স্বাধীন সাংবাদিকতা নিরুদ্দেশ করা হয়েছে: মির্জা ফখরুল । খবরের কাগজ
ঢাকা ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, শনিবার, ১৮ মে ২০২৪

স্বাধীন সাংবাদিকতা নিরুদ্দেশ করা হয়েছে: মির্জা ফখরুল

প্রকাশ: ০৪ মে ২০২৪, ১২:৫৮ এএম
স্বাধীন সাংবাদিকতা নিরুদ্দেশ করা হয়েছে: মির্জা ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি : সংগৃহীত

বর্তমান শ্বারুদ্ধকর পরিস্থিতিতে স্বাধীন সাংবাদিকতাকে নিরুদ্দেশ করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, গণতন্ত্রকে সমাধিস্থ করতেই স্বাধীন গণমাধ্যমের অস্তিত্বকে অস্বীকার করে কর্তৃত্ববাদী সরকার। কোনো স্বৈরশাসকই চিন্তা, মুদ্রণ ও লেখনীর স্বাধীনতা সহ্য করতে পারে না। বাংলাদেশেও এখন একদলীয় স্বৈরশাসনে মুক্ত গণমাধ্যমের ওপর নামিয়ে আনা হয়েছে উৎপীড়নের খড়্গ।

শুক্রবার (৩ মে) বিকেলে ‘বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস’ উপলক্ষে এক বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেন।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, বাংলাদেশে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে সাংবাদিকসহ মুক্তচিন্তার মানুষের ওপর চলছে নিষ্ঠুর আক্রমণ। সরকারবিরোধী কণ্ঠস্বরকে নিস্তব্ধ করার জন্যই একের পর এক কালো আইন প্রণয়ন করা হয়েছে। সাংবাদিক ও বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দিয়ে গ্রেপ্তারের মাধ্যমে দিনের পর দিন কারাগারে অন্তরীণ রাখা হচ্ছে। শুধু তা-ই নয়, তাদের জামিন পাওয়ার অধিকারকেও বাধাগ্রস্ত করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনটি দেশে-বিদেশে ব্যাপকভাবে সমালোচিত হলেও আওয়ামী সরকার এই আইনকে সাংবাদিক, ভিন্নমতের মানুষ ও বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের দমন করতে যথেচ্ছ ব্যবহার করছে, যাতে কেউ সরকারের বিরুদ্ধে সত্য কথা বলতে না পারে। আমি দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে আহ্বান জানাচ্ছি অবিলম্বে বাংলাদেশে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল করতে হবে।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবসে সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা রক্ষা ও সাংবাদিকদের নিরাপত্তার জন্য গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে শামিল হওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি জোরালো আহবান জানাচ্ছি।’

১৯৯১ সালে জাতিসংঘের সাধারণ সভায় ৩ মে ‘ওয়ার্ল্ড প্রেস ফ্রিডম ডে’র (বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস) স্বীকৃতি দেওয়া হয়। ইউনেসকোর মতে অবাধ, মুক্তচিন্তা এবং মতপ্রকাশের অধিকার হচ্ছে মানবাধিকারের অন্তর্নিহিত শক্তি।

রাশেদ খান মেননের জন্মদিন আজ

প্রকাশ: ১৮ মে ২০২৪, ১২:২৬ এএম
রাশেদ খান মেননের জন্মদিন আজ
বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা রাশেদ খান মেনন। ফাইল ছবি

ষাট দশকের তুখোড় ছাত্র নেতা, সাবেক পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা রাশেদ খান মেনন আজ ৮১তম বর্ষে পদার্পণ করলেন। তার জন্মদিন উদযাপন উপলক্ষে ওয়ার্কার্স পার্টির আয়োজনে শনিবার (১৮ মে) বিকেলে রাজধানীর সেগুনবাগিচা সামাজিক অনুষ্ঠানকেন্দ্রে এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে।

রাশেদ খান মেননের জন্ম ১৯৪৩ সনের ১৮ মে। তার পৈতৃক নিবাস বরিশাল জেলার বাবুগঞ্জ উপজেলার বাহেরচর ক্ষুদ্রকাঠি গ্রামে। তার পিতা বিচারপতি আব্দুল জব্বার খান একসময় পাকিস্তানের স্পিকারের দায়িত্বও পালন করেছেন। সুপ্রসিদ্ধ পারিবারিক ঐতিহ্যের অধিকারী রাশেদ খান মেননের ভাইবোন হচ্ছেন মরহুম সাদেক খান, কিংবদন্তিতুল্য কবি মরহুম আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ খান, প্রখ্যাত সাংবাদিক মরহুম এনায়েতুল্লাহ খান, বোন সেলিমা রহমান, মুক্তিযোদ্ধা সংগঠক শহিদুল্লাহ খান বাদল। 

