিয়েটার, মুভি ইত্যাদির সঙ্গে তাদের সম্পর্ক মজবুত। সিনেমা দেখার রুচিবোধেও পরির্বতন এসেছে। শুধু হলিউড কিংবা বলিউডই নয়; পাশাপাশি কোরিয়ান, জাপানিজ, চায়নিজ, নেপালি, মালায়ালামসহ আরও অন্যান্য ধারার সিনেমা দেখে। এ ছাড়া বর্তমান সময়ের বাংলা সিনেমা কিংবা আর্টফিল্মও তাদের কাছে বেশ জনপ্রিয়।

কলি

ইলিশের মজাদার রেসিপি

প্রকাশ: ১৩ জুলাই ২০২৪, ০২:৪৭ পিএম
আপডেট: ১৩ জুলাই ২০২৪, ০২:৪৭ পিএম
ইলিশের মজাদার রেসিপি

ইলিশ প্রায় সবারই পছন্দের মাছ। এই মাছ দিয়ে তৈরি করা যায় সুস্বাদু অনেক পদ। ইলিশের চেনা-অচেনা নানা স্বাদের রান্নার রেসিপি দিয়েছেন রন্ধনশিল্পী আনিসা আক্তার নূপুর

টক মিষ্টি আচারি ইলিশ 

উপকরণ
ইলিশ মাছ ১ কেজি, রসুন বাটা ১ চা চামচ, সরিষা বাটা ১ চা চামচ, আস্ত পাঁচফোড়ন ১ চা চামচ, ধনিয়া গুঁড়া আধা চা চামচ, শুকনো মরিচ বাটা ১ চা চামচ, হলুদ গুঁড়া ১ চা চামচ, সরিষার তেল আধা কাপ, তেঁতুলের কাথ ১ টেবিল চামচ, লবণ স্বাদমতো, পানি প্রয়োজনমতো, চিনি ১ চা চামচ।

প্রণালি
ইলিশ মাছের পিসগুলোর সঙ্গে হলুদ লবণ মেখে কড়াইয়ে তেল গরম করে মাছগুলো ভেজে নিন। ভাজা মাছগুলো তুলে রেখে ওই তেলের মধ্যে আস্ত পাঁচফোড়ন দিয়ে একে একে সব বাটা মসলাগুলো দিয়ে একটু পানি দিয়ে কষিয়ে নিন। তারপর দেড় কাপ পানি দিয়ে মাছের পিসগুলো দিয়ে উপরে তেঁতুলের কাথ দিয়ে ১০ মিনিট রান্না করুন। তারপর চিনি দিয়ে মাখা মাখা করে নামিয়ে পরিবেশন করুন।

দই ইলিশ

উপকরণ
ইলিশ মাছ ৬ পিস, মিষ্টি দই ৩ টেবিল চামচ, কাঠবাদাম বাটা ২ চা চামচ, পেঁয়াজ বাটা ২ টেবিল চামচ, রসুন বাটা ১ চা চামচ, কাঁচা মরিচ ৬-৭টি, চিনি ১ চা চামচ, ঘি ১ চা চামচ, তেল ২ টেবিল চামচ, লবণ স্বাদমতো, পানি পরিমাণমতো।

প্রণালি
কড়াইয়ে তেল গরম করে বাটা মসলাগুলো দিয়ে ভালো করে কষিয়ে নিন। কাঁচামরিচ দিয়ে একটু পানি দিয়ে আবার কষিয়ে নিন। তারপর মিষ্টি দই দিয়ে নেড়ে-চেড়ে মিশিয়ে ১ কাপ পানি দিয়ে মাছগুলো দিয়ে দিন। ঘি দিয়ে ঢেকে ২০ মিনিট রান্না করুন। চিনি দিয়ে মাখা মাখা করে নামিয়ে নিয়ে পরিবেশন করুন।

পোস্ত ইলিশ 

উপকরণ 
ইলিশ মাছ আট টুকরো, পেঁয়াজ বাটা ২ টেবিল চামচ, পোস্ত বাটা ১ চা চামচ, রসুন বাটা ১ চা চামচ, কাঁচা মরিচ বাটা ১ চা চামচ, হলুদ গুঁড়া ১ চা চামচ, মরিচ গুঁড়া ১ চা চামচ, লবণ স্বাদমতো, আস্ত কাঁচা মরিচ ৪-৫টি, ঘি ১ চা চামচ, সাদা তেল আধা কাপ, চিনি সামান্য, পানি পরিমাণমতো। 

প্রণালি
প্রথমে মাছের টুকরোগুলোর সঙ্গে হলুদ এবং লবণ মেখে কিছুক্ষণ রেখে দিন, তারপর কড়াইয়ে তেল গরম করে বাটা ও গুঁড়া মসলাগুলো একে একে দিয়ে ভালো করে কষিয়ে নিন। এক কাপ পানি দিয়ে মেখে রাখা মাছগুলো দিয়ে ঢেকে ১০ মিনিট রান্না করুন। তারপর কাঁচা মরিচ দিয়ে আরও ৫ মিনিট ঢেকে রাখুন। উপরে ঘি ছড়িয়ে নামিয়ে পরিবেশন করুন মজাদার পোস্ত ইলিশ।

 

সরিষা মাখানো ইলিশ

উপকরণ
ইলিশ ১ কেজি (পিস করা), পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, পেঁয়াজ বাটা ২ টেবিল চামচ, সরিষা বাটা ১ টেবিল চামচ, কাঁচা মরিচ বাটা ১ চা চামচ, হলুদ গুঁড়া ১ চা চামচ, মরিচ গুঁড়া ১ চা চামচ, লবণ স্বাদমতো, সরিষার তেল আধা কাপ, চিনি সামান্য, আস্ত কাঁচা মরিচ ৬টি, পানি আধা কাপ।

প্রণালি
প্রথমে ইলিশ মাছগুলোর সঙ্গে হলুদ ও লবণ মেখে ১০ মিনিট রেখে দিন। তারপর বাকি সব উপকরণ একত্রে মেখে উপরে সরিষার তেল দিয়ে এবং পানি দিয়ে ঢেকে ২০ মিনিট রান্না করুন। রান্নার সময় চুলার আঁচ লো মিডিয়াম রাখুন। তারপর মাখা মাখা হলে নামিয়ে পরিবেশন করুন মজাদার সরিষা মাখানো ইলিশ।

 কলি