অপহরণের পর এক লাখ টাকা মুক্তিপণ না পেয়ে এক স্কুল ছাত্রকে হত্যার দায়ে সাত জনকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।
সোমবার (২৯ এপ্রিল) গাজীপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতের বিচারক মো. বাহাউদ্দিন কাজী এ রায় প্রদান করেন।
রায়ে প্রত্যেককে ১০ লাখ টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরও ছয় মাসের সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- সেলিম (২২), আব্দুল্লাহ আলম মামুন (১৯), শাহ আলম (২৯), মো. রিপন মিয়া (৩০), মো. মিলন খন্দকার (২৪), মো. তানজিল (২৪) ও শফিকুল ইসলাম (২২)। রায় ঘোষণার সময় আব্দুল্লাহ আল মামুন, সেলিম, রিপন খন্দকার ও মো. তানজিল আদালতে উপস্থিত ছিল। শাহ আলম ও মিলন খন্দকার জামিন নিয়ে পলাতক এবং শফিকুল ইসলাম মামলার শুরু থেকেই পলাতক রয়েছে।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০১৩ সালের ৮ ডিসেম্বর রাত আটটার দিকে গাজীপুর সদর উপজেলার ভবানীপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণির ছাত্র মো. সোহেল পার্শ্ববর্তী চায়ের দোকানে যাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হয়। এর পর সে আর বাড়িতে ফিরে আসেনি। পরদিন সোহেলের পিতার মোবাইলে ফোন দিয়ে অজ্ঞাত ব্যক্তি সোহেলের সন্ধান লাভের জন্য এক লাখ টাকা দাবি করে। ১০ ডিসেম্বর সকালে জয়দেবপুর থানার লুটিয়ারচালা গ্রামের মিনারদাগ নামক স্থানে গজারী বনের ভিতরে ছেলের লাশ পড়ে থাকার খবর পান। খবর পেয়ে জয়দেবপুর থানার পুলিশ লাশ উদ্ধার করে।
এ ঘটনায় নিহতের পিতা ফজলুল হক বাদি হয়ে অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করেন।
মামলায় বাদি উল্লেখ করেন অজ্ঞাতনামা খুনিরা অজ্ঞাত কারণে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে তার ছেলে মো. সোহেলকে বাড়ি থেকে পার্শ্ববর্তী দোকানে যাওয়ার পথে কৌশলে ডেকে নিয়ে মারপিট করে গলায় প্লাস্টিকের সুতলী প্যাঁচিয়ে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করে। হত্যার রহস্য গোপন করার জন্য লাশ ঘটনাস্থল লুটিয়ারচালা এলাকার মিনারদাগ গজারী বনের ভিতরে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়।
মামলাটি জেলা গোয়েন্দা পুলিশের এসআই মোহাম্মদ হাসান তদন্তের পর ২০১৫ সালের ১৮ জানুয়ারি ওই সাতজনকে আসামি করে আদালতে চার্জশিট প্রদান করেন। দীর্ঘ শুনানীর পর আদালত সাত আসামিকে ওই সাজা প্রদান করেন।
রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন এপিপি মাহবুব আলম মামুন। আসামি পক্ষে আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট লাবিব সিদ্দিকী।
পলাশ প্রধান/এমএ