ঢাকা ২৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, বৃহস্পতিবার, ১২ জুন ২০২৫
English
বৃহস্পতিবার, ১২ জুন ২০২৫, ২৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

বিজিপির আরও ৫ সদস্য পালিয়ে বাংলাদেশে

প্রকাশ: ১৫ এপ্রিল ২০২৪, ০৭:৫৫ এএম
বিজিপির আরও ৫ সদস্য পালিয়ে বাংলাদেশে
ছবি : সংগৃহীত

মায়ানমার চলমান সংঘাতে বিদ্রোহীদের সঙ্গে টিকতে না পেরে নাফ নদী সীমান্ত দিয়ে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে মায়ানমার বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) আরও ৫ সদস্য। এ নিয়ে এখন ১৪ জন বিজিপি সদস্য বিজিবির হেফাজতে রয়েছে।

রবিবার (১৪ এপ্রিল) রাত ১১টার দিকে টেকনাফের হোয়াইক্যং ইউনিয়নের খারাংখালী নাফ নদী সীমান্ত দিয়ে এই ৫ বিজিপি সদস্য বাংলাদেশে আশ্রয় নেন।

এর আগে রবিবার ভোরে অস্ত্রসহ ৯ বিজিপি বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন।

টেকনাফ ব্যাটালিয়ন ২ বিজিবি অধিনায়ক লে. কর্ণেল মো. মহিউদ্দীন আহমেদ বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে মায়ানমারের অভ্যন্তরে চলমান সংঘর্ষের জেরে রবিবার সকাল ও রাতে টেকনাফের হোয়াইক্যং ঝিমংখালী ও খারাংখালী সীমান্ত দিয়ে মায়ানমার ১৪ জন সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপি বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। 

এদিকে, গত ৩০ মার্চ বান্দরবান জেলার নাইক্ষ্যংছড়ির উপজেলার জামছড়ি সীমান্ত দিয়ে পালিয়ে এসে আশ্রয় নিয়েছে ১৭৭ জন বিজিপি সদস্য। এরপর মায়ানমার সেনাবাহিনীর এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ মায়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর আরও ৩ জন সদস্য তুমব্রু সীমান্ত এলাকা কোনাপাড়া দিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। তাদেরকে বর্তমানে নাইক্ষ্যংছড়ি বিজিবির স্কুলে রাখা হয়েছে বলে জানা গেছে। 

এ নিয়ে সর্বমোট ১৯৪ জন বিজিপি সদস্য বাংলাদেশের আশ্রয়ে রয়েছে।

এর আগে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি মায়ানমারে চলমান অভ্যন্তরে সংঘাতের জেরে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া মায়ানমার সেনা, সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদস্য, শুল্ক কর্মকর্তাসহ ৩৩০ জনকে ১৫ দিন পর কক্সবাজারের ইনানী নৌবাহিনীর জেটি দিয়ে সাগরপথে ফেরত পাঠানো হয়েছে।

শাহীন/অমিয়/

ভারতে বিমান দুর্ঘটনায় প্রধান উপদেষ্টার শোক

প্রকাশ: ১২ জুন ২০২৫, ০৭:৫২ পিএম
আপডেট: ১২ জুন ২০২৫, ০৮:২৬ পিএম
ভারতে বিমান দুর্ঘটনায় প্রধান উপদেষ্টার শোক
ছবি: সংগৃহীত

ভারতের আহমেদাবাদে বিমান দুর্ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

তিনি বৃহস্পতিবার (১২ জুন) ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে পাঠানো শোক বার্তায় লিখেছেন, ‘আহমেদাবাদে ২৪২ জন যা্ত্রী বহন করা এয়ার ইন্ডিয়ার বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার বিমান দুর্ঘটনার মর্মান্তিক সংবাদে আমি গভীরভাবে শোকাহত। এই মর্মান্তিক ঘটনায় যেসব পরিবার তাদের প্রিয়জনকে হারিয়েছেন, তাদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাই।’

