লোকসভা নির্বাচন / ভোটের লড়াইয়ে তারকারা । খবরের কাগজ
ঢাকা ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, সোমবার, ২০ মে ২০২৪

লোকসভা নির্বাচন ভোটের লড়াইয়ে তারকারা

প্রকাশ: ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ১২:৫০ পিএম
ভোটের লড়াইয়ে তারকারা

রাজনীতির সঙ্গে রুপালি জগতের রয়েছে এক অবিচ্ছেদ্য সম্পর্ক। অতীত কাল থেকেই চলে আসছে রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের সঙ্গে তারকাদের ওঠাবসা। তারকাদের ‘ফেসভেল্যু’কে পুঁজি করে ক্ষমতার মঞ্চে এগিয়ে যাওয়ার রাজনীতিটা নতুন নয়। তাই তো নেতাদের জন্য প্রচারে নামার পাশাপাশি তারকারা নিজেও এমপি আসন লাভের ইঁদুর-দৌড়ে শামিল হয়েছেন। আর এরই ধারাবাহিকতায় এবার ২০২৪-এ ভারতের লোকসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নেমেছেন রুপালি পর্দার একঝাঁক তারকা। 

শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) ভারতের ১৮তম লোকসভা নির্বাচনে ভোট গ্রহণ শুরু হচ্ছে। মোট ৭ দফায় দেশটির ৫৪৩টি লোকসভা আসনের জন্য ভোট গ্রহণ চলবে প্রায় দেড় মাসব্যাপী। শেষ দফার ভোট ১ জুন। ভোট গণনা হবে ৪ জুন। আর এই নির্বাচনে জমকালো রূপ নিয়ে এসেছেন বলিউড-টলিউডের বেশ কয়েকজন তারকাশিল্পী। এসব তারকার মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকজন হলেন- কঙ্গনা রানাওয়াত, হেমা মালিনী, রবি কিষাণ, রচনা ব্যানার্জি, শত্রুঘ্ন সিনহা, শতাব্দী রায়, দেব, লকেট চট্টোপাধ্যায়সহ আরও অনেকে। 

কঙ্গনা রানাওয়াত
এবারের নির্বাচনে প্রার্থী তালিকায় সবচেয়ে আলোচিত নাম বলিউডের ‘কুইন’খ্যাত কঙ্গনা রানাওয়াত। হিমাচল প্রদেশের মান্ডি আসনে বিজেপির টিকিটে লড়ছেন তিনি। গেরুয়া শিবিরের হাত ধরেই নির্বাচনি শিবিরে হাতেখড়ি হতে চলেছে কঙ্গনার। 
ভারতের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত এই অভিনেত্রী যে এবার লোকসভা নির্বাচনের প্রার্থী হতে পারেন, সে বিষয়ে বেশকিছু দিন ধরেই জল্পনা চলছিল। বিভিন্ন সময় কেন্দ্রীয় সরকারের হয়ে তাকে কথা বলতে দেখা গেছে। গত জানুয়ারি মাসে রাম মন্দির উদ্বোধনের আগে মন্দির পরিষ্কারে তার ঝাড়ু দেওয়ার দৃশ্য নজর কেড়েছিল সবার। চলচ্চিত্র জগতের এই জনপ্রিয় অভিনেত্রী সক্রিয় রাজনীতিতে এই প্রথম পা রাখলেও, তার পরিবারের সঙ্গে রাজনৈতিক মহলের যোগাযোগ নতুন নয়। তার প্রপিতামহ সরযু সিং রানাওয়াত হিমাচল প্রদেশের গোপালপুরে কংগ্রেসদলীয় বিধায়ক ছিলেন।

হেমা মালিনী
প্রার্থী হিসেবে এর আগেও বলিউডের ‘ড্রিম গার্ল’ হেমা মালিনীকে বেছে নিয়েছিল বিজেপি। উত্তরপ্রদেশের মথুরা আসনের জন্য এবারও বিজেপির টিকিটে লড়ছেন হেমা মালিনী। গত কয়েক বছর ধরেই বিজেপির হয়ে প্রত্যক্ষ রাজনীতিতে অংশ নিতে দেখা গেছে এ অভিনেত্রীকে। এ নিয়ে তৃতীয়বারের মতো তিনি লোকসভার নির্বাচনে প্রার্থী হচ্ছেন। নিজের ক্যারিশমা এবং দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে এবারও নির্বাচনে জয় পাবেন বলে আশা হেমা মালিনীর। 

