অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে নোভাক জোকোভিচের বিদায় ঘন্টা বেজেছিল সেমিফাইনালে। গতকাল শনিবার মন্টে কার্লো মাস্টার্সেও বিদায় নিতে হয়েছে সেরা চার থেকে। ২০২৪ সালে দুই সেমিফাইনাল হার। এর মাঝে ইন্ডিয়ান্স ওয়েলসে ১২৩ নাম্বারে থাকা লুকা নর্দির কাছে সার্ব কিংবদন্তি হেরেছিল রাউন্ড-৩২ এ। সার্বিক পরিস্থিতিতে জোকোভিচ মেনে নিলেন যে মৌসুমটা ভালো যাচ্ছে না তার।

মন্টে কার্লোতে ১০ নাম্বার তারকা ক্যাসপার রুডের কাছে ৬-৪, ১-৬, ৬-৪ গেমে হেরেছেন শীর্ষ বাছাই জোকোভিচ। হারের পর ৩৬ বছর বয়সী সার্ব তারকা বলেছেন, ‘অবশ্যই হারের ম্যাচেও ইতিবাচক কিছু রয়েছে। (২০২৪ সালে) একটি শিরোপা না পাওয়া... গত ১৫ বছরের তুলনায়, সত্যিই এটা দুর্দান্ত একটি মৌসুম নয়।’

আগামী ২০ মে শুরু ফ্রেঞ্চ ওপেন। তার আগে আরও দুটো ইভেন্টে দেখা যাবে জোকোভিচকে। মাদ্রিদ ওপেনের পর রোমে খেলে রোলা গারো শুরু করবেন তিনি। তাই হতাশা ভুলে সামনে তাকিয়ে রেকর্ড ২৪ বারের গ্র্যান্ড স্লাম চ্যাম্পিয়ন, টেনিস জগতে যার সমান শিরোপা আছে কেবল সাবেক কিংবদন্তি মার্গারেট কোর্টের।

জোকোভিচ বলেছেন, ‘অস্ট্রেলিয়ায় আমি সেমিফাইনালে ছিলাম, এখানেও সেমিফাইনাল। আসলে এমন কিছু মৌসুম আছে যেখানে আপনি ভালো শুরু পাবেন না, এটা তেমনই একটি। আশা করি, আমি ঘুরে দাঁড়াব। চূড়ান্ত ফলাফল পেতে আমি এখান থেকে নিজেকে নতুন করে তৈরি তুলতে পারব।’

তিন সংস্করণের বার্ষিক হালনাগাদ হওয়া র‌্যাঙ্কিং প্রকাশ করেছে আইসিসি। প্রকাশিত এই নতুন র‌্যাঙ্কিংয়ে কপাল পুড়েছে বাংলাদেশের। নিজেদের সবচেয়ে কমফোর্ট জোন ওয়ানডে ফরম্যাটের র‌্যাঙ্কিংয়ে পিছিয়ে গেছে নাজমুল হোসেন শান্তরা। নবম স্থান থেকে দশম স্থানে নেমে গেছে বাংলাদেশ।

নতুন হালনাগাদ হওয়া র‌্যাঙ্কিংয়ে ৪ রেটিং পয়েন্ট হারানো বাংলাদেশের পয়েন্ট এখন ৭৬।

তবে পরিবর্তন হয়নি টেস্ট ও ওয়ানডেতে। দুই সংস্করণেই নয়ে অবস্থান। টেস্ট রেটিং পয়েন্ট ৬২ ও টি-টোয়েন্টিতে ২২৫।

২০২৪ সালের মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত খেলা সকল ম্যাচের রেটিং শতভাগ হিসাব করা হয়েছে। আগের দুই বছরের ম্যাচগুলো বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে ৫০ শতাংশ হারে।

সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ দলের ওয়ানডে পারফরম্যান্স খুবই হতাশাজনক। গেল বছরের শুরু থেকে খেলা ১১ ম্যাচে জয় মাত্র ৩ ম্যাচে। সিরিজ হারতে হয়েছে আফগানিস্তান ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। জয়হীন থাকতে হয়েছে আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতেও। 

এদিকে টেস্ট র‍্যাংকিংয়ে শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে অস্ট্রেলিয়া, আর ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি—সাদা বলের দুই ফরম্যাটে শীর্ষস্থান আরো মজবুত করেছে ভারত। এদিকে শ্রীলঙ্কা সব সংস্করণেই বড় উন্নতি করেছে।

হামজা দেওয়ান চৌধুরীকে দেখে বাংলাদেশ দলে খেলার অনুপ্রেরণা পেয়েছেন সামিত সোম। অপেক্ষায় আছেন বাংলাদেস দলের জার্সিতে মাঠ মাতানোর। লাল সবুজের জার্সিতে খেলতে আর মাত্র একধাপ দূরে অবস্থান করছেন তিনি বলা চলে।

