ঢাকা ১৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, শুক্রবার, ৩১ মে ২০২৪

গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে রাজি হামাস

প্রকাশ: ০৭ মে ২০২৪, ০১:২০ এএম
গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে রাজি হামাস
ছবি : সংগৃহীত

গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রস্তাবে রাজি হয়েছে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাস। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। এক বিজ্ঞপ্তিতে হামাস জানিয়েছে, কাতার এবং মিসরের মধ্যস্থতাকারীদের তারা এ সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দিয়েছে। তবে যুদ্ধবিরতি কত দিনের হবে বা গাজায় জিম্মি ইসরায়েলিদের বিষয়ে বিস্তারিত এখনো জানা যায়নি।

হামাস নেতারা বিবৃতিতে জানিয়েছেন, সিদ্ধান্ত এখন ইসরায়েলের কোর্টে। হামাসের অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, হামাস নেতা ইসমাইল হানিয়া টেলিফোনে কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আব্দুলরহমান আল থানি এবং মিসরের গোয়েন্দা বিভাগের মন্ত্রী আব্বাস কামেলকে জানিয়েছেন, তাদের প্রস্তাব অনুযায়ী যুদ্ধবিরতিতে রাজি হামাস।

গত রবিবার দক্ষিণ গাজার রাফাহ ক্রসিংয়ের কাছের একটি এলাকা থেকে কেরেম শালোম এলাকায় ১০টি রকেট হামলা চালানো হয়েছে। এতে তিন সেনা নিহত হওয়ার পাশাপাশি অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন।

হামাসের সশস্ত্র শাখা ওই হামলার দায় স্বীকার করে জানিয়েছে, ক্রসিংয়ে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর একটি ঘাঁটিতে তারা রকেট হামলা চালিয়েছে। তবে কোথা থেকে ওই হামলা চালানো হয়েছে, তা নিশ্চিত করেনি।

হামাসের এ হামলার পর পাল্টা হামলা শুরু করেছে ইসরায়েল। গত রবিবার ইসরায়েলের একাধিক হামলায় অন্তত ২২ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে ৮ শিশু। এ ছাড়া গাজার দক্ষিণাঞ্চলের রাফাহ এলাকায় বড়সড় হামলার প্রস্তুতি নিয়েছে তারা। এ জন্য সেখানকার বাসিন্দাদের সরে যেতে বলা হয়েছে।

বিবিসি বলছে, রাফাহর পূর্বাঞ্চলে থেকে ১ লাখ ফিলিস্তিনিকে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। স্থল অভিযান সামনে রেখে এই স্থানান্তর বলে জানিয়েছে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী আইডিএফ। গাজার উত্তরাঞ্চলে অভিযান শুরুর পর থেকে মিসর সীমান্তের কাছে অবস্থিত দক্ষিণাঞ্চলীয় রাফাহ শহরে ১৫ লাখের বেশি ফিলিস্তিনি আশ্রয় নেন।

রাফাহ শহরে আশ্রয় নেওয়া ফিলিস্তিনিদের সরে যেতে আকাশ থেকে ফেলা হচ্ছে চিরকুট। সেসব চিরকুটে সরে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী। এ ছাড়া মোবাইলে কল দিয়ে ও এসএমএস পাঠিয়ে নিরাপদ করিডরে সরে যেতে বলা হয়।

গত ৭ অক্টোবর হামাসের হামলায় ইসরায়েলে ১ হাজার ২০০ জন নিহত হন। এরপর থেকে গাজায় বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। প্রায় সাত মাস ধরে চলা এই হামলায় এখন পর্যন্ত ৩৪ হাজার ৫৩৫ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, যাদের বেশির ভাগই নারী ও শিশু।

ইসরায়েলের হামলায় নিহত ফিলিস্তিনির সংখ্যা আরও অনেক বেশি বলে ধারণা করা হচ্ছে। সূত্র : বিবিসি ও আল-জাজিরা

দোষী সাব্যস্ত ট্রাম্প, সাজা ঘোষণা ১১ জুলাই

প্রকাশ: ৩১ মে ২০২৪, ১০:৫৫ এএম
দোষী সাব্যস্ত ট্রাম্প, সাজা ঘোষণা ১১ জুলাই
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ব্যবসায়িক নথিপত্র গোপন করা মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন। এ মামলায় আনা ৩৪টি অভিযোগের সব ক’টিতে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন তিনি।   

