![যেখানে বন্ধুত্বের জয়জয়কার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়](uploads/2024/05/16/1700285908.islami-university-1715829197.jpg)
সময়টা ২০১৭। ওই সময় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) ভর্তি পরীক্ষার কার্যক্রম চলমান। ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষে ভর্তির জন্য মেধাবীদের আনাগোনায় ক্যাম্পাস মুখরিত। এ সময় ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগে ভর্তি হন তিন বন্ধু। কে জানতো তাদের বন্ধুত্বের জয়জয়কার একদিন ক্যাম্পাসে প্রস্ফুটিত হবে। বলছিলাম মামুনুর রশিদ, সুমন আলী ও নাঈম হোসেনের কথা। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে এক চমকপ্রদ ঘটনার জন্ম দিয়েছেন তারা।
একসঙ্গে তারা যুক্তরাষ্ট্রে ফুল ফান্ডেড স্কলারশিপ পেয়ে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন সারা দেশে। এর মধ্যে মামুনুর রশিদ ইউনিভার্সিটি অব টেক্সাসে ফিন্যান্স, নাঈম হোসেন ইউনিভার্সিটি অব নিউ ওরল্যান্সে ফিন্যান্সিয়াল ইকোনোমিকসে এবং সুমন আলী ইউনিভার্সিটি অব টেক্সাসে ফিন্যান্স নিয়ে পিএইচডির জন্য মনোনীত হয়েছেন।
এমন সফলতার পেছনের রহস্য বলতে গিয়ে তারা বলেন, ‘আমরা তিন বন্ধু সপ্তাহে ২-৩ বার জুমে মিটিং করতাম। ২০২১ সালের জুনের দিকে আমাদের গবেষণাপত্র প্রথম প্রকাশিত হয়। গবেষণাপত্র প্রকাশিত হলে আমরা আরও বেশি উৎসাহ নিয়ে কাজ শুরু করি। তবে মাঝে মধ্যেই ভেঙে পড়তাম। কিন্তু অধ্যাপক ড. বখতিয়ার হাসান স্যারের কথায় আবার আমরা উদ্যমী হয়ে উঠতাম। অনেক আনন্দ নিয়ে কাজ করতাম। এই অর্জনের পেছনে স্যারই আমাদের স্বপ্নদ্রষ্টা ছিলেন।’
তারা আরও বলেন, ‘বখতিয়ার স্যার আমাদের হাতে-কলমে গবেষণা শিখিয়েছেন। আমরা শপথ করে বলতে পারি, স্যারের মতো এমন সুপারভাইজার পাওয়া দুষ্কর। তার অক্লান্ত পরিশ্রম, সহযোগিতা ও একান্ত চাওয়ায় আমরা দেশি ও আন্তর্জাতিক মানের গবেষকদের সঙ্গে গবেষণা করার সুযোগ পাব। স্যারের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানানোর ভাষা আমাদের নেই। সবচেয়ে মজার বিষয়, আমরা যখন বখতিয়ার স্যারের পাবলিকেশন দেখতাম, ওই সময় তিনজন আলোচনা করতাম, আমরাও একদিন স্যারের সঙ্গে পাবলিকেশন করব।’
অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে তারা বলেন, ‘আমাদের বিভাগ ও পরিবারের জন্য এই সাফল্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমরা অত্যন্ত আনন্দিত। তবে একসঙ্গে আনন্দ ভাগাভাগি করব ভাবিনি। এ ভেবে ভালো লাগছে, যে আমরা একইসঙ্গে এমন সাফল্য পেয়েছি।’
এর আগে ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষে ভর্তির মধ্য দিয়েই তাদের তিন বন্ধুর পথচলা। শুরু থেকেই পড়াশোনা, গবেষণা থেকে শুরু করে বিভিন্ন একাডেমিক কার্যক্রমে তাদের সাড়া জাগানো পদার্পণ ছিল। বখতিয়ার স্যারের সহায়তায় ‘Hasan's research lab’ নামে একটি ল্যাব প্রতিষ্ঠা করে একসঙ্গে গবেষণার কাজে এগোতে থাকেন তারা। করোনা মহামারির সময়ও থেমে থাকেনি তাদের কার্যক্রম। ওই সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশে বাসা ভাড়া নিয়ে গবেষণার কাজ চালিয়ে যান তারা। সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হলো স্নাতক সম্মান শ্রেণিতে তাদের রেজাল্ট একই এবং তারা একই দেশ যুক্তরাষ্ট্রে ফুল ফান্ডেড স্কলারশিপে মনোনীত হয়েছেন।