দিনাজপুরে ভোট শেষে ২ প্রার্থীর সমর্থকদের উত্তেজনা, গুলিতে নিহত ১ । খবরের কাগজ
ঢাকা ৩১ বৈশাখ ১৪৩১, মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪

দিনাজপুরে ভোট শেষে ২ প্রার্থীর সমর্থকদের উত্তেজনা, গুলিতে নিহত ১

প্রকাশ: ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১২:০৬ এএম
দিনাজপুরে ভোট শেষে ২ প্রার্থীর সমর্থকদের উত্তেজনা, গুলিতে নিহত ১

দিনাজপুরের বিরলে ইউপি নির্বাচনে ভোট গণনা শেষে ২ সদস্য প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনা ও নির্বাচনি দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা এবং পুলিশের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। এসময় গুলিবিদ্ধ হয়ে মোহাম্মদ আলী নামে একজন নিহত হয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ কয়েক রাউন্ড গুলি ছোড়ে।

রবিবার (২৮ এপ্রিল) রাত ৯টার দিকে গুলিবিদ্ধ ব্যক্তিকে দিনাজপুর এম আবদুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। এ সময় আরও অন্তত ৩ থেকে ৪ জন আহত হয়েছেন।

পুলিশ জানায়, বিরল উপজেলার আজিমপুর ইউনিয়ন পরিষদে ভোট ছিল রবিবার। সিঙ্গুল হামিদ-হামিদা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট গণনা শেষে ২ ইউপি সদস্য-সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। দুই প্রার্থীর সমর্থকরা ভোটকেন্দ্রে ঢুকে ব্যালটবাক্স ছিনতাই ও পুলিশ সদস্যদের ওপর হামলা করে। পুলিশ আত্মরক্ষার্থে প্রথমে ফাঁকা গুলি করে। এরপর উত্তেজিত জনতা পুলিশ সদস্যদের হামলা বাড়িয়ে দিলে ৬০ থেকে ৭০ রাউন্ড শটগান থেকে গুলি করা হয়।

পুলিশ বলছে, পরে তারা জানতে পারে মোহাম্মদ আলী নামে এক ব্যক্তিকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। এ সময় পুলিশের কয়েক সদস্য আহত হয়েছেন বলে পুলিশ সুপার দাবি করেন।

খবর পেয়ে দিনাজপুর জেলা প্রশাসক শাকিল আহমেদ দিনাজপুর এম আবদুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যান। অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট জানে আলমকে প্রধান করে ৩ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন। তিন কর্ম দিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে ঘটনাস্থল থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়ন করা হয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন।

আলমগীর/এমএ/

ট্রাকচাপায় প্রাণ গেল রাখালসহ ৬ গরুর

প্রকাশ: ১৪ মে ২০২৪, ১১:২৩ এএম
ট্রাকচাপায় প্রাণ গেল রাখালসহ ৬ গরুর
ছবি: খবরের কাগজ

চাঁপাইনবাবগঞ্জের নয়ালাভাঙ্গার নিচুধুমিতে ট্রাকের নিচে চাপা পড়ে এরফান (৫৫) নামে এক রাখাল ও তার ছয়টি গরু মারা গেছে। এ ঘটনায় ট্রাকের চালককে আটক করা হয়েছে।

সোমবার (১৩ মে) রাত দেড়টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত এরফান জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার আটরসিয়া লক্ষ্মীপুর গ্রামের মৃত বজলুর রশিদের ছেলে।

শিবগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাজ্জাদ হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে খবরের কাগজকে জানান, রাত দেড়টার দিকে গরুর পাল নিয়ে রাখাল নিচুধুমি এলাকা দিয়ে যাচ্ছিল। এ সময় পেছন থেকে পাথরবোঝাই একটি ট্রাক গরুর পালে উঠে যায়। এতে রাখাল এরফান ও ছয়টি গরু মারা যায়।

ওসি আরও জানান, ঘাতক ট্রাকসহ চালককে আটক করা হয়েছে। নিহতের মরদেহ চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা হাসপাতাল মর্গে রয়েছে। আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

জহুরুল ইসলাম/ইসরাত চৈতী/অমিয়/

পরকীয়ার অভিযোগে ইমামকে কুপিয়ে জখম

প্রকাশ: ১৪ মে ২০২৪, ১১:১৬ এএম
পরকীয়ার অভিযোগে ইমামকে কুপিয়ে জখম

যশোরের মনিরামপুর উপজেলায় পরকীয়ার অভিযোগে মসজিদের ইমামকে কুপিয়ে জখম করা হয়েছে। 