রাশেদ খান মেনন ১৯৬৩-৬৪ সময়কালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ- ডাকসুর ভিপি ও ৬৫-৬৭ সালে সাবেক পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। ১৯৬৭-৬৯ সালে জেলে থাকাকালীন মেনন বঙ্গবন্ধুর সান্নিধ্যে আসেন। সে সময়ে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় তিনি ক্যান্টনমেন্টে বন্দি হওয়ার আগে পর্যন্ত জেলের বাইরে বঙ্গবন্ধুর যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে কাজ করেছেন।

মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে তিনি ঢাকার অদূরে নরসিংদী শিবপুরকে কেন্দ্র করে মুক্তিযুদ্ধ সংগঠনের কাজ শুরু করেন। পরে প্রবাসে মওলানা ভাসানীকে প্রধান করে জাতীয় মুক্তি সংগ্রাম সমন্বয় কমিটি গঠন করে মুক্তিযুদ্ধ সংগঠনে আত্মনিয়োগ করেন।

বর্তমানে তিনি সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি। রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড ছাড়াও গবেষণার কাজ, প্রবন্ধ-নিবন্ধ রচনা, কলাম লেখায় নিজেকে নিয়োজিত রেখেছেন। তার ওই কলামগুলো একত্রিত করে এ পর্যন্ত ৮টি বই প্রকাশিত হয়েছে। প্রকাশিত হয়েছে আত্মজীবনী ‘এক জীবন: স্বাধীনতার সূর্যোদয় (প্রথম পর্ব)।’

জয়ন্ত/এমএ/

নরসিংদীর ঘোড়াশাল পৌর বিএনপির কমিটি গঠন

প্রকাশ: ১৭ মে ২০২৪, ১০:০৩ পিএম
নরসিংদীর ঘোড়াশাল পৌর বিএনপির কমিটি গঠন
মো. আব্দুস সাত্তার সভাপতি (বামে) ও মো. দেলোয়ার হোসেন সাধারণ সম্পাদক। ছবি : সংগৃহীত

নরসিংদীর ঘোড়াশাল পৌর বিএনপির ১০১ সদস্য বিশিষ্ট নতুন কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিতে মো. আব্দুস সাত্তার সভাপতি ও মো. দেলোয়ার হোসেন সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পেয়েছেন। 

শুক্রবার (১৭ মে) সকালে পলাশ উপজেলা বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে কাউন্সিল মাধ্যমে নতুন এই কমিটি গঠন করা হয়। 

কাউন্সিলে সভাপতিত্ব করেন ঘোড়াশাল পৌর বিএনপি।সিনিয়র সহ-সভাপতি মো. আলম মোল্লা। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান। এতে বিভিন্ন ইউনিটের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকরা উপস্থিত ছিলেন। 

প্রধান অতিথির বক্তব্য আবদুল মঈন খান বলেন, আওয়ামী দুঃশাসন ও নিপীড়ন, নির্যাতনের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়া, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির আন্দোলন জোরদার করতে হবে। এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের নির্দেশনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণের মাধ্যমে সহযোগিতা করার জন্য সবাইকে আহ্বান জানান।

কমিটি অন্য সদস্যরা হলেন- সহ-সভাপতি মো. আলম মোল্লা, মো. হুমায়ুন কবীর মাস্টার, আলহাজ্ব নূরুল ইসলাম, ইমরান আহাম্মেদ, প্রফেসর আলতাব হোসেন, মো. শাহরিয়ারুল ইসলাম সাকু, মো.  সামসুল হক সরকার, মো. এনামুল হক এনাম, মো. বেলায়েত হোসেন, যুগ্ম-সম্পাদক মো. মোস্তাফিজুর রহমান বাবু, মো. মহিউদ্দিন চিশতিয়া, মো. সানোয়ার হোসেন মিঞা, কোষাধ্যক্ষ মো. সিরাজুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন, দপ্তর সম্পাদক মো. জাকির হোসেন, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মো. ইসমাইল দেওয়ান, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক মো. মাহমুদুল হাছান সুজন, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক শিউলী বেগম প্রমুখ।

