ঢাকা ২২ বৈশাখ ১৪৩২, সোমবার, ০৫ মে ২০২৫

আওয়ামী লীগ সম্পূর্ণ দেউলিয়া হয়ে গেছে : মির্জা ফখরুল

প্রকাশ: ১৪ এপ্রিল ২০২৪, ০৬:১৫ পিএম
আওয়ামী লীগ সম্পূর্ণ দেউলিয়া হয়ে গেছে : মির্জা ফখরুল
ঠাকুরগাঁওয়ে বিএনপি নেতা তৈমুর রহমানের স্মরণ সভায় বক্তব্য রাখছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি : খবরের কাগজ

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আওয়ামী লীগ আর রাজনৈতিক দল নেই, সম্পূর্ণ দেউলিয়া হয়ে গেছে। এখন তারা রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে সরকার চালায়। এখন আওয়ামী লীগ নেই, পুলিশ লীগ হয়ে গেছে।

রবিবার (১৪ এপ্রিল) বিকেলে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রুহিয়ায় সদ্য প্রয়াত জেলা বিএনপির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা তৈমুর রহমানের স্মরণ সভায় এসব কথা বলেন তিনি। 

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ফ্যাসিবাদী কায়দায় একদলীয় শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে চায়। ৭৫ সালে তারা বাকশাল করেছিল, এখন আবার তারা একদলীয় শাসন প্রতিষ্ঠা করতে সর্বপ্রথম যে কাজটি করেছে, নির্বাচন ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দিয়েছে। মানুষ এই সরকারকে আর দেখতে চায় না। আন্দোলনের মধ্য দিয়ে চাপ সৃষ্টি করে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে এই সরকারকে বাধ্য করতে হবে সত্যিকার অর্থেই একটা অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচন দেওয়ার জন্য।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘চুরি করতে করতে দেশটাকে তারা লুটপাট করে নিয়েছে। অর্থনীতি শেষ। ব্যাংকগুলো ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। অর্থনৈতিক অবস্থান ধসের দিকে যাচ্ছে। অর্থনীতিবিদরা বলছেন এখন থামেন।  মেগা প্রজেক্ট দিয়ে মেগা দুর্নীতি বন্ধ করেন। না হলে এ দেশ আর টিকবে না।’ 

এ সময় আরও বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি সুলতানুল ফেরদৌস নম্র, পয়গাম আলী, অ্যাডভোকেট আব্দুল হালিম, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আমিন, সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হামিদ, মহিলা দলের সভাপতি ফুরাতুন নেহার প্যারিস প্রমুখ।

নবীন/সালমান/

 

পানিকে মারণাস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করেছে ভারত :মির্জা আব্বাস

প্রকাশ: ০৪ মে ২০২৫, ১০:০৬ পিএম
আপডেট: ০৪ মে ২০২৫, ১০:০৭ পিএম
পানিকে মারণাস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করেছে ভারত :মির্জা আব্বাস
ছবি: খবরের কাগজ

তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবিতে গণপদযাত্রায় এসে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, ‘এই পানির ন্যায্য হিস্যা ইনশাআল্লাহ আমরা আদায় করে ছাড়বো। পানি কখনো মারণাস্ত্র হতে পারেনা, পানি কখনো যুদ্ধাস্ত্র হতে পারেনা। একমাত্র সারা বিশ্বে ভারত দেখিয়ে দিল পানিকে তারা কীভাবে মরণাস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করেছে। পানিকে তারা যুদ্ধাস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করেছে। কতটুকু অমানবিক হলে তারা কাজটুকু করতে পারে।’

রবিবার (৪ মে) বিকেলে রংপুর শাপলা চত্বরে তিস্তা মহা পরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবিতে ‘তিস্তা নদী রক্ষা আনদোলন’ কমিটির আয়োজনে বিএনপির গণপদযাত্রায় অংশ নিয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব  কথা বলেন তিনি।