গেল শুক্রবার রাতে কানাডার টরন্টোতে বাংলাদেশ হাই-কমিশনের কনস্যুলেট অফিসে পাসপোর্টের আবেদন করেছেন তিনি। তার ই-পাসপোর্টটি হয়ে গেছে ৭২ ঘন্টার মধ্যেই।

বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সহ-সভাপতি ফাহাদ করিম সামিতের পাসপোর্ট হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

ফিফার অনুমোদন পেলেই মাঠে নামতে আরকোনো বাধাই থাকবে না সামিতের। বাংলাদেশের ফুটবল সমর্থকরাও এখন আছেন সেটারই অপেক্ষায়। 

আগামীকাল (৬ মে) বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) ফিফার কাছে আবেদন করবে সামিত ও তার মা-বাবার সকল ডকুমেন্টস ও কানাডা ফুটবল ফেডারেশনের ছাড়পত্রসহ। ফিফা প্লেয়ার স্ট্যাটাস কমিটি ‘সবুজ সংকেত’ দিলেই সামিত বাংলাদেশের হয়ে খেলতে পারবেন। 

হামজা দেওয়ান চৌধুরী খেলতেন ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের দল লেস্টার সিটিতে। আর বর্তমানে খেলছেন শেফিল্ড ইউনাইটেডের হয়ে। খেলেছিলেন ইংল্যান্ডের বয়সভিত্তিক পর্যায়ে ইউরোপীয় মহাদেশের দলে টুর্নামেন্টে খেলেছিলেন। এই কারণে তার ছাড়পত্র পেতে সময় লেগেছিল ৩ মাসের বেশি।

কানাডার হয়ে দুটি প্রীতি ম্যাচ খেলেছিলেন সামিত। সেই দুই ম্যাচ আনঅফিশিয়াল হওয়ায় উল্লেখ রয়েছে ছাড়পত্রে। তাই দ্রুতই তার ছাড়পত্র মিলবে বলে আশা করা যাচ্ছে। ১০ জুন এশিয়া কাপ বাছাইয়ের ম্যাচে সামিতকে খেলাতে হলে ৩ জুনের মধ্যে বাফুফেকে ফিফার ক্লিয়ারেন্স পেতে হবে। 

সামিতের পার্সপোর্টটি করা হয়েছে কানাডা থেকে। সেই পাসপোর্ট ঢাকা থেকে প্রিন্ট করিয়ে পাঠানো হবে কানাডায়। বাফুফে পাসপোর্টের তথ্য সম্বলিত পাতার মাধ্যমে মূলত ফিফায় আবেদন ও আনুষ্ঠানিক কাজ করবে। বাফুফে সময়ক্ষেপণ না করে আগামীকালের মধ্যেই ফিফায় আবেদন সম্পন্ন করতে চায়। 

বোলারদের নৈপুণ্যে নিউজিল্যান্ড ‘এ’ দলকে ১৪৭ রানে অলআউট করার পর ব্যাট হাতেও দাপট দেখিয়ে জয় আদায় করে সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেছে বাংলাদেশ ‘এ’ দল।

সোমবার (৫ মে) সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ১৪৮ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ৩ উইকেট হারিয়ে জয়ের বন্দরে পোঁছে যায় ৭ উইকেট হাতে রেখে নুরুল হাসান সোহানরা।

লক্ষ্য তাড়া করতে নাইম শেখ ও পারভেজ হোসেন ইমনের ওপেনিং জুটি হয় ৩০ রানের। ৬ চারে ১২ বলে ২৪ রান করে ক্রিস্টিয়ান ক্লার্কের বলে ফক্সক্রফটের হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন ইমন দলীয় ৩০ রানে।

আরেক ওপেনার নাইম শেখও ফেরেন ১৮ রান করে। দলের রান যখন ৫৩ সেই ক্লার্কের বলেই লেনক্সের হাতে ক্যাচ দিয়ে আউট হন নাইম। তার বিদায়ে দ্বিতীয় উইকেটের পতন ঘটে বাংলাদেশের।

এরপর ৫৫ রানের জুটি হয় এনামুল হক বিজয় ও মাহিদুল ইসলামের অঙ্কনের মধ্যে। কিন্তু দলীয় ১০৮ রানে ফক্সক্রফটের বলে সুইপ করতে গিয়ে ফাইন লেগে ক্যাচ দিয়ে আউট হন ৪৪ বলে ৩৮ রান করা বিজয়।

জয় থেকে তখনও ৪০ রান দূরে বাংলাদেশ ‘এ’ দল। তবে সেই জয় আদায় করে নিতে দূর্ভোগ পোহাতে হয়নি অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহান ও মাহিদুল ইসলাম অঙ্কনের। ২৭.২ ওভারে ৭ উইকেটের জয় আদায় করে নেয় এই জুটি। 

