ঢাকা ১২ শ্রাবণ ১৪৩১, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪

উপজেলা নির্বাচন : ভোটকেন্দ্রে বিশৃঙ্খলা, আহত ১৩, আটক ১৪

প্রকাশ: ২৯ মে ২০২৪, ১০:৪০ পিএম
আপডেট: ২৯ মে ২০২৪, ১০:৪০ পিএম
উপজেলা নির্বাচন : ভোটকেন্দ্রে বিশৃঙ্খলা, আহত ১৩, আটক ১৪
ছবি : খবরের কাগজ

ভোটার উপস্থিতি কম এবং সংঘাত-সহিংসতাসহ বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনার মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের তৃতীয় ধাপের ভোট গ্রহণ। বুধবার (২৯ মে) ভোট গ্রহণের সময় অন্তত সাতটি উপজেলায় কয়েকটি কেন্দ্রে সংঘাত, সহিংসতা ও বিশৃঙ্খলার খবর পাওয়া গেছে। এতে আহত হয়েছেন অন্তত ১৩ জন। সংষর্ঘ, সহিংসতা, ব্যালট ছিনতাই ও কেন্দ্রে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টার অভিযোগে প্রিসাইডিং অফিসারসহ ১৪ জনকে আটক করা হয়েছে। দায়িত্বে অবহেলা ও শৃঙ্খলাবিরোধী কাজের দায়ে চার সহকারী প্রিসাইডিং অফিসারকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। ভোটে কারচুপি ও অনিয়মের অভিযোগ এনে দুই উপজেলায় পাঁচ চেয়ারম্যান প্রার্থী ভোট বর্জন করেছেন। এদিকে নির্বাচনের পরিবেশ বিবেচনায় বেশির ভাগ কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি কম ছিল। অনেক কেন্দ্র ছিল প্রায় ফাঁকা। কিছু কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি ছিল অতি নগণ্য। তবে কোথাও কোথাও উপস্থিতি ছিল স্বাভাবিক। প্রতিনিধিদের পাঠানো প্রতিবেদনে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। 

ফেনীতে প্রিসাইডিং কর্মকর্তাসহ আটক ১০

ফেনী: ফেনী সদর, দাগনভূঞা ও সোনাগাজী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে কেন্দ্রে জাল ভোট দিতে গিয়ে সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তা ও পোলিং এজেন্টসহ বিভিন্ন ভোটকেন্দ্র থেকে ১০ জনকে আটক করা হয়েছে। পুলিশ জানায়, সকালের দিকে জাল ভোট দেওয়ার চেষ্টা করলে সদর উপজেলার ফেনী সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্র থেকে ছয়জন, পিটিআই কেন্দ্র থেকে একজন পোলিং এজেন্ট ও একজন সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তা, দাগনভূঞা উপজেলার গজারিয়া কেন্দ্রে একজন এবং সোনাগাজী উপজেলার রাজাপুর মাস্টার মুজিবুল হক একাডেমি কেন্দ্র থেকে একজনকে আটক করা হয়েছে। 

অতিরিক্ত আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা (কুমিল্লা অঞ্চল) ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মুহাম্মদ নাজিম উদ্দিন বলেন, ‘বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি ও জাল ভোট দেওয়ার চেষ্টা করায় তাদের আটক করা হয়েছে।’ 

কোম্পানীগঞ্জে ওবায়দুল কাদেরের ভাইসহ ৪ প্রার্থীর ভোট বর্জন

নোয়াখালী: নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই শাহাদাত হোসেনসহ (টেলিফোন) দুই চেয়ারম্যান ও দুই ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী ভোট বর্জন করেছেন। অন্য প্রার্থীরা হলেন চেয়ারম্যান পদে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাদল (দোয়াত-কলম), ভাইস চেয়ারম্যান পদে মো. মামুন হোসেন (তালা) ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদের প্রার্থী ফাতেমা আক্তার পারুল (প্রজাপ্রতি)। ভোট ডাকাতি, কেন্দ্র দখল, জাল ভোটসহ এজেন্ট বের করে দেওয়ার অভিযোগ তুলে তারা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে গিয়ে একযোগে ভোট বর্জন করেন। ফলে বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জা সমর্থিত প্রার্থীরা অনায়াসে জয়লাভ করেন।

শ্রীমঙ্গলে ৪ সহকারী প্রিসাইডিং অফিসারকে অব্যাহতি

শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার): দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে শ্রীমঙ্গলে চারজন সহকারী প্রিসাইডিং অফিসারকে অব্যাহতি দিয়েছেন সহকারী রিটার্নিং অফিসার ও শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আবু তালেব। বেলা ১১টার দিকে উপজেলার শ্রীমঙ্গল সদর ইউনিয়ন ভোটকেন্দ্র ও হাউজিং স্টেট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র থেকে তাদের অব্যাহতি দেওয়া হয়। অব্যাহতিপ্রাপ্তরা হলেন শ্রীমঙ্গল সদর ইউনিয়ন ভোটকেন্দ্রের সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার মীরা শীল, অঞ্জন দেব, সিরাজুন নেহার চৌধুরী ও হাউজিং স্টেট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার প্রশান্ত কুমার দেব।

রাজশাহীর দুই উপজেলায় হামলা-সংঘর্ষ, আহত ১৩

রাজশাহী: রাজশাহীর দুই উপজেলা পবা ও মোহনপুরে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া, হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনায় অন্তত ১৩ জন আহত হয়েছেন। দুই উপজেলার চেয়ারম্যান প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকরা বিভিন্ন কেন্দ্রে সংঘর্ষে জড়ালে এ আহতের ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে মোহনপুরে ১২ জন ও পবায় একজন আহত হন। 