মির্জা আব্বাস বলেন, শুধু তিস্তা নয়সারা বাংলাদেশের ৫৪টি অভিন্ন নদীর পানি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তিস্তা আমাদের একটা উদাহরণ মাত্র। সারা বাংলাদেশে তারা নদীগুলো বন্ধ করে দিয়েছে। ফারাক্কা বন্ধ করেছে সুরমা বন্ধ করেছে, কুশিয়ারা বন্ধ করেছে। অনেক আগে পানির হিস্যা আদায় করতে পারতাম যদি হাসিনার মতো স্বৈারাচার চাটুকার সরকার বাংলাদেশের না আসতো। এই পানি নিয়ে তারা কোনদিন কোন কথা বলে নাই।

এ সময় তিনি তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক আসাদুল হাবিব দুলুকেও সতর্ক করে বলেন, ইলিয়াসকে গুম করা হয়েছে হত্যা করা হয়েছে, শুধু শুরমার বাঁধ নিয়ে প্রতিবাদ করেছিলো বলে। কারণ ভারত কখনো এই ধরনের প্রতিবাদী মুখ সহ্য করতে পারে না। দুলু উত্তরবঙ্গের একজন প্রতিবাদী মুখ। একজন প্রতিবাদী সন্তান বলে আমি বিশ্বাস করি।

এই আন্দোলনের প্রশংসা করে মির্জা আব্বাস বলেন, আমি অনেক আন্দোলন দেখেছি। কিন্তু এত বড় আন্দোলন আর দেখি নাই। এটি আকর্ষণীয় অহিংস নয় সহিংস প্রতিবাদ। একটি অহিংস দাবি সারা বিশ্বের সামনে দুলু তুলে ধরেছে।

তিনি আরও বলেন, আমরা চোখের পানিতে কারো কাছে কিছু চাই না। আমরা বকশিশ চাই না। আমরা ভিক্ষা চাই না আমরা হিসাবের পাওনা চাই। আমাদের হিসাবের পাওনা দিতে হবে আজকে না হোক কাল কাল না হয় পরশু। যে আন্দোলন শুরু হয়েছে সেই আন্দোলন থামবে না। কিছুদিন আগে যে সরকার ছিল কে কখনোই এসব দাবি-দাওয়া পূরণ করার মতো সক্ষমতা রাখতো না।

এ সময় ভারতের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আমাদের কাছে আপনাদের ট্রানজিট আছে মোংলা পোর্ট আছে, চট্টগ্রাম পোর্ট আছে, প্রয়োজনে আমরা সব কিছু হিসাব করব। আমরাও ছাড়বো না। আমাদের তিস্তার পানি চাই দিতে হবে ফারাক্কার পানি চাই দিতে হবে। যেখানে যেখানে আমাদের পানি আছে সেখানে পানি দিতে হবে।

গণপদযাত্রায় অংশ নিয়ে অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেন, 'তিস্তার পানি বাপ বাপ করে দেবে। রংপুর লালমনিরহাট গাইবান্ধা কুড়িগ্রামসহ সব জেলায় যেহেতু জেগেছে তাই তিস্তা মহা পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে হবে। এই জায়গায় কোন আপস নাই। দুলু ভাই যে ঐক্যের যায়গা তৈরি করেছে বিজয় অনিবার্য। এ সময়  আপসহীন নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া দেশে আসতেছেন বলে জানান তিনি।

সংক্ষিপ্ত আলোচনা শেষে হাতে জাতীয় পতাকা নিয়ে জাগো বাহে তিস্তা বাঁচাই লোগো সম্বলিত টি-সার্ট পরে গণপদযাত্রা শুরু করেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। রংপুর শাপলা চত্বরে শুরু হয়ে জেলা স্কুলে গিয়ে শেষ  করেন এই গণপদযাত্রা।

অনুষ্ঠানের একপর্যায়ে তিস্তা নদী অববাহিকার মানুষের জীবনযাত্রা ও তিস্তা মহা পরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবিতে বিএনপির অবস্থান কর্মসূচির ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করা হয়।