এই দুই ব্যাটারের জুটি হয় ৪১ রানের। অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহান জয়সুচক শটটি খেলেন। তিনি ২০ ও মাহমুদুল ইসলাম অঙ্কন অপরাজিত ছিলেন ৪২ রানে।

সিরিজের প্রথম ম্যাচে নিউজিল্যান্ড ‘এ’ দলকে মাত্র ১৪৮ রানে অলআউট করে দিয়েছে বাংলাদেশ ‘এ’ দল। মাত্র ৩৪.৩ ওভার ব্যাটিং করতে পেরেছে সফরকারীরা।

সোমবার (৫ মে) সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে আগে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নেন নিউজিল্যান্ডের অধিনায়ক নিক কেলি। তবে সেই সিদ্ধান্ত যে সঠিক হয়নি সেটি প্রমাণ হয়ে যায় দ্রুত।

মাত্র ১৩ রানেই ৪ উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে সফরকারীরা। শরিফুল ইসলাম ও খালেদ আহমেদের দাপটে শুরুতেই বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে কিউইদের ব্যাটিং লাইনআপ। 

৬২ রানেই হারিয়ে বসে ৭ উইকেট সফরকারীরা। কিছুইতেই যেন সুবিধা করতে পারছিল না কিউইরা। শঙ্কায় পড়ে যায় শতরানের আগেই অলআউট হওয়ার। দলের ৫ ব্যাটারই ফিরেছেন রানের খাতা খোলার আগেই।

৮৫ রানে ৯ উইকেট হারানো নিউজিল্যান্ড সেখান থেকে দেড়শ’র কাছাকাছি দলের স্কোর নিয়ে যেতে সক্ষম হয় ডিন ফক্সক্রোফটের সর্বোচ্চ ৭২ রানের ইনিংসে। ধুঁকতে থাকা দল তার ব্যাটেই পায় লড়ার পুঁজি। ৪২ রান করেছেন ওপেনার রায়স মারিউ।

বাংলাদেশের হয়ে সমান ৩টি করে উইকেট পেয়েছেন খালেদ আহমেদ ও স্পিনার তানভীর আহমেদ। দুটি করে উইকেট পেয়েছেন শরিফুল ইসলাম ও ইবাদত হোসেন।

বল হাতে দারুণ পারফরম্যান্স করার পরও রিশাদকে টানা তিন ম্যাচ বেঞ্চে বসিয়ে রাখে লাহোর কালান্দার্স। অবশেষে করাচি কিংসের বিপক্ষে ম্যাচে একাদশে ফেরেন এই লেগ স্পিনার।

৩ ওভার বোলিং করে ২৮ রান খরচায় ১টি উইকেট পেলেও জয় পায়নি তার দল লাহোর। বৃষ্টির কারণে ম্যাচ নেমে আসে ১৫ ওভারে। লাহোরের ব্যাটিংয়ের সময় ১৫ ওভার শেষে ৮ উইকেট হারিয়ে ১৬০ রান তোলার পর নামে বৃষ্টি। তখন ক্রিজে রিশাদ থাকলেও খোলা হয়নি রানের খাতা।

বৃষ্টি থামলেও তখন ব্যাটিংয়ে নামে করাচি। তাতে ১৫ ওভারে করাচির সামনে লক্ষ্য দাঁড়ায় ১৬৮ রান। ১৫ ওভারে লক্ষ্যটা বড় হলেও করাচি লড়াই চালিয়ে যাচ্ছিল। রিশাদ যখন বোলিংয়ে আসেন, তখন ৬ ওভারে ৬৮ রান করা লাহোর হারায় ২ উইকেট।

এমন পরিস্থিতিতে বল হাতে দারুণ শুরু করেন রিশাদ। প্রথম ওভারে মাত্র ৭ রান দিয়ে জেমস ভিন্সকে শিকার করেন। তবে দ্বিতীয় ওভারে এক চার ও এক ছক্কায় দেন ১৩ রান।

শেষ ওভারে আরও ৮ রান দিলে তিন ওভারে তার বোলিং ফিগার দাঁড়ায় ২৮ রানে ১ উইকেট। তবে জিততে পারেনি তার দল। করাচি ম্যাচটি জিতে নিয়েছে ৪ উইকেট ও ৩ বল হাতে রেখে।

তবে এই ম্যাচ দিয়ে একটি রেকর্ডও গড়েছেন রিশাদ। কখন পর্যন্ত পিএসএলে তার ঝুলিতে আছে ৯ উইকেট। পাকিস্তানের এই ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্টে বাংলাদেশের বোলারদের মধ্যে সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি তিনি।

এর মাধ্যমে তিনি ছাড়িয়ে যান সাকিব আল হাসান ও মাহমুদউল্লাহকে, হয়ে ওঠেন পিএসএলে বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি।