ঢাকা ১২ শ্রাবণ ১৪৩১, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪

উপজেলা নির্বাচন: সংঘাত এড়ানোই বড় চ্যালেঞ্জ আ.লীগের

প্রকাশ: ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৯:৪২ এএম
আপডেট: ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৯:৫২ এএম
উপজেলা নির্বাচন: সংঘাত এড়ানোই বড় চ্যালেঞ্জ আ.লীগের

উপজেলা পরিষদ নির্বাচন কেন্দ্র করে দলের মধ্যে নতুন করে দ্বন্দ্ব ও সংঘাত বন্ধ করা আওয়ামী লীগের জন্য এখন বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আসন্ন নির্বাচন গ্রহণযোগ্য করতে দলীয় প্রতীক ও সমর্থন ছাড়াই করার কৌশল নিয়েছে আওয়ামী লীগ। উদ্দেশ্য হলো, বেশিসংখ্যক প্রার্থী যাতে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেন। কারণ, প্রার্থী বেশি হলে তারা নিজ উদ্যোগে ভোটারদের কেন্দ্রে নিয়ে আসবেন। এর ফলে ‘একদলীয়’ নির্বাচনের কথিত দুর্নাম থেকে রক্ষা পাবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। দলটির কেন্দ্রীয় উচ্চপর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে আলাপকালে এসব তথ্য জানা গেছে।

আওয়ামী লীগের নেতাদের মতে, এমন কর্মকৌশল নিয়ে গত ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে নৌকার প্রার্থীর বিপরীতে দলেরই স্বতন্ত্রদের প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার মাধ্যমে প্রার্থিতা উন্মুক্ত করে আওয়ামী লীগ। যার ফলে বিএনপি-জামায়াত ও তাদের সমমনা দলগুলো নির্বাচন অংশ না নিলেও নির্বাচন তুলনামূলক গ্রহণযোগ্য হয়েছে বলে মনে করেন দলটির নেতারা। 

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, একই কৌশল হিসেবে উপজেলা পরিষদের নির্বাচন দলীয় প্রতীক ছাড়াই করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। ফলে বেশির ভাগ উপজেলায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের একাধিক প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতায় মাঠে নেমেছেন। অর্থাৎ তৃণমূল পর্যায়ে আওয়ামী লীগের বিপরীতে আওয়ামী লীগের নেতারাই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এই অবস্থায় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে স্থানীয় পর্যায়ে আওয়ামী লীগের মধ্যে সংঘাত ও সংঘর্ষের আশঙ্কা করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রার্থীদের অপহরণসহ মারধরের ঘটনা ঘটেছে। বিষয়টি গড়িয়েছে আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পর্যন্ত। 

ঈদের দিন দলীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করে শেখ হাসিনা বলেছেন, উপজেলা নির্বাচনে কোনো কারচুপি করা হবে না। দলীয় প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করা হবে না, মন্ত্রী-এমপিরা এবং আওয়ামী লীগের নেতারা তাদের নিজের প্রার্থীকে যদি জিতিয়ে আনার জন্য কোনো রকম অবৈধ উপায় অবলম্বন করেন বা কারচুপি করেন তাহলে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

অনেক উপজেলায় দলীয় এমপি-মন্ত্রী ও শীর্ষ নেতারা নিজের আত্মীয়-স্বজন অথবা পছন্দের নেতাদের নির্বাচনে দাঁড় করাচ্ছেন বলেই শেখ হাসিনা এমন বক্তব্য দিয়েছেন। দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এমনই ইঙ্গিত দিয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার ধানমন্ডির শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে উপজেলা নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমাদের কতজন প্রার্থী, আমরা সেটা হিসাব করে দেখার তাগিদ অনুভব করিনি। আমরা সবাইকে সুযোগ দিয়েছি।’ প্রথম ধাপের ভোট নিয়ে ওবায়দুল কদের বলেন, ৮ মে প্রথম দফার নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রতীক থাকবে না। প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন মন্ত্রী-এমপিদের প্রভাব বিস্তার না করতে। নির্বাচন যাতে শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠুভাবে হয় এবং কোনো প্রকার হস্তক্ষেপ যাতে না হয়। প্রশাসন কোনো প্রকার হস্তক্ষেপ করবে না। নির্বিঘ্নে ভোট দেওয়ার ব্যবস্থা করেছে নির্বাচন কমিশন। 

