সিসাদূষণ মানবস্বাস্থ্যের জন্য হুমকিস্বরূপ। বিশেষ করে শিশুরা এই সিসা বিষক্রিয়ায় সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। সাম্প্রতিক কিছু গবেষণায় উঠে এসেছে, বাংলাদেশে ৯৬ লাখ শিশুর রক্তে অতিরিক্ত মাত্রায় সিসার উপস্থিতি পাওয়া গেছে। যার বার্ষিক ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ২০ মিলিয়ন আইকিউ পয়েন্ট। এসডো এবং ইউনিসেফ-বাংলাদেশের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এক কর্মশালায় এসব তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে।
বুধবার (৩ এপ্রিল) রাজধানীর পর্যটন ভবনের শৈলপ্রপাত কনফারেন্স রুমে ‘বাংলাদেশে শিশুদের সিসা বিষক্রিয়া মোকাবিলা’ শীর্ষক এক কর্মশালায় এসব তথ্য জানানো হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী। শিশু স্বাস্থ্যের ওপর সিসা বিষক্রিয়ার ক্ষতিকারক প্রভাব এবং এই সমস্যাটির সমাধানের ওপর গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, ‘বর্তমানে জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশ রক্ষার ক্ষেত্রে বড় চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছে বাংলাদেশ। অর্থনৈতিক উন্নয়নের পাশাপাশি আমাদের শিশুদের ভবিষ্যৎ এবং সবার জন্য স্বাস্থ্যকর পরিবেশ নিশ্চিত করার জন্য প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা অত্যন্ত জরুরি।’
সভাপতির বক্তব্যে পরিবেশবান্ধব সামাজিক উন্নয়ন সংস্থা- এসডোর চেয়ারপারসন এবং সাবেক সচিব সৈয়দ মার্গুব মোর্শেদ বলেন, ‘বিশ্বব্যাপী অন্য অনেক অঞ্চলের মতো বাংলাদেশেও শিশুরা সিসার সংস্পর্শে আসায় ক্ষতিকারক প্রভাবের মুখোমুখি হচ্ছে।’ সিসা বিষক্রিয়ার সমস্যা মোকাবিলায় দ্রুত উদ্যোগ নেওয়ার ওপর তিনি জোর দিয়েছেন।
জাতিসংঘের শিশুরবিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ বাংলাদেশের স্বাস্থ্য বিভাগের প্রধান মায়া ভ্যানডেনেন্ট বাংলাদেশের শিশুদের মধ্যে সিসা বিষক্রিয়ার জরুরি সমস্যা মোকাবিলায় এসডোর সক্রিয় প্রচেষ্টার জন্য আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানান। শিশুদের স্বাস্থ্য ও কল্যাণের লক্ষ্যে নেওয়া এই সম্মিলিত উদ্যোগটি উল্লেখযোগ্য প্রদর্শন হিসেবে কাজ করবে বলে তিনি মনে করেন।
এসডোর সেক্রেটারি জেনারেল ড. শাহরিয়ার হোসেন বলেন, ‘মানুষের সুস্থ ও সুন্দর জীবনের জন্য একটি নিরাপদ ও স্বাস্থ্যকর পরিবেশের প্রয়োজন। তা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আমরা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি।’
এসডোর নির্বাহী পরিচালক সিদ্দীকা সুলতানা উল্লেখ করেন, ‘এক দশকেরও বেশি সময় ধরে আমরা সিসার ক্ষতিকারক প্রভাব থেকে আমাদের শিশুদের নিরাপদ রাখার লক্ষ্যে কাজ করে চলেছি। তাই এই প্রকল্পটি আমাদের দেশের শিশুদের টেকসই ভবিষ্যৎ নিশ্চয়তার লক্ষ্যে একটি উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করবে।’