ভোটাররা সর্বান্তকরণে উপজেলা নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী প্রতারণার ফাঁদে পা না দিয়ে দেশের ভোটাররা সর্বান্তকরণে উপজেলা নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করেছে। আওয়ামী সরকারের মন্ত্রী-এমপি ও নেতাদের স্বজন ছাড়া অন্য কেউ নির্বাচিত হতে পারে না। ভোটারদের ভোটের প্রয়োজন হয় না। ফলাফল আগেই নির্ধারিত হয়ে আছে, সেটিই ঘোষিত হয়।’
বুধবার (৮ মে) নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব মন্তব্য করেন।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী অ্যাডভোকেট শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী সাইদুল আলম বাবুল, মৎস্যজীবী দলের সদস্য সচিব আবদুর রহিম প্রমুখ।
উপজেলা নির্বাচন বর্জন করছে জনগণ, সে কারণ তুলে ধরে রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘মানবজাতি স্বৈরাচারের দুঃশাসনে বেশিদিন লুকিয়ে থাকতে ও নীরব থাকতে পারে না। অধিকার আদায়ে বুক বেঁধে সাহসের সাথে এগিয়ে যায়। উগ্র রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়েছে। নিকৃষ্ট লুণ্ঠনের মাধ্যমে উপজেলা প্রতিষ্ঠানকে করা হয়েছে লুটেরা ও দস্যুদলের আখড়া। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবি যতই উচ্চারিত হয় ততই সরকারের কাছে জেল-জুলুমের প্রয়োজনীয়তা বৃদ্ধি পায়। যারা দ্বিতীয়বার প্রার্থী হয়েছেন তাদের আয় বেড়েছে তিন থেকে চার হাজার শতাংশের বেশি। যে দেশে গণতন্ত্রের ছিটেফোঁটাও নেই সে দেশে নির্বাচন সুষ্ঠু হতে পারে না। প্রধানমন্ত্রীর আশীর্বাদে ভোটারবিহীন নির্বাচনে কেউ চেয়ারম্যান ঘোষিত হলে হাতিশালে হাতি ও ঘোড়াশালে ঘোড়ার কোনো অভাব হয় না।’
তিনি বলেন, ‘৭ জানুয়ারির ডামি নির্বাচনের পর এখন আবার আওয়ামী সাদা পোশাকধারী বাহিনী নতুন রূপে আত্মপ্রকাশ করেছে। আবারও নতুন করে গুমের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। হামলা করে রক্তপাতের ধারা বইছে সর্বত্র। মঙ্গলবার আসরের নামাজের সময় মসজিদে যাওয়ার পথে সিদ্ধেশ্বরী মাঠ থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ও কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাবেক সহসভাপতি মাহিদুল হাসান হিরুকে সাদা পোশাকধারীরা মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যায়। তুলে নেওয়া গাড়ির নম্বর ঢাকা মেট্রো-চ ৫২-১৪৫০। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের দুই নেতা নাফিউল ইসলাম জীবন ও তার বন্ধু ইউনুস খানকে তিন ঘণ্টা ধরে মারধর ও চরম নির্যাতন করা হয়। ক্যাম্পাসে ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগ হিংস্র হায়েনার মতো ঝাঁপিয়ে পড়ছে গণতন্ত্রমনা ছাত্রদের ওপর। এরা হামলা চালাচ্ছে সাধারণ মানুষের ওপরও। ছাত্রলীগ, যুবলীগ দেশের সবচেয়ে খতরনাক বিপদ হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে।’
সত্য বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রকাশে সাংবাদিকদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বিএনপির মুখপাত্র বলেন, বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশন করলে গণমাধ্যমের গতি আরও তীব্র হবে, গণতন্ত্র আরও শক্তিশালী হবে।
শফিকুল ইসলাম/অমিয়/