ঢাকা ১২ শ্রাবণ ১৪৩১, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪

শিক্ষার্থীদের ঈদভাবনা

প্রকাশ: ০৭ এপ্রিল ২০২৪, ১২:৪৪ পিএম
আপডেট: ০৭ এপ্রিল ২০২৪, ১২:৪৭ পিএম
শিক্ষার্থীদের ঈদভাবনা

ঈদ মানে আনন্দ। ঈদ মানে খুশি। মুসলমানদের প্রধান ধর্মীয় উৎসবের মধ্যে ঈদুল ফিতর অন্যতম। দীর্ঘ এক মাস সিয়াম সাধনার পর খুশির আমেজ নিয়ে আসে ঈদ। ঈদে শিক্ষার্থীরা সবার সঙ্গে আনন্দ ভাগাভাগি করার জন্য ছুটে যান নিজ গ্রামে। কয়েকজন তরুণ শিক্ষার্থীর ঈদভাবনা তুলে ধরেছেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী গাজী আজম হোসেন

ঈদের খুশি ভাগাভাগির মধ্যেই প্রকৃত আনন্দ

সাকিব আহমেদ
শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
 
ভোররাতে মায়ের ডাকে ঘুম ভাঙার বদলে ইলেকট্রনিক ডিভাইসের অ্যালার্ম স্মরণ করিয়ে দেয় স্বজনদের ছেড়ে আমরা অনেক দূরে আছি। উচ্চশিক্ষার প্রয়োজনে শিক্ষার্থীরা ঈদ এলে খুঁজে পায় বাড়ি ফেরার আনন্দ। ঈদ আনন্দ, ভালোবাসা ও সাম্যের বার্তা নিয়ে আসে প্রত্যেক শিক্ষার্থীর জীবনে।

আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে এক মাস সিয়াম সাধনার পর ঈদ প্রতিটি মুসলমানের ঘরে নিয়ে আসে আনন্দের সওগাত। ঈদগাহে এক কাতারে দাঁড়িয়ে সব শ্রেণিপেশার মানুষ একসঙ্গে নামাজ আদায় করে  কোলাকুলি ও কুশলবিনিময়ের মাধ্যমে আত্মশুদ্ধির আনন্দে পরস্পরের মেলবন্ধনে ঐক্যবদ্ধ হয়।

আমার কাছে ঈদের খুশি ভাগাভাগির মাঝেই প্রকৃত আনন্দ। নিজে খুশি হওয়ার চেয়ে বঞ্চিত প্রত্যেক শিশুকে এবং প্রত্যেক মানুষকে খুশি দেখতে চাওয়াটাই ঈদ।

শান্তি ও সম্প্রীতি ছড়িয়ে দেওয়ার নামই ঈদ

আঁখি আক্তার বন্যা
ইতিহাস বিভাগ 
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়

এক মাস সিয়াম সাধনার পর আনন্দ, খুশি নিয়ে আসে ঈদুল ফিতর। শান্তি ও সম্প্রীতির বার্তা ছড়িয়ে দেওয়ার নামই ঈদ। ঈদে শিক্ষার্থীরা কাছে পায় প্রিয় স্বজন, কিংবা শৈশবের হারানো দিন। পরিবার-পরিজন, বন্ধুবান্ধব, শুভাকাঙ্ক্ষীদের নিয়ে ঈদ উদযাপন করলে ঈদের আনন্দ দ্বিগুণ হয়ে ওঠে। রমজান মাস মুসলমানদের ত্যাগ ও আত্মশুদ্ধির মাস।

এ মাসে যেমন সারা দিন রোজা রেখে ক্ষুধার্তদের কষ্ট অনুভব করা যায়, তেমনি ঈদের নামাজের আগে গরিবদের সহায়তার মাধ্যমে সবার সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করা যায়। ঈদে শিক্ষার্থীরা ঈদে বাড়িতে গেলে বড়দের কাছ থেকে সালামির টাকা পেয়ে থাকে। এভাবেই, নানা আনন্দের মধ্য দিয়ে আমাদের ঈদ উদযাপিত হয়ে থাকে।

