![দামের সঙ্গে কমেছে খাবারের মান](uploads/2024/02/12/1707716695.RU-Food.jpg)
ক্যাম্পাসের খাবারের মান ও দাম নিয়ে দীর্ঘ দিনের অসন্তোষ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থীদের। এরপর ক্যাম্পাসে খাবারের মান বৃদ্ধি ও দাম কমানোর লক্ষ্যে গত ২১ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির সঙ্গে আলোচনায় বসেন বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন, সাধারণ শিক্ষার্থী এবং দোকান মালিক সমিতির নেতারা। পরের দিন ২২ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের এস্টেট দপ্তরের প্রধান শামীম হোসেন চৌধুরী স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে খাবারের নতুন মূল্য নির্ধারণ করে দেওয়া হয়। প্রশাসনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী দাম কম রাখলেও পরিমাণ ও মান কমিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে দোকানিদের বিরুদ্ধে। কেউ কেউ আবার একই খাবার বিক্রি করছেন ভিন্ন দামে। এ ছাড়া দোকানভেদে আলাদা মূল্য তালিকা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, প্রশাসনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ক্যাম্পাসের সকল দোকানে একই মূল্যে খাবার বিক্রি হবে। সে অনুযায়ী নতুন মূল্য তালিকা হিসাবে ভাত ১২ টাকা (প্রতি প্লেট), খিচুড়ি ২০ টাকা, ডিম (ভাজি ও রান্না) ১৫ টাকা, মুরগি বয়লার (২ পিস) ৩০ টাকা, মুরগি সোনালি ৭০ টাকা, রুই-কাতল মাছ (প্রতি পিস) ৩০ টাকা, গরুর মাংস ১০০ টাকা। এ ছাড়া সিঙাড়া, পুড়ি, পিঁয়াজু, চপ ও পরোটা ৬ টাকা এবং দুধ চা ১০ টাকা, লাল চা ৫ টাকা মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে খাবারের দাম কমানোর সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের সঙ্গে সঙ্গেই খাবারের মান ও পরিমাণও কমিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে দোকানিদের বিরুদ্ধে।
শিক্ষার্থীরা বলছেন, খাবারের দাম কমানোর সঙ্গে গুণগতমান ও পরিমাণ দুটোই কমিয়েছেন দোকানিরা। অন্যদিকে দোকানিরা বলছেন, নির্ধারিত মূল্যে বিক্রি করলে তারা লোকসানের সম্মুখীন হন। তাই বাধ্য হয়েই খাবারের পরিমাণ কমানো হয়েছে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থী শামীম হোসেন বলেন, ‘ক্যাম্পাসে খাবারের মান এবং মূল্য নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের তৎপরতা দেখে আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীরা খুবই উচ্ছ্বসিত হয়েছিলাম। ভেবেছিলাম এই সিদ্ধান্তের ফলে যেমন মানসম্মত খাবার খেতে পারব, পাশাপাশি মূল্য হ্রাস করায় আমাদের অর্থ সাশ্রয়ও হবে। কিন্তু তা না হয়ে উল্টো কমে গেছে খাবারের মান। আগের তুলনায় পরিমাণও কমে গেছে। আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীরা এসব সমস্যা সমাধানের জন্য প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।’
খাবারের মান ও পরিমাণ কমানোর বিষয়ে জানতে চাইলে দোকানি সুরুজ মিয়া বলেন, ‘জিনিসপত্রের অনেক দাম। তাই প্রশাসনের নির্ধারিত দামে বিক্রি করতে হলে পরিমাণ একটু কমাতেই হয়। তবে আমরা খাবারের মান কমাইনি।’
এক ক্যাম্পাসে দুই ধরনের দাম নির্ধারণ
গত ২২ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের এস্টেট দপ্তরের প্রধান মো. শামীম হোসেন চৌধুরী স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে ক্যাম্পাসের দোকানগুলোর জন্য নতুন নির্ধারিত মূল্য তালিকা প্রকাশ করা হয়। কিন্তু এ মূল্য তালিকা মেনে নেয়নি সিলসিলা রেস্তোরাঁ। তারা আগের মূল্যেই বিক্রি করে তাদের খাবার। পরে একই মাসের ২৫ তারিখে সিলসিলার জন্য আলাদা বর্ধিত দাম নির্ধারণ করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
আলাদা দাম নির্ধারণের বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের এস্টেট দপ্তরের প্রধান মো. শামীম হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘আমরা ভ্রাম্যমাণ দোকানগুলোর জন্য ও স্থায়ী দোকানগুলোর জন্য আলাদা দাম নির্ধারণ করেছি। তাই এ রকম হয়েছে।’
সার্বিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক খবরের কাগজকে বলেন, ‘খাবারের নিম্নমানের কথা আমরা প্রায়ই শুনতে পাই। এজন্য আমরা প্রশাসন থেকেও তদারকি করি। ১ কেজি চালে ১০ প্লেট ভাত বিক্রির নিয়ম করে দিয়েছি। কিন্তু এ ক্ষেত্রে ভাত কম দেওয়ার অভিযোগ আমরা পেয়েছি। তাই কিছু দিনের মধ্যে ভাত পরিমাপক পাত্র প্রত্যেক দোকানে সরবারাহ করব আমরা। তা ছাড়া শিক্ষার্থীদের সুবিধার্থে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।’