![ইবিতে র্যাগিং ঘটনার ৩ মাসেও মেলেনি সুরাহা](uploads/2024/05/18/1700285908.islami-university-1716002691.jpg)
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) লালন শাহ হলের এক শিক্ষার্থীকে বিবস্ত্র করে র্যাগিংয়ের ঘটনার ৩ মাস পেরিয়ে গেলেও মেলেনি সুরাহা। ফলে বিষয়টিকে কর্তৃপক্ষের গড়িমসি ও সদিচ্ছার অভাব বলে মনে করছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
জানা যায়, গত ৭ ফেব্রুয়ারি রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের লালন শাহ হলের ১৩৬ নম্বর কক্ষে কিছু সিনিয়র শিক্ষার্থীর র্যাগিংয়ের শিকার হন এক শিক্ষার্থী। অকথ্য গালিগালাজ ও অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি করতে বাধ্য করা হয় তাকে। প্রথমে অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি করতে অস্বীকৃতি জানালে ওই শিক্ষার্থীকে রড দিয়ে পেটানো হয়। বিষয়টি জানাজানি হলে আবাসিক হল ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ গত ১৩ ফেব্রুয়ারি পৃথক দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। তদন্তের প্রতিবেদনে ঘটনার সত্যতা উঠে আসে। ফলে তাদের বিধি মোতাবেক সর্বোচ্চ শাস্তি ও কম জড়িত থাকা এক শিক্ষার্থীকে সতর্ক করার সুপারিশ করেন তদন্ত কমিটি। কিন্তু এর পরও এ বিষয়ে এখন অবধি কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এতে মিশ্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে সাধারণ শিক্ষার্থী ও সচেতন মহল।
এ বিষয়ে ছাত্র ইউনিয়ন ইবি সংসদের সভাপতি মাহমুদুল হাসান বলেন, ‘ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্ষমতাসীন ছাত্রসংগঠনের র্যাগিংয়ের ঘটনা গত কয়েক বছর ধরে আশঙ্কাজনকভাবে বাড়ছে। সব শেষ গত তিন মাস আগে লালন শাহ হলে ছাত্রলীগ কর্মীরা এক শিক্ষার্থীকে বিবস্ত্র করে র্যাগিংয়ের ঘটনা ঘটালেও এখন পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দৃশ্যমান পদক্ষেপ নিতে দেখিনি। তাই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি, যেন দ্রুত সময়ে এ ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হয়।’
প্রশাসনের গঠিত তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. দেবাশীষ শর্মা বলেন, ‘গত ঈদের ছুটির আগেই আমরা ঘটনার তদন্ত প্রতিবেদন কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দিয়েছি। সিদ্ধান্তের বিষয়ে কর্তৃপক্ষ ভালো বলতে পারবে।’
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদ বলেন, ‘প্রতিবেদন সাধারণত রেজিস্ট্রারের কাছে জমা দেওয়া হয়। সেখান থেকে উপাচার্যের অনুমতিতে ছাত্র-শৃঙ্খলা কমিটির সিদ্ধান্ত হয়ে আমার কাছে আসে। প্রতিবেদন এখনো আমার কাছে আসেনি। এলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’
উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম বলেন, ‘এটি মূলত ছাত্র-শৃঙ্খলা কমিটি হয়ে পরে সিন্ডিকেটে আসবে। এখানে একটু ভুল হয়েছে, তাই দেরি হয়েছে। আমি বিষয়টি নিয়ে সব জায়গায় দ্রুত সমাধানের জন্য বলেছি। আশা করি, শিগগিরই এর সমাধান হবে।’
র্যাগিংয়ের ঘটনায় জড়িত শিক্ষার্থীরা হলেন, শারীরিক শিক্ষা বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মুদাচ্ছির খান কাফি এবং ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মো. সাগর।