পাবনায় এক হাজার টাকার জন্য বন্ধুর হাতে বন্ধু খুনের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় গত শনিবার আব্দুস সামাদ ওরফে সম্রাট (২৮) নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
রবিবার (১৭ মার্চ) সকালে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছেন জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাসুদ আলম।
তিনি জানান, বন্ধুর মোটরসাইকেল নিয়ে বেড়াতে যান সম্রাট। মোটরসাইকেলটি দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত হলে মেরামত করতে দুই হাজার টাকা খরচ হয় তার বন্ধু আজাদ হোসেনের (২২)। এরপর আজাদকে এক হাজার টাকা দেন সম্রাট। বাকি এক হাজার টাকা পাওনা নিয়ে তাদের মধ্যে মনোমালিন্য দেখা দেয়। এর সূত্র ধরে টাকা না দিয়ে বন্ধু আজাদকে হত্যা করেন সম্রাট।
নিহত আজাদ পাবনা সদর উপজেলার দাপুনিয়া ইউনিয়নের ছয়ঘরিয়া গ্রামের আব্দুল হাকিমের ছেলে। গ্রেপ্তার সম্রাট একই গ্রামের রবিউল ইসলামের ছেলে। তারা দুজন ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন এবং একসঙ্গে রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বলেন, ‘গত ১১ মার্চ সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় আজাদ তার মোটরসাইকেল নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে আর ফিরে আসেননি। খোঁজাখুঁজি করে তার সন্ধান না পেয়ে ১২ মার্চ বিকেলে পাবনা সদর থানায় তার বাবা আব্দুল হাকিম জিডি করেন।
একপর্যায়ে ১৩ মার্চ দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে দাপুনিয়া ইউনিয়নের ছয়ঘরিয়া গ্রামের মোশাররফ চেয়ারম্যানের খামারের পাশে লিচুবাগানে আজাদের লাশ পাওয়া যায়। এ ঘটনায় নিহতের বাবা বাদী হয়ে মামলা করেন।
মাসুদ আলম বলেন, ‘এরপর ঘটনার তদন্তে মাঠে নামে সদর থানা ও ডিবি পুলিশের যৌথ একটি দল। তারা তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় অভিযান চালিয়ে ঘটনার সঙ্গে অভিযুক্ত আব্দুস সামাদ ওরফে সম্রাটকে তার নিজ এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে। পরে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার বিষয়টি স্বীকার করেন সম্রাট।’
সম্রাটের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, কৌশলে গত ১১ মার্চ রাত সাড়ে ৮টার দিকে আজাদকে ডেকে মোশাররফ চেয়ারম্যানের খামারের পাশে লিচুবাগানে নিয়ে যান সম্রাট। সেখানে কথাবার্তার একপর্যায়ে সম্রাট তার কাছে থাকা ধারাল চাকু দিয়ে আজাদের গলায় ও চোখের নিচে আঘাত করে। পরে তার মৃত্যু নিশ্চিত করে লাশ নিয়ে ঘটনাস্থলে থাকা শিমগাছের শুকনা লতাপাতার নিচে ঢেকে রাখে।
হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত চাকুটি ঘটনাস্থলের পাশে ধান খেত থেকে জব্দ করা হয়। নিহত আজাদের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন এবং গায়ে থাকা জ্যাকেট নিয়ে ঘটনাস্থল থেকে চলে যায় সম্রাট। যাওয়ার সময় আজাদের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন পথে ছয়ঘড়িয়া গ্রামের একটি পুকুরে ফেলে দেওয়া হয়। এ ঘটনায় সম্রাটকে সদর থানার মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।