ঢাকা ১২ শ্রাবণ ১৪৩১, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪

নতুন রূপে প্রস্তুত হচ্ছে ছাত্রদল

প্রকাশ: ২১ মে ২০২৪, ১২:০৮ পিএম
আপডেট: ২২ মে ২০২৪, ০৮:৫৭ পিএম
নতুন রূপে প্রস্তুত হচ্ছে ছাত্রদল
জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল

সরকারবিরোধী আন্দোলনে রাজপথের অতীতের ব্যর্থতা ঘোচানোর চ্যালেঞ্জ নিতে নতুনরূপে প্রস্তুত করা হচ্ছে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলকে। পরীক্ষিত, মেধাবী ও সাংগঠনিক নেতাদের অন্তর্ভুক্ত করার মাধ্যমে আবারও ছাত্রদলকে রাজপথের ‘আন্দোলনের শক্তি’ হিসেবে দেখতে চাইছেন শীর্ষ নেতারা। এই লক্ষ্যে আংশিক কেন্দ্রীয় কমিটির আকার বাড়ানো হচ্ছে। ইতোমধ্যে এক শ জনের বেশি একটি তালিকা হাইকমান্ডের কাছে পাঠানো হয়েছে। আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যেই ঘোষণা আসছে আংশিক এই কমিটির। পাশাপাশি জেলা কমিটি পুনর্গঠনের উদ্যোগ নিয়েছে সংগঠনটি। 

ছাত্রদলের দায়িত্বশীল নেতারা বলছেন, কেন্দ্রীয় কমিটিতে এবার যোগ্য নেতাদের অন্তর্ভুক্ত করা হবে। বিশেষ করে ২৮ অক্টোবরের পরে যারা রাজপথে আন্দোলন-সংগ্রামে ছিলেন শুধু তাদেরকে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। এই সময়ে প্রায় ৪০ দিনের মতো হরতাল-অবরোধ কর্মসূচিতে এক দিনের জন্যও যারা মাঠে ছিলেন না তারা কমিটিতে স্থান পাবেন না। পাশাপাশি এবারের কমিটিতে নারী নেত্রীদের মূল্যায়িত করা হবে। কারণ ২৮ অক্টোবরের পর রাজপথে নারী নেত্রীরাও সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছিলেন। আংশিক এই কমিটির সদস্য সংখ্যা বেড়ে একশ থেকে দেড় শতাধিক হবে। তবে মাঠে ছিলেন না এমন নেতাদের কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করতে নানা মাধ্যম থেকে তদবির-লবিং চালাচ্ছেন কেউ কেউ। 

এ বিষয়ে বিএনপির ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুলকে একাধিকবার ফোন ও মেসেজে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি সাড়া দেননি। 

ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব খবরের কাগজকে বলেন, বিগত আন্দোলনে যারা ধারাবাহিকভাবে মাঠে ছিলেন এবারের কমিটিতে তাদেরকে মূল্যায়ন করা হবে। বিশেষ করে ২৮ অক্টোবরের পর আন্দোলনে যারা উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছেন, আগামীতে যারা যোগ্য নেতৃত্ব দিতে পারবেন, যারা সংগঠনকে সামনে এগিয়ে নিতে পারবেন, তাদেরকে কেন্দ্রীয় কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। 

বিএনপির সূত্রমতে, নির্বাচনের আগে ও পরে ছাত্রদলের ভূমিকা নিয়ে সর্বমহলে প্রশ্ন ওঠে। তাই বিগত আন্দোলন নিয়ে এমন মূল্যায়নের ভিত্তিতে আগামীর আন্দোলন সামনে রেখে ছাত্রদলসহ অন্য অঙ্গসংগঠনের কমিটিও ভেঙে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় বিএনপি। ঘুরে দাঁড়াতে দেড় মাস মেয়াদ থাকা সত্ত্বেও নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগে গত পহেলা মার্চ ছাত্রদলের কমিটি বিলুপ্ত করা হয়। রাকিবকে সভাপতি ও নাছির উদ্দীনকে সাধারণ সম্পাদক করে ছাত্রদলের সাত সদস্যের নতুন আংশিক কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- সিনিয়র সহসভাপতি আবু আফসান মোহাম্মদ ইয়াহিয়া, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শ্যামল মালুম, সাংগঠনিক সম্পাদক আমানউল্লাহ আমান, দপ্তর সম্পাদক (সহ-সভাপতি পদমর্যাদা) মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম ও প্রচার সম্পাদক (যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদমর্যাদা) শরিফ প্রধান শুভ।