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘এই দুঃসময়ে, আমাদের চিন্তা ও প্রার্থনায় রয়েছে দুর্ঘটনার শিকার ব্যক্তি ও তাদের প্রিয়জনরা। আমরা ভারতের জনগণ এবং সরকারের পাশে আছি। প্রয়োজনে সব ধরনের সহায়তা দিতে প্রস্তুত রয়েছি।’

উল্লেখ্য, দুর্ঘটনাকবলিত বিমানটি এয়ার ইন্ডিয়ার একটি আন্তর্জাতিক ফ্লাইট ছিল। বিমানটিতে মোট ২৪২ জন আরোহী ছিলেন। গুজরাট থেকে লন্ডনগামী এই বিমান দুর্ঘটনায় বহু যাত্রীর প্রাণহানির আশঙ্কা করা হচ্ছে।

সুমন/

 

বন্যা আক্রান্ত এলাকায় খাদ্য ঘাটতি পূরণে ওএমএসের বরাদ্দ বাড়ানো হবে: খাদ্য উপদেষ্টা

প্রকাশ: ১২ জুন ২০২৫, ০৭:১৮ পিএম
বন্যা আক্রান্ত এলাকায় খাদ্য ঘাটতি পূরণে ওএমএসের বরাদ্দ বাড়ানো হবে: খাদ্য উপদেষ্টা
খাদ্য উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার। ছবি: খবরের কাগজ

গত বছরের বন্যায় যে সব এলাকা আক্রান্ত হয়েছে সেসব এলাকায় খাদ্য ঘাটতি পূরণে ওএমএসের বরাদ্দ বাড়ানো হবে বলে জানিয়েছেন খাদ্য উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার।

বৃহস্পতিবার (১২ জুন) কুমিল্লা সার্কিট হাউজে জেলা প্রশাসন ও খাদ্য সংশ্লিষ্ট দফতরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে খাদ্য উপদেষ্টা এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের মাধ্যমে যে ওএমএস কার্যক্রম পরিচালিত হয়, সেখানের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় বরাদ্দ বাড়িয়ে দেওয়া হবে। বিষয়টি নিয়ে জেলা প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা চিঠি পাঠালে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

কুমিল্লা নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনে আরো স্টাডি করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়ে উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার বলেন, কুমিল্লা নগরীর ধর্মপুরে খাদ্য গুদামের জলাবদ্ধতা, কালিয়াজুড়িতে রেকর্ড রুমের জলাবদ্ধতা নিরসনে কাজ করা হবে। খাদ্য গুদাম ও রেকর্ডরুমের দালানগুলো ঠিক রাখতে কাজ করছে সরকার। সংশ্লিষ্ট দফতরগুলোকে এ বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে তারা এ বিষয়ে দ্রুত সময়ে কাজ করবেন।

এ সময় কুমিল্লার জেলা প্রশাসক মো. আমিরুল কায়ছারসহ সংশ্লিষ্ট দফতরের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

জহির শান্ত/সুমন/

মে মাসে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৬১৪

প্রকাশ: ১২ জুন ২০২৫, ০৬:৩৮ পিএম
আপডেট: ১২ জুন ২০২৫, ০৬:৪২ পিএম
মে মাসে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত  ৬১৪
যাত্রী কল্যাণ সমিতি

গত মে মাসে সারাদেশে সড়ক দুর্ঘটনায় ৬১৪ জন নিহত ও ১ হাজার ১৯৬ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে যাত্রী কল্যাণ সমিতি।

বৃহস্পতিবার (১২ জুন) সংগঠনটির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরীর স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এমন তথ্য দেওয়া হয়েছে।

দেশের জাতীয়, আঞ্চলিক ও অনলাইন সংবাদপত্রে প্রকাশিত সড়ক, রেল ও নৌপথের দুর্ঘটনার সংবাদ মনিটরিং করে এই প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে।