রবি কিষাণ
বিজেপির টিকিটে উত্তরপ্রদেশের গোরখপুর আসনের জন্য লড়াই করছেন ভোজপুরী ছবির নায়ক রবি কিষাণ। অবশ্য বলিউডেও ভিলেন হিসেবে তাকে একাধিক সিনেমায় দেখেছেন দর্শকরা। ২০১৯ সালের নির্বাচনেও গোরখপুর আসন থেকে জয় পেয়ে সাংসদ নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি। 

অরুণ গোভিল
এবারের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির প্রার্থী তালিকায় তারকাদের মাঝে আরেক চমক হলেন অরুণ গোভিল। ছোট পর্দার এই জনপ্রিয় অভিনেতা উত্তর প্রদেশের মিরাট আসনের জন্য লড়ছেন। ভারতীয় টেলিভিশনে ‘রামায়ণ’-এর ওপর আধারিত ধারাবাহিকে রামচন্দ্রের ভূমিকায় অভিনয় করে বিখ্যাত হওয়া এই তারকা একাধিক হিন্দি ছবিতেও সফলতার সঙ্গে অভিনয় করেছেন। 

শত্রুঘ্ন সিনহা
পশ্চিমবঙ্গের ক্ষমতাসীন দল তৃণমূল কংগ্রেসের টিকিটে আসানসোল আসনে লড়বেন শত্রুঘ্ন সিনহা। এর আগে ২০২২ সালের উপনির্বাচনে ওই আসনেই তৃণমূলের হয়ে লড়াই করে জয়লাভ করেছিলেন এই বলিউড অভিনেতা। তারও আগে বিজেপির সাংসদ ছিলেন সিনেমায় ‘খামোশ’ বলে ধমক দেওয়া এই বর্ষীয়ান অভিনেতা। অটল বিহারী বাজপেয়ীর মন্ত্রিসভায় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেছিলেন বলিউড অভিনেত্রী সোনাক্ষী সিনহার বাবা শত্রুঘ্ন সিনহা। 

এ ছাড়াও উত্তর প্রদেশের আজমগড় থেকে লড়ছেন প্রখ্যাত ভোজপুরি অভিনেতা দীনেশ লাল যাদব। কেরালার ত্রিশুর আসনে মালায়লাম অভিনেতা, টিভি প্রেজেন্টার সুরেশ গোপীকে প্রার্থী করেছে বিজেপি। এর আগে ২০২১ সালের রাজ্য বিধানসভা নির্বাচনে ত্রিশুর আসনের জন্য লড়ে জয়ের মুখ দেখেছিলেন তিনি। কেরালার কোল্লাম আসনে সিপিআইএম-এর প্রার্থী হয়েছেন দক্ষিণের আরেক জনপ্রিয় অভিনেতা এম মুকেশ। এই আসনে বিজেপি প্রার্থী করেছে অভিনেতা জি কৃষ্ণকুমারকে। তামিলনাড়ুর বিরুধুনগর থেকে বিজেপির টিকিটে লড়ছেন দক্ষিণ ভারতের জনপ্রিয় তামিল ও তেলেগু অভিনেত্রী রাধিকা শরৎ কুমার। এই আসনেই নিজের রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শুরু করতে চলেছেন রাধিকা। 

নর্থ-ইস্ট দিল্লি আসন থেকে এবারও ভোজপুরি অভিনেতা ও গায়ক মনোজ তিওয়ারিকে প্রার্থী করেছে বিজেপি। ২০১৪ সালে প্রথমবার এই আসনে তিন লাখের বেশি ভোটে জয়লাভ করেছিলেন তিনি। ২০১৯ সালেও এই আসন নিজের দখলে ধরে রাখেন এই ভোজপুরি সুপারস্টার। মহারাষ্ট্রের অমরাবতী আসনে তেলেগু অভিনেত্রী ও রাজনীতিবিদ নবনীত কউর রানাকে প্রার্থী করেছে বিজেপি। ২০১৯ সালে এই আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি। এর আগে ২০১৪ সালে কংগ্রেসের টিকিটে নির্বাচনে লড়লেও জিততে পারেননি তিনি। গত ২৮ মার্চ বিজেপিতে যোগদান করেন নবনীত। 