শফিক/এমএ/

যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান একচুলও নড়বড় হয়নি: মঈন খান

প্রকাশ: ১৭ মে ২০২৪, ০৭:২৬ পিএম
যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান একচুলও নড়বড় হয়নি: মঈন খান
ছবি : সংগৃহীত

বাংলাদেশের গণতন্ত্র ও নির্বাচন ব্যবস্থা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান একচুলও নড়বড় হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান। তিনি বলেন, তারা আগের অবস্থানেই রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র নির্বাচনে আগে ও পরে সেই কথা বলেছে। সরকার যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তাদের পেছনে পেছনে ঘোরে, আবার সমালোচনাও চালিয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থান নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র উদ্বিগ্ন। 

শুক্রবার (১৭ মে) বিকেলে কারাবন্দি বিএনপির সহ-স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল কাদের ভূঁইয়া জুয়েলের পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে এসব কথা বলেন তিনি। 

এর আগে সদ কারামুক্ত ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-আহবায়ক নবী উল্লাহ নবীর বাসায় ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের শুভেচ্ছা পৌঁছে দেন। 

মঈন খান বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা নিয়ে কাজ করেছে। তাদের স্বার্থে সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন ঘটাবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু তারা নির্বাচনের আগে চেয়েছিল বিএনপি ও আওয়ামী লীগের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে সুষ্ঠু নির্বাচন ব্যবস্থা তৈরি করতে। কিন্তু সরকার আলোচনায় না গিয়ে, বুলেটের জোরে ক্ষমতায় থাকতে চায়। 

অভিযোগ করে তিনি বলেন, সরকার বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীদের নির্যাতন চালিয়ে জনগণের মুখ বন্ধ করে তাদের ভোটাধিকার হরণ করেছে। রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে বিরোধী দল দমন করছে সরকার। যদি তারা ভেবে থাকে মহা আনন্দে দেশ পরিচালনা করবে তা হবে ভুল। ভবিষ্যতই সরকারের পরিণতি ঠিক করবে। সমস্ত বিষয় পর্যালোচনা করে আগামীর আন্দোলন পরিচালনার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিচ্ছে বিএনপি। 

বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেন, ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধের কারণে দেশের অর্থনীতি খারাপ হয়নি। আওয়ামী লীগের সুবিধাভোগী ও দলীয় নেতাকর্মীদের লুটপাটের কারণের দেশের অর্থনীতি ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। কাজেই দেশের অর্থনীতি নিয়ে সরকারের যুক্তি ভুয়া।

দুষ্টুচক্রের রাজনীতি থেকে সরকারকে বের হয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে মঈন খান বলেন, সরকার এদেশের রাজনীতি অনেক আগেই ধ্বংস করে দিয়েছে। এখন আছে পরিহিংসার রাজনীতি। সংঘাতের রাজনীতি। আপনারা গণতন্ত্রের পথে হাঁটুন। এটা শুধু আপনাদের জন্যই নয়, জনগণের জন্য মঙ্গলজনক। মানুষের অধিকার যদি বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠিত না হয়, দেশ সৃষ্টির পেছনে যে আদর্শ ও উদ্দেশ্য ছিল তা সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে যাবে। 

শফিক/এমএ/

শাসকগোষ্ঠী তীব্র মাত্রায় হিংস্র হয়ে উঠেছে: মির্জা ফখরুল

প্রকাশ: ১৭ মে ২০২৪, ০৬:৩৩ পিএম
শাসকগোষ্ঠী তীব্র মাত্রায় হিংস্র হয়ে উঠেছে: মির্জা ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ফাইল ছবি

৭ জানুয়ারি ডামি নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করে অবৈধ আওয়ামী শাসকগোষ্ঠী এখন আরও তীব্র মাত্রায় হিংস্র হয়ে উঠেছে। এ মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। 

নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিনের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে শুক্রবার (১৭ মে) এক বিবৃতিতে তিনি এ মন্তব্য করেন।

বিবৃতিতে মির্জা ফখরুল বলেন, মিথ্যাচার, ভয়ভীতি প্রদর্শন ও অপকৌশলের মাধ্যমে অবৈধ রাষ্ট্রক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনসহ গণতন্ত্রমনা বিরোধী দল, ভিন্ন মত ও পথের মানুষদের ওপর নিষ্ঠুর দমন-পীড়ণ চালানো হচ্ছে অব্যাহতভাবে।