প্রেস বিজ্ঞপ্তির প্রতিবেদনে বলা হয়, মে মাসে রেলপথে ৪৮টি দুর্ঘটনায় ৩৫ জন নিহত ও ১৪ জন আহতের তথ্য গণমাধ্যমে উঠে এসেছে। তথ্যমতে, নৌপথে ৭টি দুর্ঘটনায় ৯ জন নিহত ও ১০ জন নিখোঁজ রয়েছেন।

সড়ক, রেল ও নৌ-পথে সর্বমোট ৬৫২ টি দুর্ঘটনায় ৬৫৮ জন নিহত ও ১ হাজার ২১০ জন আহত হয়েছেন। এই সময়ে ২৩৩টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ২৫৬ জন নিহত ও ২০১ জন আহত হয়েছেন। এই মাসে সবচেয়ে বেশি সড়ক দুর্ঘটনা সংগঠিত হয়েছে ঢাকা বিভাগে। ১৩৯টি সড়ক দুর্ঘটনায় ১৪৮ জন নিহত ও ২৭১ জন আহত হয়েছেন।

সবচেয়ে কম সড়ক দুর্ঘটনা সংগঠিত হয়েছে বরিশাল বিভাগে। বরিশালে ৩০টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৩০ জন নিহত ও ৪৪ জন আহত হয়েছেন। বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির দুর্ঘটনা মনিটরিং সেল গণমাধ্যম পর্যবেক্ষণে এই তথ্য পাওয়া গেছে।

এই সময় সড়ক দুর্ঘটনায় সংগঠিত ৯৪৫টি যানবাহনের পরিচয় মিলেছে। এতে দেখা যায়, ২৯ দশমিক ৪১ শতাংশ মোটরসাইকেল, ২২ দশমিক ৫৩ শতাংশ ট্রাক-পিকাপ-কাভার্ডভ্যান ও লরি, ১২ দশমিক ৪৮ শতাংশ বাস, ১৪ দশমিক ১৭ শতাংশ ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ইজিবাইক, ৬ দশমিক ৬৬ শতাংশ সিএনজিচালিত অটোরিক্সা, ৯ দশমিক ৩১ শতাংশ নছিমন-করিমন-মাহিন্দ্রা-ট্রাক্টর ও লেগুনা, ৫ দশমিক ৩৯ শতাংশ কার-জিপ-মাইক্রোবাস দুর্ঘটনায় পড়েছে।

সংগঠিত মোট দুর্ঘটনার ৪৯ দশমিক ৭ শতাংশ গাড়ি চাপা, ২৪ দশমিক ৯৫ শতাংশ মুখোমুখি সংঘর্ষ, ২০ দশমিক ১০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে, ৫ দশমিক ২ শতাংশ বিবিধ কারণে। এ ছাড়া চাকায় ওড়না পেঁচিয়ে ০ দশমিক ৩৩ শতাংশ ও ০ দশমিক ৫০ ট্রেন-যানবাহনের সংঘর্ষে ঘটে।

দুর্ঘটনার ধরন বিশ্লেষণে দেখা যায়, সংগঠিত মোট দুর্ঘটনার ৩৩ দশমিক ৫০ শতাংশ জাতীয় মহাসড়কে, ৩২ দশমিক ৮৩ শতাংশ আঞ্চলিক মহাসড়কে, ২৮ দশমিক ১৪ শতাংশ ফিডার রোডে সংঘটিত হয়েছে। এছাড়াও সারা দেশে সংঘটিত মোট দুর্ঘটনার ৩ দশমিক ৫১ শতাংশ ঢাকা মহানগরীতে, ১ দশমিক ৫০ শতাংশ চট্টগ্রাম মহানগরীতে ও ০ দশমিক ৫০ শতাংশ রেলক্রসিংয়ে সংগঠিত হয়েছে।