জানা গেছে, কেন্দ্রীয় আংশিক কমিটির আকার বাড়ানোর প্রক্রিয়া ইতোমধ্যে শুরু করেছে ছাত্রদল। নিয়ম অনুযায়ী কমিটির মেয়াদ তিন মাস না হলে পূর্ণাঙ্গ করা যাবে না। তাই এখনই পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করতে পারছে না ছাত্রদল। প্রথম ধাপে কেন্দ্রীয় কমিটির আকার বাড়ানো হচ্ছে। পাশাপাশি তৃণমূলের জেলা কমিটিও পুনর্গঠন করা হবে। এর মধ্য দিয়েই আবারও রাজপথে ঘুরে দাঁড়াবে ছাত্রদল। 

যদিও এই কমিটি রমজানের আগেই দেওয়ার কথা ছিল। তখন ছাত্রদলের সাবেক কয়েকজন শীর্ষ নেতা বাধা দেওয়ার কারণে কমিটি পুনর্গঠন প্রক্রিয়া থমকে যায়। এখনো তারা কমিটিতে নিজস্ব বলয়ের ছাত্রনেতাদের পদ দিতে চাপ দিচ্ছেন বলেও গুঞ্জন রয়েছে। শ্রাবণ-জুয়েল নেতৃত্বাধীন কমিটির বেশ কয়েকজনের পদোন্নতি হতে পারে। আগের কমিটির সহসভাপতি ছিলেন যারা তারাও এবার পদে থাকতে চান।

ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন নাছির খবরের কাগজকে বলেন, ‘রাজপথের আন্দোলন-সংগ্রামে যারা ছিলেন তাদেরকে মূল্যায়ন করার নির্দেশ রয়েছে হাইকমান্ডের। যারা সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষে কাজ করেছেন, আগামীতে পাশে থাকবেন তাদের মূল্যায়ন করা হবে। যারা আন্দোলনের সময়ে ছিলেন না, তাদেরকে কোনোভাবেই বিবেচনা করা হবে না। পদপ্রত্যাশীদের ব্যাপারে এখন যাচাই-বাছাই চলছে, সবার মতামত নেওয়া হচ্ছে। খুব শিগগির কমিটি আসবে।’ 

ছাত্রদল সূত্রে জানা গেছে, সারা দেশে ছাত্রদলের জেলা ও জেলা পদমর্যাদার ১১৮টি সাংগঠনিক ইউনিট রয়েছে। এর মধ্যে জেলা ও মহানগর মিলিয়ে ৮২টি সাংগঠনিক জেলা রয়েছে। তবে এগুলোর মধ্যে মাত্র ৩৩টি কমিটির মেয়াদ রয়েছে, যেগুলো শ্রাবণ-জুয়েলের নেতৃত্বাধীন ছাত্রদলের বিগত কমিটির সময়ে হয়েছিল। বাকি জেলা কমিটিগুলো রাজীব-আকরাম এবং খোকন-শ্যামলের সময়ে দেওয়া হয়। এসব কমিটির প্রতিটিই মেয়াদোত্তীর্ণ। জেলা কমিটির মেয়াদ দুই বছর হলেও অনেক জেলায় এখন সাত থেকে আট বছর আগের কমিটি দিয়ে চলছে ছাত্রদলের কার্যক্রম। ২০১৪ সালের অক্টোবরে রাজীব-আকরামের নেতৃত্বাধীন ছাত্রদলের কমিটি হয়েছিল। আগামীর আন্দোলন সামনে রেখে এসব মেয়াদোত্তীর্ণ জেলা কমিটিগুলো পুনর্গঠন প্রক্রিয়া শুরু করেছে ছাত্রদল।

তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের মতামত নিতে প্রতিটি সাংগঠনিক জেলায় কর্মিসভা করবে ছাত্রদল। ইতোমধ্যে রাজশাহী বিভাগের কর্মিসভা হয়েছে। আগামী বৃহস্পতি ও শুক্রবার ফরিদপুর বিভাগে কর্মিসভা করবে সংগঠনটি। কর্মিসভার আলোচনায় বিগত আন্দোলনে তৃণমূল নেতাদের ভূমিকার প্রকৃত তথ্য ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কাছে পৌঁছে দেওয়া হবে। তার মতামতের ভিত্তিতে কমিটি ভেঙে দেওয়া বা পুনর্গঠন হবে। এই প্রক্রিয়া দ্রুত শেষ করতে কাজ করছে ছাত্রদলের শীর্ষ নেতারা। 

তারা বলছেন, আন্দোলনে জেল-জুলুম, নির্যাতনের মাঝেও তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা উজ্জীবিত। তৃণমূলের মতামতের ভিত্তিতে মেয়াদ থাকা সত্ত্বেও কোনো কোনো কমিটি ভেঙে দেওয়া হতে পারে। কারণ বিগত আন্দোলন-সংগ্রামে যেসব জেলা রাজপথে ছিল না, সেসব জেলার কমিটি বাতিল করা হবে। যারা রাজপথে ভূমিকা রাখেননি এমন কেউ জেলার নতুন কমিটিতে পদে আসতে পারবেন না। 

সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শ্যামল মালুম বলেন, ছাত্রনেতা যারাই রাজপথে ছিলেন তাদের মূল্যায়ন করা হবে। আগের কমিটির যারা সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছেন তারা পদে আসবেন। আমাদের কাছে মতামত চাওয়া হয়েছে, আমরা মতামত দিয়েছি।  

চলমান কারফিউ নিয়ে সিদ্ধান্ত আজ

প্রকাশ: ২৭ জুলাই ২০২৪, ১১:০৬ এএম
আপডেট: ২৭ জুলাই ২০২৪, ১১:১১ এএম
চলমান কারফিউ নিয়ে সিদ্ধান্ত আজ
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল

চলমান কারফিউ আরও শিথিল করা যায় কিনা সে বিষয় আজ শনিবার নিয়মিত বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।

শুক্রবার (২৬ জুলাই) রাতে নিজ বাসভবনে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে বিভিন্ন সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে নিয়মিত বৈঠক শেষে এ কথা জানান মন্ত্রী। 

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির আগের চেয়ে অনেক উন্নতি হয়েছে। পুরোপুরি স্বাভাবিক হলেই কারফিউ তুলে নেওয়া হবে। বর্তমানে চলমান কারফিউ আরও শিথিল করা যায় কিনা সে বিষয় শনিবার নিয়মিত বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। 

আসাদুজ্জামান খান বলেন, কারফিউ শিথিল করা যায় কিনা আমরা দেখছি। পুলিশ বিজিবি, সেনাবাহিনী কাজ করছে। জনজীবন স্বাভাবিক হওয়া পর্যন্ত একটু অপেক্ষা করতে হবে। জনগণকে ধৈর্য্য ধরতে হবে। এ বিষয়ে শনিবার আলোচনা সাপেক্ষে সিদ্ধান্ত আসতে পারে বলেও জানান তিনি।

এ সময় আন্দোলনের নামে নৃশংস হত্যাযজ্ঞ হয়েছে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, দেশের এই ক্ষতির দায় কে নেবে? বিএনপি বলছে সহিংসতার মধ্যে তারা নেই। তাহলে কে করেছে? এটা জনগণের প্রশ্ন।

কোটা আন্দোলনের সমন্বয়কদের আটক বা গ্রেপ্তার করা হয়নি জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, কোটা আন্দোলনকারী নেতারা নিজেরাই নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। তাদের নিরাপত্তার জন্যই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে ডাকা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

অমিয়/

সহিংসতার দায় সরকারকেই নিতে হবে: জামায়াত

প্রকাশ: ২৭ জুলাই ২০২৪, ১১:০৪ এএম
আপডেট: ২৭ জুলাই ২০২৪, ১১:০৬ এএম
সহিংসতার দায় সরকারকেই নিতে হবে: জামায়াত

জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এ টি এম মা’ছুম বলেছেন, কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংসতার সব দায়-দায়িত্ব সরকারকেই বহন করতে হবে এবং জনগণের কাছে জবাবদিহি করতে হবে।

শুক্রবার (২৬ জুলাই) এক বিবৃতিতে এ কথা বলেন তিনি।

সারা দেশে গণগ্রেপ্তার, হামলা-মামলা ও রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতন এবং মিথ্যাচার বন্ধের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা সরকারের উদ্দেশে বলতে চাই, হুমকি-ধমকি দিয়ে কোনো লাভ হবে না। সরকারের সব চক্রান্ত-ষড়যন্ত্র ফাঁস হয়ে গেছে। দেশের জনগণ তাদের প্রতিবাদী কণ্ঠ উচ্চকিত করেছে।’

বিবৃতিতে এ টি এম মা’ছুম বলেন, ‘সরকার নিজেই দেশে অরাজক পরিস্থিতি তৈরি করেছে। উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়ে একটি অরাজনৈতিক শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে সহিংসতায় রূপ দেওয়া হয়েছে। ছাত্রদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে দমনের জন্য বিরোধী রাজনৈতিক দলকে জড়িয়ে ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের অপচেষ্টা চালানো হয়েছে। সরকার ছাত্রলীগ, যুবলীগ, শ্রমিকলীগ ও আওয়ামী সন্ত্রাসীদের মাঠে নামিয়ে দেশে অসংখ্য হত্যা সংঘটিত করেছে। দেশের শান্তিপূর্ণ ক্যাম্পাস ও রাজপথ রক্তে রঞ্জিত করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের নির্মমভাবে নিহত করে শত শত মায়ের বুক খালি করেছে এবং হাজার হাজার মানুষকে পঙ্গু করে দিয়েছে। এখনো বহু শিক্ষার্থী নিখোঁজ রয়েছেন।’

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘জালিম সরকারের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত না হয়ে নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করুন এবং প্রকৃত অপরাধীদের গ্রেপ্তার করে আদালতের হাতে সোপর্দ করুন।’

হত্যার দায় এড়াতে প্রোপাগান্ডা চালাচ্ছে সরকার: ছাত্রশিবির
হত্যার দায় এড়াতে এবং শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে সরকার ছাত্রশিবিরকে জড়িয়ে মিথ্যা প্রোপাগান্ডা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন ছাত্রশিবিরের সভাপতি মঞ্জুরুল ইসলাম ও সেক্রেটারি জেনারেল জাহিদুল ইসলাম। গতকাল এক বিৃবতিতে তারা এ অভিযোগ করেন।

বিবৃতিতে নেতারা বলেন, মূলত আওয়ামী লীগ প্রধান ও তার দলের সিনিয়র নেতাদের উসকানি এবং প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে খুনের হুকুমে এসব হত্যা সংঘটিত হয়েছে। দেশের অরাজক পরিস্থিতির দায়ভার বিরোধী দলের ওপর চাপিয়ে দিয়ে এ হত্যার দায় এড়ানোর কোনো সুযোগ নেই। মিথ্যা দিয়ে সত্যকে চাপা দেওয়া যায় না।

তারা আরও বলেন, ‘আমরা সুস্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই, ছাত্রশিবির নিয়মতান্ত্রিক ও শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে বিশ্বাসী একটি আদর্শিক সংগঠন। ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে ছাত্রশিবিরের কোনো সম্পর্ক নেই। এসব ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত, বিশ্বাসযোগ্য তদন্তের মাধ্যমে তাদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনার জোর দাবি জানাচ্ছি।’

কারফিউ প্রত্যাহারের আহ্বান জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের 
অবিলম্বে কারফিউ প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল। শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর তোপখানা রোডে অনুষ্ঠিত সেন্ট্রাল ওয়ার্কিং টিমের এক বৈঠকে দলটির নেতারা এ দাবি জানান।

বৈঠকে নেতারা বলেন, জনগণের চলাচলের স্বাধীনতা হরণ করে সরকার দেশে এক অঘোষিত সেনাশাসন জারি করেছে। জনগণের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা কেড়ে নিতে সরকার সংবাদপত্র ও মিডিয়ার ওপর নিয়ন্ত্রণ কায়েম করেছে। গণগ্রেপ্তার বন্ধ, বিশ্ববিদ্যালয়সহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার জোর দাবি জানিয়েছেন তারা। 

জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলর সম্পাদক ফয়জুল হাকিমের সভাপতিত্বে বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা অঞ্চলের সংগঠক কাইয়ুম হোসেন, বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন ফেডারেশন সংগঠক সুমন মল্লিক, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন সভাপতি মিতু সরকার প্রমুখ।

মানুষ হত্যার জবাব জনগণ আদায় করবে একদিন: মির্জা ফখরুল

প্রকাশ: ২৭ জুলাই ২০২৪, ১০:২৭ এএম
আপডেট: ২৭ জুলাই ২০২৪, ১০:২৭ এএম
মানুষ হত্যার জবাব জনগণ আদায় করবে একদিন: মির্জা ফখরুল
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর

‘হেলিকপ্টার দিয়ে মানুষ হত্যার জবাব জনগণ একদিন কড়ায় গণ্ডায় আদায় করবে’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ বরাবরই লাশের ওপর দিয়ে ক্ষমতায় গিয়েছে। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে গত কয়েক দিনে কতজন নিরীহ মানুষকে হত্যা ও পঙ্গু করা হয়েছে, জনগণ তার সঠিক পরিসংখ্যান জানতে চায়। জনগণের টাকায় কেনা কি পরিমাণ গোলাবারুদ, টিয়ার শেল, সাউন্ড গ্রেনেড শিক্ষার্থীদের ওপর ব্যবহার করা হয়েছে, তার হিসাবও জানতে চায়। 

শুক্রবার (২৬ জুলাই) এক বিৃবতিতে তিনি এসব কথা বলেন। বিএনপি ও বিরোধীদলীয় নেতা-কর্মীসহ সাধারণ মানুষকে গ্রেপ্তার, কারান্তরীণ ও জুলুম-নির্যাতনের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে এ বিবৃতি দেন বিএনপি মহাসচিব।

অন্যদিকে পৃথক বিবৃতিতে জাতীয় ঐক্যের আহ্বান জানিয়েছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। 

কোটা সংস্কার আন্দোলনে সমর্থনের কারণ জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, সরকারি দলের সন্ত্রাসী এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা যৌথভাবে গুলি, টিয়ারশেল, রবার বুলেট, সাউন্ড গ্রেনেড শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য করে নিক্ষেপের মাধ্যমে শত শত নিরীহ ছাত্রছাত্রীকে গণহারে হত্যা এবং হাজার হাজার ছাত্রছাত্রীকে আহত করেছে, যা দেশবাসীসহ বিশ্ববাসী অবলোকন করেছে। এই গণহত্যা, নির্যাতন, দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষার স্বার্থে দেশপ্রেমিক জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা প্রবর্তনের সংগ্রামে অবতীর্ণ হওয়ার আহ্বান জানান তিনি। 

অভিযোগ করে তিনি বলেন, এই নির্মম অত্যাচারে দেশের জনগণ হতবাক ও ক্ষুব্ধ হয়েছে এবং কোমলমতি ছাত্রছাত্রীদের পাশে দাঁড়িয়েছে। সরকার রাষ্ট্রের সব বাহিনীসহ দলীয় সন্ত্রাসীদের সাধারণ মানুষ, বিএনপি নেতা-কর্মী ও শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে লেলিয়ে দিয়ে ব্লক রেড দিয়ে এখন পর্যন্ত প্রায় ৩ হাজার মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। যা জাতির জন্য অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক ও লজ্জার।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ছাত্র-জনতার ন্যায়সঙ্গত আন্দোলনকে দমন করার জন্য সেনাবাহিনীকে ব্যবহার কখনোই গ্রহণযোগ্য নয়। অবিলম্বে সান্ধ্য আইন প্রত্যাহার এবং সেনাবাহিনীকে ব্যারাকে ফিরিয়ে নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।

বিএনপির এই শীর্ষ নেতা বলেন, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি, বরিশাল মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব জিয়াউদ্দিন সিকদার, নাটোর জেলা বিএনপির সদস্য সচিব রহিম নেওয়াজকে গ্রেপ্তার এবং ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির গ্রেপ্তারকৃত সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মোশাররফ হোসেন খোকনকে ৩ দিন পর আদালতে তোলা হয়েছে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল মিন্টুর বাসাসহ সিনিয়র নেতাদের বাসায় অব্যাহত গতিতে তল্লাশি চালাচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। অনেককে গুম করে রেখে নির্যাতন চালিয়ে চার-পাঁচ দিন পর আদালতে হাজির করা হচ্ছে, যা আইন ও মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন।

ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, যে সরকার ক্ষমতায় থাকার জন্য নির্মমভাবে নিরীহ মানুষকে হত্যা করতে পারে এবং রাষ্ট্রীয় সম্পদ ও স্থাপনার নিরাপত্তা দিতে পারে না, সেই সরকারের ক্ষমতায় থাকার কোনো নৈতিক অধিকার নেই। এই অবৈধ সরকারকে বলব-অবিলম্বে পদত্যাগ করে জনগণের জানমালের নিরাপত্তা বিধান করার লক্ষ্যে নির্দলীয় সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করে নিরপেক্ষ নির্বাচনের ব্যবস্থা নিন।

জাতীয় ঐক্যের আহ্বান
এদিকে শুক্রবার রাতে পৃথক এক বিবৃতিতে ন্যূনতম এক দফা, অবৈধ, ফ্যাসিস্ট সরকারের পতনের দাবিতে সব গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন ও শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার জন্য ‘জাতীয় ঐক্যের’ আহ্বান জানিয়েছে বিএনপি।

দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ আহ্বান জানানো হয়। 

বিএনপি মহাসচিব বলেন, “জাতির এই ক্রান্তিলগ্নে জাতীয় বৃহত্তর স্বার্থে, লুণ্ঠিত গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার পুনরুদ্ধার, অধিকারহীন জনগণের ও জাতির মুক্তির লক্ষ্যে আমরা উপরোক্ত ন্যূনতম এক দফার ভিত্তিতে এবং দাবিতে দেশের সব গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন, ব্যক্তি ও শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে একটি ‘জাতীয় ঐক্য’ গঠনের আহ্বান জানাচ্ছি।”

প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা বিএনপির নেতৃত্বে যুগপৎ আন্দোলনের সব শরিক দল ও জোট, বাম-ডান সব রাজনৈতিক দল, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীসহ অন্যান্য ধর্মভিত্তিক ও সব ইসলামি রাজনৈতিক দল এবং সংগঠনের প্রতিও জাতীয় ঐক্যের আহ্বান জানাচ্ছি।’

তিনি বলেন, সময় ও যোগাযোগের প্রতিবন্ধকতার কারণে বিবৃতির মাধ্যমে সম্মতি প্রদান করা যেতে পারে। শিগগিরই সম্মতিপ্রাপ্ত সবার স্বাক্ষরে যৌথ বিবৃতি প্রদান করা হবে। জাতীয় ঐক্যের এই ঐতিহাসিক ঘোষণা ও দলিল দেশ ও জাতির মুক্তি ত্বরান্বিত করবে ইনশাআল্লাহ।

সংকট উত্তরণে রাজনৈতিক সমঝোতার বিকল্প নেই: ইসলামী আন্দোলন

প্রকাশ: ২৭ জুলাই ২০২৪, ০৯:০৬ এএম
আপডেট: ২৭ জুলাই ২০২৪, ০৯:০৭ এএম
সংকট উত্তরণে রাজনৈতিক সমঝোতার বিকল্প নেই: ইসলামী আন্দোলন
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ

বর্তমান সংকট উত্তরণে রাজনৈতিক সমঝোতার বিকল্প নেই বলে মন্তব্য করেছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সহকারী মহাসচিব ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সভাপতি মাওলানা মুহাম্মদ ইমতিয়াজ আলম।

তিনি বলেন, ‘সরকার গণবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। খোদ আওয়ামী লীগের লোকজনই এখন আওয়ামী ফ্যাসিবাদ থেকে মুক্তি চায়। অবিলম্বে রাজনৈতিক সমাধান না হলে দেশের পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হতে পারে। এ জন্য সরকারকেই রাজনৈতিক সংকট উত্তরণের উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।’

