আগামী ২১ ও ২৯ মে দ্বিতীয় ও তৃতীয় ধাপে চট্টগ্রামের সাতটি উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এই নির্বাচনে কোনো অনিয়ম বরদাস্ত করা হবে না বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের উপ-পরিচালক (স্থানীয় সরকার) লুৎফুন নাহার।
সোমবার (১৩ মে) বিকেলে ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন উপলক্ষে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময়ের সময় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
লুৎফুন নাহার বলেন, ‘নির্বাচনে প্রত্যেক প্রার্থী ও তাদের সমর্থকদের নির্বাচনি আচরণবিধি মেনে চলতে হবে, অন্যথায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। জাল ভোট, কেন্দ্র দখল বা অন্য কোনো অজুহাতে নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ করতে কোনো ধরনের গুজব ছড়ালে ছাড় নেই। নির্বাচন অবাধ, গ্রহণযোগ্য ও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করা হবে। সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, থানার অফিসার ইনচার্জসহ নির্বাচনসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা নিজ নিজ অবস্থান থেকে সমন্বিতভাবে দায়িত্ব পালন করবে।’
সভায় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) রাকিব হাসান বলেন, ‘আচরণবিধি মেনেই নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণা চালাতে হবে। পিভিসি ব্যানার ও পোস্টার করা যাবে না। কেউ নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ করতে চাইলে আমরা চুল পরিমাণও পিছপা হব না। ভোট সুন্দর ও সুষ্ঠু করার জন্য যা যা দরকার সবই করা হবে।’
জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. কবির আহমদ বলেন, ‘প্রত্যেক ভোটকেন্দ্রে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। নির্বাচনপূর্ববর্তী ও পরবর্তী যেকোনো ধরনের সহিংসতা রোধে জেলা পুলিশ প্রস্তুত রয়েছে। নির্বাচনে কিশোর গ্যাংয়ের তৎপরতা দেখলে অঙ্কুরে বিনষ্ট করে দেব।’
চট্টগ্রাম আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মো. ইউনুছ আলী বলেন, ‘নির্বাচনে কেউ জয়ী হবে, কেউ পরাজিত হবে, এটা বাস্তবতা, মেনে নিতে হবে। সবার সম্মিলিত উদ্যোগে আমরা একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন উপহার দিতে চাই। নির্বাচন কমিশন থেকে শুরু করে সবাই আপনাদের পাশে আছে। নির্বাচনি এলাকায় অনুমতি ব্যতীত কোনো যানবাহন চলবে না। ভোটারদের কেন্দ্রে আনা-নেওয়ার জন্য যানবাহন ভাড়া করাও অবৈধ। আগামী ২১ মে নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণা ১৭ মে রাত ১২টায় বন্ধ হয়ে যাবে। ভোটগ্রহণের ৩২ ঘণ্টা আগ পর্যন্ত প্রচার-প্রচারণা করা যাবে।’
অতিরিক্ত জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. শহীদুল ইসলাম প্রামাণিক বলেন, ‘আমাদের দৃষ্টিতে ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্র বলতে কিছু নেই। প্রার্থীরা যদি মনে করেন আছে, তা হলে তালিকা দিলে যাচাই-বাছাই করে দেখব, আশঙ্কার জায়গা থাকবে না। নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা আইনের সপক্ষে থেকে যেকোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। নির্বাচনের দিন সকাল ৮টায় ভোটগ্রহণ শুরু হয়ে বিকাল ৪টায় শেষ হবে।’
মতবিনিময় সভায় আনসার ভিডিপির জেলা কমান্ড্যান্ট সাইফুল্লাহ হাবীব, র্যাবের এএসপি মোজাফফর হোসেন, এনএসআইর সহকারী পরিচালক জহিরুল হক, বিজিবির সহকারী পরিচালক উপেন্দ্রনাথ হালদার এবং চট্টগ্রামের হাটহাজারী, ফটিকছড়ি, রাঙ্গুনিয়া, বোয়ালখালী, পটিয়া, আনোয়ারা ও চন্দনাইশ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
আগামী ২১ মে দ্বিতীয় ধাপে চট্টগ্রামের হাটহাজারী, ফটিকছড়ি ও রাঙ্গুনিয়া এবং ২৯ মে তৃতীয় ধাপে বোয়ালখালী, পটিয়া, আনোয়ারা ও চন্দনাইশ উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
তারেক মাহমুদ/ইসরাত চৈতী/অমিয়/