জনগণের টাকা নতুন করে লোপাটের পরিকল্পনা থেকে ব্যাংক একীভূতকরণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেছে আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টি। দলটির নেতারা বলছেন, গত ১৬ বছরে দেশের সব অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করে দিয়েছে বর্তমান সরকার। যার ফলশ্রুতিতে আজ ৩৮টি ব্যাংক রেড জোনে রয়েছে। ইতোমধ্যে কয়েকটি ব্যাংক দেউলিয়া হওয়ার পথে।
বুধবার (৮ মে) অনিয়ম, দুর্নীতি ও অর্থ পাচারের মাধ্যমে ব্যাংক ও আর্থিক খাত ধ্বংসের প্রতিবাদে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এবি পার্টির নেতারা এ দাবি করেন।
দলের যুগ্ম আহ্বায়ক বিএম নাজমুল হকের সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন যুগ্ম সদস্যসচিব ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন দলের দফতর সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন রানা, প্রচার সম্পাদক আনোয়ার সাদাত টুটুল ও সিনিয়র সহকারী সদস্যসচিব আব্দুল বাসেত মারজান।
ব্যারিস্টার ফুয়াদ বলেন, ‘খারাপ ব্যাংকগুলোর দায়-দেনা বাজেট থেকে দেওয়ার উদ্যোগের কথা শোনা যাচ্ছে। তার মানে সরকারি দলের কিছু দুর্বৃত্তের লুটপাটের দায়-দেনা দেশের জনগণের ঘাড়ে চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে। আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতায় আসে তখনই দেশ লুটপাটের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়। ২০০৮ সালে যখন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসে তখন যে ব্যক্তির লাখ টাকা সঞ্চয় ছিল আজ তার হাত কপর্দকহীন শূন্য। সিন্ডিকেটের মাধ্যমে পুরো ব্যাংকিং খাতকে কয়েকটি পরিবারের মধ্যে ভাগবাটোয়ারা করে দিয়ে সরকারি দলের লোকেরা অর্থ লুট ও পাচার করে ইউরোপ-যুক্তরাষ্ট্রে নিজেদের সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছে।’
তিনি বলেন, ‘দ্রব্যমূল্যের ক্রমাগত ঊর্ধ্বগতির ফলে আজ দেশের ৪ কোটি ৫০ লাখ মানুষকে ঋণ করে বাজার করতে হচ্ছে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পরপরই শুধুমাত্র দলীয় বিবেচনায় ব্যাংকের অনুমোদন দেওয়া হয়। যে সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। কিন্তু সরকার বাংলাদেশ ব্যাংকের স্বাধীনতা হরণ করে পরিকল্পিতভাবে লুটপাট করার উদ্দেশ্যেই সরকারি আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো দুর্বল করে দিয়েছে। এমনকি লুটপাট অব্যাহত রাখতে খেলাপিঋণের সংজ্ঞা পর্যন্ত বদলে ফেলা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান থেকে সরকার যে ঋণ নিয়েছে তার কিস্তি পরিশোধের জন্য আবার ঋণ নিতে চাচ্ছে। বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর ক্যাপাসিটি চার্জ বন্ধ না করে বিদ্যুৎ খাতের ভর্তুকি বন্ধ করতে চাইছে সরকার। ফলে সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হবে কৃষি খাত।’
বিএম নাজমুল হক বলেন, ‘এই সরকার শুধু অর্থিক খাত নয়, সব প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করে দিয়েছে। আজ বিচার বিভাগের কাছে মজলুমরা বিচার পায় না, কোনো একটি সাধারণ নির্বাচনও নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠুভাবে করতে পারে না।’ জনগণকে এই সরকার পতনের আন্দোলনে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন দলের সহকারী সদস্যসচিব এম আমজাদ খান, হাদিউজ্জামান খোকন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের যুগ্ম আহ্বায়ক গাজী নাসির, যুগ্ম সদস্যসচিব সফিউল বাসার, আহমাদ বারকাজ নাসির, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল হালিম নান্নু, উত্তরের সদস্যসচিব সেলিম খান, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মশিউর রহমান মিলু, রিপন মাহমুদ, আমেনা বেগম, মশিউল আজম সাকিব, যুবপার্টি মহানগর উত্তরের সদস্যসচিব শাহীনুর আক্তার শীলা, পল্টন থানার সদস্য সচিব আব্দুল ওয়াদুদ মোল্লা প্রমুখ।
শফিকুল/সালমান/