![হামলা চালাতে অনড় ইসরায়েল](uploads/2024/04/18/1713421293.imran.jpg)
ইরানের হামলার জবাব যাতে ইসরায়েল না দেয়- সে আহ্বান জানাতে বুধবার (১৭ এপ্রিল) দেশটিতে সফর করেছেন ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন। তবে তার সে উদ্দেশ্য সফল হয়নি। ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ক্যামেরনকে বলেছেন, ইসরায়েল নিজের সিদ্ধান্ত নিজে নেয় এবং তার সরকার দেশের প্রতিরক্ষায় যা যা করা প্রয়োজন সব করবে।
অন্যদিকে ক্যামেরন নেতানিয়াহুকে বলেন, ইসরায়েলের যেকোনো প্রতিক্রিয়া বুদ্ধিদীপ্ত ও সংক্ষিপ্ত হওয়া উচিত। পরে ক্যামেরন সাংবাদিকদের বলেন, ‘ইসরায়েলিরা যে কিছু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তা স্পষ্ট। আমরা আশা করছি যে, তারা এটি এমনভাবে করবে যাতে সংঘাত যতটা সম্ভব অল্প বাড়ে।’
জেরুজালেম পোস্টের এক প্রতিবেদন বলছে, ইসরায়েলি ডিফেন্স ফোর্সেস (আইডিএফ) ইরানের জবাব কীভাবে দেওয়া হবে, তা ঠিক করেছে। তবে কবে বা কখন দেওয়া হবে, সেসব বিষয় এখনো নির্ধারিত হয়নি।
বিশ্বনেতারা মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ুক তা চান না। তারা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন, এটিকে শুরুতেই ঠেকানোর। গত শনিবার ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে ইরান হামলা চালানোর পর অনেক হিসাব-নিকাষই পাল্টে গেছে। গাজার যুদ্ধের ছয় মাসের মাথায় ইসরায়েল-ইরান উত্তেজনা চরম মাত্রায় রূপ নিয়েছে। মূলত সিরিয়ার দামেস্কে ইরানি দূতাবাসকে লক্ষ্য করে চালানো হামলার জবাব দিতেই ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে ওই ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালিয়েছিল তেহরান। এখন ইসরায়েল পাল্টা কোনো জবাব না দিলে গোটা বিষয়টির অবসান ঘটবে এখানেই। ইরানের পক্ষ থেকেও সেরকমই আভাস দিয়ে রাখা হয়েছে।
ইসরায়েলকে সন্তুষ্ট করতে এবং সংঘাত আর যাতে না বাড়ে, সে লক্ষ্যে ইরানের ওপর নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপের সিদ্ধান্তও নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও তার ইউরোপীয় মিত্ররা। তবে এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানা যায়নি।
এদিকে, ইসরায়েলের সামান্যতম আক্রমণেরও ‘ব্যাপক ও কঠোর’ জবাব দেওয়া হবে বলে আবারও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি। এতে করে মধ্যপ্রাচ্যে পূর্ণ মাত্রার যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছে। গতকাল বুধবার ইরানের সামরিক বাহিনীর বার্ষিক কুচকাওয়াজে বক্তব্য রাখার সময় ওই মন্তব্য করেন প্রেসিডেন্ট রাইসি।
এদিকে, পুরো বিষয়টির মধ্য দিয়ে সত্যি হতে শুরু করেছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের শঙ্কা। গত বছরের অক্টোবরে ইসরায়েল-হামাস সংঘাতের শুরু থেকেই বাইডেন বারবার মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিরতা বড় পরিসরে ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করে এসেছেন। গাজার যুদ্ধ নিয়ে আগে থেকেই তিনি চাপের মধ্যে ছিলেন। ইসরায়েল-ইরান উত্তেজনায় সে চাপ আরও বেড়েছে বলে উল্লেখ করেছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি। দুই সপ্তাহ আগেও যুক্তরাষ্ট্র-ইসরায়েল সম্পর্কে চলছিল টানাপোড়েন। গাজায় যথেষ্ট ত্রাণ ও সহায়তা প্রবেশ না করা, সহায়তাকর্মীদের মৃত্যু- এসব বিষয় নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বাইডেন। তবে নতুন বাস্তবতায় যুক্তরাষ্ট্র আরও একবার গিয়ে দাঁড়িয়েছে ইসরায়েলের পাশে। পাল্টা জবাবে ইসরায়েলকে তারা সহযোগিতা করবে না বলে জানিয়েছে, কিন্তু প্রতিরক্ষায় তারা মিত্রের পাশে আছে বলে জানিয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ ঘটনা যুক্তরাষ্ট্রকে আরও একবার নিয়ে এসেছে ইসরায়েলি বলয়ে। সূত্র: আল-জাজিরা, বিবিসি, রয়টার্স