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাজশাহীর পবা উপজেলার পারিলা ইউনিয়নের পারিলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের বাইরে আনারস প্রতীকের প্রার্থী ফারুক হোসেন ডাবলু ও ঘোড়া প্রতীকের প্রার্থী এমদাদুল হকের সমর্থকদের মধ্যে ভোট দেওয়াকে কেন্দ্র করে বেলা ১১টার দিকে সংঘর্ষ হয়। এতে একজন ছুরিকাহত হলে রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। খবর পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশ ও বিজিবি ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। প্রতিপক্ষের হামলায় গুরুতর আহত ওই ব্যক্তির নাম আব্দুল মোমিন (৩০)। তিনি পবা উপজেলার পারিলা ইউনিয়নের চকপাড়া গ্রামের মো. শুকটার ছেলে। আব্দুল মোমিন ঘোড়া প্রতীক নিয়ে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী এমদাদুল হকের সমর্থক। 

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ঘোড়া প্রতীকের প্রার্থীর কয়েকজন কর্মী-সমর্থক অটোরিকশায় চড়ে ভোটকেন্দ্রে আসেন। এ সময় ভোটকেন্দ্রের সামনে আনারস প্রতীকের সমর্থক পাভেল, পুলক, স্বদেশ, সাইম, শাওন, ফরহাদুল, সাগর, হৃদয়, জাকির, মনি, মোসাব্বির, সোহানসহ প্রায় ২০-২৫ জন মোমিনকে অটোরিকশা থেকে নামিয়ে মারধর শুরু করেন। একপর্যায়ে তাকে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করা হয়। 

এ বিষয়ে ভোটকেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার গোলাম রাব্বানী বলেন, ‘কেন্দ্রের বাইরে কী হয়েছে, তা আমার জানা নেই। কেন্দ্রের ভেতর কিছু হয়নি।’ 

অন্যদিকে রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলার সিংহমারা, হাটরা, মহিশকুণ্ডি কেন্দ্রের বাইরে আনারস ও কাপ-পিরিচ প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ১২ জন আহত হন। তবে এসব ঘটনার পরও নিরবচ্ছিন্নভাবে প্রায় প্রত্যেকটি ভোটকেন্দ্রেই ভোট গ্রহণ চলে। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে কেন্দ্রের বাইরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। 

সার্বিক বিষয়ে রাজশাহী জেলা প্রশাসক (ডিসি) শামীম আহমেদ জানান, তারা সকাল থেকেই পবা-মোহনপুর উপজেলার বিভিন্ন কেন্দ্র ঘুরে দেখছেন। অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশেই নির্বাচন হয়েছে। তবে কয়েকটি এলাকায় কিছু অতি উৎসাহী মানুষ গোলযোগ সৃষ্টির চেষ্টা করে। কিন্তু আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সমন্বয়ের মাধ্যমে ঘটনাগুলো প্রতিহত করছেন।

কলারোয়ায় সহিংসতা সৃষ্টির অভিযোগে আটক ৪

সাতক্ষীরা: সাতক্ষীরার কলারোয়ায় নির্বাচনি সহিংসতা সৃষ্টির অভিযোগে চারজনকে আটক করেছে পুলিশ। বুধবার বেলা ১টার দিকে তাদের আটক করা হয়। আটককৃতরা হলেন কলারোয়া উপজেলার বয়ারডাঙ্গা গ্রামের সাঈদ হোসেন, সুলতানপুর গ্রামের আরিফুল ইসলাম, বাঁধন হোসেন ও আকাশ হোসেন। এ ঘটনায় নজরুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তি গুরুতর আহত হয়েছেন। 

সাতক্ষীরা সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মীর আসাদুজ্জামান জানান, আমিনুল ইসলাম লাল্টুর ঘোড়া প্রতীকের সমর্থক নজরুল ইসলাম সুলতানপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে বসেছিলেন। এ সময় এস এম আলতাফ হোসেন লাল্টুর আনারস প্রতীকের সমর্থক আরিফুল ইসলামের নেতৃত্বে বেশ কয়েকজন যুবক পুলিশের কাছে তাদের বিরুদ্ধে নালিশের অভিযোগ এনে নজরুল ইসলামের ওপর হামলা চালিয়ে মারপিট করে। এ সময় সহিংসতা সৃষ্টির অভিযোগে ঘটনাস্থল থেকে আরিফুল ইসলামসহ তিনজনকে আটক করা হয়। অন্যদিকে বয়ারডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক কেন্দ্রে দাঙ্গা সৃষ্টির অভিযোগে পুলিশ সাঈদ হোসেন নামের একজনকে আটক করেছে বলে জানান তিনি।

চট্টগ্রামে ব্যালট ছিনতাই, পাল্টাপাল্টি ধাওয়া, কেন্দ্র স্থগিত

চট্টগ্রাম: কম ভোটারের উপস্থিতি, ব্যালট পেপার ছিনতাই, ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনার মধ্যে চট্টগ্রামে তৃতীয় ধাপে চার উপজেলায় ভোট গ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। ব্যালট পেপার ছিনতাইয়ের অভিযোগে পটিয়ায় একটি কেন্দ্রের ভোট গ্রহণ বন্ধ রেখেছে নির্বাচন কমিশন। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কাশিয়াইশ ইউনিয়নের পূর্ব পিংগলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় ৯টি ব্যালট বই, ৫৫১টি ব্যালট পেপার, মার্কিং সিল ও অফিশিয়াল সিল ছিনতাই হয়। একসঙ্গে আড়াই শ লোক হামলা চালিয়েছিল। এতজনকে মোকাবিলা করা সম্ভব হয়নি। ফলে এ কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার ভোট গ্রহণ স্থগিত করেন।
 
বোয়ালখালী উপজেলায় ভোটকেন্দ্রে ছুরি নিয়ে প্রবেশ করায় এক যুবককে আটক করে পুলিশ। সকাল ৯টার দিকে উপজেলার চরণদ্বীপ রজভিয়া ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসা কেন্দ্র থেকে রেজাউল নামের ওই যুবককে আটক করা হয়। তিনি কধুরখীল ইউনিয়নের নুরুল আলমের ছেলে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বোয়ালখালী থানার ওসি আছহাব উদ্দিন।