এ সময় বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, বিএনপির রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল খালেক, বিএনপির রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও তিস্তা নদী রক্ষা আনদোলনের প্রধান সমন্বয়কারী আসাদুল হাবিব দুলু, বিএনপির রংপুর মহানগরের আহবায়ক শামসুজ্জামান সামু, সদস্য সচিব মাহফুজুন নবী ডন, জেলা আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম, সদস্য সচিব আনিসুর রহমান লাকুসহ রংপুর বিভাগের ৮ জেলার বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

সেলিম সরকার/এমএ/

হাসনাতের গাড়ি বহরে হামলা, বিক্ষোভ মিছিল

প্রকাশ: ০৪ মে ২০২৫, ০৮:৫০ পিএম
আপডেট: ০৪ মে ২০২৫, ০৯:২৭ পিএম
হাসনাতের গাড়ি বহরে হামলা, বিক্ষোভ মিছিল
ছবি: সংগৃহীত

গাজীপুরে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আব্দুল্লাহর গাড়ি বহরে হামলার ঘটনা ঘটেছে। এঘটনার প্রতিবাদে তাৎক্ষণিক বিক্ষোভ মিছিলের ডাক দিয়েছে গাজীপুর জেলার এনসিপি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা।

রবিবার (৪ মে) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এ তথ্য জানান দলটির উত্তরাঞ্চলীয় মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম।

সারজিস তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেন, হাসনাতের গাড়িতে ১০-১২ জন সন্ত্রাসী গাজীপুর এলাকায় হামলা করেছে। গাড়ির গ্লাস ভেঙে গিয়েছে, হাত রক্তাক্ত হয়েছে। আশেপাশে যারা আছেন হাসনাতকে প্রটেক্ট করুন। কমেন্টে লোকেশন দিচ্ছি।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের গাজীপুর জেলার যুগ্ন-আহ্বায়ক সানিউল আলম নাবিল বলেন, ওনারা যে এদিকে আসবেন আমরা এবিষয়ে অবগত ছিলাম না। গাজীপুর তার কোন পূর্বনির্ধারিত প্রোগ্রাম ছিল না। তবে এনসিপির গাজীপুরের কেন্দ্রীয় নেতারা বিষয়টি জানেন কিনা? তা আমরা জানি না।

গাজীপুর মেট্টোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার রবিউল হাসান জানান, গাজীপুরের সালনার কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় একটি অনুষ্ঠান শেষে তিনি ঢাকায় ফিরছিলেন। চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় তার গাড়ি বহর জ্যামে আটকে থাকাবস্থায় ৪/৫টি মোটরসাইকেলে তার গাড়ি হামলা করে। হামলায় তিনি হাতে আঘাতপ্রাপ্ত হোন এবং গাড়ির গ্লাস ও উইন্ডশিড ভেঙে যায়। পরে তার কাছ থেকে বিস্তারিত জেনে তাকে নিরাপদে ঢাকায় পৌঁছে দেয়া হয়েছে।

তিনি আরও জানান, হামলাকারীদের খুঁজে বের করতে এঘটনায় ইতোমধ্যে তদন্ত শুরু হয়ে গিয়েছে। এবিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ ঘটনার প্রতিবাদে তাৎক্ষণিক গাজীপুর জেলার এনসিপি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা রাত সাড়ে ৮টায় ও রাত ৯টায় বিক্ষোভ মিছিলের ডাক দেন।

পলাশ প্রধান/এমএ/

খালেদা জিয়াকে যে পথে অভ্যর্থনা জানানো যাবে, যা জানাল বিএনপি

প্রকাশ: ০৪ মে ২০২৫, ০৬:৫৯ পিএম
খালেদা জিয়াকে যে পথে অভ্যর্থনা জানানো যাবে, যা জানাল বিএনপি
খবরের কাগজ গ্রাফিকস