তিনি বলেন, মিথ্যা ও বানোয়াট মামলায় সাজা প্রদানসহ জামিন নামঞ্জুর করে বিরোধী নেতাকর্মীদের কারাগারে পাঠানোর মাধ্যমে দখলদার আওয়ামী সরকার দেশে নব্য বাকশালী শাসন কায়েম করেছে। 

নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিনের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর ঘটনা আওয়ামী জুলুমেরই ধারাবাহিকতা।

সারাদেশে প্রতিনিয়ত সরকারের মদদে মিথ্যা ও বানোয়াট মামলায় বিরোধী নেতাকর্মীদেরকে সাজা প্রদানসহ জামিন নামঞ্জুরের মাধ্যমে কারান্তরীণ করার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ এবং নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিনের বিরুদ্ধে দায়ের করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তির জোর আহ্বান জানান বিএনপি মহাসচিব।

সবুজ/এমএ/

জামায়াতকে সঙ্গে নিতে শরিকদের চাপ

প্রকাশ: ১৭ মে ২০২৪, ০৩:২৯ পিএম
জামায়াতকে সঙ্গে নিতে শরিকদের চাপ
খবরের কাগজ গ্রাফিকস

সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে যুগপৎ আন্দোলনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীকে যুক্ত করার জন্য বিএনপির ওপর বাড়ছে চাপ। বিশেষ করে দীর্ঘ দুই যুগের মিত্র জামায়াতসহ ডান-বাম ঘরানার দলগুলোর ব্যাপারে নতুন করে উদ্যোগ নেওয়ার তাগিদ দিয়েছে আন্দোলনরত সমমনা শরিক দল ও জোট। আগে যারা জামায়াতের ব্যাপারে আপত্তি তুলেছিলেন, নির্বাচনের পর তারাও কিছুটা সুর পাল্টে ফেলেছেন। কিন্তু দেশীয় ও আন্তর্জাতিক নানা হিসাব-নিকাশ করে জামায়াত বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্তহীনতায় রয়েছে বিএনপি।

যদিও জামায়াতের একাধিক নেতা বলছেন, বিএনপি ও জামায়াতের মধ্যে পারস্পরিক যোগাযোগ ও আস্থা বেড়েছে। অতীতের তুলনায় সম্পর্ক এখন ভালো। তবে সেটা খুব ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক, তা বলা যাবে না। কারণ জোট শক্তিশালী করার ব্যাপারে বিএনপির পক্ষ থেকে এখনো তারা কোনো প্রস্তাব পায়নি। তাদের মতে, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের একান্ত আগ্রহে জামায়াতের সঙ্গে এখন দূরত্ব প্রায় নেই বললেই চলে। এমনকি চলমান উপজেলা পরিষদ নির্বাচনেও তার অনুরোধে জামায়াত প্রার্থী দেয়নি। যদিও জামায়াতের নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধন নেই।

কয়েক দিন ধরে টানা বৈঠকে অংশ নেওয়া সমমনা একাধিক দলের শীর্ষ নেতারা বলেন, জামায়াতকে যুক্ত করার কথা বলেছি। কারণ শক্তির বিচারে বিএনপির পরই জামায়াতের অবস্থান। এ ছাড়া ভোট বর্জনকারী ইসলামিপন্থি দলসহ বাম দলগুলোকে কীভাবে এক ব্যানারে নিয়ে আসা যায়, তার দায়িত্ব নিতে বিএনপিকে বলা হয়েছে। তবে জামায়াতের ব্যাপারে বিএনপি খোলাসা করেনি। তারা কখনো প্রকাশ্য কিছু বলবে না, তাদের মনোভাব বোঝাও যাচ্ছে না। তবে রাজপথের আন্দোলনে বিএনপিও জামায়াতের অনুপস্থিতি কিছুটা হলেও টের পাচ্ছে। 

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও লিয়াজোঁ কমিটির সমন্বয়ক নজরুল ইসলাম খান খবরের কাগজকে বলেন, এটা জামায়াত বা ইসলামপন্থি দলের কোনো ব্যাপার নয়। শুধু জামায়াত-বিএনপি নিয়ে কেন কথা ওঠে? গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় যেসব দল কাজ করছে সবাইকে যুক্ত করার ব্যাপারে আলোচনা হয়েছে। ভোট বর্জনকারী ৬৩টি রাজনৈতিক দল সবাইকে নিয়েই রাজপথের আন্দোলন জোরদার ও শক্তিশালী করার কথা হয়েছে। কারণ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হলে জনগণকে নিয়ে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।