পটিয়া বাহুলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রিসাইডিং অফিসার ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াস বলেন, ভোটারের উপস্থিতি খুবই কম। সকাল থেকে ধীরগতিতে চলে ভোট গ্রহণ। 

আনোয়ারায় প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে হাতাহাতির জেরে হাইলধর ইউনিয়নের বশিরুজ্জামান স্মৃতি শিক্ষা কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ বন্ধ ছিল দেড় ঘণ্টা। এ কেন্দ্রে প্রার্থীদের দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা-ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। বেলা ১১টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত বন্ধ রাখা হয় কেন্দ্রটি। দায়িত্বরত প্রিসাইডিং কর্মকর্তা এহসানুল হক বলেন, প্রার্থীর সমর্থকরা পরস্পর বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলে কিছুটা উত্তেজনা তৈরি হয়। এতে ভোট গ্রহণ সাময়িক বন্ধ রাখা হয়েছিল। 

চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান খবরের কাগজকে বলেন, ‘চট্টগ্রামের চার উপজেলায় শান্তিপূর্ণভাবে ভোট গ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। পটিয়ায় একটি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ স্থগিত করা হয়েছে।’

দেবিদ্বারে চেয়ারম্যান প্রার্থীর ভোট বর্জন

কুমিল্লা: শতাধিক কেন্দ্রে জাল ভোটের অভিযোগ করে কুমিল্লার দেবিদ্বারে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেন ঘোড়া প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী শাহিদা আক্তার। বুধবার বিকেলে ভোটের শেষ মুহূর্তে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেন তিনি। তার অভিযোগ, প্রতিদ্বন্দ্বী আনারস প্রতীকের প্রার্থী মামুনুর রশিদের সমর্থকরা বিভিন্ন কেন্দ্রে জাল ভোট প্রদানের মাধ্যমে ভোটের সুষ্ঠু পরিবেশ নষ্ট করেছেন। শাহিদা আক্তার কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রোশন আলী মাস্টারের সহধর্মিণী। অপর প্রার্থী মামুনুর রশিদ মামুন দেবিদ্বার আসনের সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদের ছোট ভাই।

ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়ে শাহিদা আক্তার বলেন, ‘ভোট চলাকালে উপজেলার শতাধিক কেন্দ্রে আনারস প্রতীকের প্রার্থীর সমর্থকরা প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে জাল ভোট দিয়েছেন। আমার গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। আমার মেয়ের গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। প্রশাসন তাৎক্ষণিক কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচনের কোনো পরিবেশ দেবিদ্বারে ছিল না। তাই আমি এই নির্বাচন বর্জন করলাম।’

ভিক্ষুক জাতিতে পরিণত করার ষড়যন্ত্র থেকেই এই তাণ্ডব: প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশ: ২৭ জুলাই ২০২৪, ১১:৩২ এএম
আপডেট: ২৭ জুলাই ২০২৪, ১১:৩২ এএম
ভিক্ষুক জাতিতে পরিণত করার ষড়যন্ত্র থেকেই এই তাণ্ডব: প্রধানমন্ত্রী

দেশকে অর্থনৈতিকভাবে পঙ্গু করে আবার ভিক্ষুক জাতিতে পরিণত করার ষড়যন্ত্র থেকেই এই তাণ্ডব চালানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

শনিবার (২৭ জুলাই) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে সহিংসতায় আহতদের দেখতে আগারগাঁওয়ে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ট্রমাটোলজি অ্যান্ড অর্থপেডিক রিহ্যাবিলিটেশন-নিটোর (পঙ্গু হাসপাতাল) পরিদর্শনে গিয়ে এসব কথা বলেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশকে অর্থনৈতিকভাবে পঙ্গু করতেই এই ষড়যন্ত্র করেছে বিএনপি-জামায়াত। ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত যেভাবে ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে, এবারও একইভাবে তাণ্ডব করেছে।’

এ সময় শেখ হাসিনা আহতদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় সব ধরনের পদক্ষেপ নিতে বলেন।

হাসপাতাল পরিদর্শনের সময় অন্যদের মধ্যে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন, স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. রোকেয়া সুলতানা, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব এম তোফাজ্জল হোসেন মিয়া এবং প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব নাইমুল ইসলাম খান উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে শুক্রবার (২৬ জুলাই) বিকেলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে সহিংসতায় আহতদের দেখতে যান প্রধানমন্ত্রী। এ সময় প্রধানমন্ত্রী চিকিৎসক ও নার্সদের সঙ্গে কথা বলে আহতদের সব ধরনের চিকিৎসা দেওয়ার নির্দেশ দেন।

অমিয়/

আহতদের দেখতে পঙ্গু হাসপাতালে প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশ: ২৭ জুলাই ২০২৪, ১০:৫৮ এএম
আপডেট: ২৭ জুলাই ২০২৪, ১০:৫৮ এএম
আহতদের দেখতে পঙ্গু হাসপাতালে প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা; ফাইল ছবি

কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে দেশব্যাপী ধ্বংসযজ্ঞে আহতদের দেখতে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ট্রমাটোলজি অ্যান্ড অর্থোপেডিক রিহ্যাবিলিটেশন (নিটর) পরিদর্শন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

শনিবার(২৭ জুলাই) সকালে তিনি পঙ্গু হাসপাতাল পরিদর্শন করেন। সরকার প্রধান এ সময় চিকিৎসাধীন কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলেন ও তাদের চিকিৎসার খোঁজ-খবর নেন।

এ সময় তিনি আহত ব্যক্তিদের যথাযথ চিকিৎসা নিশ্চিত করতে সব ধরনের সহায়তার আশ্বাস দেন।

নিটর পরিচালক অধ্যাপক ড. কাজী শামীম উজ্জামান আহতদের চিকিৎসার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রী আহতদের অবস্থা দেখে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন।

শেখ হাসিনা আহতদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে নির্দেশনা দেন। 

এ সময় উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন, স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. রোকেয়া সুলতানা, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব এম তোফাজ্জল হোসেন মিয়া এবং প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব নাইমুল ইসলাম খান।