জানা গেছে, বেশ কিছু উপজেলায় একাধিকবার সতর্ক করে দেওয়ার পরেও আওয়ামী লীগের বিরোধ কমেনি। বরং ঈদের আগে ও পরে বিভিন্ন স্থানে সংঘর্ষে হতাহত হওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে বিরোধ ও সংঘর্ষ আরও প্রকট আকার ধারণ করতে পারে। তাই দলের কেন্দ্রীয় নেতারা বিরোধ ও সংঘর্ষ এড়ানোকে প্রধান টার্গেট হিসেবে নিয়েছেন। একই সঙ্গে গ্রহণযোগ্য ও প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচন করতে দলীয় এমপি-মন্ত্রীদের প্রভাব ঠেকাতে দিচ্ছেন হুঁশিয়ারি।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, দলের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকরা আসন্ন উপজেলা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট বিরোধ মেটাতে তৃণমূল পর্যায়ের নেতাদের ঢাকায় এনে পরামর্শ দিচ্ছেন। ঈদের আগে থেকেই দলের নেতারা এমন সাংগঠনিক কার্যক্রম চালাচ্ছেন। ইতোমধ্যে চট্টগ্রাম, খুলনা ও রংপুর বিভাগের দলীয় নেতা ও জনপ্রতিনিধিদের ঢাকায় ডেকে বিশেষ বর্ধিত সভাও করেছে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ। সভায় কেন্দ্রীয় নেতারা তৃণমূলের নেতাদের সমস্যার কথা শুনেছেন। প্রয়োজনীয় নির্দেশনাও দিয়েছেন। এরপরেও যেসব উপজেলায় কোন্দল ও সংঘর্ষ বেশি হবে, সেখানে প্রয়োজনে সাংগঠনিক সফরে যাবেন দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা।

দলের নেতারা মনে করেন, ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দলের তৃণমূলে বিরোধ বেড়েছে। মাঠ পর্যায়ে যা এখনো মেটেনি। নৌকার প্রার্থীর ও দলের স্বতন্ত্রদের সঙ্গে বিবাদ এখনো চলমান। প্রার্থীরা এক দলের নেতা হলেও একে অন্যের প্রতি প্রকাশ্যে কাদা ছোড়াছুড়ি করেছেন। কেন্দ্রীয় নেতারাও বাদ যাননি। সংসদ নির্বাচনের তিন মাসের মাথায় শুরু হতে যাচ্ছে উপজেলা নির্বাচন। এই নির্বাচনে বিরোধ ও সংঘাত বাড়লে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হবে। তাই তৃণমূল পর্যায়ে দলের বিরোধ মেটানোই এখন বড় চ্যালেঞ্জ আওয়ামী লীগের।

আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজ্জাম্মেল হক খবরের কাগজকে বলেন, ‘উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা বেশি হবে। দলের নেতারাই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। এত কোন্দল ও সংঘাত এড়াতে কিছু কিছু উপজেলায় দলের নেতাদের আমরা সতর্ক করছি। কিছু উপজেলায় সমস্যা হতে পারে। তবে পরিবেশ যেন নিয়ন্ত্রণের বাইরে না যায় আমরা সেদিকে লক্ষ্য রাখছি। কেন্দ্র থেকে তৃণমূলে প্রয়োজনীয় নির্দেশনাও দেওয়া হচ্ছে।’

চলমান কারফিউ নিয়ে সিদ্ধান্ত আজ

প্রকাশ: ২৭ জুলাই ২০২৪, ১১:০৬ এএম
আপডেট: ২৭ জুলাই ২০২৪, ১১:১১ এএম
চলমান কারফিউ নিয়ে সিদ্ধান্ত আজ
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল

চলমান কারফিউ আরও শিথিল করা যায় কিনা সে বিষয় আজ শনিবার নিয়মিত বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।

শুক্রবার (২৬ জুলাই) রাতে নিজ বাসভবনে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে বিভিন্ন সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে নিয়মিত বৈঠক শেষে এ কথা জানান মন্ত্রী। 

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির আগের চেয়ে অনেক উন্নতি হয়েছে। পুরোপুরি স্বাভাবিক হলেই কারফিউ তুলে নেওয়া হবে। বর্তমানে চলমান কারফিউ আরও শিথিল করা যায় কিনা সে বিষয় শনিবার নিয়মিত বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। 

আসাদুজ্জামান খান বলেন, কারফিউ শিথিল করা যায় কিনা আমরা দেখছি। পুলিশ বিজিবি, সেনাবাহিনী কাজ করছে। জনজীবন স্বাভাবিক হওয়া পর্যন্ত একটু অপেক্ষা করতে হবে। জনগণকে ধৈর্য্য ধরতে হবে। এ বিষয়ে শনিবার আলোচনা সাপেক্ষে সিদ্ধান্ত আসতে পারে বলেও জানান তিনি।

এ সময় আন্দোলনের নামে নৃশংস হত্যাযজ্ঞ হয়েছে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, দেশের এই ক্ষতির দায় কে নেবে? বিএনপি বলছে সহিংসতার মধ্যে তারা নেই। তাহলে কে করেছে? এটা জনগণের প্রশ্ন।

কোটা আন্দোলনের সমন্বয়কদের আটক বা গ্রেপ্তার করা হয়নি জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, কোটা আন্দোলনকারী নেতারা নিজেরাই নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। তাদের নিরাপত্তার জন্যই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে ডাকা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

অমিয়/

সহিংসতার দায় সরকারকেই নিতে হবে: জামায়াত

প্রকাশ: ২৭ জুলাই ২০২৪, ১১:০৪ এএম
আপডেট: ২৭ জুলাই ২০২৪, ১১:০৬ এএম
সহিংসতার দায় সরকারকেই নিতে হবে: জামায়াত

জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এ টি এম মা’ছুম বলেছেন, কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংসতার সব দায়-দায়িত্ব সরকারকেই বহন করতে হবে এবং জনগণের কাছে জবাবদিহি করতে হবে।

শুক্রবার (২৬ জুলাই) এক বিবৃতিতে এ কথা বলেন তিনি।

সারা দেশে গণগ্রেপ্তার, হামলা-মামলা ও রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতন এবং মিথ্যাচার বন্ধের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা সরকারের উদ্দেশে বলতে চাই, হুমকি-ধমকি দিয়ে কোনো লাভ হবে না। সরকারের সব চক্রান্ত-ষড়যন্ত্র ফাঁস হয়ে গেছে। দেশের জনগণ তাদের প্রতিবাদী কণ্ঠ উচ্চকিত করেছে।’

বিবৃতিতে এ টি এম মা’ছুম বলেন, ‘সরকার নিজেই দেশে অরাজক পরিস্থিতি তৈরি করেছে। উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়ে একটি অরাজনৈতিক শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে সহিংসতায় রূপ দেওয়া হয়েছে। ছাত্রদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে দমনের জন্য বিরোধী রাজনৈতিক দলকে জড়িয়ে ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের অপচেষ্টা চালানো হয়েছে। সরকার ছাত্রলীগ, যুবলীগ, শ্রমিকলীগ ও আওয়ামী সন্ত্রাসীদের মাঠে নামিয়ে দেশে অসংখ্য হত্যা সংঘটিত করেছে। দেশের শান্তিপূর্ণ ক্যাম্পাস ও রাজপথ রক্তে রঞ্জিত করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের নির্মমভাবে নিহত করে শত শত মায়ের বুক খালি করেছে এবং হাজার হাজার মানুষকে পঙ্গু করে দিয়েছে। এখনো বহু শিক্ষার্থী নিখোঁজ রয়েছেন।’

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘জালিম সরকারের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত না হয়ে নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করুন এবং প্রকৃত অপরাধীদের গ্রেপ্তার করে আদালতের হাতে সোপর্দ করুন।’

হত্যার দায় এড়াতে প্রোপাগান্ডা চালাচ্ছে সরকার: ছাত্রশিবির
হত্যার দায় এড়াতে এবং শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে সরকার ছাত্রশিবিরকে জড়িয়ে মিথ্যা প্রোপাগান্ডা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন ছাত্রশিবিরের সভাপতি মঞ্জুরুল ইসলাম ও সেক্রেটারি জেনারেল জাহিদুল ইসলাম। গতকাল এক বিৃবতিতে তারা এ অভিযোগ করেন।

বিবৃতিতে নেতারা বলেন, মূলত আওয়ামী লীগ প্রধান ও তার দলের সিনিয়র নেতাদের উসকানি এবং প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে খুনের হুকুমে এসব হত্যা সংঘটিত হয়েছে। দেশের অরাজক পরিস্থিতির দায়ভার বিরোধী দলের ওপর চাপিয়ে দিয়ে এ হত্যার দায় এড়ানোর কোনো সুযোগ নেই। মিথ্যা দিয়ে সত্যকে চাপা দেওয়া যায় না।