তাছাড়া ঈদ প্রত্যেক মানুষকে সৌহার্দ, সম্প্রীতি, ভালোবাসার বন্ধনে  আবদ্ধ করে।

সবার সঙ্গে দেখা মানে মিলনমেলা

খাদিমুল সরদার 
গণিত বিভাগ 
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর 

স্কুল-কলেজের পাঠ শেষ অনেক আগেই। বিভিন্ন কারণে বন্ধুদের সঙ্গে কথা বলা কিংবা দেখা হয়ে ওঠে না,  রমজান উপলক্ষে সেই বন্ধুদের সঙ্গে ইফতার মাহফিলে অংশগ্রহণ করা কিংবা ঈদে বাড়িতে গেলে তাদের সঙ্গে দেখা হওয়ার সুযোগ পাওয়া আমার কাছে মিলনমেলার মতো। সারা বছর পড়ালেখার চাপ শেষে ঈদের ছুটিতে বাড়ি যাওয়া, গ্রামের মাটিতে দাঁড়িয়ে মন ভরে শ্বাস নেওয়ার যে অনুভূতি, মায়ের হাতের ভালো ভালো রান্নার স্বাদ, বহুদিন পরে আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে যাওয়ার যে আনন্দ, সেটা অকৃত্রিম। গ্রামের যে মানুষগুলোর সঙ্গে সচরাচর দেখা হয়ে ওঠে না, ঈদগাহে তাদের ও  বন্ধুদের সঙ্গে দেখা হওয়ায় নিজের অজান্তেই মনের মধ্যে একটা ভালো লাগার সঞ্চার ঘটে।  ঈদের খুশিতে সব মানুষ ভালো ও সুস্থ থকুক, এটাই আমার কামনা।

ছোটবেলার আনন্দ ফিরে আসুক ভিন্নভাবে

রাবেয়া ভূঁইয়া অন্তু 
গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ 
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়

দীর্ঘ এক মাসের  রোজা শেষে বহু কাঙ্ক্ষিত ঈদুল ফিতর নিয়ে আসে খুশির বার্তা। পরিবার, আত্মীয়স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশীদের নিয়ে সবাই ঈদ আনন্দে মেতে ওঠে।  শৈশবের সেই রোজা রাখার আকাঙ্ক্ষা, মা-বাবা সাহরিতে উঠতে না দিলে গাল ফুলিয়ে বসে থাকা, ঈদের দিনের জন্য অপেক্ষা করা, মেহেদী দিয়ে দুই হাত রাঙানো, নতুন জামা পরে ঘোরাঘুরি করার মতো আনন্দ এখন আর খুঁজে পাওয়া যায় না। আমার মনে হয় ছোটবেলার ঈদ আনন্দ আমাদের জীবনে ফিরে আসুক ভিন্নভাবে।

যেসব শিক্ষার্থী দূরে থেকে পড়াশোনা করে তাদের জন্য ঈদ মানেই ঘরে ফেরা। ক্যাম্পাস ছুটির সঙ্গে সঙ্গে সবাই ব্যাগ গুছিয়ে ছুটে চলে আপন ঠিকানায়। বাবা-মায়ের কাছে পৌঁছানো মাত্রই  সব দুঃখ-কষ্ট নিমিষেই দূর হয়ে যায়। তাদের হাসিমাখা মুখ দেখামাত্রই যেন ঈদ আনন্দ দ্বিগুণ বেড়ে যায়।

অসহায় গরিবদের যেন ভুলে না যাই!

