ঢাকা ১২ শ্রাবণ ১৪৩১, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪

লোকসভা নির্বাচন ভোটের লড়াইয়ে তারকারা

প্রকাশ: ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ১২:৫০ পিএম
আপডেট: ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৩:৫৪ পিএম
ভোটের লড়াইয়ে তারকারা

রাজনীতির সঙ্গে রুপালি জগতের রয়েছে এক অবিচ্ছেদ্য সম্পর্ক। অতীত কাল থেকেই চলে আসছে রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের সঙ্গে তারকাদের ওঠাবসা। তারকাদের ‘ফেসভেল্যু’কে পুঁজি করে ক্ষমতার মঞ্চে এগিয়ে যাওয়ার রাজনীতিটা নতুন নয়। তাই তো নেতাদের জন্য প্রচারে নামার পাশাপাশি তারকারা নিজেও এমপি আসন লাভের ইঁদুর-দৌড়ে শামিল হয়েছেন। আর এরই ধারাবাহিকতায় এবার ২০২৪-এ ভারতের লোকসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নেমেছেন রুপালি পর্দার একঝাঁক তারকা। 

শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) ভারতের ১৮তম লোকসভা নির্বাচনে ভোট গ্রহণ শুরু হচ্ছে। মোট ৭ দফায় দেশটির ৫৪৩টি লোকসভা আসনের জন্য ভোট গ্রহণ চলবে প্রায় দেড় মাসব্যাপী। শেষ দফার ভোট ১ জুন। ভোট গণনা হবে ৪ জুন। আর এই নির্বাচনে জমকালো রূপ নিয়ে এসেছেন বলিউড-টলিউডের বেশ কয়েকজন তারকাশিল্পী। এসব তারকার মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকজন হলেন- কঙ্গনা রানাওয়াত, হেমা মালিনী, রবি কিষাণ, রচনা ব্যানার্জি, শত্রুঘ্ন সিনহা, শতাব্দী রায়, দেব, লকেট চট্টোপাধ্যায়সহ আরও অনেকে। 

কঙ্গনা রানাওয়াত
এবারের নির্বাচনে প্রার্থী তালিকায় সবচেয়ে আলোচিত নাম বলিউডের ‘কুইন’খ্যাত কঙ্গনা রানাওয়াত। হিমাচল প্রদেশের মান্ডি আসনে বিজেপির টিকিটে লড়ছেন তিনি। গেরুয়া শিবিরের হাত ধরেই নির্বাচনি শিবিরে হাতেখড়ি হতে চলেছে কঙ্গনার। 
ভারতের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত এই অভিনেত্রী যে এবার লোকসভা নির্বাচনের প্রার্থী হতে পারেন, সে বিষয়ে বেশকিছু দিন ধরেই জল্পনা চলছিল। বিভিন্ন সময় কেন্দ্রীয় সরকারের হয়ে তাকে কথা বলতে দেখা গেছে। গত জানুয়ারি মাসে রাম মন্দির উদ্বোধনের আগে মন্দির পরিষ্কারে তার ঝাড়ু দেওয়ার দৃশ্য নজর কেড়েছিল সবার। চলচ্চিত্র জগতের এই জনপ্রিয় অভিনেত্রী সক্রিয় রাজনীতিতে এই প্রথম পা রাখলেও, তার পরিবারের সঙ্গে রাজনৈতিক মহলের যোগাযোগ নতুন নয়। তার প্রপিতামহ সরযু সিং রানাওয়াত হিমাচল প্রদেশের গোপালপুরে কংগ্রেসদলীয় বিধায়ক ছিলেন।

