ঢাকা ২৫ বৈশাখ ১৪৩২, বৃহস্পতিবার, ০৮ মে ২০২৫
English
বৃহস্পতিবার, ০৮ মে ২০২৫, ২৫ বৈশাখ ১৪৩২

ইবিতে র‌্যাগিং ঘটনার ৩ মাসেও মেলেনি সুরাহা

প্রকাশ: ১৮ মে ২০২৪, ০৯:২৪ এএম
আপডেট: ১৮ মে ২০২৪, ০৯:২৫ এএম
ইবিতে র‌্যাগিং ঘটনার ৩ মাসেও মেলেনি সুরাহা
ছবি : সংগৃহীত

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) লালন শাহ হলের এক শিক্ষার্থীকে বিবস্ত্র করে র‌্যাগিংয়ের ঘটনার ৩ মাস পেরিয়ে গেলেও মেলেনি সুরাহা। ফলে বিষয়টিকে কর্তৃপক্ষের গড়িমসি ও সদিচ্ছার অভাব বলে মনে করছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। 

জানা যায়, গত ৭ ফেব্রুয়ারি রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের লালন শাহ হলের ১৩৬ নম্বর কক্ষে কিছু সিনিয়র শিক্ষার্থীর র‍্যাগিংয়ের শিকার হন এক শিক্ষার্থী। অকথ্য গালিগালাজ ও অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি করতে বাধ্য করা হয় তাকে। প্রথমে অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি করতে অস্বীকৃতি জানালে ওই শিক্ষার্থীকে রড দিয়ে পেটানো হয়। বিষয়টি জানাজানি হলে আবাসিক হল ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ গত ১৩ ফেব্রুয়ারি পৃথক দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। তদন্তের প্রতিবেদনে ঘটনার সত্যতা উঠে আসে। ফলে তাদের বিধি মোতাবেক সর্বোচ্চ শাস্তি ও কম জড়িত থাকা এক শিক্ষার্থীকে সতর্ক করার সুপারিশ করেন তদন্ত কমিটি। কিন্তু এর পরও এ বিষয়ে এখন অবধি কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এতে মিশ্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে সাধারণ শিক্ষার্থী ও সচেতন মহল।

এ বিষয়ে ছাত্র ইউনিয়ন ইবি সংসদের সভাপতি মাহমুদুল হাসান বলেন, ‘ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্ষমতাসীন ছাত্রসংগঠনের র‍্যাগিংয়ের ঘটনা গত কয়েক বছর ধরে আশঙ্কাজনকভাবে বাড়ছে। সব শেষ গত তিন মাস আগে লালন শাহ হলে ছাত্রলীগ কর্মীরা এক শিক্ষার্থীকে বিবস্ত্র করে র‍্যাগিংয়ের ঘটনা ঘটালেও এখন পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দৃশ্যমান পদক্ষেপ নিতে দেখিনি। তাই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি, যেন দ্রুত সময়ে এ ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হয়।’

প্রশাসনের গঠিত তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. দেবাশীষ শর্মা বলেন, ‘গত ঈদের ছুটির আগেই আমরা ঘটনার তদন্ত প্রতিবেদন কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দিয়েছি। সিদ্ধান্তের বিষয়ে কর্তৃপক্ষ ভালো বলতে পারবে।’

এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদ বলেন, ‘প্রতিবেদন সাধারণত রেজিস্ট্রারের কাছে জমা দেওয়া হয়। সেখান থেকে উপাচার্যের অনুমতিতে ছাত্র-শৃঙ্খলা কমিটির সিদ্ধান্ত হয়ে আমার কাছে আসে। প্রতিবেদন এখনো আমার কাছে আসেনি। এলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’

উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম বলেন, ‘এটি মূলত ছাত্র-শৃঙ্খলা কমিটি হয়ে পরে সিন্ডিকেটে আসবে। এখানে একটু ভুল হয়েছে, তাই দেরি হয়েছে। আমি বিষয়টি নিয়ে সব জায়গায় দ্রুত সমাধানের জন্য বলেছি। আশা করি, শিগগিরই এর সমাধান হবে।’
র‍্যাগিংয়ের ঘটনায় জড়িত শিক্ষার্থীরা হলেন, শারীরিক শিক্ষা বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মুদাচ্ছির খান কাফি এবং ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মো. সাগর।

উপাচার্যের বাসভবনে তালা ঝোলালেন ববি শিক্ষার্থীরা

প্রকাশ: ০৭ মে ২০২৫, ০৫:১৫ পিএম
উপাচার্যের বাসভবনে তালা ঝোলালেন ববি শিক্ষার্থীরা
ছবি: সংগৃহীত

এবার বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় (ববি) উপাচার্য প্রফেসর ড. শুচিতা শরমিনের বাসভবনের প্রধান গেটে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীরারা।

বুধবার (৭ মে) বেলা সাড়ে ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের গ্রাউন্ড ফ্লোরে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন শিক্ষার্থীরা। তাদের দাবি একটাই উপাচার্যের পদত্যাগ। উপাচার্য পদত্যাগ অথবা অপসারণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন তারা।

এরপর বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে ক্যাম্পাসের মধ্যে থাকা উপাচার্যের বাসভবনের প্রধান গেটে তালা ঝুলিয়ে দেয় বিক্ষোভরতরা।

সাধারণ শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নেই কেন? এমন প্রশ্নের জবাবে বিক্ষোভে নেতৃত্বদানকারী সুজয় শুভ বলেন, ‘এ মুহূর্তে বেশিরভাগ ডিপার্টমেন্টের পরীক্ষা চলমান। এ কারণে তারা আন্দোলনে আসতে পারছে না। কিন্তু সাধারণ শিক্ষার্থীরা এ আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেছে। আর আমরা যারা আন্দোলনে রয়েছি তারা একাডেমিক কার্যক্রমে কোনও ধরনের বাধা না দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে।’

সাধারণ শিক্ষার্থীরা তাদের পরীক্ষা শেষ করে প্রতিদিন অবস্থান কর্মসূচিসহ উপাচার্যের পদত্যাগের আন্দোলনে সম্পৃক্ত হচ্ছেন। তারা কোনোভাবেই এ আন্দোলন থেকে সরবেন না বলে জানিয়ে দিয়েছেন। উপাচার্যের পদত্যাগই আন্দোলন থেকে শিক্ষার্থীদের ক্লাসে পাঠানোর একমাত্র পথ বলে তিনি উল্লেখ করেন।

গতকাল মঙ্গলবার বেলা ১২টার পর থেকে প্রশাসনিক কার্যক্রম শাটডাউন ঘোষণা করেন শিক্ষার্থীরা। এ কারণে প্রশাসনিক দপ্তরগুলোতে আজ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা প্রবেশ করতে পারেননি। দীর্ঘক্ষণ গ্রাউন্ড ফ্লোরের সামনে ঘোরাঘুরি করে তারা বাসায় ফিরতে বাধ্য হন।

চার দফা দাবি নিয়ে দীর্ঘ ১৮ দিন আন্দোলন-সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়ার পরও ভিসির পক্ষ থেকে বৈঠকে না বসায় পরবর্তীতে ওই আন্দোলন চলে যায় এক দফা দাবিতে। ওই এক দফা দাবিতে প্রতিদিন অবস্থান কর্মসূচিসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছেন শিক্ষার্থীরা। তবে একাডেমিক কার্যক্রমে কোনও বাধা দিচ্ছেন না আন্দোলনরতরা।

সিফাত/

৭ দফা দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন কবি নজরুল কলেজের শিক্ষার্থীরা

প্রকাশ: ০৭ মে ২০২৫, ০৪:৪৯ পিএম
আপডেট: ০৭ মে ২০২৫, ০৪:৫৭ পিএম
৭ দফা দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন কবি নজরুল কলেজের শিক্ষার্থীরা
ছবি: সংগৃহীত