রবিবার (১২ মে) রাত সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার মশ্মিমনগর ইউনিয়নের জামতলায় এ ঘটনা ঘটে। 

আহত আব্দুল্লাহ আল মামুন ঝিকরগাছা উপজেলার কৃতিপুর গ্রামের স্থানীয় জামে মসজিদের ইমাম।   

স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ঝিকরগাছা উপজেলার কৃতিপুর গ্রামের হঠাৎপাড়ার রবিউল ইসলামের স্ত্রীর সঙ্গে ইমাম আব্দুল্লাহ আল মামুনের পরকীয়া সম্পর্ক গড়ে ওঠে। বিষয়টি জানতে পেরে রবিউল রবিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে ইমাম আব্দুল্লাহ আল-মামুনকে শ্বশুরবাড়ি বেড়াতে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে ঝিকরগাছা থেকে নিয়ে আসেন। পথে জামতলায় রাস্তায় ইমামকে রেখে কাজের অজুহাত দেখিয়ে ৫ মিনিটের জন্য দূরে চলে যান রবিউল। একই স্থানে রবিউলের দুই শ্যালক ওত পেতে থাকে। রবিউল চলে যাওয়ার পর ইমাম আব্দুল্লাহ আল-মামুনের ওপর ছুরি দিয়ে আঘাত করে হত্যার চেষ্টা করে রবিউলের দুই শ্যালক।  

এ সময় ইমামের চিৎকারে স্থানীয়রা ছুটে এলে গুরুতর আহত অবস্থায় ইমামকে ফেলে রেখে পালিয়ে যায় তারা। 

হামলার পরপর রবিউল ঘটনাস্থলে এলে পুলিশ তাকে আটক করে মনিরামপুর থানায় নিয়ে যায়। আর আহত ইমামকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়।

মনিরামপুর থানার রাজাগঞ্জ পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ উপ-পরিদর্শক রকিবুজ্জামান খবরের কাগজকে  বলেন, ‘পরকীয়ার জেরে ইমামকে কুপিয়ে আহত করার ঘটনায় রবিউল নামে এক যুবককে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত অন্যদের আটকের অভিযান চলছে।’ 

এইচআর তুহিন/ইসরাত চৈতী/অমিয় 

‘নির্বাচনে কোনো অনিয়ম বরদাস্ত করা হবে না’

প্রকাশ: ১৪ মে ২০২৪, ১১:১২ এএম
‘নির্বাচনে কোনো অনিয়ম বরদাস্ত করা হবে না’
ছবি: খবরের কাগজ

আগামী ২১ ও ২৯ মে দ্বিতীয় ও তৃতীয় ধাপে চট্টগ্রামের সাতটি উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এই নির্বাচনে কোনো অনিয়ম বরদাস্ত করা হবে না বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের উপ-পরিচালক (স্থানীয় সরকার) লুৎফুন নাহার।

সোমবার (১৩ মে) বিকেলে ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন উপলক্ষে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময়ের সময় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

লুৎফুন নাহার বলেন, ‘নির্বাচনে প্রত্যেক প্রার্থী ও তাদের সমর্থকদের নির্বাচনি আচরণবিধি মেনে চলতে হবে, অন্যথায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। জাল ভোট, কেন্দ্র দখল বা অন্য কোনো অজুহাতে নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ করতে কোনো ধরনের গুজব ছড়ালে ছাড় নেই। নির্বাচন অবাধ, গ্রহণযোগ্য ও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করা হবে। সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, থানার অফিসার ইনচার্জসহ নির্বাচনসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা নিজ নিজ অবস্থান থেকে সমন্বিতভাবে দায়িত্ব পালন করবে।’  

সভায় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) রাকিব হাসান বলেন, ‘আচরণবিধি মেনেই নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণা চালাতে হবে। পিভিসি ব্যানার ও পোস্টার করা যাবে না। কেউ নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ করতে চাইলে আমরা চুল পরিমাণও পিছপা হব না। ভোট সুন্দর ও সুষ্ঠু করার জন্য যা যা দরকার সবই করা হবে।’ 

জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. কবির আহমদ বলেন, ‘প্রত্যেক ভোটকেন্দ্রে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। নির্বাচনপূর্ববর্তী ও পরবর্তী যেকোনো ধরনের সহিংসতা রোধে জেলা পুলিশ প্রস্তুত রয়েছে। নির্বাচনে কিশোর গ্যাংয়ের তৎপরতা দেখলে অঙ্কুরে বিনষ্ট করে দেব।’ 