হেমা মালিনী
প্রার্থী হিসেবে এর আগেও বলিউডের ‘ড্রিম গার্ল’ হেমা মালিনীকে বেছে নিয়েছিল বিজেপি। উত্তরপ্রদেশের মথুরা আসনের জন্য এবারও বিজেপির টিকিটে লড়ছেন হেমা মালিনী। গত কয়েক বছর ধরেই বিজেপির হয়ে প্রত্যক্ষ রাজনীতিতে অংশ নিতে দেখা গেছে এ অভিনেত্রীকে। এ নিয়ে তৃতীয়বারের মতো তিনি লোকসভার নির্বাচনে প্রার্থী হচ্ছেন। নিজের ক্যারিশমা এবং দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে এবারও নির্বাচনে জয় পাবেন বলে আশা হেমা মালিনীর। 

রবি কিষাণ
বিজেপির টিকিটে উত্তরপ্রদেশের গোরখপুর আসনের জন্য লড়াই করছেন ভোজপুরী ছবির নায়ক রবি কিষাণ। অবশ্য বলিউডেও ভিলেন হিসেবে তাকে একাধিক সিনেমায় দেখেছেন দর্শকরা। ২০১৯ সালের নির্বাচনেও গোরখপুর আসন থেকে জয় পেয়ে সাংসদ নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি। 

অরুণ গোভিল
এবারের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির প্রার্থী তালিকায় তারকাদের মাঝে আরেক চমক হলেন অরুণ গোভিল। ছোট পর্দার এই জনপ্রিয় অভিনেতা উত্তর প্রদেশের মিরাট আসনের জন্য লড়ছেন। ভারতীয় টেলিভিশনে ‘রামায়ণ’-এর ওপর আধারিত ধারাবাহিকে রামচন্দ্রের ভূমিকায় অভিনয় করে বিখ্যাত হওয়া এই তারকা একাধিক হিন্দি ছবিতেও সফলতার সঙ্গে অভিনয় করেছেন। 

শত্রুঘ্ন সিনহা
পশ্চিমবঙ্গের ক্ষমতাসীন দল তৃণমূল কংগ্রেসের টিকিটে আসানসোল আসনে লড়বেন শত্রুঘ্ন সিনহা। এর আগে ২০২২ সালের উপনির্বাচনে ওই আসনেই তৃণমূলের হয়ে লড়াই করে জয়লাভ করেছিলেন এই বলিউড অভিনেতা। তারও আগে বিজেপির সাংসদ ছিলেন সিনেমায় ‘খামোশ’ বলে ধমক দেওয়া এই বর্ষীয়ান অভিনেতা। অটল বিহারী বাজপেয়ীর মন্ত্রিসভায় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেছিলেন বলিউড অভিনেত্রী সোনাক্ষী সিনহার বাবা শত্রুঘ্ন সিনহা। 

এ ছাড়াও উত্তর প্রদেশের আজমগড় থেকে লড়ছেন প্রখ্যাত ভোজপুরি অভিনেতা দীনেশ লাল যাদব। কেরালার ত্রিশুর আসনে মালায়লাম অভিনেতা, টিভি প্রেজেন্টার সুরেশ গোপীকে প্রার্থী করেছে বিজেপি। এর আগে ২০২১ সালের রাজ্য বিধানসভা নির্বাচনে ত্রিশুর আসনের জন্য লড়ে জয়ের মুখ দেখেছিলেন তিনি। কেরালার কোল্লাম আসনে সিপিআইএম-এর প্রার্থী হয়েছেন দক্ষিণের আরেক জনপ্রিয় অভিনেতা এম মুকেশ। এই আসনে বিজেপি প্রার্থী করেছে অভিনেতা জি কৃষ্ণকুমারকে। তামিলনাড়ুর বিরুধুনগর থেকে বিজেপির টিকিটে লড়ছেন দক্ষিণ ভারতের জনপ্রিয় তামিল ও তেলেগু অভিনেত্রী রাধিকা শরৎ কুমার। এই আসনেই নিজের রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শুরু করতে চলেছেন রাধিকা। 

নর্থ-ইস্ট দিল্লি আসন থেকে এবারও ভোজপুরি অভিনেতা ও গায়ক মনোজ তিওয়ারিকে প্রার্থী করেছে বিজেপি। ২০১৪ সালে প্রথমবার এই আসনে তিন লাখের বেশি ভোটে জয়লাভ করেছিলেন তিনি। ২০১৯ সালেও এই আসন নিজের দখলে ধরে রাখেন এই ভোজপুরি সুপারস্টার। মহারাষ্ট্রের অমরাবতী আসনে তেলেগু অভিনেত্রী ও রাজনীতিবিদ নবনীত কউর রানাকে প্রার্থী করেছে বিজেপি। ২০১৯ সালে এই আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি। এর আগে ২০১৪ সালে কংগ্রেসের টিকিটে নির্বাচনে লড়লেও জিততে পারেননি তিনি। গত ২৮ মার্চ বিজেপিতে যোগদান করেন নবনীত। 

বলিউড ছাড়া ভারতের রাজনীতিতে টালিউড অর্থাৎ পশ্চিমবঙ্গের বাঙালি তারকাদের পদচারণ সব সময়ই একটু বেশি। সংরক্ষিত আসন ছাড়াও রীতিমতো ভোটে জয়ী হয়েও এমপি হয়েছেন অনেক অভিনয়শিল্পী। আর তাই তো পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্বাচনি শিবিরে তারকাদের আনাগোনা লেগেই থাকে। প্রার্থী তালিকায় তৃণমূল কংগ্রেস এরই মধ্যে ৪২ আসনে প্রার্থী ঘোষণা করেছে। এর মধ্যে এসেছে জনপ্রিয় ৫ তারকার নাম। 

রচনা ব্যানার্জি
এবার তৃণমূল কংগ্রেসের হয়ে রাজনীতির মঞ্চে চমক নিয়ে হাজির হয়েছেন টলিউডের একসময়ের জনপ্রিয় অভিনেত্রী এবং বর্তমানে টেলিভিশন চ্যানেলে রিয়েলিটি শো ‘দিদি নম্বর ওয়ান’ উপস্থাপনা করেন আলোচিত রচনা ব্যানার্জি। বলা হচ্ছে, জনপ্রিয় এই অভিনেত্রীকে দলের প্রার্থী করে পশ্চিমবঙ্গের ভোটারদের মন অর্ধেক জয় করে ফেলেছেন মমতা। হুগলি থেকে এবার প্রথমবার নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন রচনা। 

লকেট চট্টোপাধ্যায়
হুগলিতে অভিনেত্রী রচনা ব্যানার্জির বিপক্ষে প্রার্থী হিসেবে এবার লড়ছেন বিজেপির প্রার্থী লকেট চট্টোপাধ্যায়। ২০১৯ সালের নির্বাচনে এই আসনে জিতে প্রথমবার সংসদ সদস্য হন অভিনেত্রী লকেট। 

শতাব্দী রায়
বীরভূম থেকে তৃণমূলের টিকিটে এবারের লোকসভা নির্বাচনে লড়ছেন টলিউড জনপ্রিয় অভিনেত্রী শতাব্দী রায়। ২০০৯ সাল থেকে পরপর তিনবার এই আসনের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন তিনি। এবারও ওই আসনে তার ওপরেই ভরসা রেখেছে দল। 

দেব
তৃণমূলের টিকিটেই ঘাটাল আসনের জন্য লড়বেন টলিউড তারকা দীপক অধিকারী (দেব)। ২০১৪ সাল থেকে এই আসনের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে আসছেন দেব। অন্যদিকে বিজেপির হয়ে একই আসনে লড়ছেন অভিনেত্রী হিরণ চট্টোপাধ্যায়। বর্তমানে তিনি পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিধানসভার খড়গপুর সদর আসনের বিধায়ক। এবার সেই হিরণকে লোকসভায় টিকিট দিয়েছে গেরুয়া শিবির। 

সায়নী ঘোষ
যাদবপুর আসনের জন্য তৃণমূলের টিকিট লড়ছেন অভিনেত্রী সায়নী ঘোষ। টলিউডের আরেক অভিনেত্রী মিমির জায়গায় টিকিট পেয়েছেন ছোট পর্দার জনপ্রিয় শিল্পী সায়নী। ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে আসানসোল দক্ষিণ আসনে তাকে প্রার্থী করেছিল তৃণমূল, তবে হেরে যান বিজেপির অগ্নিমিত্রা পালের কাছে। তৃণমূলের একাংশ মনে করছে, লড়াই করার ক্ষমতার কারণেই আবার সায়নীর ওপর ভরসা রেখেছে দল।

এ ছাড়া সদ্য পদত্যাগী পুলিশকর্তা প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় ছোট পর্দার পরিচিত মুখ। তিনি তৃণমূলের টিকিটে লড়ছেন মালদা উত্তর আসনে। মেদিনীপুর আসনে অভিনেত্রী জুন মালিয়াকে প্রার্থী করেছে তৃণমূল। এর আগে রাজ্য বিধানসভার নির্বাচনে মেদিনীপুর আসনে তৃণমূলের টিকিটে জয় পেয়ে বিধায়ক নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি। আর রুপালি পর্দার অভিনেতা-অভিনেত্রী ছাড়াও ক্রীড়াঙ্গনের তারকা কীর্তি আজাদ বর্ধমানের দুর্গাপুর আসনে এবং বহররমপুর আসনে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী হয়েছেন ক্রিকেটার ইউসুফ পাঠান। 

গাজা নিয়ে সুর পাল্টেছেন কমলা হ্যারিস

প্রকাশ: ২৭ জুলাই ২০২৪, ০১:২২ পিএম
আপডেট: ২৭ জুলাই ২০২৪, ০১:২২ পিএম
গাজা নিয়ে সুর পাল্টেছেন কমলা হ্যারিস
যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট ও ডেমোক্র্যাটিক মনোনীত প্রেসিডেন্ট প্রার্থী কমলা হ্যারিস

যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট ও ডেমোক্র্যাটিক মনোনীত প্রেসিডেন্ট প্রার্থী কমলা হ্যারিস বলেছেন, গাজা-ইসরায়েল যুদ্ধে তিনি ফিলিস্তিনিদের দুর্ভোগের মুখে চুপ থাকবেন না।

গত বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে সাক্ষাতের পর গাজায় ফিলিস্তিনিদের দুর্দশার উপর জোর দেন তিনি।

তবে, তিনি ইসরায়েলের জন্য অব্যাহত সমর্থনের প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন।

নেতানিয়াহুর সঙ্গে আলোচনার পর হ্যারিস একটি টেলিভিশনে দেওয়া বিবৃতিতে ইসরায়েলের প্রতি তার ‘অকুণ্ঠ সমর্থন’ পুনব্যাক্ত করেন।

বিবৃতিতে ভাইস প্রেসিডেন্ট গাজার ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি বর্ণনা করে ইসরায়েলের নাম না নিয়ে সেখানে মানবিক সংকটের জন্য দায়ী দল হিসেবে উল্লেখ করেন।

সোশ্যাল অ্যাক্টিভিস্টরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের নিঃশর্ত সামরিক ও কূটনৈতিক সমর্থনের নীতি থেকে অর্থপূর্ণ পরিবর্তন না করে ফিলিস্তিনিদের প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করায় কমলা হ্যারিসকে ভোটযুদ্ধে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের দৃষ্টিভঙ্গির ফলে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া ভোটারদের ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করবে না।

এ প্রসঙ্গে শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞানী ইমান আবদেলহাদি বলেন, ‘গাজার শিশুদের হত্যা বন্ধ করার প্রকৃত প্রতিশ্রুতি ছাড়া, আমি তাদের প্রতি তার সহানুভূতি নিয়ে চিন্তা করি না।’

তিনি জোর দিয়েছিলেন যে ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে সংঘটিত নৃশংসতার জন্য যুক্তরাষ্ট্র ‘দায়ী’।

‘আপনি মাথায় গুলি করছেন এমন কারও প্রতি সহানুভূতিশীল হওয়া ঠিক প্রশংসনীয় নয়। আমাদের এই লোকদের থেকে সহানুভূতির দরকার নেই। আমাদের তাদের অস্ত্র এবং অর্থ সরবরাহ বন্ধ করতে হবে যা সক্রিয়ভাবে লোকেদের হত্যা করছে যা তারা অনুমিতভাবে সহানুভূতিশীল’, বলেন আবদেলহাদি।

কমলা হ্যারিস বলেন, ‘আমি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে গাজায় অনেক নিরপরাধ বেসামরিক লোকের মৃত্যুসহ মানবিক দুর্ভোগ নিয়ে আমার উদ্বেগ প্রকাশ করেছি।’

হ্যারিস যুদ্ধকে ‘বিধ্বংসী’ অভিহিত করে বলেছেন, ‘মৃত শিশু এবং মরিয়া, ক্ষুধার্ত মানুষদের সুরক্ষার জন্য পালিয়ে যাওয়ার চিত্র - কখনও কখনও দ্বিতীয়, তৃতীয় বা চতুর্থবারের জন্য বাস্তুচ্যুত - আমরা এই ট্র্যাজেডির মুখোমুখি হতে পারি না। আমরা নিজেদেরকে তাদের কষ্টের কাছে অসাড় হতে দিতে পারি না এবং আমি চুপ থাকব না।’

তিনি গাজায় যুদ্ধের অবসান এবং ইসরায়েলি বন্দীদের মুক্তির লক্ষ্যে বাইডেনের যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবের পক্ষেও সমর্থন জানিয়েছেন। সূত্র: আল-জাজিরা

অমিয়/

ম্যানিলা উপসাগরে তেল ছড়িয়ে পড়ে বিপর্যয়ের আশঙ্কা

প্রকাশ: ২৭ জুলাই ২০২৪, ০১:০১ পিএম
আপডেট: ২৭ জুলাই ২০২৪, ০৩:০৮ পিএম
ম্যানিলা উপসাগরে তেল ছড়িয়ে পড়ে বিপর্যয়ের আশঙ্কা
ছবি: সংগৃহীত

ম্যানিলা উপসাগরে ডুবে যাওয়া ট্যাঙ্কার থেকে শুক্রবার (২৬ জুলাই) ১৪ লাখ লিটার শিল্প জ্বালানি তেল আনলোড করা হয়। 

এ সময় তেল ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কায় পরিবেশগত বিপর্যয় এড়াতে জোর তৎপরতা চালানো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ফিলিপাইনের কোস্টগার্ড।

বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) স্থানীয় সময় ভোরে এমটি টেরা নোভা নামের ট্যাঙ্কারটি বাতান প্রদেশের লিমা থেকে প্রায় সাত কিলোমিটার দূরে ম্যানিলা উপসাগরে ডুবে যায়। এতে এর একজন ক্রু মারা যান। 

ট্যাঙ্কারটি ডুবে যাওয়ার পর সাগরের কয়েক কিলোমিটারের মধ্যে তেলের আস্তরণ শনাক্ত করা হয়। 

ফিলিপাইনের হাজার হাজার জেলে ও পর্যটন অপারেটর জীবিকার জন্য ওই তেলের ওপর নির্ভরশীল।

দেশটির কোস্টগার্ডের মুখপাত্র রিয়ার অ্যাডমিরাল আরমান্দো বালিলো শুক্রবার বলেন, ‘সামান্য’ তেল ছড়িয়ে পড়েছে, যা ডিজেল বলে মনে করা হচ্ছে।

বালিলো আরও বলেন, ট্যাঙ্ক থেকে কোনো তেল লিক হচ্ছে না, তবে পরিবেশগত বিপর্যয় এড়াতে তেল নিঃসরণের জন্য সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে দৌড়াচ্ছি।

উপকূলরক্ষীরা তেল আনলোড করতে সাত দিনের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। 