তিনি বলেন, প্রতিটি দল ও জোটের আদর্শ আলাদা। তার পরও ‘নির্দলীয় সরকার’- এই কমন ইস্যুতে সবাই আলাদাভাবে রাজপথে রয়েছে। তাই আগামী দিনে গণতন্ত্রবিরোধী সরকার হটাতে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলার বিকল্প নেই।’ 

সূত্রমতে, কয়েক দিন ধরে বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটি বৈঠক করছে শরিক দল ও জোটের সঙ্গে। গত রবিবার ১২-দলীয় জোট ও এলডিপি, সোমবার জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট ও গণতান্ত্রিক বাম ঐক্য, মঙ্গলবার গণ অধিকার পরিষদ ও বাম গণতান্ত্রিক ঐক্য এবং গত বুধবার গণফোরাম ও গণতন্ত্র মঞ্চের সঙ্গে বৈঠক করেন বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটির সদস্যরা। এসব বৈঠকে আলোচনায় গুরুত্ব পায় জামায়াত। মোটাদাগে জামায়াতসহ ভোট বর্জনকারী সব দলকে এক ব্যানারে যুক্ত করে আবারও রাজপথে আন্দোলনের পরামর্শ দিয়েছে শরিক দলগুলো। সর্বশেষ গত ১৩ জানুয়ারি সমমনাদের সঙ্গে বৈঠক করেছে বিএনপি। এর আগে যুগপৎভাবে ৮ জানুয়ারি কালো পতাকা মিছিল কর্মসূচি পালন করেছে দলগুলো।

জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আবদুল হালিম খবরের কাগজকে বলেন, ‘বিএনপিসহ অন্য দলগুলোর সঙ্গে রাজনৈতিক যোগাযোগ রয়েছে। আমরা রাজপথে বড় কর্মসূচি পালন করে আসছি। বিএনপির পক্ষ থেকে কোনো প্রস্তাব আসেনি। তবে যেকোনো উদ্যোগকে আমরা স্বাগত জানাই। জামায়াতে ইসলামী আন্দোলনে ছিল এবং আগামীতেও থাকবে।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জামায়াতের অন্যতম এক নেতা বলেন, এত বৈঠক করে লাভ কী? আন্দোলনের সময় মাঠে না থাকলে তো হবে না। জামায়াতের মতো কারা এত আন্দোলন গড়ে তুলতে পেরেছে? বিএনপি এখন ফিল করেছে জামায়াতকে ছাড়া আন্দোলন শক্তিশালী করা সম্ভব না, জামায়াতকে আন্দোলনে দরকার। তবে আন্দোলন এখন যেভাবে চলছে, আগামীতে একইভাবে চলবে। জামায়াতের সঙ্গে সম্পর্ক আগেও গভীর ছিল না, এখনো নেই। তাই সম্পর্কের উন্নতি ঘটাতে বিএনপিকেই উদ্যোগ নিতে হবে।’ 

বিএনপির কাছেও প্রধান্য পাচ্ছে জামায়াত, নরম সুর অন্যদের

নির্বাচনের আগে ও পরে বিএনপির পাশাপাশি কর্মসূচি পালন করে আসছে জামায়াতে ইসলামী। শরিক দলগুলোর মতো এবার কর্মসূচি নির্ধারণে দলটির মতামত নিতে পারে বিএনপি। নির্ভরযোগ্য সূত্রমতে, আন্দোলনে রাজপথে এবারও পাশে থাকবে জামায়াত। আগে জামায়াতের ব্যাপারে একটি জোটের শীর্ষ নেতাদের আপত্তি থাকলেও বর্তমানে তা অনেকটাই কমেছে। যুগপৎ আন্দোলন নয়, এক মঞ্চে জামায়াতের ব্যাপারে তাদের আপত্তি রয়েছে। তবে চূড়ান্ত সময়ে সেটিও থাকবে না বলে মনে করছেন অনেকেই।