বলিউড ছাড়া ভারতের রাজনীতিতে টালিউড অর্থাৎ পশ্চিমবঙ্গের বাঙালি তারকাদের পদচারণ সব সময়ই একটু বেশি। সংরক্ষিত আসন ছাড়াও রীতিমতো ভোটে জয়ী হয়েও এমপি হয়েছেন অনেক অভিনয়শিল্পী। আর তাই তো পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্বাচনি শিবিরে তারকাদের আনাগোনা লেগেই থাকে। প্রার্থী তালিকায় তৃণমূল কংগ্রেস এরই মধ্যে ৪২ আসনে প্রার্থী ঘোষণা করেছে। এর মধ্যে এসেছে জনপ্রিয় ৫ তারকার নাম। 

রচনা ব্যানার্জি
এবার তৃণমূল কংগ্রেসের হয়ে রাজনীতির মঞ্চে চমক নিয়ে হাজির হয়েছেন টলিউডের একসময়ের জনপ্রিয় অভিনেত্রী এবং বর্তমানে টেলিভিশন চ্যানেলে রিয়েলিটি শো ‘দিদি নম্বর ওয়ান’ উপস্থাপনা করেন আলোচিত রচনা ব্যানার্জি। বলা হচ্ছে, জনপ্রিয় এই অভিনেত্রীকে দলের প্রার্থী করে পশ্চিমবঙ্গের ভোটারদের মন অর্ধেক জয় করে ফেলেছেন মমতা। হুগলি থেকে এবার প্রথমবার নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন রচনা। 

লকেট চট্টোপাধ্যায়
হুগলিতে অভিনেত্রী রচনা ব্যানার্জির বিপক্ষে প্রার্থী হিসেবে এবার লড়ছেন বিজেপির প্রার্থী লকেট চট্টোপাধ্যায়। ২০১৯ সালের নির্বাচনে এই আসনে জিতে প্রথমবার সংসদ সদস্য হন অভিনেত্রী লকেট। 

শতাব্দী রায়
বীরভূম থেকে তৃণমূলের টিকিটে এবারের লোকসভা নির্বাচনে লড়ছেন টলিউড জনপ্রিয় অভিনেত্রী শতাব্দী রায়। ২০০৯ সাল থেকে পরপর তিনবার এই আসনের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন তিনি। এবারও ওই আসনে তার ওপরেই ভরসা রেখেছে দল। 

দেব
তৃণমূলের টিকিটেই ঘাটাল আসনের জন্য লড়বেন টলিউড তারকা দীপক অধিকারী (দেব)। ২০১৪ সাল থেকে এই আসনের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে আসছেন দেব। অন্যদিকে বিজেপির হয়ে একই আসনে লড়ছেন অভিনেত্রী হিরণ চট্টোপাধ্যায়। বর্তমানে তিনি পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিধানসভার খড়গপুর সদর আসনের বিধায়ক। এবার সেই হিরণকে লোকসভায় টিকিট দিয়েছে গেরুয়া শিবির। 

সায়নী ঘোষ
যাদবপুর আসনের জন্য তৃণমূলের টিকিট লড়ছেন অভিনেত্রী সায়নী ঘোষ। টলিউডের আরেক অভিনেত্রী মিমির জায়গায় টিকিট পেয়েছেন ছোট পর্দার জনপ্রিয় শিল্পী সায়নী। ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে আসানসোল দক্ষিণ আসনে তাকে প্রার্থী করেছিল তৃণমূল, তবে হেরে যান বিজেপির অগ্নিমিত্রা পালের কাছে। তৃণমূলের একাংশ মনে করছে, লড়াই করার ক্ষমতার কারণেই আবার সায়নীর ওপর ভরসা রেখেছে দল।