তবে বালিলো সতর্ক করেছেন, ট্যাঙ্কারটি যদি ফুটো হয়ে যায়, তবে ফিলিপাইনের ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ পরিবেশ বিপর্যয় দেখা দিতে পারে। সূত্র: এএফপি

ইসরাত চৈতী/অমিয়/

বাংলাদেশ নিয়ে মন্তব্য দিল্লির কড়া বার্তা পেয়ে জবাব দিলেন ক্ষুব্ধ মমতা

প্রকাশ: ২৭ জুলাই ২০২৪, ০৯:০৮ এএম
আপডেট: ২৭ জুলাই ২০২৪, ০৯:১০ এএম
দিল্লির কড়া বার্তা পেয়ে জবাব দিলেন ক্ষুব্ধ মমতা
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

বাংলাদেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের একটি মন্তব্য নিয়ে ঢাকা থেকে ভারত সরকারের কাছে আপত্তি জানানো হয়। সেই কথা স্বীকার করে নিয়েছেন ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল। এরপরই বাংলাদেশের বিষয়টি একটি সার্বভৌম দেশের বলে মুখ্যমন্ত্রী মমতাকে স্মরণ করিয়ে দেন তিনি। রাজ্য সরকারের ওই প্রসঙ্গে কথা বলার কোনো এখতিয়ার নেই বলেও জানান জয়সওয়াল। আর তাতেই ক্ষুব্ধ হয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। 

শুক্রবার (২৬ জুলাই) দিল্লি যাওয়ার পথে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী কেন্দ্রীয় সরকারকে পাল্টা জবাব দিয়ে বলেন, ‘আমাকে কিছু শেখাবেন না।’

দিল্লিতে বাংলাদেশ নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো আমি খুব ভালো জানি। আমি সাত বারের এমপি, দু’বার কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ছিলাম। বিদেশনীতি অন্য কারও চেয়ে ভালো জানি। তাদের আমাকে শেখানো উচিত নয়। বরং তাদের পরিবর্তিত ব্যবস্থা থেকে শেখা উচিত।’

গত ২১ জুলাই পশ্চিমবঙ্গের ধর্মতলায় রাজনৈতিক সমাবেশে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক সংঘাত নিয়ে মমতা জানিয়েছিলেন, পড়শি দেশ থেকে কেউ পশ্চিমবঙ্গের দরজায় এলে তিনি ফেরাবেন না। তবে সেই সঙ্গে তিনি জানান, এ বিষয়ে বেশি কিছু বলতে পারবেন না। কারণ, বাংলাদেশ একটি স্বতন্ত্র দেশ। এ নিয়ে কিছু বলার থাকলে ভারত সরকার বলবে। সেই মন্তব্যের পরই বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো মমতার বিরুদ্ধে সরব হয়। ক্ষমতাসীন বিজেপির দাবি, মমতার এমন কথা বলার কোনো এখতিয়ার নেই।

মমতার মন্তব্যে আপত্তি জানায় ঢাকাও। বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেছিলেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি সম্মান রেখেই বলতে চাই, তার ওই বক্তব্যের জেরে বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে।’ পাশাপাশি তিনি এও জানান, এ ব্যাপারে ভারত সরকারকে ‘নোট’ দেওয়া হয়েছে।

পরে গত বৃহস্পতিবার জয়সওয়াল বাংলাদেশের কাছ থেকে পাওয়া ‘আপত্তিবার্তা’র কথা স্বীকার করেন। অন্যদিকে মমতাকেও কার্যত সংবিধানের পাঠ দিয়ে জানানো হয়েছে, অন্য কোনো দেশ বা বৈদেশিক বিষয় নিয়ে মন্তব্য করার অধিকার রাজ্য সরকারের নেই। সংবিধান সেই অধিকার দেয়নি রাজ্যকে। এ নিয়ে বলার এখতিয়ার শুধু ভারত সরকারেরই আছে। সেই প্রসঙ্গেই মমতা ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে আক্রমণ করেন।