বৃহস্পতিবার (৩০ মে) বিকেলে নিউইয়র্ক সিটির বিচারকদের একটি বোর্ড সাত সপ্তাহের দীর্ঘ ট্রায়ালের পর এ রায় দেন। 

আগামী ১১ জুলাই এ মামলায় ট্রাম্পের সাজা ঘোষণা করা হবে। সাবেক এ প্রেসিডেন্টের কারাদণ্ড হতে পারে। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তাকে জরিমানা করার সম্ভাবনাই বেশি।

যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে তিনিই প্রথম প্রেসিডেন্ট, যিনি ফৌজদারি মামলায় দোষী সাব্যস্ত হলেন।   

২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে পর্নো তারকা স্টর্মি ড্যানিয়েলসকে গোপনে অর্থ দেওয়ার ক্ষেত্রে ব্যবসায়িক নথি জাল করাসহ ৩৪টি অপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়েছে ট্রাম্পকে।      

এ মামলায় সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য প্রসিকিউটররা ২২ জন সাক্ষীকে ডেকেছিলেন। মঙ্গলবার সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে বিচারকরা দুইদিন সময় নেন রায় ঘোষণার জন্য। 

বৃহস্পতিবার রায় ঘোষণার পর ট্রাম্পের আইনজীবী টড ব্লাঞ্চের অনুরোধে ১১ জুলাই সাজা ঘোষণার তারিখ নির্ধারণ করা হয়। 
সাবেক এই রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট আগামী নভেম্বরে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্র্যাটিক পদপ্রার্থী জো বাইডেনের বিরুদ্ধে মুখোমুখি হতে চলেছেন। ঠিক এই সময় এমন একটি রায় ট্রাম্পের নির্বাচনি প্রচারে প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। 

যদিও রায় ঘোষণার পর তিনি দোষী নন বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন। এ সময় তিনি বলেন, ‘এটি একটি কারচুপি, অসম্মানজনক এবং লজ্জাজনক রায়। আগামী ৫ নভেম্বর প্রকৃত রায় দেবে জনগণ। তারা জানে এখানে কী ঘটেছে।’ সূত্র: আল-জাজিরা 

ইসরাত চৈতী/   

হংকংয়ের ১৪ গণতন্ত্রপন্থি কর্মী দোষী সাব্যস্ত

প্রকাশ: ৩১ মে ২০২৪, ০৯:২৬ এএম
হংকংয়ের ১৪ গণতন্ত্রপন্থি কর্মী দোষী সাব্যস্ত
ছবি: সংগৃহীত

বিদ্রোহের ষড়যন্ত্র করার অভিযোগে গণতন্ত্রপন্থি ১৪ আন্দোলনকারীকে বৃহস্পতিবার (৩০ মে) দোষী সাব্যস্ত করেছেন হংকংয়ের হাইকোর্ট। দোষীদের সাজা পরে ঘোষণা করা হবে বলেও জানিয়েছেন আদালত। জাতীয় নিরাপত্তা আইনে তাদের দোষী সাব্যস্ত করা হয়। 

হংকং হাইকোর্ট এ মামলায় অভিযুক্ত আরও দুজনকে মুক্তি দিয়েছেন। তিন বছরেরও বেশি সময় পরে হংকংয়ের গণতন্ত্রপন্থিদের বিরুদ্ধে চলা আলোচিত এই মামলার রায় ঘোষণা হলো। 

বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, জাতীয় নিরাপত্তাবিষয়ক অপরাধের দায়ে ওই ১৪ জনের তিন বছর থেকে যাবজ্জীবন পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে। 

সরকারকে পঙ্গু করে দেওয়ার ‘ঘৃণ্য ষড়যন্ত্র’ ও ২০২০ সালের জুলাইয়ে হংকংয়ের নেতাকে পদত্যাগে বাধ্য করার চেষ্টার অভিযোগ আনা হয়েছিল মোট ৪৭ জনের বিরুদ্ধে। তাদের মধ্যে ৩১ জন আদালতে দোষ স্বীকার করে নিয়েছেন। আর চারজন রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষীতে পরিণত হন। 