এ ছাড়া সদ্য পদত্যাগী পুলিশকর্তা প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় ছোট পর্দার পরিচিত মুখ। তিনি তৃণমূলের টিকিটে লড়ছেন মালদা উত্তর আসনে। মেদিনীপুর আসনে অভিনেত্রী জুন মালিয়াকে প্রার্থী করেছে তৃণমূল। এর আগে রাজ্য বিধানসভার নির্বাচনে মেদিনীপুর আসনে তৃণমূলের টিকিটে জয় পেয়ে বিধায়ক নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি। আর রুপালি পর্দার অভিনেতা-অভিনেত্রী ছাড়াও ক্রীড়াঙ্গনের তারকা কীর্তি আজাদ বর্ধমানের দুর্গাপুর আসনে এবং বহররমপুর আসনে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী হয়েছেন ক্রিকেটার ইউসুফ পাঠান। 

লোকসভা নির্বাচন আজ ভাগ্য পরীক্ষা রাহুল, রাজনাথ, স্মৃতি, রচনা, লকেটের

প্রকাশ: ২০ মে ২০২৪, ১২:৪৬ পিএম
আজ ভাগ্য পরীক্ষা রাহুল, রাজনাথ, স্মৃতি, রচনা, লকেটের
প্রতীকী ছবি

ভারতে লোকসভা নির্বাচনের পঞ্চম দফার ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে আজ সোমবার (২০ মে)। ছয়টি রাজ্য এবং দুটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের ৪৯টি আসনে হবে এই পর্বের ভোট গ্রহণ। এর মধ্যে উত্তর প্রদেশ রাজ্যে ৮০টি লোকসভা আসনের মধ্যে ১৪টিতে, মহারাষ্ট্রের ৪৮টি আসনের মধ্যে ১৩টি, পশ্চিমবঙ্গের ৪২টির মধ্যে ৭টি, বিহারের ৪০টির মধ্যে ৫টি, ওড়িশায় ২১টির মধ্যে ৫টি, ঝাড়খন্ডের ১৪টির মধ্যে ৩টিতে ভোট হবে আজ।

পশ্চিমবঙ্গের আরামবাগ, বনগাঁ, ব্যারাকপুর, হাওড়া, উলুবেড়িয়া, শ্রীরামপুর ও হুগলিতেও ভোট হবে এই পর্বে।

কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল জম্মু ও কাশ্মীরের পাঁচটি লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে একটি এবং লাদাখের একমাত্র আসনটিতেও আজ ভোট গ্রহণ হবে পঞ্চম দফায়। 

এদিন ভাগ্য নির্ধারণ হবে ভারতের প্রধান বিরোধী দল ভারতীয় কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী, বিজেপি নেতা প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং ও নারী ও শিশু উন্নয়নমন্ত্রী স্মৃতি ইরানির। এই নেতাদের মধ্যে ভাগ্য পরীক্ষার মুখে থাকা সবচেয়ে বড় নাম রাহুল গান্ধী। কংগ্রেসের সাবেক সভাপতি রাহুল গান্ধীর প্রতিদ্বন্দ্বী যোগী আদিত্যনাথ সরকারের প্রাদেশিক মন্ত্রী দীনেশপ্রতাপ সিংহ। উত্তর প্রদেশের রায়বেরেলি থেকে এবার প্রার্থী হয়েছেন রাহুল। অন্য প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রাজনাথ সিংহ (লক্ষ্ণৌ), স্মৃতি ইরানি (আমেথি) এবং পীযূষ গয়াল (মুম্বাই উত্তর)।

অন্যদিকে বাংলাদেশ সীমান্তঘেঁষা পশ্চিমবঙ্গের বনগাঁ আসনে কেন্দ্রীয় জাহাজমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর, হুগলিতে দুই অভিনেত্রী রচনা ব্যানার্জি ও লকেট চট্টোপাধ্যায়ের ভাগ্য নির্ধারণ করবেন ভোটাররা।