‘সময় হয়েছে যুদ্ধ শেষ হওয়ার’

প্রকাশ: ২৭ জুলাই ২০২৪, ০৯:০১ এএম
আপডেট: ২৭ জুলাই ২০২৪, ০৯:০১ এএম
‘সময় হয়েছে যুদ্ধ শেষ হওয়ার’
ওভাল অফিসে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে দেখা করেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু

গাজায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে চুক্তিতে পৌঁছানোর জন্য বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে চাপ দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস। তার এ অবস্থানের সঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের রাজনৈতিক অবস্থানের মিল রয়েছে।

নেতানিয়াহুর সঙ্গে বৈঠকের পর টেলিভিশনে সম্প্রচারিত এক বিবৃতিতে হ্যারিস বলেন, এ যুদ্ধ শেষ হওয়ার সময় হয়েছে। গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দৌড় থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন জো বাইডেন। তার স্থলাভিষিক্ত হওয়ার কথা রয়েছে কমলা হ্যারিসের। আগামী মাসেই ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক কনভেনশনে ডেমোক্র্যাটিক দলের মনোনয়ন পেতে পারেন হ্যারিস। 

টেলিভিশনে সম্প্রচারিত বিবৃতিতে কমলা হ্যারিস বলেন, ‘আমরা দুর্ভোগের কারণে অসাড় হয়ে যেতে পারি না এবং আমি নীরব থাকব না।’ 

হ্যারিসের মন্তব্য তীক্ষ্ণভাবে করা হয়েছে বলে উল্লেখ করেছে রয়টার্স। নভেম্বরের ৫ তারিখ তিনি প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে এ রকম কড়া মনোভাব দেখাবেন কি না, সে বিষয়টি নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। 

তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, ইসরায়েল ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের নীতিতে তেমন বড় কোনো পরিবর্তন আসবে না।   

গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় আক্রমণ শুরু করেছে ইসরায়েল। তারা ঘোষণা দিয়েছে হামাসকে নির্মূল করার। মূলত ইসরায়েলি ভূখণ্ডে হামাসের হামলা ও প্রায় ১২০০ মানুষের কারণেই যুদ্ধ ঘোষণা করে ইসরায়েল। 

কিন্তু যুদ্ধে ইসরায়েল নির্বিচার হামলা চালিয়ে হত্যা করেছে ৩৯ হাজারেরও বেশি মানুষকে। যাদের বেশির ভাগই নারী, শিশু ও বয়োবৃদ্ধ।

আন্তর্জাতিক মহল থেকে এ নিয়ে একাধিকবার প্রশ্ন তোলা হলেও তাতে কর্ণপাত করেনি ইসরায়েল কর্তৃপক্ষ। উল্টো নেতানিয়াহু বরাবরই যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার কথা বলেছেন। অনেক বিশেষজ্ঞের মতে, যুদ্ধ জিইয়ে রেখে নিজের রাজনৈতিক ক্যারিয়ার অক্ষুণ্ন রাখতে চাইছেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী। দুর্নীতির দায়ে নিজ দেশে তার যে বিচার হওয়ার কথা, সেটি এড়ানোর চেষ্টা করছেন।

এরই মধ্যে একাধিকবার ইসরায়েলি মিত্র যুক্তরাষ্ট্র গাজার যুদ্ধ নিয়ে তাদের সতর্ক করেছে। শুরু থেকে তারা ইসরায়েলকে সমর্থন দিয়ে আসলেও স্থায়ী যুদ্ধবিরতির মাধ্যমে গোটা বিষয়টির সমাধান চাইছে। 

এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছে হামাস ও ইসরায়েল দুই পক্ষকে। যুদ্ধবিরতি নিয়ে কয়েক মাস ধরেই আলাপ করে আসছেন যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা। তারা মনে করছেন দুই পক্ষই যুদ্ধবিরতি খুব কাছে রয়েছে।