ছাত্রাবাস সংস্কার, শ্রেণিকক্ষের সংকট নিরসন, পরিবহন সংকট নিরসনসহ ৭ দফা দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন রাজধানীর কবি নজরুল সরকারি কলেজের শিক্ষার্থীরা। আজ বুধবার (৭ মে) কলেজের বিভিন্ন ছাত্রসংগঠন, সামাজিক সংগঠন সহযোগিতায় কলেজের বিভিন্ন স্তরের শিক্ষার্থীরা একত্রিত হয়ে এই বিক্ষোভ করেছেন।

আন্দোলনের বিষয়ে কবি নজরুল সরকারি কলেজ ছাত্রদলের আহ্বায়ক ইরফান আহমেদ ফাহিম বলেন, কবি নজরুল কলেজের শিক্ষার্থীরা নানান সংকট ও সমস্যার মধ্যে দিয়ে তাদের শিক্ষা জীবন অতিবাহিত করছেন। দীর্ঘদিন ধরে হল সংস্কার, পরিবহন সংকট, শ্রেণিকক্ষ সংকটের দাবি জানানো হলেও আদতে এর কোনো সমাধান হয়নি। এবার কলেজের সব সমস্যা সমাধানে শিক্ষার্থীরা দলমত নির্বিশেষে একত্রিত হয়েছেন।

কবি নজরুল কলেজ বিতর্ক ক্লাবের সভাপতি আজম খান বলেন, ১৫৩ বছরের গৌরবময় ইতিহাস ও ঐতিহ্য নিয়ে কবি নজরুল সরকারি কলেজ দাঁড়িয়ে থাকলেও এখনও শির উঁচু করে দাঁড়াতে পারেনি। শির উঁচু করে দাঁড়াতে আমাদের যৌক্তিক দাবি আদায় ছাড়া কোনো বিকল্প নেই।

কবি নজরুল কলেজের শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান বলেন, কবি নজরুল সরকারি কলেজ রাজধানীর প্রাচীনতম শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হলেও এটি নানান সমস্যায় জর্জরিত। দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষার্থীরা তাদের যুক্তিযুক্ত দাবি তুলে ধরলেও তার কার্যকর কোনো ফলাফল চোখে পড়েনি। তাই এবার শিক্ষার্থীরা নিজেদের যৌক্তিক দাবি আদায়ে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে।
শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো:

১. হল সংস্কার ও হলের জন্য নতুন জায়গা বরাদ্দ করতে হবে।
২. ছাত্র ও ছাত্রীদের জন্য নতুন হল নির্মাণ।
৩. শিক্ষার্থীদের জন্য পর্যাপ্ত পরিবহন ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।
৪. শ্রেণিকক্ষের সংকট নিরসনে বহুতল ভবন নির্মাণ করতে হবে।
৫. ক্যাম্পাস সম্প্রসারণের জন্য নতুন জায়গা বরাদ্দ করতে হবে।
৬. কলেজের ঝুঁকিপূর্ণ ভবন ভেঙে নতুন ভবন নির্মাণ করতে হবে।
৭. দ্রুত সময়ের মধ্যে শিক্ষক সংকট নিরসন করতে হবে।

প্রায় দুই ঘণ্টার মতো সড়ক অবরোধ করে রাখার পর কবি নজরুল কলেজ ছাত্রদলের আহ্বায়ক ইরফান আহমেদ ফাহিম সাত দিনের আল্টিমেটাম দিয়ে বলেন, আমাদের সাত দফা দাবি এই সাত দিনের মধ্যে মেনে না নেওয়া হলে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।

/আবরার জাহিন

বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীর জন্য ৬ পরামর্শ

প্রকাশ: ০৭ মে ২০২৫, ১১:৫৭ এএম
বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীর জন্য ৬ পরামর্শ
ছবি: ওয়ার্ল্ড ব্যাংক ব্লগস

বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া একটি শিক্ষার্থীর জীবনে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা। শুধু একাডেমিক উন্নয়নের জন্য নয়, বরং এই অধ্যায় ব্যক্তিত্ব গঠনেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। স্কুল বা কলেজের তুলনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ অনেকটা ভিন্ন ও স্বাধীন। এই নতুন পরিবেশে সঠিকভাবে মানিয়ে নিতে হলে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় খেয়াল রাখা খুব জরুরি।

১. নিজস্ব সময় ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলা
বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাসের সময়সূচি অনেকটা খোলামেলা হয় এবং অনেকে একসঙ্গে পড়াশোনার পাশাপাশি পার্টটাইম কাজ বা অন্যান্য কার্যক্রমে যুক্ত হয়। তাই শুরু থেকেই সময়কে সঠিকভাবে কাজে লাগানোর অভ্যাস গড়ে তোলা প্রয়োজন। সময় নষ্ট না করে নিয়মিত ক্লাসে অংশগ্রহণ ও পড়ালেখার জন্য আলাদা সময় নির্ধারণ করা জরুরি।

২. নেটওয়ার্ক তৈরি
বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে মতবিনিময়ের একটি উন্মুক্ত ক্ষেত্র। নতুন বন্ধু তৈরি, সিনিয়রদের সঙ্গে পরিচিত হওয়া এবং শিক্ষকদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা শিক্ষাজীবনকে অনেক সহজ করে তোলে। বিভিন্ন ক্লাব ও সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত হয়ে আত্মবিশ্বাস বাড়ানো যায় এবং নেতৃত্বগুণও গড়ে ওঠে।

৩. আর্থিক পরিকল্পনা
বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে খরচ বাড়ে। বই, নোট, যাতায়াত, খাবার ও অন্যান্য ব্যয় থাকে। তাই মাসিক বাজেট তৈরি করে খরচ নিয়ন্ত্রণ করা ও সঞ্চয়ের অভ্যাস গড়ে তোলা গুরুত্বপূর্ণ। শিক্ষার্থী হিসেবে বিভিন্ন বৃত্তি বা পুরস্কার সম্পর্কেও খোঁজ রাখা প্রয়োজন।

৪. স্বাস্থ্য ও মানসিক সুস্থতা
নতুন পরিবেশে মানিয়ে নিতে অনেকেই মানসিক চাপের মুখে পড়ে। খাওয়া-দাওয়ার অনিয়ম, ঘুমের অভাব ইত্যাদি শরীর ও মনের ওপর প্রভাব ফেলে। তাই পরিমিত ঘুম, সুষম খাবার এবং মাঝে মধ্যে ব্যায়াম বা খেলাধুলায় অংশগ্রহণ করাও প্রয়োজন।

৫. প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহার
বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে অনেক কিছুই অনলাইনভিত্তিক হয়ে থাকে। তাই প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহার শিখে রাখা আবশ্যক। তবে সোশ্যাল মিডিয়ার অতিরিক্ত ব্যবহার এড়িয়ে চলা উচিত।

৬. আত্ম-উন্নয়ন ও দক্ষতা অর্জন
শুধু পাঠ্যপুস্তকের মধ্যেই সীমাবদ্ধ না থেকে বিভিন্ন দক্ষতা যেমন—কমিউনিকেশন, প্রেজেন্টেশন, সফটওয়্যার, বিদেশি ভাষা ইত্যাদি শেখার দিকে নজর দেওয়া উচিত। এসব দক্ষতা ভবিষ্যতের কর্মজীবনে সহায়ক হবে।

/রিয়াজ

কুয়েটে চালু হয়নি শিক্ষা কার্যক্রম, অনড় অবস্থানে শিক্ষকরা

প্রকাশ: ০৭ মে ২০২৫, ১০:৫০ এএম
কুয়েটে চালু হয়নি শিক্ষা কার্যক্রম, অনড় অবস্থানে শিক্ষকরা
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা কার্যক্রম চালু হয়নি। ছবি: সংগৃহীত

শিক্ষক লাঞ্ছিতের ঘটনায় জড়িতদের শাস্তি নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত অ্যাকাডেমিক কার্যক্রমে অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্তে অনড় রয়েছেন খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) শিক্ষকরা। বিশ্ববিদ্যালয়টি খোলার তৃতীয় দিন মঙ্গলবারও (৬ মে) ক্লাসে যাননি শিক্ষকরা। এতে এখনো শ্রেণি কার্যক্রম ও পরীক্ষা শুরু হয়নি। 

এদিকে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু না হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাড়ে সাত হাজার শিক্ষার্থী। এরই মধ্যে দুই দফায় ক্ষমা চেয়েছেন তারা। কিন্তু শিক্ষকরা সিদ্ধান্তে অনড় থাকায় কবে থেকে আবার ক্লাস শুরু হবে তা এখনো অনিশ্চিত।

শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘কুয়েটে আগে থেকেই দেড় বছরের সেশনজট রয়েছে। তার ওপর আড়াই মাস ধরে কোনো ক্লাস-পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়নি। আমরা ইতোমধ্যে ভুল-ত্রুটির জন্য শিক্ষকদের কাছে ক্ষমা চেয়েছি। আমরা দ্রুত শিক্ষা কার্যক্রমে ফিরে যেতে চাই।’ 

জানা গেছে, কুয়েটে যোগদানের পর থেকে ক্যাম্পাসের পরিবেশ স্বাভাবিক করতে নিয়োগ পাওয়া অন্তর্বর্তী ভিসি ড. মো. হযরত আলী দফায় দফায় শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের সঙ্গে আলাদাভাবে দীর্ঘ সময় বৈঠক করেন। তিনি শিক্ষার্থীদের সার্বিক অবস্থার জন্য শিক্ষকদের কাছে ক্ষমা চাইতে অনুরোধ করেন। একই সঙ্গে শিক্ষকদের কিছুটা নমনীয় হওয়ার আহ্বান জানান। তবে এসব পদক্ষেপেও সংকটের নিরসন হয়নি।

শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. ফারুক হোসেন বলেন, ‘আমরা শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের ওপর হামলার সুষ্ঠু বিচার চাই। শিক্ষকদের লাঞ্ছিত এবং কটূক্তি করা শিক্ষার্থীদেরও শাস্তি দিতে হবে। আগামী সাত দিনের মধ্যে শাস্তি নিশ্চিত না হলে শিক্ষকরা অ্যাকাডেমিক কার্যক্রমের পাশাপাশি প্রশাসনিক সব কাজ থেকে বিরত থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।’

শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. সাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘ভিসির সঙ্গে অনুষ্ঠিত সভায় আমরা আমাদের দাবি তুলে ধরেছি। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আমরা ক্লাসে যাব না বলে তাকে জানিয়েছি।’

ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি বন্ধের দাবি নিয়ে কর্মসূচিতে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। এতে শতাধিক আহত হন। ওই দিন কিছুসংখ্যক শিক্ষার্থী তৎকালীন ভিসিসহ কয়েকজন শিক্ষককে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত এবং গালাগাল করেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

খুলনার নর্থ ওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটির শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধের নির্দেশে উদ্বিগ্ন শিক্ষার্থীরা

প্রকাশ: ০৭ মে ২০২৫, ০৯:০৬ এএম
খুলনার নর্থ ওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটির শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধের নির্দেশে উদ্বিগ্ন শিক্ষার্থীরা
খুলনার নর্থ ওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটি। ছবি: সংগৃহীত