এরআগে শুক্রবার (২৬ জুলাই) বিকেলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ডিএমসিএইচ) হাসপাতাল পরিদর্শন করেন এবং সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে সন্ত্রাসি হামলায় আহতদের খোঁজ-খবর নেন সরকার প্রধান।

ইসরাত চৈতী/

কারফিউ বিরতি: দূরপাল্লার বাস চলাচল ছিল কম

প্রকাশ: ২৭ জুলাই ২০২৪, ১০:৫৬ এএম
আপডেট: ২৭ জুলাই ২০২৪, ১০:৫৬ এএম
কারফিউ বিরতি: দূরপাল্লার বাস চলাচল ছিল কম
ছবি: খবরের কাগজ

গত কয়েক দিনে কোটা আন্দোলন ঘিরে ভয়াবহ পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে জারি করা হয় কারফিউ। ফলে সড়ক, রেল ও নৌপথের যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। আন্তর্জাতিক যোগাযোগও বিঘ্নিত হয়। তবে কারফিউ শিথিলের সময়ে রাজধানী থেকে দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে দূরপাল্লার স্বল্পসংখ্যক বাস চলাচল করায় যাত্রীদের মধ্যে স্বস্তি দেখা দেয়। 

গত ১৯ জুলাই কারফিউ ঘোষণা করা হয়। এদিন থেকেই রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়। এতে প্রতিবেশী দেশ ভারতের সঙ্গে রেল যোগাযোগের মাধ্যম মৈত্রী এক্সপ্রেস ও খুলনা-কলকাতা যাতায়াতকারী বন্ধন এক্সপ্রেস চলাচল বাতিল করা হয়। সম্প্রতি নির্দিষ্ট সময় কারফিউ শিথিল হলেও নিরাপত্তার কারণে রেল যোগাযোগ এখনো সচল হয়নি। 

পূর্বঘোষণা অনুযায়ী আজ শনিবার কলকাতা থেকে ১৩১০৮ কলকাতা-ঢাকা মৈত্রী এক্সপ্রেসের রওনা হওয়ার কথা ছিল। একই দিনে ঢাকা থেকে রওনা হওয়ার কথা ছিল ১৩১১০ ঢাকা-কলকাতা মৈত্রী এক্সপ্রেসের। তবে যাত্রীদের নিরাপত্তা বিবেচনায় এসব যাত্রাও বাতিল করেছে উভয় দেশের রেল কর্তৃপক্ষ।

জানা গেছে, যেসব যাত্রী ইতোমধ্যে টিকিট কিনেছেন, কলকাতার বিশেষ টিকিট কাউন্টারে তারা টিকিটের দাম ফেরত পাচ্ছেন। তবে কোনো যাত্রী টিকিট হারিয়ে ফেললে টাকা ফেরত দেওয়া হবে না। বিদেশি যাত্রীদের ক্ষেত্রে প্যাসেঞ্জার রিজার্ভেশন সিস্টেমের (পিআরএস) কাজের সময় টিকিটের টাকা ফেরত দেওয়া হবে। দেশের অভ্যন্তরে চলাচলকারী ট্রেনের টিকিটধারীদেরও টাকা ফেরত দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে রেল কর্তৃপক্ষ। 

এদিকে ঢাকা থেকে স্বল্পসংখ্যক দূরপাল্লার বাস ছেড়ে যাওয়ায় স্বস্তির নিশ্বাস ফেলছেন যাত্রীরা। গত বুধবার থেকেই কারফিউ শিথিল থাকাকালে রাজধানীর সায়েদাবাদ, গাবতলী ও মহাখালী আন্তজেলা বাস টার্মিনাল থেকে বিভিন্ন গন্তব্যে ছেড়ে গেছে দূরপাল্লার কিছু বাস। আবার গতকাল শুক্রবার পর্যন্ত নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বিভিন্ন জেলা থেকে ঢাকায় এসেছে বেশ কিছু বাস। এতে যেন কিছুটা হলেও গতি ফিরে পেয়েছে সড়কে যান চলাচল। কারফিউ চলাকালে যেসব মানুষ ঢাকায় আটকা পড়েছিলেন, তাদেরও স্বস্তি গন্তব্যে ফিরতে পেরে। বিদেশ গমনাগমনের উদ্দেশ্যে যাদের বিমানের টিকিট কাটা আছে, যাতায়াতব্যবস্থা কিছুটা স্বাভাবিক হওয়ায় দুশ্চিন্তা কমেছে তাদেরও। 

অস্ট্রেলিয়ায় অধ্যয়নরত মারিয়া গমেজ দেশে এসেছিলেন গত মাসে। তার বাড়ি ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলায়। মারিয়া খবরের কাগজকে বলেন, ‘আগস্টের প্রথম সপ্তাহে ফেরার টিকিট নিয়ে রেখেছি। কিন্তু কারফিউ জারি করায় ঢাকার ভেতর শহরের বাইরের কোনো যানবাহন ঢুকতে দেওয়া হচ্ছিল না। এতে ঘাবড়ে গিয়েছিলাম। সম্প্রতি ঢাকার ভেতরে যানবাহন চলাচল কিছুটা স্বাভাবিক হওয়ায় স্বস্তি ফিরেছে।’ 

তবে ঢাকায় দূরপাল্লার বাস চললেও এখনো ভয় কাটেনি মানুষের। গত কয়েক দিনের সহিংসতার ঘটনায় প্রয়োজন থাকলেও ঢাকার ভেতর ঢুকতে ভয় পাচ্ছেন অনেকে। পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার বাসিন্দা সুমা গমেজ মোবাইল ফোনে খবরের কাগজকে বলেন, ‘জরুরি প্রয়োজনে আগামী সোমবার ঢাকায় যেতেই হবে। কিন্তু ঢাকার যে খবর শুনি, এই পরিস্থিতিতে সাহসে কুলাচ্ছে না। কখন কোন দিক থেকে আক্রমণ করে বাস পুড়িয়ে দেওয়া হয়, সব সময় এই ভয় পাই।’ 