শুক্রবার (২৬ জুলাই) ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের নিয়মিত মাসিক সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। মাওলানা মুহাম্মদ ইমতিয়াজ আলম বলেন, ‘সীমাহীন দুর্নীতি, লুটপাট, নিত্যপণ্যের আকাশচুম্বী মূল্য এবং তার ওপর কোটা সংস্কার আন্দোলনে গুলি করে মানুষ হত্যা, দেশের আপামর জনতাকে ভাবিয়ে তুলছে। একটি আন্দোলন দমাতে সরকারের লাশের স্তূপ সব শ্রেণি-পেশার মানুষের বিবেককে নাড়া দিয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সরকার ধ্বংসযজ্ঞগুলো প্রচার করছে। কিন্তু শত শত মানুষ যে লাশ হয়েছে, হাজারখানেক মানুষ পঙ্গুত্ববরণ করেছে এবং হাজারে হাজারে বন্দি করা হয়েছে, সেগুলো নিয়ে সরকারের কোনোই প্রচারণা নেই। ধ্বংসাত্মক কার্যক্রম যেমন নিন্দনীয়, তারচেয়ে ভয়াবহ নিন্দনীয় হলো মানুষ হত্যা করা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অপতৎপরতার কারণে মানুষ ঘরে ঘুমাতে পারছে না।’

নগর সেক্রেটারি ডা. শহীদুল ইসলামের পরিচালনায় সভায় আরও বক্তব্য রাখেন আলহাজ আনোয়ার হোসাইন, আলহাজ আবদুল আউয়াল, নুরুজ্জামান সরকার, কে এম শরীয়াতুল্লাহ, হাফেজ মাওলানা মুহাম্মদ মাকসুদুর রহমান, মাওলানা নজরুল ইসলাম, এইচ এম রফিকুল ইসলাম, মাওলানা কামাল হোসাইন প্রমুখ।

জাতীয় ঐক্যের আহ্বান বিএনপির

প্রকাশ: ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২:৪৯ এএম
আপডেট: ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২:৪৯ এএম
জাতীয় ঐক্যের আহ্বান বিএনপির
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ফাইল ছবি

ন্যূনতম একদফা, অবৈধ, ফ্যাসিস্ট সরকারের পতনের দাবিতে সকল গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন ও শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার জন্য "জাতীয় ঐক্যের” আহ্বান জানিয়েছে বিএনপি।

শুক্রবার (২৬ জুলাই) রাতে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ আহ্বান জানানো হয়। 

বিএনপি মহাসচিব বলেন, জাতির এই ক্রান্তিলগ্নে জাতীয় বৃহত্তর স্বার্থে, লুণ্ঠিত গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার পুনরুদ্ধার, অধিকারহীন জনগণের ও জাতির মুক্তির লক্ষ্যে আমরা উপরোক্ত ন্যূনতম একদফার ভিত্তিতে এবং দাবিতে দেশের সকল গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন, ব্যক্তি ও শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে একটি "জাতীয় ঐক্য" গঠনের আহ্বান জানাচ্ছি।

প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা বিএনপির নেতৃত্বে যুগপৎ আন্দোলনের সকল শরিকদল ও জোট, বাম-ডান সকল রাজনৈতিক দল, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীসহ অন্যান্য ধর্মভিত্তিক ও সকল ইসলামী রাজনৈতিক দল এবং সংগঠনের প্রতিও জাতীয় ঐক্যের আহ্বান জানাচ্ছি।

তিনি বলেন, সময় ও যোগাযোগের প্রতিবন্ধকতার কারণে বিবৃতির মাধ্যমে সম্মতি প্রদান করা যেতে পারে। শীঘ্রই সম্মতিপ্রাপ্ত সকলের স্বাক্ষরে যৌথ বিবৃতি প্রদান করা হবে। জাতীয় ঐক্যের এই ঐতিহাসিক ঘোষণা ও দলিল দেশ ও জাতির মুক্তি ত্বরান্বিত করবে ইনশাআল্লাহ।

সবুজ/এমএ/