২০১৯ সালে হংকংয়ের জন্য কঠোর নিরাপত্তা আইন করার পরিকল্পনা নিয়েছিল বেইজিং। পরে গণতন্ত্রপন্থিরা শহরজুড়ে ব্যাপক প্রতিবাদ শুরু করে। তারা দাবি করেন, যুক্তরাজ্যের পক্ষ থেকে ১৯৯৭ সালে চীনের কাছে হংকংকে ফিরিয়ে দেওয়ার সময় যে স্বাধীনতার নিশ্চয়তা দেওয়া হয়েছিল, বেইজিংয়ের ওই আইন সেটির লঙ্ঘন করছে। সূত্র: রয়টার্স

পাপুয়া নিউগিনিতে ভূমিধসে কাউকে জীবিত পাওয়ার আশা নেই

প্রকাশ: ৩১ মে ২০২৪, ০৯:২১ এএম
পাপুয়া নিউগিনিতে ভূমিধসে কাউকে জীবিত পাওয়ার আশা নেই
ছবি: সংগৃহীত

পাপুয়া নিউগিনিতে ভয়াবহ ভূমিধসের ঘটনায় ধ্বংসাবশেষের নিচে জীবিত আর কাউকে খুঁজে পাওয়ার আশা করছে না দেশটির উদ্ধারকারী দল। এ ঘটনায় ঠিক কতজন মাটিচাপা পড়ে নিহত হয়েছেন তা এখনো জানা যায়নি। তবে নিহতের সংখ্যা কয়েক হাজার পর্যন্ত হতে পারে বলে অনুমান করা হচ্ছে। 

এক প্রতিবেদনে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, ওই এলাকায় পাহাড়, ভূমির নাজুক অবস্থা, প্রধান সড়ক ও সেতু ক্ষতিগ্রস্ত থাকা, জাতিগত গোষ্ঠীর মধ্যকার দ্বন্দ্ব- সবকিছুর কারণেই ভারী যন্ত্রপাতি ও ত্রাণসামগ্রী পৌঁছাতে দেরি হয়েছে। 

এনগা প্রদেশের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রধান স্যান্ডিস সাকা রয়টার্সকে বলেন, ‘ধ্বংসাবশেষের নিচে আর কারও বেঁচে থাকার সম্ভাবনা নাই। ফলে এটি পুরোপুরি একটি দেহাবশেষ পুনরুদ্ধার অভিযান।’

গত শুক্রবার ভোর ৩টায় এনগা প্রদেশের ইয়াম্বালি গ্রামে ভূমিধস হয়। এতে এ পর্যন্ত কতজন পাহাড়ের মাটিতে চাপা পড়েছেন তা জানার চেষ্টা করছেন কর্মকর্তারা। ২০০০ সালের আদমশুমারির তথ্যানুসারে, অসম্পূর্ণ ভোটার তথ্য ও স্থানীয় নেতাদের তথ্যের ভিত্তিতে আনুমানিক মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড় করানোর চেষ্টা করছেন তারা। 

সরকারের তথ্যমতে, ২ হাজারের বেশি লোক ভূমিধসে মাটিচাপা পড়েছে। জাতিসংঘ এ ঘটনায় ৬৭০ জনের মৃত্যুর আশঙ্কা করছে। তবে স্থানীয় এক ব্যবসায়ী ও সাবেক এক কর্মকর্তার বরাতে রয়টার্স বলছে, মৃতের সংখ্যা ১৬০ জনের কাছকাছি। 

সাকা জানান, ‘সরকার নিহতের সংখ্যা নিয়ে অনিশ্চিত ছিল। এটি ২ হাজার পর্যন্ত হতে পারে। সামাজিক ম্যাপিং না হওয়ার আগ পর্যন্ত নির্দিষ্ট সংখ্যা বলা যাবে না।’ এ পর্যন্ত ছয়টি লাশ উদ্ধার হয়েছে বলে জানান তিনি। সেসব লাশের মধ্যে দুটি দুর্যোগকবলিত এলাকার বাইরের। 

