![কারও দাসত্ব না মানাই আমাদের পররাষ্ট্রনীতি : ওবায়দুল কাদের](uploads/2024/02/27/1709042996.Obaidul_Quader.jpg)
যুক্তরাষ্ট্রের একটি প্রতিনিধিদলের ঢাকা সফর বিষয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদল ফিরে গিয়ে কী বলবে, আমরা বিদেশি বন্ধুর সঙ্গে বন্ধুত্ব করতে চাই। তবে বন্ধুর পরিবর্তে যারা প্রভুর ভূমিকায় আসতে চান, সে প্রভুর দাসত্ব আমরা মানি না। এটাই আমাদের পররাষ্ট্রনীতি।’
তিনি বলেন, ‘এ নিয়ে জল্পনা-কল্পনার কোনো প্রয়োজন কি আমাদের আছে? আমরা বুঝব কী বলে গেছেন। আবার আমেরিকায় গিয়ে কী বলবেন- সেটা নিয়ে এত মাথা ঘামানোর কোনো প্রয়োজন তো আমাদের নাই।’
মঙ্গলবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর ধানমন্ডির আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন।
বিএনপির সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদল বৈঠক করলেও আওয়ামী লীগের সঙ্গে বৈঠক না করার বিষয়টি ‘সংকট’ হিসেবে দেখা হচ্ছে কি না সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছে তাদের মতামত বা পরিস্থিতি সম্পর্কে তাদের কি ওপিনিয়ন, তাদের কি ভিউজ, সেটা জানাটা তারা (মার্কিন প্রতিনিধিদল) যৌক্তিক মনে করেছে। সে কারণে বৈঠক করেছে। তারা তো আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি বিনিয়োগ উপদেষ্টার সঙ্গে কথা বলেছে, কাজেই এখানে কোনো ঘাটতি আছে বলে আমরা মনে করছি না।’
বিএনপির সমালোচনা করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘তারা (বিএনপি) বলেছিল নির্বাচন হবে না। নির্বাচন হলে পাঁচ দিনও সরকার টিকবে না। তারা ওয়াশিংটনের কাছে যা চায়, সেই চাওয়াটা পাওয়া হয়নি। তারা শুনতে চেয়েছিল সরকারের ওপরে নিষেধাজ্ঞা আসবে।’
দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কারণে সরকারবিরোধী অসন্তোষের আশঙ্কা করছেন কি-না এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘এত উসকানি এত আন্দোলনেও ওই পিকনিক পার্টি সমাবেশের নামে জনগণকে প্রলুব্ধ করতে পারেনি। দেশের মানুষ প্ররোচিতও হয়নি। দেশের জনগণ সারা বিশ্বের খবর রাখে। বিশ্বের সব খবর নিয়ে গ্রামে চায়ের দোকানেও রীতিমতো গবেষণা হয়। মানুষ বোঝে, এখানে (দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি) সরকারের দোষ নেই। অর্থনীতিতে যখন সংকট হবে তখন দ্রব্যমূল্য, বাজার ওঠানামা করে। অপেক্ষা করুন, আপনাদের তো না খাইয়ে রাখিনি, দেশের মানুষ খেতে পারছে। একটা মানুষও না খেয়ে মরেনি। দেশের মানুষ অনেক ভালো আছে।’
‘চাঁদাবাজির কারণে গরুর মাংসের দাম বাড়ছে’ এমন অভিযোগের বিষয়ে প্রশ্ন করলে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘চাঁদাবাজি একটা বিষয় অবশ্যই আছে। দেশের প্রধানমন্ত্রী নিজেই এই চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে কঠিন বক্তব্য রেখেছেন। সংশ্লিষ্ট সবাইকে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন। একটা বিষয় শুরু হলে রাতারাতি বন্ধ হয়ে যাবে, এমন তো ভাবার কোনো কারণ নেই। প্রধানমন্ত্রী বলার পর সবাই নড়েচড়ে বসেছেন।’
গত বছরের তুলনায় দ্বিগুণ পরিমাণ বিদেশি ঋণ পরিশোধ করা নিয়ে সরকার উদ্বিগ্ন কি না জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘ঋণ পরিশোধ করতে হবে। বিশ্ব সংকটের কারণে সারা দুনিয়াতেই এখন অর্থসংকট প্রধান হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ সময় ঋণ আগের তুলনায় বাড়তে পারে কিন্তু বাংলাদেশ এ যাবৎ ঋণখেলাপি হওয়ার কোনো রেকর্ড রাখেনি। আমরা সে ব্যবস্থা করছি।’
সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল হোসেন, সুজিত রায় নন্দী, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক আব্দুস সবুর, সংস্কৃতিবিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক শামসুন্নাহার চাপা, উপ-প্রচার ও প্রকাশনাবিষয়ক সম্পাদক আব্দুল আউয়াল শামীম, উপ-দপ্তর সায়েম খান উপস্থিত ছিলেন।