লোকসভার সাত দফার ভোট পর্ব শুরু হয় গত ১৯ এপ্রিল। ২৮ রাজ্য ও ৮ কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলেরে ৯৭ কোটি ভোটারের কাছ থেকে সুষ্ঠু ভোট নিতে নির্বাচন কমিশন সাত দফায় ভোটের আয়োজন করেছে। লোকসভার চতুর্থ পর্বের ভোট হয় গত ১৩ মে। লোকসভার ৫৪৩ আসনের মধ্যে চার দফায় ভোট নেওয়া হয়েছে ৩৭৯ আসনে। বাকি ১৬৪ আসনের মধ্যে আজ ৪৯ আসনের ভোট শেষ হলে বাকি থাকবে ১১৫টি আসন, যা পরবর্তী দুই দফায় সম্পন্ন হবে।

পরীক্ষায় রাহুল, মোদির নতুন চ্যালেঞ্জ কেজরিওয়াল
আজ ভাগ্য নির্ধারণ হবে ভারতের প্রধান বিরোধী দল ভারতীয় কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী, বিজেপির কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রাজনাথ সিং ও স্মৃতি ইরানির। এই নেতাদের মধ্যে ভাগ্য পরীক্ষার মুখে থাকা সবচেয়ে বড় নাম রাহুল গান্ধী।

রাহুলের মা সোনিয়া গান্ধী ছেলের নামে ভোটারদের কাছে ভোট দেওয়ার আকুল আবেদন জানিয়েছেন। ভোটারদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আমি আমার ছেলেকে আপনাদের হাতে তুলে দিচ্ছি। আপনারা যেভাবে আমাকে আপনাদের করে নিয়েছেন, তেমনি দয়া করে তাকেও আপনাদের একজন করে নিন। সে আপনাদের হতাশ করবে না।’ 

এই দফার ভোটে মোদির জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। তিহাড় জেল থেকে বেরিয়েই শনিবার পুরোদস্তুর ভোটের প্রচারে নেমে পড়ে তিনি নতুন চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করেছেন।

অন্তর্বর্তীকালীন জামিনে জেল থেকে বেরোনোর পর জনতার দরবারে হাজির হন কেজরিওয়াল। তাকে স্বাগত জানাতে উপচে পড়েছিল আম আদমি পার্টির (আপ) কর্মী-সমর্থকদের ভিড়। সবার মাঝে দাঁড়িয়ে তিনি বলেন, ‘আমি আপনাদের মন থেকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। কোটি কোটি মানুষের ভালোবাসা পেয়েছি। আপনাদের কাছে আমার একটাই আবেদন, আমাদের সবাইকে একজোট হয়ে দেশেকে বাঁচাতে হবে। দেশকে একনায়কতন্ত্র থেকে বাঁচাতে হবে। আমি সর্বশক্তি দিয়ে এই একনায়কতন্ত্রের বিরুদ্ধে লড়ছি।’

এক বছর আগেও যা অভাবনীয় ছিল, তাই করে দেখিয়েছেন কেজরিওয়াল। একসময় একে অপরের শত্রু হিসেবে বিবেচিত হলেও কংগ্রেস প্রার্থীদের সঙ্গে নিয়ে দিল্লিতে তিনি রোড শো করছেন।

কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন বিজেপিবিরোধী ‘ইন্ডিয়া’ জোটের শরিক কেজরিওয়ালের দল আম আদমি পার্টি। বিশ্লেষকরা বলছেন, তার প্রচার বিরোধী দলকে চাঙা করবে। যদিও তাতে মোদির ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) বিরুদ্ধে তারা বড় কোনো জয় হাসিল করতে পারবে কি না, সে বিষয়ে সংশয় আছে।

কেজরিওয়ালের আম আদমি পার্টি রাজধানী দিল্লি এবং উত্তরের রাজ্য পাঞ্জাবের ক্ষমতায় আছে। দুইয়ে মিলে লোকসভায় ৫৪৩ আসনের মধ্যে তাদের আসনসংখ্যা মাত্র ২০।