দূরপাল্লার বাস চলাচলে বিঘ্ন
এদিকে বর্তমান পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে ঢাকা থেকে দূরপাল্লার সব রুটে যাত্রীবাহী বাস চলাচল সীমিত করে এনেছেন বাস মালিকরা। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি ও রাজধানীর তিন আন্তজেলা বাস টার্মিনালের বাস মালিক সমিতির নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে এ তথ্য। তারা বলছেন, সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক কারফিউ বলবৎ থাকলে বিকেল ৫টার পর ঢাকা থেকে দূরপাল্লার বাস চলাচল বন্ধ থাকবে।

শুক্রবার (২৬ জুলাই) রাজধানীর বাড্ডা, কলাবাগান ও শ্যামলী এলাকার কয়েকটি বাস কাউন্টারের কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সড়ক-মহাসড়ক নিয়ন্ত্রণে নিয়ে এলেও বাসমালিকরা এখনো নানা শঙ্কায় ভুগছেন। শ্যামলী এলাকায় আল হামরা, শ্যামলী, নাবিল ও ডিপজল পরিবহনের কয়েকজন বাসচালক খবরের কাগজকে জানান, রাতে বাস না চালানোর মূল কারণ হলো, বাসমালিকরা চোরাগোপ্তা হামলার আশঙ্কা উড়িয়ে দিচ্ছেন না। কারফিউ চলাকালে সড়কে নানা পয়েন্টে নিরাপত্তা তল্লাশিতেও বাসচালক ও যাত্রীরা বিরক্ত হন। 

মহাখালী আন্তজেলা বাস টার্মিনালের বাস মালিক সমিতির সভাপতি মো. আবুল কালাম বলেন, ‘বিকেলের পর টার্মিনালে যাত্রীও থাকেন না। যেহেতু এখন ট্রেন চলাচল বন্ধ, বাসে একটু চাপ পড়ার কথা। কিন্তু ছুটির দিনে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত খুব একটা যাত্রী দেখলাম না মহাখালীতে। মানুষের মনে ভয় রয়ে গেছে। বাস ঠিকঠাক চালাতে না পেরে পরিবহন ব্যবসায় বিশাল ধস নেমেছে।’ 

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির দপ্তর সম্পাদক গোলাম সামদানি বলেন, কারফিউতে বাস চলাচলের বিষয়ে সমিতি কোনো নির্দেশনা জারি করেনি। বাসমালিকরা নিরাপত্তার স্বার্থে রাতে বাস চালাতে রাজি হননি। যতদিন কারফিউ চলবে, এমন পরিস্থিতি থাকবে। যাত্রীদেরও এ নিয়ে খুব অভিযোগ নেই।

শিক্ষার্থীদের রাজাকার বলিনি: প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশ: ২৭ জুলাই ২০২৪, ১০:৪৮ এএম
আপডেট: ২৭ জুলাই ২০২৪, ১০:৪৮ এএম
শিক্ষার্থীদের রাজাকার বলিনি: প্রধানমন্ত্রী
রামপুরায় বাংলাদেশ টেলিভিশন ভবনে (বিটিভি) চালানো ধ্বংসযজ্ঞ পরিদর্শনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

 

এদিকে হামলায় আহতদের যথাযথ চিকিৎসার আশ্বাস দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, দোষীদের উপযুক্ত শাস্তি দিতে হবে, যাতে কেউ আর দেশবাসীর জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে না পারে।

তিনি বলেন, ‘ধ্বংসযজ্ঞ ও নৃশংসতাকারী অপরাধীদের উপযুক্ত শাস্তি দেওয়া উচিত, যাতে দেশের মানুষের জীবন নিয়ে কেউ আর ছিনিমিনি খেলতে না পারে।’ 

শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সুযোগ নিয়ে বিএনপি-জামায়াতের সহিংসতায় হামলার শিকার হয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহতদের দেখতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী এ মন্তব্য করেন। খবর বাসস ও ইউএনবির।

যারা এই ধরনের জঘন্য কাজ করেছে, তাদের খুঁজে বের করার জন্য দেশবাসীর প্রতি তার আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রী। 

জনগণের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলা বন্ধ করার লক্ষ্যে সাম্প্রতিক দেশব্যাপী নৃশংসতার জন্য দায়ী অপরাধীদের যথাযথ শাস্তির প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন তিনি। শেখ হাসিনা আবেগতাড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘এটি একটি খুব বেদনাদায়ক পরিস্থিতি। অনেক মানুষ হতাহত হয়েছে।’ 

তিনি বলেন, ‘এমন মৃত্যুর মিছিল হবে আমি কখনোই চাইনি। কিন্তু আজ বাংলাদেশে এমন ঘটনা ঘটেছে। আমি কখনো চাইনি এ দেশে কেউ তাদের প্রিয়জনকে হারাবে।’

শেখ হাসিনা বলেন, তার সরকার জনগণের আর্থসামাজিক অবস্থার উন্নয়ন এবং জনগণের উন্নত জীবনযাপনের জন্য প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ বাস্তবায়ন করছে। তিনি আরও বলেন, ‘আমার প্রশ্ন হলো তারা এটা থেকে কী অর্জন করেছে? অথচ কত মানুষ প্রাণ হারিয়েছে! কত পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে!’