রাব্বি তালুকদার 
ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়
 
ঈদ নিয়ে ছোটবড় সবারই কতই না আয়োজন থাকে। আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে দূরদূরান্ত থেকে সবাই তার আপনজনের কাছে ফিরে আসে। আমরা যারা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, রোজা শুরু হওয়ার পর থেকে অপেক্ষায় থাকি কবে নিজের পরিবারের কাছে ফিরে যাব। 

তবে রমজান মাসে শুধু আমাদের আনন্দের কথা না ভেবে, যারা গরিব-দুঃখী, অসহায় আছে তাদের কথাও ভাবা উচিত। আমরা অসহায় গরিবদের যেন ভুলে না যাই! এলাকায় ধনী ব্যক্তিদের সাহায্য একত্রিত করে চাইলেই আমরা এসব অসহায় মানুষের জন্য ভালো কিছু করতে পারি।

ঈদের আনন্দ শুধু নিজেদের মধ্যে ভাগাভাগি করা নয়, গরিব-দুঃখী, অসহায় সবার মাঝে ভাগাভাগি করে নিতে পারাটাই আসল আনন্দ। তাছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ার চাপ থেকে মুক্ত হয়ে কয়েকটা দিন পরিবারের সঙ্গে কাটানো আসলেই বড় শান্তির।

কলি 

 

ঢাবির জনসংযোগ দপ্তরের বিজ্ঞপ্তি ক্যাম্পাস ও ছাত্ররাজনীতি নিয়ে কোনো মন্তব্য করেননি উপাচার্য

প্রকাশ: ২৬ জুলাই ২০২৪, ১০:৩৩ পিএম
আপডেট: ২৬ জুলাই ২০২৪, ১০:৩৫ পিএম
ক্যাম্পাস ও ছাত্ররাজনীতি নিয়ে কোনো মন্তব্য করেননি উপাচার্য

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) উপাচার্যের বরাত দিয়ে ‘ক্যাম্পাসের পরিস্থিতি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণের বাইরে এবং ক্যাম্পাসে রাজনীতি বন্ধ হবে না’ এমন একটি প্রতিবেদন দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমের অনলাইন ভার্সন, ফেসবুক ও ইউটিউবে ছড়িয়েছে। তবে উপাচার্য এমন কোনো মন্তব্য করেননি বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তর থেকে দাবি করা হয়েছে।

শুক্রবার (২৬ জুলাই) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়।

এতে বলা হয়, উপাচার্য শুক্রবার গণমাধ্যমে রাজনীতি নিয়ে কোনো ধরনের মন্তব্য করেননি এবং তিনি কখনোই বলেননি যে, ‘ক্যাম্পাসের পরিস্থিতি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণের বাইরে’। মিথ্যা ও ভিত্তিহীন এই বক্তব্য জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করেছে। বিভ্রান্তি নিরসনের লক্ষ্যে গণমাধ্যমকে সঠিক ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনের জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি। এ ছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে নিয়ে সঠিক ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনের অনুরোধ জানানো হয় বিজ্ঞপ্তিতে।

এদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. এএসএম মাকসুদ কামাল লিখেছেন, ‘ছাত্ররাজনীতি-বিষয়ক কোনো কথা আমি কোথাও বলিনি। ছাত্ররাজনীতি-বিষয়ক কোনো প্রশ্নও আমাকে করা হয়নি এবং আমি মন্তব্যও করিনি।’ একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের প্রতিবেদকের প্রসঙ্গ টেনে তিনি আরও লেখেন, ‘প্রতিবেদকের মুখ দিয়ে প্রকাশিত বক্তব্য সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং অসত্য। সবাইকে অপপ্রচার ও গুজব থেকে সাবধান থাকার অনুরোধ রইল।’

এর আগে দুপুরে কোটা সংস্কার আন্দোলনে ভাঙচুরে ক্ষতিগ্রস্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের রোকেয়া হল এবং স্যার এএফ রহমান হল পরিদর্শন করেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. এএসএম মাকসুদ কামাল। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. সীতেশ চন্দ্র বাছার, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমেদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. নিজামুল হক ভূঁইয়া, সিন্ডিকেট সদস্য অধ্যাপক আবু হোসেন মুহম্মদ আহসান এবং সংশ্লিষ্ট হলের প্রাধ্যক্ষরা উপস্থিত ছিলেন।