এ ক্ষেত্রে কেজরিওয়াল হয়তো সহমর্মিতাকে কাজে লাগিয়ে কিছু ভোট আদায় করতে পারেন। কিন্তু তা ভোটের ফল উল্টে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট হবে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন আছে বলেই মনে করেন ভারতের রাজনীতি বিশ্লেষক রাহুল বর্মা। তবে তারপরও কেজরিওয়াল বিজেপিকে বিব্রত করতে সক্ষম। জেল থেকে বেরোনোর পর জোর প্রচারে নেমে তিনি সরাসরি বিজেপি ও প্রধানমন্ত্রী মোদিকে আক্রমণ করে তার এই সক্ষমতা দেখিয়ে দিয়েছেন।

দুর্নীতির মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কেজরিওয়াল কারাগারে থাকার সময় কংগ্রেসের নেতৃত্বে ইন্ডিয়া জোটের নেতারা দিল্লিতে বিশাল প্রতিবাদ সভা করেছেন। আর এখন কেজরিওয়াল কংগ্রেসের প্রার্থীদের জন্য প্রচার চালাচ্ছেন। এক হাতে কংগ্রেস, অন্য হাতে আম আদমি পার্টির প্রতীক নিয়ে তিনি হরিয়ানায় রোড শো করেছেন। আর কেবল দিল্লি বা হরিয়ানাই নয়, ইতোমধ্যে তিনি উত্তর প্রদেশ ও পাঞ্জাবেও প্রচার চালিয়েছেন।

আম আদমি পার্টির নেতারা জানিয়েছেন, ঝাড়খন্ড, মহারাষ্ট্র ও বিহার থেকেও ইন্ডিয়া জোটের নেতারা কেজরিওয়ালকে প্রচারে অংশ নেওয়ার অনুরোধ করেছেন। সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া, হিন্দুস্তান টাইমস

হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় ইরানের প্রেসিডেন্টসহ সব আরোহী নিহত

প্রকাশ: ২০ মে ২০২৪, ১০:৩০ এএম
হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় ইরানের প্রেসিডেন্টসহ সব আরোহী নিহত
ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি ও বিধ্বস্ত হেলিকপ্টার। ছবি: সংগৃহীত

হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি, দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রীসহ সব আরোহী নিহত হয়েছেন।

সোমবার (২০ মে) ইরানের আধাসরকারি বার্তা সংস্থা মেহর নিউজ অ্যাজেন্সি ও আল-জাজিরার প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

মেহর নিউজ বলছে, প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির-আব্দুল্লাহিয়ানসহ সব যাত্রী ‘শহিদ’ হয়েছেন।

আল-জাজিরা জানায়, ইরানি কর্তৃপক্ষ বলছে, কিছু মরদেহ এমনভাবে পুড়েছে যে, শনাক্ত করা সম্ভব হচ্ছে না।

হেলিকপ্টারটিতে ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি, দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির-আব্দুল্লাহিয়ান, পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের গভর্নর মালেক রহমাতি এবং একই প্রদেশের ইরানের সর্বোচ্চ নেতা মোহাম্মদ আলী আলে-হাশেমের প্রতিনিধি, প্রেসিডেন্ট গার্ডের প্রধান মেহেদি মুসাভি, হেলিকপ্টারের পাইলট, কো-পাইলট ও ক্রু ছিলেন।

রাইসি এবং তার সঙ্গীরা আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভের একটি অনুষ্ঠানে যোগদান শেষে ফিরে আসার সময় দুর্ঘটনাটি ঘটে।

এর আগে সকালে দুর্ঘটনাস্থলের ছবি দিয়েছে রয়টার্স। তাতে দেখা যাচ্ছে, কুয়াশাঘেরা পাহাড়ের বুকে হেলিকপ্টারটি ভেঙে পড়েছে। এটি আগুনে পুড়ে গেছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে হেলিকপ্টারটির কেবিন। 

৬৩ বছর বয়সী রাইসি ২০২১ সালে ইরানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছিলেন।

ইরানের প্রেসিডেন্ট ও তার সঙ্গীদের বহনকারী হেলিকপ্টারটি গতকাল রবিবার পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের ভারজাকান ও জোলফা শহরের মাঝামাঝি ডিজমার জঙ্গলে বিধ্বস্ত হয়। এমন সময় এ দুর্ঘটনা ঘটল, যখন গাজা যুদ্ধ নিয়ে ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ইরানের যুদ্ধাবস্থা বিরাজ করছে।

> ইরানের প্রেসিডেন্টের বেঁচে থাকার সম্ভাবনা নেই!
> ইরানের প্রেসিডেন্টকে বহনকারী হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত

অমিয়/

ইরানের প্রেসিডেন্টের বেঁচে থাকার সম্ভাবনা নেই!