প্রধানমন্ত্রী নিহতদের আত্মার চিরশান্তি এবং আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করেন।

তিনি বলেন, ‘আহতদের চিকিৎসার জন্য যা যা প্রয়োজন আমরা তা করব, যাতে তাদের চিকিৎসা দেওয়ার ক্ষেত্রে কোনো ত্রুটি না ঘটে।’ তিনি বলেন, চিকিৎসক, স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী আহত রোগীদের দেখতে গিয়ে তাদের যথাযথ চিকিৎসা নিশ্চিত করছেন। আহতদের চিকিৎসার কোনো ঘাটতি হয়নি জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আহতদের চিকিৎসার জন্য যা যা প্রয়োজন সরকার করে যাচ্ছে এবং করবে। চিকিৎসা শেষে তাদের অন্তত আয়-রুজির ব্যবস্থা যাতে হয়, সেটাও আমরা করব।’

শেখ হাসিনা বলেন, তিনি আরও হাসপাতাল পরিদর্শন করবেন, যেখানে আহতরা এখন চিকিৎসাধীন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি মানুষকে মানুষ হিসেবে দেখি। এখানে দলমত নির্বিশেষে সবার জন্য আমি কাজ করি। আমি যা করি সব মানুষের জন্য করি। কে আমাকে সমর্থন করে, কে করে না আমি সেটা চিন্তা করি না। কারণ আমি জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা। মানুষ আমাকে ভোট দিয়ে প্রধানমন্ত্রী করেছে তাদের সেবা করতে। সেভাবেই আমি সেবা করি।’

এদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ১৪ জুলাই সংবাদ সম্মেলনে দেওয়া তার বক্তব্য বিকৃত করা হয়েছে। তিনি আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সেদিন রাজাকার বলেননি। তিনি বলেন, ‘আমি তাদের রাজাকার বলিনি। তারাই স্লোগানে নিজেদের রাজাকার পরিচয় দেয়।’ 

শেখ হাসিনা বলেন, সংবাদ সম্মেলনের ৬-৭ ঘণ্টা পর হঠাৎ করেই তারা নিজেদের রাজাকার পরিচয় দিয়ে স্লোগান দিতে থাকে।

প্রধানমন্ত্রী গতকাল সকালে গত ১৮ জুলাই কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে রামপুরায় বাংলাদেশ টেলিভিশন ভবনে (বিটিভি) চালানো ধ্বংসযজ্ঞ পরিদর্শন শেষে এসব কথা বলেন। 

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিএনপি-জামায়াত ও শিবির দেশের উন্নয়নকে ক্ষতিগ্রস্ত করার পাশাপাশি বিদেশে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার জন্যই দেশব্যাপী তাণ্ডব চালিয়েছে। এই ধ্বংসযজ্ঞের সঙ্গে জড়িত অপরাধীদের গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় আনতে সহায়তা করার জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

মেট্রো রেলস্টেশন, বিটিভি ভবনসহ বিভিন্ন সরকারি স্থাপনা ধ্বংসের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যারা এসবের সঙ্গে জড়িত, সারা বাংলাদেশের আনাচে-কানাচে যে যেখানে আছে, তাদের খুঁজে বের করুন। তাদের শাস্তির ব্যবস্থা করার জন্য সহযোগিতা করুন। আমি দেশবাসীর কাছে এই আহ্বান জানাচ্ছি।’ 

বিএনপি-জামায়াতের দুর্বৃত্তদের তাণ্ডবলীলায় ক্ষতিগ্রস্ত মিরপুর-১০ মেট্রো রেলস্টেশন গত বৃহস্পতিবার সকালে পরিদর্শন করেন প্রধানমন্ত্রী। গতকাল পরিদর্শন করলেন লণ্ডভণ্ড বিটিভি ভবন।

১৯৯৬ সালে ২১ বছর পর সরকারে এসে এবং দ্বিতীয় মেয়াদে ২০০৯ সালে সরকার গঠন করার পর থেকে তার সরকার বিটিভির প্রভূত উন্নয়ন ও আধুনিক যন্ত্রপাতি সজ্জিত করেছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, আজকে এত বছর পর এসে দেখা গেল সেই একাত্তর সালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী যে নারকীয় তাণ্ডব, তারই যেন একটা বীভৎস রূপ বাংলার মানুষ দেখছে। 

প্রধানমন্ত্রী ২০১৩ সালে তথাকথিত আন্দোলনের নামে বিএনপি-জামায়াতের তাণ্ডবলীলা ও ধ্বংসযজ্ঞে ৩ হাজার ৮০০ যানবাহন, ২৮টি ট্রেন ও ট্রেনের বগি, লঞ্চ ও সরকারি স্থাপনায় অগ্নিসংযোগের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, এবার কোটা সংস্কার আন্দোলনকে পুঁজি করে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালানো হলো।

সরকারপ্রধান বলেন, ‘তবে এবারের আগুন লাগানোর ধরন আগেরগুলোর তুলনায় আলাদা। তারা এবার আগুন লাগাতে গানপাউডার ব্যবহার করেছে এবং কিছুক্ষণের মধ্যেই সবকিছু পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।’

শেখ হাসিনা আরও বলেন, পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী কিন্তু টেলিভিশনের ওপর হাত দেয়নি বা কেউই কখনো দেয়নি। কিন্তু আজকে এই টেলিভিশন সেন্টারকে যারা এইভাবে পোড়াল, একটা কিছু নেই যে তাদের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে। তাহলে এরা কারা? এরা কি এ দেশেরই মানুষ? এদের কি এই দেশেই জন্ম? একটা দেশকে সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করার চিন্তা নিয়েই যেন তাদের এই আক্রমণ।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এই দেশ আমরা অনেক কষ্ট করে পাকিস্তানিদের কাছ থেকে স্বাধীন করেছি। আজ বাংলাদেশ বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল। বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে। সেই মর্যাদাকে ধ্বংস করার জন্যই এই ধ্বংসযজ্ঞ।’

শেখ হাসিনা বিটিভির ধ্বংসযজ্ঞ আর আগুনে পোড়া অবস্থা দেখে স্মৃতি রোমন্থন করে বলেন, ‘আজ অতীতের কথা মনে পড়ে আমি কতবার এখানে এসেছি। প্রত্যেক নির্বাচনের আগে এখানে ভাষণ দিতে এসেছি। নানা অনুষ্ঠানে এসেছি। আজ যে ধ্বংসযজ্ঞ দেখলাম এরপর এটা আবার কবে পুনরায় প্রতিষ্ঠা করা যাবে, জানি না।’
বিটিভির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘আপনারা জীবনের ঝুঁকি নিয়েও অনেক চেষ্টা করেছেন। এই সন্ত্রাসীদের কাছ থেকে পার পাওয়া অত্যন্ত কষ্টকর ছিল। তবু আপনারা এই জাতীয় সম্পদকে রক্ষার চেষ্টা করেছেন।’