উল্টো গাজায় হামলার মাত্রা বেড়েছে। বিগত দিনগুলোতে প্রচুর আক্রমণ চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। সর্বশেষে ইসরায়েলি বাহিনী গাজার খান ইউনিস থেকে মানুষকে সরে যেতে বলে। তারা দাবি করে, ওই এলাকা থেকে ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়েছে। 

এরপর যথেষ্ট সময় না দিয়েই শুরু করা হয় আক্রমণ। মানুষ ভয়ে পালাতে শুরু করে এবং অন্তত ৭০ জন প্রাণ হারায়। খান ইউনিসে এটি ইসরায়েলের দ্বিতীয় অভিযান। এর আগে চলতি বছরের শুরুতেও খান ইউনিসে হামলা চালিয়েছিল তারা। 

বাইডেন এর আগে নেতানিয়াহুকে বলেছিলেন, তার (নেতানিয়াহু) যুদ্ধবিরতি কার্যকরের জন্য প্রয়োজনীয় শূণ্যস্থান পূরণে ও প্রতিবন্ধকতা দূরীকরণে কাজ শুরু করা উচিত।

নেতানিয়াহু কমলা হ্যারিসের রিপাবলিকান প্রতিদ্বন্দ্বী ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গেও দেখা করবেন। তবে হ্যারিস কী চাইছেন, তা পুরোপুরি স্পষ্ট। নিজ বক্তব্যে তিনি সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, ‘ইসরায়েলের নিজেকে রক্ষার অধিকার রয়েছে। কিন্তু তা কীভাবে, সে বিষয়টি আমলে নিতে হবে।’ সূত্র: রয়টার্স

জাপানে ভারী বৃষ্টি থেকে বন্যা ও ভূমিধস

প্রকাশ: ২৭ জুলাই ২০২৪, ০৮:৪৯ এএম
আপডেট: ২৭ জুলাই ২০২৪, ০৮:৪৯ এএম
জাপানে ভারী বৃষ্টি থেকে বন্যা ও ভূমিধস
ছবি: সংগৃহীত

জাপানের উত্তরাঞ্চলে ভারী বৃষ্টি থেকে বন্যা ও ভূমিধসের ঘটনা ঘটেছে। শত শত বাসিন্দাকে ঘরবাড়ি ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যেতে হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) দেখা দেওয়া ওই বন্যা ও ভূমিধসে অঞ্চলটির পরিবহনব্যবস্থাও ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

এরই মধ্যে জাপানের ইয়ামাগাতা ও আকিতা অঞ্চলের কয়েকটি পৌরসভায় ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে জরুরি সতর্কতা জারি করেছে দেশটির আবহাওয়া সংস্থা। জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার বাসিন্দাদের নিরাপদ অবস্থানে সরে যাওয়ার ও কর্তৃপক্ষের সর্বশেষ তথ্যের ওপর মনোযোগ রাখার আহ্বান জানিয়েছেন।

অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের খবর বলছে, বন্যাদুর্গত এলাকা থেকে নৌকায় করে ১১ জনকে সরিয়ে নিয়েছেন শহরের উদ্ধারকর্মীরা। ইয়ামাগাতা প্রদেশের সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ইউজা ও সাকাতা শহর। বৃহস্পতিবার শহর দুটিতে এক ঘণ্টায় ১০ সেন্টিমিটারের (৪ ইঞ্চি) বেশি বৃষ্টিপাত হয়।

ওই এলাকার হাজার হাজার বাসিন্দাকে উঁচু ও নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। তবে কতজন সে পরামর্শ মেনেছেন তা তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি।

এদিকে, আকিতা প্রদেশের ইউজাওয়া শহরে একটি সড়ক নির্মাণ সাইটে ভূমিধস হয়ে একজন নিখোঁজ হয়েছেন বলে জানিয়েছে ফায়ার অ্যান্ড ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট এজেন্সি। সূত্র: এপি