প্রকাশ: ২০ মে ২০২৪, ১০:০২ এএম
ইরানের প্রেসিডেন্টের বেঁচে থাকার সম্ভাবনা নেই!
ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রইসি ও বিধ্বস্ত হেলিকপ্টার। ছবি: সংগৃহীত

ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টারের সন্ধান পাওয়া গেছে। তবে সেখানে ‘জীবিত কাউকে এখনও দেখা যায়নি’ বলে জানাচ্ছে ইরানের সংবাদমাধ্যম। ফলে ইরানের প্রেসিডেন্টের বেঁচে থাকার আশা আরও ক্ষীণ হয়ে গেছে।

সোমবার (২০ মে) সংবাদ সংস্থা রয়টার্স জানায়, প্রেসিডেন্ট রাইসি যে হেলিকপ্টারে ছিলেন সেটি পাওয়া গেছে। 

দুর্ঘটনাস্থলের ছবিও দিয়েছে রয়টার্স। তাতে দেখা যাচ্ছে, কুয়াশাঘেরা পাহাড়ের বুকে হেলিকপ্টারটি ভেঙে পড়েছে। এটি আগুনে পুড়ে গেছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে হেলিকপ্টারটির কেবিন। হেঁটে দুর্ঘটনাস্থলে যাচ্ছেন উদ্ধারকারীরা।

হেলিকপ্টারটিতে ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি ছাড়াও দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আব্দুল্লাহিয়ান, পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের গভর্নর মালেক রহমতি এবং ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লা আলি খামেনির মুখপাত্র আয়াতুল্লাহ মোহাম্মদ আলী আলে-হাশেম ছিলেন বলে জানা গেছে।

অমিয়/

কাশ্মীরে হামলায় বিজেপি নেতা নিহত, আহত পর্যটক দম্পতি

প্রকাশ: ২০ মে ২০২৪, ০৮:৫৪ এএম
কাশ্মীরে হামলায় বিজেপি নেতা নিহত, আহত পর্যটক দম্পতি
নিহত বিজেপি নেতা আইজাজ আহমাদ শেখ

ভারতের জম্মু ও কাশ্মীর অঞ্চলে পৃথক দুটি জঙ্গি হামলায় এক বিজেপি নেতা নিহত ও রাজস্থানের জয়পুর থেকে ঘুরতে যাওয়া এক দম্পতি আহত হয়েছেন।

ভারতের লোকসভা নির্বাচনে স্থানীয় এক আসনে ভোটগ্রহণের দুই দিন আগে গত শনিবার এসব হামলার ঘটনা ঘটেছে।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, শনিবার (১৮ মে) রাতে প্রথমে পহেলগাঁওয়ে একটি পর্যটক ক্য়াম্পে হামলা চালায় জঙ্গিরা। হামলায় গুরুতর আহত হন জয়পুর থেকে বেড়াতে যাওয়া তাবরেজ এবং তার স্ত্রী ফারহা। এরপর রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ দ্বিতীয় হামলাটি হয় সোপিয়ানে বিজেপি নেতার বাড়িতে। 

জঙ্গিদের গুলিতে গুরুতর আহত অবস্থায় প্রথমে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই মৃত্যু হয় আইজাজ আহমাদ শেখ নামে ওই বিজেপি নেতার।

ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন রাজ্যের সাবেক দুই মুখ্যমন্ত্রী ফারুক আবদুল্লাহ ও মেহবুবা মুফতি। দলীয় নেতার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছে বিজেপি।

ভারতে ছয় সপ্তাহব্যাপী সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সাত পর্বের এ নির্বাচনে চার পর্বের ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে, আরও তিন পর্ব বাকি আছে। আজ পঞ্চম দফার ভোট অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ৪ জুন ভোট গণনার পর ফলাফল প্রকাশ করা হবে। সূত্র: রয়টার্সের