সড়কে দুর্ঘটনায় আক্রান্ত ব্যক্তির মধ্যে ৭ জন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, ১৫৪ জন চালক, ১০৩ জন পথচারী, ৬৭ জন পরিবহণ শ্রমিক, ৯২ জন শিক্ষার্থী, ৫ জন শিক্ষক, ৮৮ জন নারী, ৫৮ জন শিশু, ৩৭ জন সাংবাদিক, ২ জন চিকিৎসক, ১ জন মুক্তিযোদ্ধা ও ৭ জন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীর পরিচয় মিলেছে। সূত্র: ইউএনবি

সুমন/

প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে চাঁদে যাওয়ার দাবিটি বিভ্রান্তিকর: ফ্যাক্টওয়াচ

প্রকাশ: ১২ জুন ২০২৫, ০৪:২০ পিএম
প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে চাঁদে যাওয়ার দাবিটি বিভ্রান্তিকর: ফ্যাক্টওয়াচ

প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে চাঁদে যাওয়ার দাবিটি বিভ্রান্তিকর এবং সত্য নয় বলে শনাক্ত করেছে ফ্যাক্টওয়াচ।

ফ্যাক্টওয়াচ অনুসন্ধান টিম জানায়, রুতবা ইয়াসমিনের তিনদিনের একটি প্রশিক্ষণের ঘটনাকে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে চাঁদে অবতরণ করতে যাচ্ছেন বলে প্রচার করা হচ্ছে। তাই এই তথ্যের ভিত্তিতে অনুসন্ধানে ফ্যাক্টওয়াচ ভাইরাল পোস্টগুলোকে বিভ্রান্তিকর হিসেবে চিহ্নিত করেছে।

চলমান গুজব এবং ভুয়া খবর, অপতথ্য প্রতিরোধ এবং জনগণের কাছে সঠিক তথ্য পৌঁছে দেওয়ায় দায়িত্বে নিয়োজিত ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধানে এ তথ্য উঠে এসেছে। ফ্যাক্টওয়াচ হল একটি স্বাধীন ফ্যাক্ট-চেকিং সত্তা। যা লিবারেল আর্টস বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় অনুমোদিত এবং সেন্টার ফর ক্রিটিকাল অ্যান্ড কোয়ালিটিভেটিভ স্টাডিজ (সিকিউএস) দ্বারা পরিচালিত।

ফ্যাক্টওয়াচ জানায়, সম্প্রতি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া কিছু পোস্টে দাবি করা হচ্ছে, প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে চাঁদে পা রাখতে যাচ্ছেন রুতবা ইয়াসমিন। কিন্তু ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধানে দেখা যাচ্ছে যে, তিনি কেবল স্পেস নেশন আয়োজিত ‘মুন পাইওনিয়ার মিশন’ নামে তিনদিনের একটি কর্মশালায় অংশগ্রহণ করেছিলেন। এটি নাসার প্রাক্তন একজন মহাকাশচারীর নেতৃত্বে তিন দিনের মহাকাশ মিশন সিমুলেশন। যা সাধারণ মানুষকে বাস্তবে মহাকাশ মিশনের মতো অভিজ্ঞতা দিতে তৈরি করা হয়েছে। বাস্তবে চাঁদে অবতরণের কোনো কর্মসূচি নয়। সুতরাং, ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধানে ভাইরাল পোস্টগুলো বিভ্রান্তিকর।

ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধানে পাওয়া যায় যে রুতবা ইয়াসমিন একজন বাংলাদেশি পদার্থবিদ, প্রকৌশলী এবং মহাকাশচারী যিনি স্পেস নেশন আয়োজিত ‘মুন পাইওনিয়ার মিশন ০০৪’-এ সদস্য হিসেবে প্রশিক্ষণ শেষ করেছেন। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সম্প্রতি বাংলাদেশের কিছু সংবাদমাধ্যম রিপোর্ট প্রকাশ করে। সেখানে তার এই প্রশিক্ষণ শেষ করার কথা উল্লেখ করা হয়। পাশাপাশি দাবি করা হয় এই প্রশিক্ষণ নিয়ে তিনি প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে প্রথমবার চাঁদে পা রাখতে যাচ্ছেন।