চট্টগ্রাম আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মো. ইউনুছ আলী বলেন, ‘নির্বাচনে কেউ জয়ী হবে, কেউ পরাজিত হবে, এটা বাস্তবতা, মেনে নিতে হবে। সবার সম্মিলিত উদ্যোগে আমরা একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন উপহার দিতে চাই। নির্বাচন কমিশন থেকে শুরু করে সবাই আপনাদের পাশে আছে। নির্বাচনি এলাকায় অনুমতি ব্যতীত কোনো যানবাহন চলবে না। ভোটারদের কেন্দ্রে আনা-নেওয়ার জন্য যানবাহন ভাড়া করাও অবৈধ। আগামী ২১ মে নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণা ১৭ মে রাত ১২টায় বন্ধ হয়ে যাবে। ভোটগ্রহণের ৩২ ঘণ্টা আগ পর্যন্ত প্রচার-প্রচারণা করা যাবে।’ 

অতিরিক্ত জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. শহীদুল ইসলাম প্রামাণিক বলেন, ‘আমাদের দৃষ্টিতে ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্র বলতে কিছু নেই। প্রার্থীরা যদি মনে করেন আছে, তা হলে তালিকা দিলে যাচাই-বাছাই করে দেখব, আশঙ্কার জায়গা থাকবে না। নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা আইনের সপক্ষে থেকে যেকোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। নির্বাচনের দিন সকাল ৮টায় ভোটগ্রহণ শুরু হয়ে বিকাল ৪টায় শেষ হবে।’ 

মতবিনিময় সভায় আনসার ভিডিপির জেলা কমান্ড্যান্ট সাইফুল্লাহ হাবীব, র‌্যাবের এএসপি মোজাফফর হোসেন, এনএসআইর সহকারী পরিচালক জহিরুল হক, বিজিবির সহকারী পরিচালক উপেন্দ্রনাথ হালদার এবং চট্টগ্রামের হাটহাজারী, ফটিকছড়ি, রাঙ্গুনিয়া, বোয়ালখালী, পটিয়া, আনোয়ারা ও চন্দনাইশ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।

আগামী ২১ মে দ্বিতীয় ধাপে চট্টগ্রামের হাটহাজারী, ফটিকছড়ি ও রাঙ্গুনিয়া এবং ২৯ মে তৃতীয় ধাপে বোয়ালখালী, পটিয়া, আনোয়ারা ও চন্দনাইশ উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

তারেক মাহমুদ/ইসরাত চৈতী/অমিয়/  

শিক্ষক ১৩, শিক্ষার্থী ১৪, সবাই ফেল

প্রকাশ: ১৪ মে ২০২৪, ১০:২৯ এএম
শিক্ষক ১৩, শিক্ষার্থী ১৪, সবাই ফেল

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় একটি বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষায় কেউ পাস করেনি। এতে প্রধান শিক্ষককে শোকজ করা হয়েছে। এদিকে এ ফল নিয়ে অভিভাবকদের মধ্যে চরম হতাশা ও ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। 

সোমবার (১৩ মে) বিষয়টি নিশ্চিত করেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোছা. রোকসানা বেগম। তিনি জানান, গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার তারাপুর ইউনিয়নের ঘগোয়া বালিকা উচ্চবিদ্যালয় থেকে ১৪ শিক্ষার্থী এ বছর এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়। কিন্তু পরীক্ষায় অংশ নেওয়া কোনো শিক্ষার্থীই পাস করেনি। 

তিনি আরও জানান, ৯ জন শিক্ষার্থী গণিতে ও পাঁচজন শিক্ষার্থী অন্য বিষয়ে ফেল করেছে। ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষক ১৩ জন। কেন এমন ফল হলো, সেই বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবর ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে কারণ জানাতে বলা হয়েছে। ফেলের কারণ জানার পর শিক্ষকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পরিচয় প্রকাশে অনিচ্ছুক এক অভিভাবক বলেন, ‘শিক্ষকরা নিয়মিত স্কুলে এলে, ১৪ শিক্ষার্থীর এমন পরিস্থিতি শিকার হতো না। শিক্ষকরা সঠিকভাবে ক্লাস নিলে সবাই পাস করত।’ 