তারা আরও বলেন, ‘আমরা সুস্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই, ছাত্রশিবির নিয়মতান্ত্রিক ও শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে বিশ্বাসী একটি আদর্শিক সংগঠন। ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে ছাত্রশিবিরের কোনো সম্পর্ক নেই। এসব ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত, বিশ্বাসযোগ্য তদন্তের মাধ্যমে তাদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনার জোর দাবি জানাচ্ছি।’

কারফিউ প্রত্যাহারের আহ্বান জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের 
অবিলম্বে কারফিউ প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল। শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর তোপখানা রোডে অনুষ্ঠিত সেন্ট্রাল ওয়ার্কিং টিমের এক বৈঠকে দলটির নেতারা এ দাবি জানান।

বৈঠকে নেতারা বলেন, জনগণের চলাচলের স্বাধীনতা হরণ করে সরকার দেশে এক অঘোষিত সেনাশাসন জারি করেছে। জনগণের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা কেড়ে নিতে সরকার সংবাদপত্র ও মিডিয়ার ওপর নিয়ন্ত্রণ কায়েম করেছে। গণগ্রেপ্তার বন্ধ, বিশ্ববিদ্যালয়সহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার জোর দাবি জানিয়েছেন তারা। 

জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলর সম্পাদক ফয়জুল হাকিমের সভাপতিত্বে বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা অঞ্চলের সংগঠক কাইয়ুম হোসেন, বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন ফেডারেশন সংগঠক সুমন মল্লিক, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন সভাপতি মিতু সরকার প্রমুখ।

মানুষ হত্যার জবাব জনগণ আদায় করবে একদিন: মির্জা ফখরুল

প্রকাশ: ২৭ জুলাই ২০২৪, ১০:২৭ এএম
আপডেট: ২৭ জুলাই ২০২৪, ১০:২৭ এএম
মানুষ হত্যার জবাব জনগণ আদায় করবে একদিন: মির্জা ফখরুল
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর

‘হেলিকপ্টার দিয়ে মানুষ হত্যার জবাব জনগণ একদিন কড়ায় গণ্ডায় আদায় করবে’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ বরাবরই লাশের ওপর দিয়ে ক্ষমতায় গিয়েছে। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে গত কয়েক দিনে কতজন নিরীহ মানুষকে হত্যা ও পঙ্গু করা হয়েছে, জনগণ তার সঠিক পরিসংখ্যান জানতে চায়। জনগণের টাকায় কেনা কি পরিমাণ গোলাবারুদ, টিয়ার শেল, সাউন্ড গ্রেনেড শিক্ষার্থীদের ওপর ব্যবহার করা হয়েছে, তার হিসাবও জানতে চায়। 

শুক্রবার (২৬ জুলাই) এক বিৃবতিতে তিনি এসব কথা বলেন। বিএনপি ও বিরোধীদলীয় নেতা-কর্মীসহ সাধারণ মানুষকে গ্রেপ্তার, কারান্তরীণ ও জুলুম-নির্যাতনের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে এ বিবৃতি দেন বিএনপি মহাসচিব।

অন্যদিকে পৃথক বিবৃতিতে জাতীয় ঐক্যের আহ্বান জানিয়েছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। 

কোটা সংস্কার আন্দোলনে সমর্থনের কারণ জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, সরকারি দলের সন্ত্রাসী এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা যৌথভাবে গুলি, টিয়ারশেল, রবার বুলেট, সাউন্ড গ্রেনেড শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য করে নিক্ষেপের মাধ্যমে শত শত নিরীহ ছাত্রছাত্রীকে গণহারে হত্যা এবং হাজার হাজার ছাত্রছাত্রীকে আহত করেছে, যা দেশবাসীসহ বিশ্ববাসী অবলোকন করেছে। এই গণহত্যা, নির্যাতন, দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষার স্বার্থে দেশপ্রেমিক জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা প্রবর্তনের সংগ্রামে অবতীর্ণ হওয়ার আহ্বান জানান তিনি। 

অভিযোগ করে তিনি বলেন, এই নির্মম অত্যাচারে দেশের জনগণ হতবাক ও ক্ষুব্ধ হয়েছে এবং কোমলমতি ছাত্রছাত্রীদের পাশে দাঁড়িয়েছে। সরকার রাষ্ট্রের সব বাহিনীসহ দলীয় সন্ত্রাসীদের সাধারণ মানুষ, বিএনপি নেতা-কর্মী ও শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে লেলিয়ে দিয়ে ব্লক রেড দিয়ে এখন পর্যন্ত প্রায় ৩ হাজার মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। যা জাতির জন্য অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক ও লজ্জার।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ছাত্র-জনতার ন্যায়সঙ্গত আন্দোলনকে দমন করার জন্য সেনাবাহিনীকে ব্যবহার কখনোই গ্রহণযোগ্য নয়। অবিলম্বে সান্ধ্য আইন প্রত্যাহার এবং সেনাবাহিনীকে ব্যারাকে ফিরিয়ে নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।