আরিফ জাওয়াদ/এমএ/

শাবির প্রধান ফটককে ‘শহিদ রুদ্র তোরণ’ ঘোষণা

প্রকাশ: ২৬ জুলাই ২০২৪, ০৭:৫৬ পিএম
আপডেট: ২৬ জুলাই ২০২৪, ০৭:৫৬ পিএম
শাবির প্রধান ফটককে ‘শহিদ রুদ্র তোরণ’ ঘোষণা
ছবি: খবরের কাগজ

সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) প্রধান ফটককে ‘শহিদ রুদ্র তোরণ’ ঘোষণা করেছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। শুক্রবার (২৬ জুলাই) বেলা ২টা ৪৫ মিনিটে শিক্ষার্থীদের পক্ষে কোটা আন্দোলনের সমন্বয়ক আসাদুল্লাহ আল গালিব এ ঘোষণা দেন। তারপর গণসংযোগের জন্য ৯ দফা দাবিতে মিছিল নিয়ে শিক্ষার্থীরা সিলেটের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে পড়েন। এর আগে জুমার নামাজের পর কোটা সংস্কার আন্দোলনে শহিদদের জন্য দোয়া করেন শিক্ষার্থীরা। 

নিহত রুদ্র সেন শাবিপ্রবির কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড পলিমার সায়েন্স (সিইপি) বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি গত ১৮ জুলাই রাতে পুলিশের হাত থেকে বাঁচতে ভেলা দিয়ে খাল পার হওয়ার সময় ডুবে মারা যান।

প্রধান ফটককের নামকরণকালে সমন্বয়ক আসাদুল্লাহ আল গালিব বলেন, ‘কাগজের এই লেখা যদি ছিঁড়ে ফেলা হয়, আমরা আবারও রক্ত দিয়ে লিখে রেখে আসব একই নাম। রুদ্র মরে গিয়েও আমাদের মাঝে বেঁচে থাকবে চিরকাল। সারা দেশের শহিদদের রক্ত আমরা বৃথা যেতে দেব না।’

তিনি আরও বলেন, ‘যদি দ্রুত আমাদের ৯ দফা মেনে নেওয়া না হয়, যদি অনতিবিলম্বে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও আওয়ামী সন্ত্রাসীদের নিরস্ত্র করে রাজপথ থেকে অপসারণ, ইন্টারনেট কানেকশন স্বাভাবিক করা, ক্যাম্পাগুলোতে ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ করে সন্ত্রাসমুক্ত না করা হয়, যদি হল-ক্যাম্পাস, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে না দেওয়া হয়, যদি এখনো টিয়ার শেল-গ্রেনেড-গুলি অব্যাহত থাকে তাহলে সরকারকেই সম্পূর্ণ দায় নিতে হবে। শহিদদের রক্তের ওপর কোনো সংলাপ হবে না। পুলিশ, ছাত্রলীগ-যুবলীগ সন্ত্রাসী দ্বারা নির্মমভাবে সব হত্যা (শহিদ), হামলা-নির্যাতন, মামলা, গ্রেপ্তারের চূড়ান্ত ফয়সালা না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালমান থাকবে।’

এ সময় তিনি নিরাপত্তা বাহিনী এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে ছাত্রদের পাশে থাকার আহ্বান জানান। পাশাপাশি আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের গ্রেপ্তার বা গুম হওয়ার শঙ্কা প্রকাশ করে দেশে চলমান গণহত্যা-নির্যাতনের ভয়াবহতা সর্বত্র তুলে ধরার আহ্বান জানান।

কোটা সংস্কার আন্দোলনে নিহত সাঈদের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দিল বেরোবি

প্রকাশ: ২৬ জুলাই ২০২৪, ০৬:৪৮ পিএম
আপডেট: ২৬ জুলাই ২০২৪, ০৬:৪৮ পিএম
কোটা সংস্কার আন্দোলনে নিহত সাঈদের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দিল বেরোবি
নিহত শিক্ষার্থী আবু সাঈদ। ছবি: সংগৃহীত

রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) ইংরেজি বিভাগের ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী নিহত আবু সাঈদের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

শুক্রবার (২৬ জুলাই) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে নিহত আবু সাঈদের মা-বাবার হাতে সাড়ে ৭ লাখ টাকার একটি চেক তুলে দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধিদল।

এ সময় নিহত আবু সাঈদের বৃদ্ধ বাবা মকবুল হোসেন বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এর আগে আরেক দিন আমাদের সঙ্গে দেখা করতে এসেছিল। সে সময় ভিসি আমার সঙ্গে মোবাইলে কথা বলেন। তিনি আমাদের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দেন। আমি স্যারকে বলেছিলাম, আমাদের পরিবারের একজনকে যেন বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরি দেওয়া হয়। ভিসি স্যার আশ্বস্ত করেছেন। সন্তানকে তো আর ফিরে পাব না। আমাদের পরিবারের একজনকে একটা চাকরি দিলে আমরা হয়তো একটু ভালোভাবে চলতে পারব।’ সাঈদের বাবা আরও জানান, প্রতিদিনই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কেউ না কেউ খোঁজ রেখেছেন। এ ছাড়া পরিচিত-অপরিচিত অনেকেই সহায়তা করছেন। 

মকবুল হোসেন বলেন, ‘আমার কলিজার টুকরা ছিল আবু সাঈদ। তার টিউশনির জমানো টাকায় চলতাম আমরা। সন্তান হারিয়েছি, এ শোকের কোনো সান্ত্বনা নেই। পিতা হয়ে সবচেয়ে ভারী কাজ হলো সন্তানের লাশ কাঁধে নেওয়া।’ আল্লাহর কাছে এখন শুধু সবার কাছে সন্তানের জন্য দোয়া চান বৃদ্ধ এ বাবা।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষে আর্থিক সহায়তা প্রদানের সময় উপস্থিত ছিলেন প্রক্টর শরিফুল ইসলাম, বাংলা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. তুহিন ওয়াদুদ, শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান মণ্ডল আসাদ, কর্মকর্তা অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ফিরোজুল ইসলাম।

প্রক্টর শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘ভিসি স্যারের নির্দেশে সাঈদের মা-বাবার সঙ্গে সব সময় যোগাযোগ রাখছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তিনি নিজেও সাঈদের পরিবারের খোঁজ রাখছেন, পরিবারের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এরই অংশ হিসেবে আজ সাড়ে ৭ লাখ টাকার আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়েছে।’ এ সহযোগিতার ধারা অব্যাহত থাকবে বলে জানান তিনি।

প্রসঙ্গত, গোটা দেশে ছড়িয়ে পড়া শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কার আন্দোলনে অংশ নেওয়ার পর গত ১৬ জুলাই পুলিশের গুলিতে নিহত হন বেরোবির ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ। এর পর থেকেই নতুন মাত্রা পায় কোটাবিরোধী আন্দোলন। সেদিন সন্ধ্যার পর পরই দুঃখ ও শোক প্রকাশ করে বিবৃতি দেয় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি। নিহত আবু সাঈদের পরিবারের পাশে বেরোবি থাকবে বলে প্রতিশ্রুতি দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হাসিবুর রশীদ। ১৭ জুলাই থেকে আবাসিক হল ও ক্যাম্পাস অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে জাবি শিক্ষকের স্বেচ্ছায় অব্যাহতি

প্রকাশ: ২৫ জুলাই ২০২৪, ১০:৪৮ পিএম
আপডেট: ২৫ জুলাই ২০২৪, ১০:৪৮ পিএম
শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে জাবি শিক্ষকের স্বেচ্ছায় অব্যাহতি
অধ্যাপক জাহিদুল করিম

সারা দেশে স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষ ও কিছু প্রতিবাদী শিক্ষককের ওপর হামলার প্রতিবাদে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতা থেকে স্বেচ্ছায় অব্যাহতি নিয়েছেন সহযোগী অধ্যাপক জাহিদুল করিম।

বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) তিনি তার ফেসবুক প্রোফাইলে অব্যাহতিপত্রটি পোস্ট করার পর ভাইরাল হয়ে যায়। 

এ ব্যাপারে ম্যাসেঞ্জারে খুদে বার্তা পাঠিয়ে তার কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি আজ সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বরাবর অব্যাহতিপত্র রেজিস্ট্রারকে মেইল করেছেন বলে নিশ্চিত করেছেন।

জাহিদুল করিম ২০১০ সালে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগে শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। বর্তমানে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে পিএইচডি করছেন। 

শিক্ষকদের ভূমিকা আজ জাতির কাছে প্রশ্নবিদ্ধ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক দলীয়করণের কারণে শিক্ষক সমাজের বিবেক লোপ পেয়েছে। শিক্ষক-শিক্ষার্থী সম্পর্ক ভূলুণ্ঠিত হয়েছে।’ 

জাবিতে ১৪ বছর ধরে শিক্ষকতা করা এই শিক্ষক বলেন, ‘বাংলাদেশের শিক্ষক সমাজের মূল্যবোধ ও নৈতিকতাবোধকে জাগ্রত করতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপকের চাকরি থেকে আমি অব্যাহতি ঘোষণা করছি।’

জবির হতাহত শিক্ষার্থীদের সহযোগিতার নির্দেশ উপাচার্যের

প্রকাশ: ২৫ জুলাই ২০২৪, ০৫:০৩ পিএম
আপডেট: ২৫ জুলাই ২০২৪, ০৫:১৭ পিএম
জবির হতাহত শিক্ষার্থীদের সহযোগিতার নির্দেশ উপাচার্যের
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. সাদেকা হালিম

কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংসতায় দেশের বিভিন্ন স্থানে আহত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীদের তালিকা করে সাহায্য করার নির্দেশ দিয়েছেন উপাচার্য ড. সাদেকা হালিম।

বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) এ তথ্য জানান উপাচার্য। 

তিনি বলেন, ‘আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো শিক্ষার্থী  আহত হয়েছে, এমন সব শিক্ষার্থীদের তালিকা করার নির্দেশ দিয়েছি প্রক্টরকে। তালিকার মাধ্যমে হতাহত শিক্ষার্থীদের সহযোগিতা করা হবে। অনেক শিক্ষার্থী প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে হাসপাতাল থেকে চলে গেছে তাদের তালিকা পেলে আমরা যেকোনো সাহায্য করতে পারব।’

উপাচার্য আরও বলেন, ‘গুলিবিদ্ধ হয়ে ঢামেকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় থাকা পাঁচ শিক্ষার্থীর মধ্যে চারজনকে রিলিজ দেওয়া হয়েছে, অনিক নামের একজন শিক্ষার্থীকে কেবিনে স্থানান্তর করা হয়েছে। তার খাদ্যনালী ফুটাে হয়ে গিয়েছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে তাদের সার্বিক খোঁজখবর রাখা হয়েছে।’

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘আমরা ইতোমধ্যে তালিকা করা শুরু করেছি। ৮-৯ জন শিক্ষার্থীর আহত হওয়ার খোঁজ পেয়েছি। যাদের টাকার প্রয়োজন ছিল, দ্রুত টাকা পাঠানোর ব্যবস্থা করেছি। আমাদের তালিকার কাজ চলমান রয়েছে। আজ থেকে বিভাগ অনুযায়ী খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। যার যে ধরণের সহয়তা দরকার হবে আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে করব।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের গুলিবিদ্ধ ৫ শিক্ষার্থী ঢামেকে ছিল। তাদের চারজন রিলিজ পেয়েছে। আরেকজনকে কেবিনে নেওয়া হয়েছে। আমরা সাবর্ক্ষণিক তাদের খোঁজ রেখেছি। আমি নিজেও নিয়মিত ঢামেকে যেয়ে তাদের দেখে এসেছি। উপাচার্য মহোদয়ও আমাদের মাধ্যমে তাদের খোঁজ নিয়েছেন নিয়মিত।’

মুজাহিদ বিল্লাহ/অমিয়/