![রাফায় অভিযানের সময় পেছাল](uploads/2024/04/17/1713321738.Israel.jpg)
ইরানের হামলার জেরে গাজার রাফায় অভিযান চালানোর সময়সীমা পিছিয়ে দিয়েছে ইসরায়েল। মূলত তেহরানের হামলার জবাব দেওয়া নিয়েই এখন চাপের মুখে আছেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। ইসরায়েলের বিশেষজ্ঞসহ উচ্চপদস্থ ব্যক্তিবর্গও হামলার পাল্টা জবাব দেওয়ার পক্ষেই মত দিয়েছেন।
সিএনএনের খবর বলছে, ২৪ ঘণ্টা পার হওয়ার আগেই গত সোমবার আবারও একত্রিত হয়েছিল ইসরায়েলি যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভা। ইরানের হামলার জবাব কীভাবে দেওয়া যায়, তা ঠিক করতেই বসেন দেশটির উচ্চপদস্থরা। এ সময় পাল্টা জবাব দেওয়ার বিষয়ে একমত হলেও কখন ও কীভাবে হামলা চালানো হবে তা নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে আসতে পারেনি ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ।
যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভা পাল্টা জবাব দেওয়াসংক্রান্ত বেশ কয়েকটি সামরিক পরিকল্পনা পর্যালোচনা করে দেখেছেন বলে জানিয়েছেন এক কর্মকর্তা। বৈঠকে শুধু সামরিক নয়, কূটনৈতিক বিকল্পও খতিয়ে দেখা হয়েছে। সামরিক আক্রমণের পাশাপাশি কূটনৈতিক প্রক্রিয়া অবলম্বন করা হতে পারে।
সিরিয়ার দামেস্কে ইরানি দূতাবাসে ইসরায়েলের চালানো হামলার জবাব দিতেই ইসরায়েলে আক্রমণ করে তেহরান। পাশাপাশি তারা সতর্ক করে দিয়েছে, ইসরায়েল আবারও কোনো পাল্টা আক্রমণ চালালে সেটিরও জবাব দেওয়া হবে। দেশটির রাজনীতিবিষয়ক উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী আলি বাঘেরি কানি বলেন, ইসরায়েল পাল্টা হামলা চালালে কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে জবাব দেবে তেহরান।
এদিকে, গাজার রাফায় ইসরায়েলি বাহিনীর পরিকল্পিত স্থল অভিযানের সময়সীমা পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন এক ইসরায়েলি সূত্র। হামাস ও ইসরায়েলের যুদ্ধবিরতি আলোচনাও হুমকির মুখে রয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি। প্রস্তাবিত যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে যে সংখ্যক জিম্মির মুক্তি চাইছিল ইসরায়েল, তা অর্ধেকেরও বেশি কমিয়ে দিয়েছে হামাস। এতে আবারও জটিলতার মুখে পড়েছে গোটা আলোচনা।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন গত সোমবার ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিনের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন। তাদের ফোনালাপের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গ্যালান্টকে আঞ্চলিক স্থিরতার কৌশলগত লক্ষ্যের বিষয়ে পুনরায় আশ্বস্ত করেছেন অস্টিন।
ইরানের হামলার পর কী করা যেতে পারে তা নিয়েও আলাপ হয়েছে অস্টিন ও গ্যালান্টের মধ্যে। ইসরায়েলের প্রতিরক্ষায় যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনের বিষয়টিও সে সময় উঠে এসেছে।
এদিকে, এসবের মধ্যে থেমে নেই গাজায় ইসরায়েলের তাণ্ডব। ইসরায়েলি বিমান হামলায় উত্তর গাজার জাবালিয়া শরণার্থী শিবিরে এক মসজিদ ও কয়েকটি বাড়িঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। এতে নারী ও শিশুরা আহত হয়েছেন।
এ ছাড়া গাজা সিটির আল-শিফা হাসপাতালের গণকবর থেকে আরও দশটি মরদেহ উদ্ধার হয়েছে। অন্যদিকে, গাজা উপত্যকার উত্তরে বেইত হানুন নামের এলাকার এক স্কুলে শত শত মানুষ আশ্রয় নিয়েছিল। সেখানে ইসরায়েল সামরিক যান অবস্থান নিয়েছে। স্কুলটিকে ঘিরে রেখেছে তারা।
পশ্চিম তীরেও নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়েছে ইসরায়েলি দখলদাররা। সেখানে আরও ইসরায়েলি সেনা নিয়োজিত করা হয়েছে। ওই এলাকা থেকে অন্তত ১২ জন তরুণ ফিলিস্তিনিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গাজায় ইসরায়েলি হামলায় এ পর্যন্ত মোট ৩৩ গাজার ৭৯৭ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ৭৬ হাজার ৪৬৫ জন। অন্যদিকে হামাসের হামলায় গাজায় প্রাণ হারিয়েছিল ১ হাজার ১৩৯ জন। সূত্র: আল-জাজিরা, সিএনএন