
‘ভালো মানুষ ভালো দেশ, স্বর্গভূমি বাংলাদেশ’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে মঙ্গলবার (২১ মে) বিশ্ব মেডিটেশন দিবস পালন করেছে কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন। জাতীয় প্রেস ক্লাব প্রাঙ্গণে বিশেষ মেডিটেশনের আয়োজনের মধ্য দিয়ে চতুর্থবারের মতো এই কর্মসূচি পালন করে সংগঠনটি।
রাজধানীর পাশাপাশি আজ ভোর ৬টায় সারা দেশের বিভিন্ন উন্মুক্ত স্থানে একযোগে প্রাণায়াম বা দমচর্চা, প্রত্যয়ন পাঠ ও মেডিটেশনের আয়োজন করে সংগঠনটি। আর এর মধ্য দিয়ে ধ্যানীরা সুস্থতা ও প্রশান্তির বাণী ছড়িয়ে দেন।
অনুষ্ঠানে বক্তারা প্রাণায়াম, প্রত্যয়ন, অনুভূতি আর ধ্যানের মাধ্যমে মেডিটেশন (ধ্যান) চর্চার গুরুত্ব তুলে ধরেন। তারা জানান, ভুল জীবনযাপন থেকে সৃষ্টি হয় বিভিন্ন রোগ। আর তার থেকে মুক্তি এবং টোটাল ফিটনেসের জন্য প্রয়োজন মেডিটেশন বা সুস্থ জীবনযাপন। প্রশান্তি নিয়ে বর্তমানে বিশ্বজুড়ে প্রায় ৫০ কোটিরও বেশি মানুষ নিয়মিত মেডিটেশন করে। নিয়মিত এই অনুশীলন, মানুষের ভেতরের ইতিবাচক সত্তাকে জাগিয়ে তোলে। আত্মশক্তির বিকাশ, রোগ নিরাময়, সাফল্য কিংবা প্রশান্তি লাভে মেডিটেশনের গুরুত্ব এখন প্রমাণিত সত্য। জাতি, ধর্ম, বর্ণ, গোত্র নির্বিশেষে মানুষের কল্যাণ সাধনে মেডিটেশন সবচেয়ে কার্যকরী মাধ্যম। যা মানুষের মনকে স্থির করে, ক্রোধ কমায়।
এর আগে ভোর থেকে জাতীয় প্রেস ক্লাব প্রাঙ্গণে ধ্যানপ্রেমী ছোট বড় নানা পেশার মানুষ জড়ো হতে থাকে। দিনটি উদযাপন করতে ঢাকার বাইরে থেকেও অসংখ্য মানুষ আসে। তাদের মধ্যে মুন্সীগঞ্জ থেকে আসা আকরাম নামে একজন বলেন, ‘আমাদের প্রত্যেকের মধ্যেই সুপ্ত প্রতিভা লুকিয়ে আছে। আমরা অনেকেই হয়তো সে শক্তি সম্পর্কে নিশ্চিত নই। নিজেকে জানতে কিংবা নিজের সেই লুক্কায়িত প্রতিভা জাগ্রত করার প্রধান অস্ত্র হচ্ছে মেডিটেশন।’
খাদিজা নামের একজন এসেছেন নারায়ণগঞ্জ থেকে। তিনি জানান, এই মেডিটেশন উদযাপনে অংশগ্রহণ করতে তিনি ভোরের আলো ফোটার আগেই বের হয়েছেন। প্রায় ২০ বছর ধরে তিনি মেডিটেশন করছেন। মেডিটেশন তার জীবন বদলে দিয়েছে।
নরসিংদী থেকে এসেছেন মোমেনা বেগম। তিনি বলেন, ‘নিজেকে সময় দেওয়া, স্থির হওয়াটা খুব জরুরি। জীবনের সব ইতিবাচক পরিবর্তনে মেডিটেশন একটি কার্যকরী ওষুধ, যা পরিবারের সুস্থতা ও সামাজিক সুস্থতায়ও অবদান রাখে।’
প্রসঙ্গত, ৭ বছর আগে উইল উইলিয়ামস নামে এক ব্রিটিশ মেডিটেশন প্রশিক্ষক প্রথম দিবসটি পালনের উদ্যোগ নেন। তিনি ছিলেন অনিদ্রার রোগী। মেডিটেশনের মাধ্যমে নিরাময় লাভের পর এ সম্পর্কে আরও উৎসাহী হয়ে ওঠেন উইলিয়ামস। নিয়মিত মেডিটেশন চর্চায় কমে যায় মনের রাগ, ক্ষোভ, দুঃখ, হতাশা কিংবা মানসিক চাপ। নেতিবাচকতা থেকে দৃষ্টিভঙ্গি বদলে যায় ইতিবাচকতায়।