এ বিষয়ে ঘগোয়া বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবদুল হাকিম মিয়া বলেন, ‘১৪ শিক্ষার্থী এবার এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল। একজনও পাস করেনি। নিয়মিত ৯ জনের আটজনই গণিতে ফেল করেছে এবং একজন ইসলাম ধর্মে। এ ছাড়া অনিয়মিত পাঁচজন অন্যান্য বিষয়ে ফেল করেছে। গণিতের শিক্ষক আমার এ সর্বনাশ করেছে। তিনি নিয়মিত স্কুলে আসতেন না। এলেও ক্লাস ফাঁকি দিয়েছেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘প্রত্যেক শিক্ষার্থী পাস করার যোগ্যতা রাখে। আমরা শিক্ষাবোর্ডে এ বিষয়ে চ্যালেঞ্জ করব।’

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) সুশান্ত কুমার মাহাতো বলেন, ‘বিদ্যালয়টি অনেক পুরোনো। ২০০৫ সালের দিকে বিদ্যালয়টি এমপিও হয়। এমন ফলাফলের বিষয়ে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবদুল হাকিম জানিয়েছেন, বিদ্যালয়টি আসলে চরাঞ্চলে ও প্রায় শিক্ষার্থী দরিদ্র পরিবারের। ফলে তাদের অনেকের বিদ্যালয়ে উপস্থিতি কম ছিল। যদিও এ বছরের ফল এমন হওয়ার কথা নয়। বিষয়টি নিয়ে বোর্ডে যোগাযোগ করে ফল পুনঃনিরীক্ষণের জন্য আবেদন করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান শিক্ষক। কেন এমন ভরাডুবি ফলাফল হলো, সেটির কারণ জানতে বলা হয়েছে। এরপর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি আরও জানান, বিদ্যালয় থেকে গত বছর ১৬ পরীক্ষার্থীর মধ্যে ১৩ জন পাস করে। তার আগের বছর ২১ জন পরীক্ষা দিয়ে পাস করে ১৭ জন। এ বিদ্যালয়ে এরকম ভরাডুবি কখনো হয়নি। 

দৌলতপুরে ফায়ার স্টেশন চেয়ে মিলল সাইনবোর্ড

প্রকাশ: ১৪ মে ২০২৪, ১০:২২ এএম
দৌলতপুরে ফায়ার স্টেশন চেয়ে মিলল সাইনবোর্ড
কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের জন্য দান করা জমিতে একটি সাইনবোর্ড বসানো হয়েছে। সম্প্রতি তোলা খবরের কাগজ

আজের আলীর বাড়ি কুষ্টিয়ার দৌলতপুরের জয়রামপুর গ্রামে। ধারদেনা করে এ বছর দুই বিঘা জমিতে পানের আবাদ করেছিলেন। বরজ থেকে পান ভেঙে বিক্রি করা টাকায় চলত তার সংসার। কিন্তু গত শুক্রবার এক অগ্নিকাণ্ডে তার শেষ সম্বলটুকু পুড়ে ছাই হয়ে যায়। সংসার কীভাবে চালাবেন সেই চিন্তায় এখন তিনি পাগলপ্রায়, সঙ্গে মাথায় আছে ঋণের বোঝা। 

একই উপজেলার মহিষকুন্ডি গ্রামের মুলাম আলী। গত বছর তার বাড়িতে আগুন লাগে। পরে সেই আগুন পাশের বাড়িতে ছড়িয়ে পড়ে। ভেড়ামারা ও মিরপুর উপজেলার ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেওয়া হয়। তারা আসার আগেই সব পুড়ে শেষ হয়ে যায়। ওই আগুনে ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে আরও ছিলেন প্রতিবেশী আব্দুল জব্বার, মকলেচ আলী, সাইফুল ইসলাম। মুলাম আলী বলেন, ‘বাড়ি-সম্পদ সব হারিয়েছি। টাকা না থাকায় নতুন করে আর ঘর তুলতে পারিনি। এক বান্ডিল সরকারি টিন পেয়েছিলাম। ওগুলো দিয়ে কোনো রকমে মাথা গোজার ঠাঁই বানিয়েছি। স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে সেখানেই থাকি। আমাদের এখানে একটি ফায়ার সার্ভিস থাকলে এত ক্ষতি হতো না।’

শুধু আজের আলী আর মুলাম আলীই নয়, গত কয়েক বছরে উপজেলায় বাস করা শত শত মানুষ এমন সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন। এভাবে একের পর এক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় বাড়ছে উদ্বেগ। তাপপ্রবাহসহ নানা কারণে প্রায়ই ঘটছে আগুন লাগার ঘটনা। এতে পুড়ছে মানুষের সম্পদ। নিঃস্ব হচ্ছেন কৃষকসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ। গত এক সপ্তাহে উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় ১৫টি অগ্নিকাণ্ডের খবর পাওয়া গেছে। ফায়ার স্টেশন না থাকায় আগুন নেভাতে পাশের উপজেলা ভেড়ামারা, মিরপুর অথবা গাংনীর ওপর নির্ভর করতে হয়। তারা দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে আসার আগেই সব পুড়ে যায়।