প্রধানমন্ত্রী এ সময় অত্যন্ত আবেগাপ্লুত কণ্ঠে বলেন, ‘এইগুলো দেখে আমি আসলে আর কথা বলতে পারছি না। একেকটি জিনিস যখন গড়ে তুলতে অনেক কষ্ট করতে হয়।’ তিনি বলেন, ‘দেশের জনগণের উন্নয়নের জন্য দিন-রাত অক্লান্ত পরিশ্রম করি। সেটা আমার দেশের মানুষেরই জন্য। একটা জিনিস এমনভাবে তৈরি করার চেষ্টা করি, যাতে এইগুলো শুধু দেশে নয়, বিদেশিদের কাছেও দৃষ্টিনন্দন হয়। আমরা দেশের যে উন্নতি করছি তার প্রতীক হিসেবে ব্যবহার হবে। প্রতিটি ক্ষেত্রে সেই জায়গাগুলো একে একে ধ্বংস করা হচ্ছে। এত দিনের কষ্টের ফসল সব শেষ করে দিতে চাচ্ছে। এটাই হচ্ছে সবচেয়ে বড় কষ্টের। দেশবাসীর কাছে এর বিচার চাই, আমি তাদের সহযোগিতা চাই।’

প্রধানমন্ত্রী গতকাল সকাল ৯টা ১৩ মিনিটের দিকে বিটিভি ভবনে প্রবেশ করেন এবং কোটা সংস্কার আন্দোলনের সুযোগ নিয়ে বিএনপি-জামায়াত চক্রের তাণ্ডবে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত সব বিভাগ পরিদর্শন করেন।

বিটিভি ভবনে ধ্বংসযজ্ঞ দেখে কর্মকর্তারা তাদের চোখের পানি ধরে রাখার চেষ্টা করার সময় বাতাস ভারী হয়ে উঠলে শেখ হাসিনাকেও অশ্রুসিক্ত হয়ে পড়তে দেখা যায়।

বিটিভির সদর দপ্তর ও ভবনে ভাঙচুরের একটি ভিডিওচিত্রও প্রধানমন্ত্রীকে দেখানো হয়।

বিটিভির পরিসংখ্যান অনুযায়ী তাণ্ডবে বিটিভির বিভিন্ন অবকাঠামো, সম্প্রচার সরঞ্জাম, নকশা বিভাগ, অফিস ভবন এবং বিভিন্ন কক্ষ ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সারা দেশ থেকে বিএনপি-জামায়াত, বিশেষ করে শিবির কোটাবিরোধী আন্দোলকারীদের ওপর নির্ভর করে এই ধ্বংসলীলা চালিয়েছে। তিনি সারা দেশের তাণ্ডবলীলার খণ্ডচিত্র তুলে ধরে বলেন, সেখানে পুলিশকে হত্যা করা হয়েছে। হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে যাওয়া পুলিশ সদস্যকে হাসপাতাল থেকে টেনে বের করে রাস্তায় ফেলে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। র‌্যাবের গাড়ির ভেতরে র‌্যাব সদস্যকে হত্যা, সাংবাদিক হত্যা করা হয়েছে। সাধারণ মানুষ হত্যার শিকার হয়েছে। ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীকে হত্যা করা হয়েছে। গাজীপুরে এক কর্মীকে হত্যার পর ঝুলিয়ে রাখে। বাড়ি বাড়ি খুঁজে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীকে হত্যা, যাত্রাবাড়ীতে তার মোটর শোভাযাত্রার এক চালকও বাদ যাননি। এইভাবে একদিকে হত্যাকাণ্ড, একদিকে জ্বালাও-পোড়াও। এরা কি বাংলাদেশের নাগরিক? দেশের স্বাধীনতা বা উন্নয়নে বিশ্বাসী, সে প্রশ্নও তোলেন তিনি।

সরকারপ্রধান বলেন, তার সরকারের কোটা বাতিলের জারি করা পরিপত্র বাতিলে হাইকোর্টের রায় যেখানে স্থগিত হয়ে গিয়েছিল এবং সরকারের আপিলের ভিত্তিতে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে নিষ্পত্তির অপেক্ষায় ছিল, সেখানে কোটাবিরোধী আন্দোলনের কী ছিল সে প্রশ্ন তিনি শিক্ষার্থী, তাদের অভিভাবক এবং সংশ্লিষ্ট শিক্ষকদের উদ্দেশে ছুড়ে দেন।

শেখ হাসিনা বলেন, “ধৈর্য ধরে তাদের বোঝানোর চেষ্টা হয়েছে, বারবার বলেছি, মন্ত্রীরা পর্যন্ত দিনের পর দিন বৈঠক করেছেন। কিন্তু একটা বিষয় লক্ষ করলাম, ওই মুক্তিযুদ্ধ বা মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের প্রতিই তাদের যেন বেশি ক্ষোভ। তার একটি কথাকে বিকৃত করে নিজেদের রাজাকার আখ্যায়িত করে কতদিন তারা প্রতিবাদ করল। যার প্রতিবাদ প্রত্যেকটি শ্রেণি-পেশার মানুষ, এমনকি ছাত্রলীগ, যুবলীগ থেকে শুরু করে প্রগতিশীল সংগঠনগুলো পর্যন্ত করেছিল। তখন তারা স্লোগান পরিবর্তন করল- ‘চেয়েছিলাম অধিকার, হয়ে গেলাম রাজাকার’।”

প্রধানমন্ত্রী বলেন, চারদিকে যখন আগুন, এই টেলিভিশন ভবনে যখন আগুন লাগানো হলো, ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা এসেছেন তাদের ঢুকতে দেবে না। তাদের গাড়িতেও আগুন দেওয়া হলো। পুলিশ, র‌্যাব কাউকে ঢুকতে দেবে না, আগুন দাউদাউ করে জ্বলছে।