উল্লেখ্য, স্পেস নেশন মহাকাশ গবেষণা সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কাজ করে। তাদের মূল লক্ষ্য হলো সাধারণ মানুষকে মহাকাশের ব্যাপারে আগ্রহী করে তোলা এবং এমন একটি প্রশিক্ষণ কর্মসূচি তৈরি করা যেখানে পৃথিবীর যেকোনো মানুষ মহাকাশে যাওয়ার সুযোগ পায়। তাদের একটি উদ্যোগ হচ্ছে ‘মুন পাইওনিয়ার মিশন’। এটি তিন দিনের একটি ÔMoon Mission SimulationÕ কর্মসূচি। যা সাধারণ মানুষকে বাস্তবে মহাকাশ মিশনের মতো অভিজ্ঞতা দিতে তৈরি করা হয়েছে। চাঁদে অবতরণের বাস্তব কোনো কর্মসূচি নয়।

এটি নাসার প্রাক্তন মহাকাশচারীর নেতৃত্বে একটি শিক্ষামূলক এবং অ্যাডভেঞ্চার-ভিত্তিক, নভোচারী প্রশিক্ষণ সিমুলেশন। এর মাধ্যমে চন্দ্র অভিযানে অংশগ্রহণকারী নভোচারীদের মতো প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। এর সাথে বাস্তবে চাঁদে যাওয়ার কোনো সম্পর্ক নেই। অন্যদিকে, রুতবা ইয়াসমিন সত্যিই চাঁদে যাচ্ছেন কি-না এ বিষয়ে নাসা বা অন্য কোনো নির্ভরযোগ্য মাধ্যম থেকে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

ফ্যাক্টওয়াচ অনুসন্ধান টিম জানায়,  ‘রুতবা ইয়াসমিনের তিনদিনের একটি প্রশিক্ষণের ঘটনাকে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে চাঁদে অবতরণ করতে যাচ্ছেন বলে প্রচার করা হচ্ছে। তাই উল্লেখিত তথ্যের ভিত্তিতে ফ্যাক্টওয়াচ ভাইরাল পোস্টগুলোকে বিভ্রান্তিকর হিসেবে চিহ্নিত করেছে।’ সূত্র: বাসস

সুমন/

বজ্রপাত নিয়ন্ত্রণে ‘ইএসইএটি’ প্রযুক্তি

প্রকাশ: ১২ জুন ২০২৫, ০১:২৫ পিএম
আপডেট: ১২ জুন ২০২৫, ০১:২৬ পিএম
বজ্রপাত নিয়ন্ত্রণে ‘ইএসইএটি’ প্রযুক্তি
হবিগঞ্জের চুনারুঘাটের গাজীপুর ইউনিয়ন এলাকায় বজ্রপাত প্রতিরোধী আর্লি স্ট্রিমার ইমিশন এয়ার টার্মিনাল (ইএসইএটি)’ যন্ত্র। ছবি: খবরের কাগজ

বজ্রপাতে প্রতিবছর গড়ে ২৫০ থেকে ৩০০ জন প্রাণ হারায়। তাদের বড় অংশই প্রান্তিক জনগোষ্ঠী। এবার অবশ্য কিছুটা আশার কথা শোনা যাচ্ছে। তাদের সুরক্ষার কথা চিন্তা করে বজ্রপাত প্রতিরোধী ‘আর্লি স্ট্রিমার ইমিশন এয়ার টার্মিনাল (ইএসইএটি)’ নামক যন্ত্র স্থাপন করেছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর। ইন্টারনেট অব থিংস (আইওটি) প্রযুক্তি ব্যবহার করে বজ্রপাত নিরোধক এই যন্ত্রের মাধ্যমে বজ্রপাতকে নিমিষে মাটিতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। এরই মধ্যে এই যন্ত্র ব্যবহার করে সুফল পেয়েছে রোহিঙ্গা ক্যাম্প। এ ছাড়া হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার দুটি ইউনিয়নে সুফল মিলেছে বলেও জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। 