সাকা বলেন, ‘কয়েক ডজন সৈন্য, প্রকৌশলী, ভূতত্ত্ব বিশেষজ্ঞ ও জনস্বাস্থ্য কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছেছেন। উদ্ধারকারী দলগুলো বৃহস্পতিবার থেকে ভারী যন্ত্রপাতি ব্যবহার করার পরিকল্পনা করছে।’ সূত্র: রয়টার্স

এবার ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ল উত্তর কোরিয়া

প্রকাশ: ৩১ মে ২০২৪, ০৯:১২ এএম
এবার ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ল উত্তর কোরিয়া
বৃহস্পতিবার দক্ষিণ কোরিয়ায় কয়েকটি স্বল্প মাত্রার ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে উত্তর কোরিয়া। ছবি: সংগৃহীত

দক্ষিণ কোরিয়ায় ময়লাবোঝাই কয়েক শ বেলুন পাঠানোর কয়েক ঘণ্টা পর বেশ কয়েকটি স্বল্প মাত্রার ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে উত্তর কোরিয়া।

শিউলের সামরিক বাহিনী বলেছে, পিয়ংইয়ং বৃহস্পতিবার (৩০ মে) ভোরে স্বল্প মাত্রার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রটি নিক্ষেপ করে।

বার্তা সংস্থা এএফপি বলছে, ওয়াশিংটন, শিউল ও টোকিও ওই উৎক্ষেপণের ব্যাপক নিন্দা জানিয়েছে।

গত সোমবার উত্তর কোরিয়া মহাকাশে একটি নজরদারি স্যাটেলাইট পাঠানোর চেষ্টা করে। কিন্তু তা মাঝ আকাশে বিস্ফোরিত হয়ে যায়। এর পর এল তাদের সাম্প্রতিকতম পদক্ষেপগুলো।

বৃহস্পতিবার সকালে শিউলের সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, তারা ১০টি স্বল্পপাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের উৎক্ষেপণ শনাক্ত করেছে। সেগুলো কোরীয় উপদ্বীপের পূর্বের পানিতে ছোড়া হয়।

ক্ষেপণাস্ত্রগুলো প্রায় ৩৫০ কিলোমিটার দূরে আঘাত হানতে সক্ষম বলেও জানান তারা। শিউলের জয়েন্ট চিফ অব স্টাফ উৎক্ষেপণটিকে ‘উসকানি’ বলে অভিহিত করেন। পাশাপাশি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও জাপান এর সুনির্দিষ্ট বিশ্লেষণ করছে।

জাপানও উৎক্ষেপণের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। দেশটির প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা সাংবাদিকদের বলেন, ‘ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রগুলো জাপানের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের বাইরে পড়েছিল বলে মনে হচ্ছে।’ সূত্র: এএফপি

রাফায় লড়াই ও প্রাণহানি চলছেই

প্রকাশ: ৩১ মে ২০২৪, ০৮:৫২ এএম
রাফায় লড়াই ও প্রাণহানি চলছেই
গাজায় ইসরায়েলি হামলায় রেড ক্রিসেন্টের দুই প্যারামেডিক মারা গেছেন। ছবিটি গতকাল তোলা। ছবি: সংগৃহীত

দক্ষিণ গাজার রাফায় সড়কে তীব্র লড়াই ও ইসরায়েলি গোলাবর্ষণ– দুটোই অব্যাহত রয়েছে। গত মঙ্গলবার শহরটির কেন্দ্রে ইসরায়েলি ট্যাংক প্রবেশ করে, যেখানে হাজারও বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনি আশ্রয় নিয়েছিলেন। এর পর থেকেই আরও প্রতিকূল হতে শুরু করে রাফার পরিস্থিতি। এখন পর্যন্ত ইসরায়েলি হামলায় ৩৭ ফিলিস্তিনির মৃত্যুর খবর এসেছে, যাদের বেশির ভাগই তাঁবুতে বাস করছিলেন।

ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, গাজার সঙ্গে মিশরের যে সীমান্ত রয়েছে, সেটির পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে তারা। ওই সীমান্ত অংশটি ফিলাডেলফি করিডোর নামে পরিচিত। মূলত ইসরায়েল যে আন্তর্জাতিক মহলের নিন্দা ও উদ্বেগের মধ্যেও নিজ অভিযান চালিয়ে যেতে বদ্ধপরিকর, সেটিই আরেকবার ফুটে উঠেছে তাদের এ পদক্ষেপের মধ্য দিয়ে। 