বিএনপির এই শীর্ষ নেতা বলেন, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি, বরিশাল মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব জিয়াউদ্দিন সিকদার, নাটোর জেলা বিএনপির সদস্য সচিব রহিম নেওয়াজকে গ্রেপ্তার এবং ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির গ্রেপ্তারকৃত সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মোশাররফ হোসেন খোকনকে ৩ দিন পর আদালতে তোলা হয়েছে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল মিন্টুর বাসাসহ সিনিয়র নেতাদের বাসায় অব্যাহত গতিতে তল্লাশি চালাচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। অনেককে গুম করে রেখে নির্যাতন চালিয়ে চার-পাঁচ দিন পর আদালতে হাজির করা হচ্ছে, যা আইন ও মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন।

ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, যে সরকার ক্ষমতায় থাকার জন্য নির্মমভাবে নিরীহ মানুষকে হত্যা করতে পারে এবং রাষ্ট্রীয় সম্পদ ও স্থাপনার নিরাপত্তা দিতে পারে না, সেই সরকারের ক্ষমতায় থাকার কোনো নৈতিক অধিকার নেই। এই অবৈধ সরকারকে বলব-অবিলম্বে পদত্যাগ করে জনগণের জানমালের নিরাপত্তা বিধান করার লক্ষ্যে নির্দলীয় সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করে নিরপেক্ষ নির্বাচনের ব্যবস্থা নিন।

জাতীয় ঐক্যের আহ্বান
এদিকে শুক্রবার রাতে পৃথক এক বিবৃতিতে ন্যূনতম এক দফা, অবৈধ, ফ্যাসিস্ট সরকারের পতনের দাবিতে সব গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন ও শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার জন্য ‘জাতীয় ঐক্যের’ আহ্বান জানিয়েছে বিএনপি।

দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ আহ্বান জানানো হয়। 

বিএনপি মহাসচিব বলেন, “জাতির এই ক্রান্তিলগ্নে জাতীয় বৃহত্তর স্বার্থে, লুণ্ঠিত গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার পুনরুদ্ধার, অধিকারহীন জনগণের ও জাতির মুক্তির লক্ষ্যে আমরা উপরোক্ত ন্যূনতম এক দফার ভিত্তিতে এবং দাবিতে দেশের সব গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন, ব্যক্তি ও শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে একটি ‘জাতীয় ঐক্য’ গঠনের আহ্বান জানাচ্ছি।”

প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা বিএনপির নেতৃত্বে যুগপৎ আন্দোলনের সব শরিক দল ও জোট, বাম-ডান সব রাজনৈতিক দল, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীসহ অন্যান্য ধর্মভিত্তিক ও সব ইসলামি রাজনৈতিক দল এবং সংগঠনের প্রতিও জাতীয় ঐক্যের আহ্বান জানাচ্ছি।’

তিনি বলেন, সময় ও যোগাযোগের প্রতিবন্ধকতার কারণে বিবৃতির মাধ্যমে সম্মতি প্রদান করা যেতে পারে। শিগগিরই সম্মতিপ্রাপ্ত সবার স্বাক্ষরে যৌথ বিবৃতি প্রদান করা হবে। জাতীয় ঐক্যের এই ঐতিহাসিক ঘোষণা ও দলিল দেশ ও জাতির মুক্তি ত্বরান্বিত করবে ইনশাআল্লাহ।

পুলিশ হত্যার ‘মাস্টারমাইন্ড’ ছাত্রদল নেতাসহ গ্রেপ্তার ৬

প্রকাশ: ২৭ জুলাই ২০২৪, ১০:২০ এএম
আপডেট: ২৭ জুলাই ২০২৪, ১০:২০ এএম
পুলিশ হত্যার ‘মাস্টারমাইন্ড’ ছাত্রদল নেতাসহ গ্রেপ্তার ৬
পুলিশ হত্যাকাণ্ডের মাস্টারমাইন্ড ডেমরা থানা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মাসুদ রানাসহ গ্রেপ্তার ছয়জন

কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে রাজধানীর শনিরা আখড়া ও রায়েরবাগে পিটিয়ে হত্যা করা হয় দুই পুলিশ সদস্যকে। এ ঘটনায় যাত্রাবাড়ী এলাকায় অভিযান চালিয়ে পুলিশ হত্যাকাণ্ডের মাস্টারমাইন্ড ডেমরা থানা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মাসুদ রানাসহ ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ।

নিহত পুলিশ সদস্যরা হলেন এএসআই মোহাম্মদ মুক্তাদির (৫০) ও নায়েক গিয়াস উদ্দিন (৫৮)।

শুক্রবার (২৬ জুলাই) ডিবিপ্রধান হারুন অর রশিদ বলেন, মাস্টারমাইন্ড মাসুদ রানার নেতৃত্বে গত ১৯ ও ২০ জুলাই যাত্রাবাড়ীর রায়েরবাগে অগ্নিসংযোগ করে আবু বকর, রবিউল ইসলাম, সৌরভ মিয়া, তারেকসহ ২৫-৩০ জনের একটি দল। এ সময় মোটরসাইকেল আরোহী পুলিশ সদস্যকে বাঁশ ও লাঠি দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করেন তারা।

পুলিশের মনোবল ভেঙে দিয়ে অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করতেই পুলিশ হত্যাকাণ্ডের মিশন বলে দাবি করেন ডিবিপ্রধান হারুন অর রশিদ। তিনি জানান, মেট্রোরেলে হামলাকারীদের তথ্যও বেরিয়ে আসছে। জড়িতদের গ্রেপ্তার করতে অভিযান চলছে।

সংকট উত্তরণে রাজনৈতিক সমঝোতার বিকল্প নেই: ইসলামী আন্দোলন

প্রকাশ: ২৭ জুলাই ২০২৪, ০৯:০৬ এএম
আপডেট: ২৭ জুলাই ২০২৪, ০৯:০৭ এএম
সংকট উত্তরণে রাজনৈতিক সমঝোতার বিকল্প নেই: ইসলামী আন্দোলন
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ

বর্তমান সংকট উত্তরণে রাজনৈতিক সমঝোতার বিকল্প নেই বলে মন্তব্য করেছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সহকারী মহাসচিব ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সভাপতি মাওলানা মুহাম্মদ ইমতিয়াজ আলম।

তিনি বলেন, ‘সরকার গণবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। খোদ আওয়ামী লীগের লোকজনই এখন আওয়ামী ফ্যাসিবাদ থেকে মুক্তি চায়। অবিলম্বে রাজনৈতিক সমাধান না হলে দেশের পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হতে পারে। এ জন্য সরকারকেই রাজনৈতিক সংকট উত্তরণের উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।’

শুক্রবার (২৬ জুলাই) ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের নিয়মিত মাসিক সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। মাওলানা মুহাম্মদ ইমতিয়াজ আলম বলেন, ‘সীমাহীন দুর্নীতি, লুটপাট, নিত্যপণ্যের আকাশচুম্বী মূল্য এবং তার ওপর কোটা সংস্কার আন্দোলনে গুলি করে মানুষ হত্যা, দেশের আপামর জনতাকে ভাবিয়ে তুলছে। একটি আন্দোলন দমাতে সরকারের লাশের স্তূপ সব শ্রেণি-পেশার মানুষের বিবেককে নাড়া দিয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সরকার ধ্বংসযজ্ঞগুলো প্রচার করছে। কিন্তু শত শত মানুষ যে লাশ হয়েছে, হাজারখানেক মানুষ পঙ্গুত্ববরণ করেছে এবং হাজারে হাজারে বন্দি করা হয়েছে, সেগুলো নিয়ে সরকারের কোনোই প্রচারণা নেই। ধ্বংসাত্মক কার্যক্রম যেমন নিন্দনীয়, তারচেয়ে ভয়াবহ নিন্দনীয় হলো মানুষ হত্যা করা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অপতৎপরতার কারণে মানুষ ঘরে ঘুমাতে পারছে না।’

নগর সেক্রেটারি ডা. শহীদুল ইসলামের পরিচালনায় সভায় আরও বক্তব্য রাখেন আলহাজ আনোয়ার হোসাইন, আলহাজ আবদুল আউয়াল, নুরুজ্জামান সরকার, কে এম শরীয়াতুল্লাহ, হাফেজ মাওলানা মুহাম্মদ মাকসুদুর রহমান, মাওলানা নজরুল ইসলাম, এইচ এম রফিকুল ইসলাম, মাওলানা কামাল হোসাইন প্রমুখ।