প্রায় চার মাস চিকিৎসা শেষে কাতারের আমিরের দেওয়া এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে আগামী মঙ্গলবার (৬ মে) সকাল ১০টা ৫০মিনিটে দেশে আসছেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা। ওই দিন হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে গুলশান পর্যন্ত পথে পথে অবস্থান করে নেতা-কর্মীরা অভ্যর্থনা জানাবেন।

রবিবার (৪ মে) বেলা আড়াই দিকে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

খালেদা জিয়াকে শান্তিপূর্ণভাবে অভ্যর্থনা জানাতে বিএনপি ও অঙ্গসংঠনগুলোর নেতাকর্মীদের প্রতি বিশেষ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়ে রিজভী বলেন, সব নেতা-কর্মী দলীয় পতাকা ও জাতীয় পতাকা হাতে রাস্তার এক পাশে দাঁড়াবেন। বিএনপির চেয়ারপারসনের গাড়ির সঙ্গে সঙ্গে মোটরসাইকেলে যাওয়া যাবে না। হেঁটে হেঁটেও যাওয়া যাবে না। এ ছাড়া বিমানবন্দর ও বিএনপির চেয়ারপারসনের বাসভবনে কেউ প্রবেশ করতে পারবেন না।

বিএনপির নির্দেশনা অনুযায়ী, বিমানবন্দর থেকে লো মেরিডিয়েন হোটেল পর্যন্ত অবস্থান করবে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি। ছাত্রদল অবস্থান করবে লো-মেরিডিয়েন হোটেল থেকে খিলক্ষেত পর্যন্ত। যুবদল অবস্থান করবে খিলক্ষেত থেকে হোটেল র‍্যাডিসন পর্যন্ত। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি অবস্থান করবে হোটেল র‍্যাডিসন থেকে আর্মি স্টেডিয়াম পর্যন্ত। স্বেচ্ছাসেবক দল অবস্থান করবে আর্মি স্টেডিয়াম থেকে বনানী কবরস্থান পর্যন্ত। কৃষক দল অবস্থান করবে বনানী কবরস্থান থেকে কাকলী মোড় পর্যন্ত। শ্রমিক দল অবস্থান করবে কাকলী মোড় থেকে বনানীর শেরাটন হোটেল পর্যন্ত। ওলামা দল, তাঁতীদল, জাসাস, মৎস্যজীবী দল অবস্থান করবে শেরাটন হোটেল থেকে বনানী কাঁচাবাজার পর্যন্ত। মুক্তিযোদ্ধা দলসহ সব পেশাজীবী সংগঠন অবস্থান করবে বনানী কাঁচাবাজার থেকে গুলশান-২ পর্যন্ত। মহিলা দল অবস্থান করবে গুলশান-২ নম্বর গোলচত্বর থেকে গুলশান অ্যাভিনিউ রোড পর্যন্ত। বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্যরা গুলশান-২ নম্বর গোলচত্বর থেকে গুলশান অ্যাভিনিউ রোড পর্যন্ত অবস্থান করবেন। আর বিভিন্ন জেলা থেকে আগত নেতা-কর্মীরা যাঁর যাঁর সুবিধামতো স্থানে অবস্থান নেবেন।

সরকারে না থাকলেও অন্যের মতামত চাপিয়ে দেওয়া সমর্থন করব না: মির্জা ফখরুল

প্রকাশ: ০৪ মে ২০২৫, ০৫:০৮ পিএম
আপডেট: ০৪ মে ২০২৫, ০৫:৫১ পিএম
সরকারে না থাকলেও অন্যের মতামত চাপিয়ে দেওয়া সমর্থন করব না: মির্জা ফখরুল
বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস ২০২৫ উপলক্ষে জাতীয় প্রেস ক্লাবে সম্পাদক পরিষদ আয়োজিত আলোচনাসভা। ছবি: সংগৃহীত

বিএনপি সরকারে না থাকলেও কখনো অন্যায়ভাবে অন্যের মতামত চাপিয়ে দেওয়াকে সমর্থন করবে না বলে জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। 

তিনি বলেন, আমরা বরাবরই সংবাদপত্রের স্বাধীনতার পক্ষে ছিলাম, আছি এবং ভবিষ্যতে থাকব। এবার সরকারে থাকি আর না থাকি, আমরা কখনো অন্যায়ভাবে অন্যের মতকে চাপিয়ে দেওয়াকে সমর্থন করব না।

রবিবার (৪ মে) বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস ২০২৫ উপলক্ষে জাতীয় প্রেস ক্লাবে সম্পাদক পরিষদ আয়োজিত আলোচনাসভায় তিনি এসব কথা বলেন।

আলোচনা সভায় মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, বাংলাদেশে সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার বিষয়টি নতুন নয়। আমরা যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে কাজ করেছি, সেই ষাটের দশক থেকে, তখন থেকে এই বিষয়টি সবচেয়ে সামনে এসেছে। পাকিস্তান শাসকদের বিরুদ্ধে সেই সময়েও আমরা কথা বলেছি, আন্দোলন করেছি, কাজ করেছি। একটি সুবিধা ছিল। তখন সংবাদমাধ্যমের একটি নিজস্ব স্বকীয়তা ছিল। যেখানে তাদের কোনো গোষ্ঠীভুক্ত করা অতটা সহজ হতো না। তাদের দেশপ্রেম, আন্তরিকতা ও দায়িত্ববোধ অনেক উঁচু দরের ছিল।

তিনি আরও বলেন, বর্তমান প্রেক্ষাপটে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নিঃসন্দেহে আগের চেয়ে বেড়েছে। আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে প্রায় ১৬ ভাগ বেড়েছে। সমস্যা দেখা দেয় তখনই, যখন দেখি কোনো কোনো সংবাদমাধ্যম গোষ্ঠী আরেকটি গোষ্ঠীকে আক্রমণ করে। কোনো কোনো রাজনৈতিক গোষ্ঠীও সেটার সঙ্গে যুক্ত হয় এবং বিভিন্ন রকম রাজনৈতিক কর্মসূচিও প্রদান করে। আমি জানি না, একটি গণতান্ত্রিক মুক্ত সমাজে এটা কতটুকু গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করতে সাহায্য করে?

বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, আমাদের কাছে ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধ একটি বিশাল ব্যাপার। এটাকে কেন্দ্র করেই আবর্তিত হয় আমাদের চিন্তা। এজন্য, আমরা সেটার জন্য লড়াই করেছি, যুদ্ধ করেছি, প্রাণ দিয়েছি। দীর্ঘ ৯ মাস অবিশ্বাস্য রকমের কষ্টের মধ্য দিয়ে পার করেছি। সেই জায়গায় আমরা কোনো আপোষ করতে চাই না। এটাকে অনেকে পছন্দ করতে পারেন, নাও করতে পারেন। তাতে ব্যক্তিগত আমি কিছু মনে করি না। কারণ দ্যাট ইজ মাই বেসিস, ওটাই আমার মূল ভিত্তি।

তিনি আরও বলেন, আমার দলই প্রথম যারা সংবাদপত্রের স্বাধীনতাকে মুক্ত করেছিল ১৯৭৫ সালে। তার আগে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা বাকশাল হয়েছিল, সব সংবাদপত্র বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান যখন দায়িত্বে এলেন, তিনি সংবাদমাধ্যমগুলো চালু করেছেন, স্বাধীনতা দিয়েছেন। আমরা বলি না যে, আমরা একেবারে ধোয়া তুলসি পাতা। কিন্তু এ কথা নিঃসন্দেহে বলতে পারি, আমরা সংবাদপত্রের স্বাধীনতার জন্য অনেক বেশি কাজ করেছি।

বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, জনগণের ওপর আস্থা রাখতে হবে৷ তার চিন্তাভাবনা, তার রায়, তার মতের ওপর আস্থা রাখতে হবে। আমি চিন্তা থেকে বেরিয়ে আসা দরকার গণতন্ত্রের জন্য। আমাদের সংবাদমাধ্যমে এই চর্চাটা বেশি করা দরকার। গণতন্ত্র চর্চা করার জিনিস।

তিনি আরও বলেন, আমাদের নিয়ে প্রচারণা চালানো হয়, আমরা নাকি সংস্কারের বিরুদ্ধে। আমরা সংস্কার নয়, নির্বাচন চাই। অথচ সংস্কার বিষয়টিই শুরু হয়েছে আমাদের দ্বারা। আমরাই একদলীয় শাসন ব্যবস্থা থেকে বহুদলীয় শাসন ব্যবস্থায় আসছি। আমরাই প্রেসিডেন্ট ফর্ম সরকার থেকে পার্লামেন্ট ফর্ম সরকারে গেছি। অনেক অনেক আপত্তি সত্ত্বেও আমরা কেয়ারটেকার সরকারকে সংবিধানে নিয়ে এসেছি। এগুলো বাস্তবতা। ওই বাস্তবতা থেকে অযথা আমাদের প্রশ্নবিদ্ধ করে অন্যভাবে দেখানোর চেষ্টা করা এটার পেছনে কিছু রাজনৈতিক উদ্দেশ্য থাকলেও থাকতে পারে।

সম্পাদক পরিষদের সভাপতি ও ডেইলি স্টারের সম্পাদক মাহফুজ আনামের সভাপতিত্বে এবং সম্পাদক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও দৈনিক বণিক বার্তার সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন সম্পাদক পরিষদের সহসভাপতি ও নিউ এজের সম্পাদক নুরুল কবির, সম্পাদক পরিষদের কোষাধ্যক্ষ ও দৈনিক মানবজমিনের সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী, প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, গণসংহতি আন্দোলনে প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক মো. নাহিদ ইসলাম, সমকালের সম্পাদক শাহেদ মুহাম্মদ আলী, কালের কণ্ঠের সম্পাদক ও জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি কবি হাসান হাফিজ প্রমুখ।

অমিয়/

ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক আর নেই

প্রকাশ: ০৪ মে ২০২৫, ০৪:৫১ পিএম
আপডেট: ০৪ মে ২০২৫, ০৫:১৬ পিএম
ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক আর নেই
ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সাবেক সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ও সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। 

রবিবার (৪ মে) বিকেলে তিনি ধানমন্ডির ইবনে সিনা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

আইনজীবী শিশির মনির ফেসবুক স্ট্যাটাসে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

তিনি ওই পোস্টে লেখেন, ‘আমার সিনিয়র জনাব ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক স্যার ইবনে সিনা হাসপাতালে আজ বিকেল ৪টা ১০ মিনিটে আল্লাহর ডাকে সাড়া দিয়ে চলে গেছেন।’

কয়েক দিন আগে গুরুতর অসুস্থ হলে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। 

জামায়াতে ইসলামীর সাবেক সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আব্দুর রাজ্জাক ২০১৩ সালের ১৮ ডিসেম্বর দেশ ছেড়ে যুক্তরাজ্যে পাড়ি জমান। গত বছরের ২৬ ডিসেম্বর ১১ বছর পর যুক্তরাজ্য থেকে দেশে ফিরেন তিনি।

এর আগে তিনি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের আইনজীবী ছিলেন। 

যুক্তরাজ্যে থাকাবস্থায় ২০১৯ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি জামায়াত থেকে পদত্যাগ করেন আব্দুর রাজ্জাক। এরপর তিনি নতুন দল আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির প্রধান উপদেষ্টা হন। ক্ষমতার পটপরিবর্তনের পর ১৭ আগস্ট সেই পদ থেকেও পদত্যাগ করেন তিনি।

অমিয়/