স্থানীয় সরকার বিভাগ কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে প্রায় ৭৫০টি ইএসইএটি যন্ত্র স্থাপন করেছে। এসব যন্ত্র স্থাপনের পর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বজ্রপাতে এখন পর্যন্ত কোনো মানুষের মৃত্যু হয়নি। ইএসইএটি নামক যন্ত্রটি তার চারদিকে ৪০০ মিটারের মধ্যে বজ্রপাত সৃষ্টি হলে নিজের দিকে টেনে মাটিতে পাঠিয়ে দেয়। এতে সেই স্থানের প্রাণ-প্রকৃতি রক্ষা পায়। ভারত, শ্রীলঙ্কা, ইন্দোনেশিয়া ও নেপালেও ইতোমধ্যে এ ধরনের আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর যন্ত্র ব্যবহার করে ব্যাপক সফলতা পাওয়া গেছে। এসব দেশে সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে স্কুল, হাসপাতাল, কৃষিজমি ও উপকূলীয় এলাকাগুলোতে স্মার্ট বজ্রপাত নিরোধক রড, গ্রাউন্ডিং ও লাইভ মনিটরিং প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে এবং মৃত্যুহার উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে।

চুনারুঘাট উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়ন পরিষদে সম্প্রতি সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, এলাকাটিতে একটি ইএসইএটি যন্ত্র স্থাপন করা হয়েছে। পাশেই ধান কাটছিলেন তিন কৃষক। আঞ্চলিক ভাষায় তারা জানান, এই এলাকায় বজ্রপাতের পরিমাণ অনেক বেশি। চোখের সামনে তারা অনেক মৃত্যু দেখেছেন। জমির পাশে এই যন্ত্র বসানোর পর গত দুই বছরে এ এলাকায় কেউ বজ্রপাতে মারা যায়নি। 

একই জায়গায় নালায় জাল দিয়ে মাছ ধরছিলেন মো. সুবেল মিয়া।

তিনি বলেন, ‘এ যন্ত্র স্থাপনের পর আমরা অভয়ে এখানে কাজ করতে পারছি। আগে ঝড় এলেই ভয় করত। দৌড়ে বাড়িতে আশ্রয় নিতাম।’ একই ইউনিয়নের গোবরখলা গ্রামের শিক্ষার্থী জুবায়ের তালুকদার বলেন, ‘যন্ত্রটি বসানোর আগের বছরও খোয়াই নদে বজ্রপাতে এক জেলে এবং পাশের গ্রামে দুটি গরু ও এক নারী মারা যায়। বজ্রপাতে এলাকার ২০-২৫টি গাছও নষ্ট হয়। তবে যন্ত্রটি স্থাপনের পর এ অঞ্চলে বজ্রপাতে কেউ মারা যাননি।’ 

চুনারুঘাট উপজেলার শানখলা ইউনিয়নে আরেকটি যন্ত্র স্থাপন করা হয়েছে। এতে স্থানীয় লোকজন সুরক্ষা পাচ্ছে জানিয়ে ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের এই বজ্রপাতপ্রবণ অঞ্চলে এ ধরনের যন্ত্র স্থাপনের কারণে আমরা সুরক্ষিত আছি।’

চুনারুঘাট উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন (পিআইও) কর্মকর্তা নুর মামুন বলেন, ‘বজ্রপাত থেকে মানুষকে সুরক্ষা দিতে দুই বছর আগে পরীক্ষামূলকভাবে দুটি স্থানে ইএসইএটি ডিভাইস স্থাপন করা হয়েছে। যন্ত্রটি স্থাপনে মাত্র একটি খুঁটি প্রয়োজন হয়, ফলে কৃষকের জমি নষ্ট হয় না। এমন উদ্যোগ আরও সম্প্রসারিত করা দরকার।’