গৃহযুদ্ধের ১৫ বছর পূর্তিতে তামিলদের স্মরণসভা

প্রকাশ: ২০ মে ২০২৪, ০৮:৪৫ এএম
গৃহযুদ্ধের ১৫ বছর পূর্তিতে তামিলদের স্মরণসভা
ছবি : সংগৃহীত

শ্রীলঙ্কার সংখ্যালঘু তামিল সম্প্রদায় একটি আবেগঘন স্মরণসভার মাধ্যমে গৃহযুদ্ধ সমাপ্তির ১৫ বছর পূর্তি উদযাপন করেছে। দেশটির কর্তৃপক্ষের স্মরণসভা বানচালের আশঙ্কা থাকা সত্ত্বেও সফলভাবে আয়োজন সম্পন্ন করেছে তারা।

বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী তামিল টাইগার্সকে উদ্দেশ করে এই সভার আয়োজন করা হয়েছে যারা একটি সংখ্যালঘু-অধ্যুষিত স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য সর্বাত্মক যুদ্ধ করেছিল। কর্তৃপক্ষ এই ধরনের সভাগুলো অবৈধ হিসেবে গণ্য করে বিধায় তারা এদিন পুরোনো স্মৃতিসৌধগুলো বন্ধ করে দিয়েছিল।

সাবেক যুদ্ধ অঞ্চলগুলো এই ধরনের স্মরণসভাগুলো অনেক বছর ধরে ধারাবাহিকভাবে পণ্ড এবং অংশগ্রহণকারীদের ধরপাকড় করে আসছিল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু কড়া নজরদারি এবং ব্যাপক ভয়ভীতি প্রদর্শন সত্ত্বেও শনিবার সভার আয়োজন করা হয়।

তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে চলা যুদ্ধে ভুক্তভোগীদের স্মরণ করতে এই আয়োজন করা হয় বলে জানায় তামিলরা। 

টাইগার্সদের সর্বশেষ দুর্গে সামরিক হামলার মাধ্যমে ২০০৯ সালে এই রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পরিসমাপ্তি ঘটে। 

জাতিসংঘের ধারণামতে, যুদ্ধের শেষ মাসে কমপক্ষে ৪০ হাজার বেসামরিক লোকের প্রাণহানি ঘটে। বেসামরিক লোকদের ওপর নির্বিচারে বোমা হামলার জন্য এই সামরিক অপারেশনটি আন্তর্জাতিকভাবে নিন্দিত হয়েছিল।

পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে ৪১ বছর বয়সী এক তামিল কর্মকর্তা এএফপিকে বলেন, ‘যুদ্ধ শেষ হওয়ার আগের দিন এখানে হাজার হাজার মানুষ মারা যায়, এখানে অসংখ্য আহত মানুষ সাহায্যের জন্য কাঁদছিল, দৃশ্যটি আমাকে সারা জীবন তাড়িত করবে।’ 

‘সম্মিলিত ব্যর্থতা’
কয়েক হাজার তামিল যুদ্ধকবলিত গ্রামগুলোতে সফর করে মৃতদের স্মরণে মোমবাতি প্রজ্বালন করে। এই বছর এই স্মরণসভায় অংশ নেন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের বৈশ্বিক প্রধান আগনেস ক্যালামার্ড, যিনি এই ধরনের সভায় অংশ নেওয়া সর্বোচ্চ উচ্চপদস্থ বিদেশি। তিনি তামিলদের পর চলা এই নিধনযজ্ঞকে শ্রীলঙ্কান কর্তৃপক্ষের সম্মিলিত ব্যর্থতা হিসেবে উল্লেখ করেন। 

এ ছাড়া আল-জাজিরাকে পাঠানো এক মেইল বার্তায় তিনি তিন দশক ধরে চলা এই সশস্ত্র সংঘাতে ভুক্তভোগীদের স্বপক্ষে সুষ্ঠু বিচারের জন্য শ্রীলঙ্কান কর্তৃপক্ষ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান।