চলমান শীতে ঠাণ্ডাজনিত রোগে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা। বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শিশু ও নবজাতক ওয়ার্ডে ধারণ ক্ষমতার চেয়ে পাঁচগুণ বেশি রোগীর চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। বিভাগের ছয় জেলার সরকারি হাসপাতালগুলোয় দুই হাজারের বেশি ঠাণ্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত শিশু ভর্তি করানো হয়েছে। এতে হিমশিম খেতে হচ্ছে চিকিৎসকদের।
সোমবার (১৫ জানুয়ারি) বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্যদপ্তরের সূত্রে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।
সূত্র জানায়, গত এক মাসে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ বিভাগের ছয়টি জেলার জেনারেল ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোয় নিউমোনিয়া আক্রান্ত ১ হাজার ২৫৩ জন, ডায়রিয়া আক্রান্ত ৫ হাজার ৯৬ জন এবং শ্বাসকষ্ট নিয়ে ৭৭৬ শিশুকে ভর্তি করানো হয়েছে। আর গত ২৪ ঘণ্টায় ভর্তি করানো হয়েছে ৩৪২ জনকে। এর মধ্যে নিউমোনিয়া আক্রান্ত ৬৫ জন, ডায়রিয়া আক্রান্ত ১৬১ জন এবং অন্যান্য রোগে আক্রান্ত ১১৬ জন।
বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক ডা. শ্যামল কৃষ্ণ মণ্ডল বলেন, ‘গত এক সপ্তাহে বিভাগের সরকারি হাসপাতালগুলোয় ঠাণ্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত যেসব শিশু ভর্তি করানো হচ্ছে, তার মধ্যে ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়া আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। প্রত্যেকটি হাসপাতালের চিকিৎসকে শিশুদের যথাযথ চিকিৎসার নির্দেশ দেওয়া আছে। এই শীতে শিশুদের ঠাণ্ডার হাত থেকে রক্ষায় বাবা-মায়ের বিশেষ নজর দিতে হবে।’
এদিকে গত কয়েকদিন ধরে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নবজাতক ও শিশু ওয়ার্ডে প্রায় ৪০০ শিশুকে ভর্তি রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এর মধ্যে স্পেশাল কেয়ার নিউনেটাল ইউনিট (নিউনেটাল) ও স্পেশাল কেয়ার অব নিউবর্ন (স্ক্যানু) ওয়ার্ডের ৪৮টি শয্যার বিপরীতে ১৩১ জন এবং শিশু ওয়ার্ডের ৬৩ শয্যার বিপরীতে তিন শর বেশি শিশুকে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। ওয়ার্ডে বেডের চেয়ে শিশুর সংখ্যা বেশি থাকায় কনকনে শীতে হাসপাতালের মেঝে ও বারান্দায় রাখা হয়েছে তাদের।
শেবাচিম হাসপাতালের পরিচালক ডা. সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘এক সপ্তাহ ধরে হাসপাতালে ঠাণ্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত শিশুদের চাপ অনেক বেশি। বর্তমানে বেডের চেয়ে ঠাণ্ডাজনিত রোগীর সংখ্যা পাঁচগুণ বেশি। এক বেডে দুজন রেখেও সামলানো যাচ্ছে না। ফলে হাসপাতালের মেঝেতে রেখে চিকিৎসা দিতে হচ্ছে। পাশাপাশি ডাক্তার ও সেবিকাদেরও হিমশিম খেতে হচ্ছে।’