জানা গেছে, জামায়াত প্রশ্নে আগে আপত্তি থাকলেও গণতন্ত্র মঞ্চের শীর্ষ নেতারা এখন সেই অবস্থান থেকে কিছুটা সরে এসেছেন। বিশেষ করে নির্বাচন বর্জনের পর সবাই জামায়াতের সঙ্গে যুগপৎভাবে আন্দোলনে যেতে সমস্যা দেখছেন না। তবে দুই বা তিনটি দলের এখানো আপত্তি রয়েছে। তাদের দাবি, জামায়াতকে যুক্ত করতে অন্য দলগুলোকে দিয়ে কথা বলাচ্ছে বিএনপি। 

যদিও সমমনা দলের নেতাদের দাবি, বিএনপি বা জামায়াত কেন আমাদের দিয়ে প্রস্তাব করাবে? কথা বলতে বলবে? বিএনপির পরই জামায়াতের সাংগঠনিক ভিত্তি। সবাই জামায়াতের অনুপস্থিতি অনুভব করছে। আন্দোলন সফল করতে হলে জামায়াতকে লাগবে- এমন কথা হয়তো আমার প্রকাশ্যে বলেছি, আবার অনেকে গোপনে গোপনে বলছে। 

গণতন্ত্র মঞ্চের অন্যতম নেতা ও বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক খবরের কাগজকে বলেন, সব রাজনৈতিক দল যার যার মতো করে আন্দোলন-সংগ্রাম করছে। এখানে জামায়াত থাকলেও কারও কোনো সমস্যা থাকার কথা নয়। কারণ জামায়াত তাদের নিজস্ব কর্মসূচি নিয়ে মাঠে থাকবে। 

১২-দলীয় জোটের সমন্বয়ক ও বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদা খবরের কাগজকে বলেন, এবারের আন্দোলনে জামায়াত পাশে থাকলে তাদের তরফ থেকে কোনো আপত্তি নেই। কারণ দেশের মানুষের মনোভাব বুঝে রাজনীতি করতে হবে।

গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নূর খবরের কাগজকে বলেন, গত ১৬ বছরে সরকার এতটাই শক্তিশালী হয়েছে যে তাদের সরানো খুবই কঠিন। তাই সব রাজনৈতিক দলকে একমত হতে হবে। সেখানে জামায়াত থাকলেও কোনো আপত্তি নেই। কারণ জামায়াতের শক্তি কাজে লাগাতে হবে। তিনি বলেন, অনেকেই বলছেন বিগত আন্দোলনে জামায়াত থাকলেও সেভাবে তাদের শক্তি প্রদর্শন করেনি। এ জন্য বিএনপি-জামায়াতের সম্পর্কের টানাপোড়েন দায়ী। তাই জামায়াতকে কাজে লাগিয়ে এক ব্যানারে বা এক প্ল্যাটফরমে আন্দোলন করতে হবে। 

ইসলামি দলগুলোর সঙ্গে সম্পর্কের উন্নতি 

বিএনপির সঙ্গে বেশ কয়েকটি ইসলামি দলের সম্পর্কের উন্নতি ঘটছে। সরকারবিরোধী আন্দোলনের লক্ষ্যে ইসলামি দলগুলোও নিজেদের মধ্যে বন্ধন তৈরিতে আগ্রহী। তাই মতভেদ ভুলে বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছেন তারা। সাম্প্রতিক সময়ে তাদের সঙ্গে সম্পর্ক আরও দৃঢ় করতে কেন্দ্রীয় নেতারা কাজ করছেন বলেও বিএনপির একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে। তবে এখনই যুগপৎভাবে আন্দোলনে যোগ দিতে রাজি নয় বলে জানিয়েছেন ইসলামি দলগুলোর একাধিক নেতা। 

ইসলামী আন্দোলনের যুগ্ম মহাসচিব গাজী আতাউর রহমান খবরের কাগজকে বলেন, বিএনপির সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক আলোচনা হয়েছে। তবে নির্বাচনের পর সেই আলোচনাও থেমে গেছে। তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের মতো রাজপথে থাকব। প্রস্তাব পেলেও যুগপৎভাবে আন্দোলনে যোগ দেব না।’ 

২০০১ সালে বিএনপির নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোটসঙ্গী ছিল বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস। পরে ২০০৬ সালে জোট থেকে বের হয়ে আসে। দলটির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব জালালুদ্দিন আহমেদ খবরের কাগজকে বলেন, বিএনপির সঙ্গে কমবেশি যোগাযোগ রয়েছে তাদের। প্রস্তাব পেলে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।