শেখ হাসিনা বলেন, তখন তিনি হেলিকপ্টারে করে পানি ছিটানোর ব্যবস্থা নিলেন। অনেক ভবনে আগুন দেওয়ায় অনেকে ছাদে গিয়ে হাহাকার করায় হেলিকপ্টার দিয়েই তাদের উদ্ধার করা হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘কিন্তু আজ টেলিভিশন ভবনে এসে যে ধ্বংসযজ্ঞ আমি দেখলাম, এটা কারও পক্ষেই সহ্য করার নয়। আজ বিশ্বে বাংলাদেশের মর্যাদা ভূলুণ্ঠিত হলো। যদিও যারা আগুন দিয়েছে তাদের কিছু আসে যায় না। কারণ লন্ডন থেকে নির্দেশ দেয় যেখানে যেখানে বাঙালি আছে তাদের আন্দোলন করতে হবে।’

সরকারপ্রধান বলেন, লন্ডনে আওয়ামী লীগের ওপর হামলা করা হলো। সেখানে পুলিশ এসে বিএনপির ৩ নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে। সংযুক্ত আরব আমিরাতে (ইউএই) বিক্ষোভ করায় ৫৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর মধ্যে ৩ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড, ১৬ জনের ১০ বছরের কারাদণ্ড হয়েছে। অন্যদের সেখানে রাখা হবে না। দেশে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। তারা যে রুটি-রুজির পথ হারাল শুধু তা-ই নয়, যেসব বাঙালি সেখানে থাকে, তাদের মুখটা আজ কোথায় গেল! কারণ ওই দেশে আইন আছে, কেউ মিছিল করতে পারে না; কিন্তু তাদের উসকে দেওয়া হয়েছিল লন্ডন থেকেই।

শেখ হাসিনা বলেন, সেখানে আর বাংলাদেশিদের নেওয়া হবে না জানতে পেরে তিনি তাৎক্ষণিক সেখানকার দূতাবাস এবং সে দেশের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে কথা বলেছেন। সৌদি আরবও কঠিন আইন প্রয়োগকারী দেশ। সেখানেও ২০ জন গ্রেপ্তার হয়েছে। 

তাহলে এই গ্রেপ্তার হওয়া লোকজন ও আমাদের লাখ লাখ কর্মীর ভবিষ্যৎ কী- সে প্রশ্ন উত্থাপন করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সেখানেও তিনি মেসেজ পাঠিয়েছেন। কিন্তু তাদের আইন তো তাদের নিজস্ব গতিতেই চলবে। এখনো বিভিন্ন দেশে ফোন করে আন্দোলনের জন্য উসকে দেওয়া হচ্ছে, এতে সেখানকার বাংলাদেশিদের রুটি-রোজগারও নষ্ট হয়ে যেতে পারে।

শেখ হাসিনা বলেন, সাজাপ্রাপ্ত আসামি মুচলেকা দিয়ে দেশ ছেড়ে এখন দেশ ধ্বংসে নেমেছে, সঙ্গে আছে জামায়াত-শিবির, যারা সব সময়ই স্বাধীনতাবিরোধী।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের সাধারণ মানুষের জানমাল রক্ষা ও নিরাপত্তা বিধানে তার সরকার কারফিউ দিতে এবং সেনাবাহিনী নামাতে বাধ্য হয়েছে। তিনি বলেন, ‘মানুষের জানমাল রক্ষা করা আমাদের কর্তব্য। আজকে মানুষের মাঝে স্বস্তি ফিরে এসেছে।’

মোবাইল ইন্টারনেট রবি-সোমবার চালু

প্রকাশ: ২৭ জুলাই ২০২৪, ১০:৪৪ এএম
আপডেট: ২৭ জুলাই ২০২৪, ১০:৪৪ এএম
মোবাইল ইন্টারনেট রবি-সোমবার চালু

বন্ধ থাকা মোবাইল ইন্টারনেট সেবা রবি-সোমবারের দিকে চালু হতে পারে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ সংস্থা (বিটিআরসি)। 

শুক্রবার (২৬ জুলাই) সংস্থাটির চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন আহমেদ সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, এখনো মোবাইল ইন্টারনেট চালুর বিষয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে। যেসব সঞ্চালন লাইন এবং ডেটা সেন্টার রিপেয়ার করা হয়েছে, ইমপ্যাক্টটা কেমন পড়ছে এবং তা নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে। সবকিছু ঠিক থাকলে রবি-সোমবার মোবাইল ইন্টারনেট চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে।

এর আগে কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংসতার মধ্যেই গত ১৭ জুলাই রাতে মোবাইল ইন্টারনেট এবং ১৮ জুলাই রাতে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট বন্ধ করে দেওয়া হয়। এর ৫ দিন পর ২৩ জুলাই রাতে পরীক্ষামূলকভাবে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা চালু করা হয়। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কূটনীতিকপাড়া, ব্যাংক-আর্থিক প্রতিষ্ঠান, বিদ্যুৎ, ফ্রিল্যান্সিং, প্রযুক্তি ও রপ্তানিমুখী খাতসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে এ ইন্টারনেট সেবা চালু করা হয়। এরপর গত ২৪ জুলাই রাত থেকে আবাসিক এলাকায়ও ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা দেওয়া শুরু হয়। কিন্তু তা ধীরগতিতে মিলছে।

গত বৃহস্পতিবার গুগল ক্যাশ সার্ভার দিয়ে গতি কিছুটা বাড়ানোর ফলে নিরবচ্ছিন্নভাবে ইউটিউব দেখা যাচ্ছে। চালু হয়েছে ই-মেইল। তবে হোয়াটসঅ্যাপে টেক্সট আদান-প্রদান করা গেলেও এখনো কল করা যাচ্ছে না। সেই সঙ্গে বন্ধ আছে ফেসবুক ও টিকটকের ক্যাশ সার্ভার।