স্থানীয়রা বলছেন, উপজেলায় একটি ফায়ার স্টেশন স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হলেও আমলাতান্ত্রিক ও জমি জটিলতার ঘুরপাকে কেটে গেছে প্রায় দুই যুগ। ২০২২ সালে জমির জটিলতা কেটে গেলেও ফায়ার স্টেশন কবে চালু হবে সে বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ স্পষ্ট তথ্য দিতে পারছেন না। তারা জানিয়েছে, ইতোমধ্যে ওই উপজেলার জন্য ফায়ার সার্ভিসে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। সেখানে অবকাঠামো না থাকায় তারা অন্য স্টেশনে কাজ করছেন।

জানা গেছে, ৪৬১ বর্গকিলোমিটার আয়তনের দৌলতপুর জেলার মধ্যে সবচেয়ে বড় উপজেলা। ১৯৮৩ সালে দৌলতপুর থানাকে উপজেলা হিসেবে ঘোষণা করা হয়। দৌলতপুর উপজেলায় ১৪টি ইউনিয়ন, ১৬১টি মৌজা ও ২৪২টি গ্রাম রয়েছে। বৃহৎ এই উপজেলায় ছয় লক্ষাধিক মানুষের বসবাস। ঘনবসতির এই এলাকায় রয়েছে বেশ কয়েকটি মিল কারখানা। বাড়িঘরের পাশাপাশি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও মিল-কারখানায় প্রায়ই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এতে সাধারণ মানুষসহ ব্যবসায়ীরা ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হন।
 
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০০০ সালের দিকে এ উপজেলায় ফায়ার স্টেশন নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হলেও দাপ্তরিক চিঠি চালাচালিতেই কেটে যায় অর্ধযুগেরও বেশি। পরে ২০০৮-০৯ অর্থবছরে দৌলতপুরে স্টেশন নির্মাণের নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। তখন থেকে শুরু হয় জমি অধিগ্রহণের জটিলতা। একাধিক জায়গা অধিগ্রহণের চেষ্টা করা হলেও জমির সরকারি মূল্য কম হওয়াসহ বিভিন্ন জটিলতায় ব্যক্তি মালিকানাধীন জমি অধিগ্রহণ করা সম্ভব হয়নি।

পরে ২০২২ সালে উপজেলার চুয়ামল্লিকপাড়া গ্রামের স্থানীয় সমাজসেবী হাসিনা বানু ফায়ার সার্ভিস স্টেশন করার জন্য ৮২ শতাংশ জমি দান করেন। এতে জমির জটিলতা কাটে। তবে ওই জমির ওপর একটি সাইনবোর্ড ঝুলানো ছাড়া আর কোনো অগ্রগতি দেখা যায়নি। ফলে আজও আলোর মুখ দেখেনি ফায়ার সার্ভিস স্টেশন।

দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ওবায়দুল্লাহ বলেন, ‘একজন দাতা জমি দান করায় দীর্ঘদিনের জমি জটিলতা দূর হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে যাবতীয় কাগজপত্র প্রস্তুত করে সংশ্লিষ্ট ফায়ার সার্ভিস দপ্তরে পাঠানো হয়েছে। স্টেশন নির্মাণের কাজ কবে থেকে শুরু হবে সে বিষয়ে ফায়ার সার্ভিস বলতে পারবে।’ 

কুষ্টিয়া ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক জানে আলম বলেন, ‘দৌলতপুরে ফায়ার স্টেশন স্থাপনের বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। লোকবলও নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। স্টেশন না থাকায় তারা পার্শ্ববর্তী স্টেশনে কাজ করছেন। জমি দানের হওয়ায় দাপ্তরিক কাগজপত্র তৈরিতে কিছুটা সময় লাগছে। মন্ত্রণালয়ের অনুমতি ও প্রয়োজনীয় অর্থ পেলে অবকাঠানোর নির্মাণকাজ শুরু হবে।’ তবে কবে নাগাদ নির্মাণ কার্যক্রম শুরু হবে সে বিষয়ে তিনি নির্দিষ্ট করে কিছু বলতে পারেননি।