প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান আইকনিক ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড ইএসইএটি যন্ত্রটি সরবরাহ করছে। প্রতিষ্ঠানটির সিইও মো. মাহমুদুর রহমান বলেন, ‘এ ডিভাইসটির চারদিকে ৪০০ মিটার এলাকায় বজ্রপাত হলে তা নিজের দিকে টেনে মাটিতে নিয়ে যায়। সঠিকভাবে যত্ন নিলে এটি দীর্ঘদিন ব্যবহার করা যায়। আমরা কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ২০১৯ সালে প্রায় ৭৫০টি স্থানে এ যন্ত্র স্থাপন করেছি। এখন পর্যন্ত কোনো সমস্যা তৈরি হয়নি।’

তিনি বলেন, ‘ফ্রান্সের তৈরি ইন্ডিলেক অ্যাসেট সিস্টেম, যা এখন বাংলাদেশের বাস্তবতায় প্রয়োগ করা হচ্ছে। এটি শুধু একটি বজ্রনিরোধক রড নয় বরং একটি পূর্ণাঙ্গ স্মার্ট ডিভাইস। এর ভেতরে সংযুক্ত রয়েছে ইন্টারনেটভিত্তিক (আইওটি) তথ্য বিশ্লেষণ ও সরাসরি পর্যবেক্ষণের সুবিধা। যন্ত্রটি সোলার থেকে চার্জ নেওয়ায় আলাদা বিদ্যুতের প্রয়োজন পড়ে না। ই-সিমের কারণে সরাসরি ডেটাগুলো পাওয়া যায়। যেকোনো স্থানে বসে মোবাইল ফোনে বা কম্পিউটারে এর কার্যক্রম মনিটরিং করা যায়।’

দুর্যোগ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, দেশের ১৫টি জেলায় সবচেয়ে বেশি বজ্রপাত হয়। এর মধ্যে সিলেট, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার ও সুনামগঞ্জ অন্যতম। অস্ট্রেলিয়ার কার্টিন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আশরাফ দেওয়ান গবেষণা করছেন বাংলাদেশের বজ্রপাত নিয়ে। এক গবেষণা প্রতিবেদনে তিনি উল্লেখ করেন, ‘হাওর অঞ্চলের নেত্রকোনা, কিশোরগঞ্জ, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ ও সিলেট জেলায় প্রাক-বর্ষা মৌসুমে (মার্চ-এপ্রিল-মে মাসে) বেশি বজ্রপাত হয়। বর্ষা মৌসুমে (জুন-জুলাই-আগস্ট) বজ্রপাত বেশি হয় সুনামগঞ্জ, ফরিদপুর, মাদারীপুর, মানিকগঞ্জ, টাঙ্গাইল, গোপালগঞ্জ, বরিশাল এবং উত্তরবঙ্গের রংপুর, পঞ্চগড় ও কুড়িগ্রামে। আর পার্বত্য চট্টগ্রাম, নোয়াখালী ও কক্সবাজারে বর্ষা মৌসুমের পর (অক্টোবর-নভেম্বর) বেশি বজ্রপাত হয়। এমনকি সাতক্ষীরা, খুলনা ও পটুয়াখালীতে শীতকালেও বজ্রপাত হয়।

আইকনিক ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেডের বিজনেস হেড শেখ হাসিনা আক্তার বলেন, ‘আমাদের আর্লি স্ট্রিমার ইমিশন এয়ার টার্মিনাল বজ্রপাত হলে ড্যাস বোর্ডে ই-মেইলে সব ধরনের তথ্য সংরক্ষিত থাকে। আর তথ্য জমা থাকে পাঁচ বছর পর্যন্ত। এই প্রযুক্তি ওয়ার্ল্ড ব্যাংক ও এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক রোহিঙ্গা ক্যাম্পে স্থাপন করেছে। সেখানে তারা ভালো ফলাফল পাচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশের আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপটে প্রয়োজন কৃষক, শ্রমিকদের জীবনের সুরক্ষা নিশ্চিত করা। এ যন্ত্রের মাধ্যমে তা করা যায়।’