প্রতিষ্ঠার দীর্ঘ এক যুগ পরও স্থায়ী ক্যাম্পাস না হওয়ায় খুলনার নর্থ ওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটির ভর্তিসহ সব শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এতে বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীদের মধ্যে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে। দীর্ঘদিনেও স্থায়ী ক্যাম্পাস তৈরি না হওয়ায় অনেক শিক্ষার্থী ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। এদিকে নগরীর রূপসা সেতু বাইপাস সড়কের পাশে লবণচরা এলাকায় স্থায়ী ক্যাম্পাসের জন্য জমি কেনা হয়েছে জানিয়ে ক্যাম্পাস নির্মাণের জন্য সময় বৃদ্ধির আবেদন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

জানা গেছে, খুলনার প্রথম বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ‘নর্থ ওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটি’ ২০১২ সালে যাত্রা শুরু করে। বর্তমানে ছয়টি বিভাগের অধীনে এখানে প্রায় ২ হাজার ৩০০ শিক্ষার্থী লেখাপড়া করে। শুরুতে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ছিলেন মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র তালুকদার আবদুল খালেক। একই সঙ্গে তার স্ত্রী হাবিবুন নাহারসহ কয়েকজন আওয়ামী লীগ নেতা ও সিটি করপোরেশনের ঠিকাদার বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য ছিলেন। এই ট্রাস্টি বোর্ডের অধীনে লবণচরা এলাকায় জমি কেনার পর স্থায়ী ক্যাম্পাসে ভবন নির্মাণের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়।

তবে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ট্রাস্টি বোর্ডে পরিবর্তন আসে। এর জের ধরে বেশ কয়েকজন প্রতিষ্ঠাতা ট্রাস্টিকে বাদ দেওয়া হয়। সেই সঙ্গে স্থায়ী ক্যাম্পাসের জন্য ভবন নির্মাণের দরপত্রও বাতিল করা হয়।

এদিকে বাড়ি ভাড়া নিয়ে পাঠদান পরিচালনা করা খুলনার নর্থ ওয়েস্টার্নসহ ১৬টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তিসহ সব শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধের নির্দেশ দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। সাময়িক অনুমতির মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পরও নিজস্ব জমিতে স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণ করতে না পারায় ৮ এপ্রিল এসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনকে (ইউজিসি) ব্যবস্থা নিতে বলা হয়। 

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব (বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়-১) এএসএম কাসেম স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়, ‘বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাময়িক অনুমতির মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়া সত্ত্বেও শিক্ষা কার্যক্রম স্থায়ী ক্যাম্পাসে স্থানান্তর না করায় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট বিভাগকে অবহিত করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হলো।’

এ বিষয়ে শিক্ষার্থীরা বলছেন, শত শত কোটি টাকা আয় করেও স্থায়ী ক্যাম্পাস তৈরি করতে না পারা ট্রাস্টি বোর্ডের ব্যর্থতা। এর তদন্ত হওয়া উচিত। তারা বলেন, ভর্তি ফিসহ বিভিন্ন খাতে বিশ্ববিদ্যালয়টি শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা আদায় করেছে। কিন্তু এক যুগেও তারা স্থায়ী ক্যাম্পাস তৈরি করতে পারেনি। মূলত শর্ত লঙ্ঘন করে বছরের পর বছর ভাড়া বাড়িতে কার্যক্রম পরিচালনা করায় শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে তাদের ভর্তি ও শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, ভর্তি ফিসহ যেকোনো খাতে টাকা বাকি থাকলে নানাভাবে চাপ দিয়ে পরিশোধে বাধ্য করা হয়। অথচ এক যুগেও স্থায়ী ক্যাম্পাস তৈরি হয়নি।

নর্থ ওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ মো. এনায়েতুল বাহার বলেন, ‘রূপসা সেতু সড়কের লবণচরা থানার পাশে আমাদের স্থায়ী ক্যাম্পাসের জন্য জমি কেনা রয়েছে। নতুন ক্যাম্পাসের ভবন নির্মাণের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। ত্রুটির কারণে দরপত্র বাতিল করে নতুন দরপত্র আহ্বানের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।’