ইসরায়েলি নেতৃস্থানীয়রা নিজেদের মনের ইচ্ছা আড়াল করারও চেষ্টা করছেন না। ইসরায়েলের রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা তাচি হানেগবি বলেছেন, হামাসের ক্ষমতার ধ্বংস নিশ্চিত করতে গাজার যুদ্ধ আরও সাত মাস চলতে পারে। 

গাজায় ইসরায়েলের নির্বিচার হামলা শুরু হয় ৭ অক্টোবর। মূলত হামাস ইসরায়েলি ভূখণ্ডে হামলা চালায় প্রথমে। তাদের হামলায় মারা যায় ১২০০ ইসরায়েলি। গোষ্ঠীটি সঙ্গে করে আড়াইশরও বেশি ইসরায়েলি জিম্মিও নিয়ে আসে। এর জবাবে হামাসকে নির্মূলের লক্ষ্য জানিয়ে যুদ্ধ শুরু করে ইসরায়েল। কিন্তু তারা নির্বিচারে বিমান হামলা ও গোলাবর্ষণ করে। এতে ক্ষয়ক্ষতি হয় বেসামরিকদেরই বেশি। গত সাত মাসে গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর গোলাবর্ষণে মারা গেছেন ৩৬ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি। নিহতদের মধ্যে নারী, শিশু ও বয়োবৃদ্ধই বেশি। আহত হয়েছেন ৮১ হাজার ৪২০ জন। বিশ্বের বহু রাষ্ট্র, পর্যবেক্ষক ও বিশেষজ্ঞের অভিযোগ, আক্রমণের ক্ষেত্রে বারবার আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন ঘটিয়েছে ইসরায়েল।

রাফার পশ্চিমে ইসরায়েলি বাহিনীর বোমা হামলায় প্যালেস্টাইন রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির দুজন প্যারামেডিক মারা গেছেন। তারা রাফার তাল আস-সুলতান এলাকা থেকে আহত ব্যক্তিদের উদ্ধারের চেষ্টা করছিলেন।    

ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর হামলায় প্যারামেডিকের মৃত্যুর বিষয়টি নিয়ে নিন্দা জানিয়েছে ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এ ঘটনাকে ঘৃণ্য অপরাধ আখ্যা দিয়েছে মন্ত্রণালয়টি। আল-জাজিরার খবর বলছে, যুদ্ধ চলাকালে ইসরায়েলি আক্রমণে অন্তত ৪৯৩ জন স্বাস্থ্যকর্মী মারা গেছেন। এদের মধ্যে নার্স, প্যারামেডিক, চিকিৎসক রয়েছেন। আরও অনেক স্বাস্থ্যকর্মী মারা গেছেন বলেও উল্লেখ করেছে মন্ত্রণালয়।

গাজার হাসপাতালগুলোরও ভগ্নদশা। ইসরায়েলি হামলা ও অবরোধের মুখে তাদের রসদ ফুরিয়ে গেছে। কিন্তু সামাল দিতে হচ্ছে অতিরিক্ত রোগীর চাপ। হাসপাতালগুলোতে বর্তমানে বিছানা, ওষুধ, জ্বালানি– সবকিছুরই সংকট রয়েছে।

এদিকে, ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সরকার থেকে পদত্যাগ করতে যাচ্ছেন যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভার সদস্য বেনি গান্টজ। আগামী কয়েক দিনের মধ্যে সামনে আসবে সে ঘোষণা। ইসরায়েলের গণমাধ্যম এ খবর জানিয়েছে। 

বেনি গান্টজ এ মাসের শুরুতে ইসরায়েলের জোট সরকার থেকে পদত্যাগের হুমকি দিয়েছিলেন। গান্টজ সে সময় বলেছিলেন, কয়েক সপ্তাহের মধ্যে নেতানিয়াহু গাজার শাসনবিষয়ক যুদ্ধপরবর্তী পরিকল্পনা সামনে নিয়ে না এলে তিনি পদত্যাগ করবেন। সূত্র: আল-জাজিরা