![ভালো কাজে সুপারিশ করা যাবে কি?](uploads/2024/05/16/oo-1715841064.jpg)
মুসলমান ভাই ভাই। সে সব সময় তার ভাইয়ের কল্যাণ চাইবে। বিপদে এগিয়ে আসবে। শত্রুর হাত থেকে বাঁচাবে। সহযোগিতা করবে। ভালোবাসবে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘মুসলমান মুসলমানের ভাই। সে তার ওপর জুলুম করতে পারে না, তাকে অপমানিত করতে এবং শত্রুর হাতে তুলে দিতে পারে না। আর যে তার ভাইয়ের প্রয়োজন পূরণ করে, আল্লাহ তার প্রয়োজন পূরণ করে দেন। যে (দুনিয়াতে) কোনো মুসলমানের একটি বিপদ ও দুশ্চিন্তা দূর করে দেয়, আল্লাহ কিয়ামতের দিন তার বিপদ ও দুশ্চিন্তা দূর করে দেবেন।’ (বুখারি, হাদিস: ২৪৪২)
ভালো কাজে সুপারিশ করা সওয়াব
অনেক ভালো কাজ সুপারিশের কারণে আটকে থাকে। সুপারিশ করলে দ্রুতই সে কাজ সমাধান হয়ে যায়। সে জন্য মানুষের দ্বারস্থ হতে হয়। মানুষকে ভালো কাজে সহযোগিতা করা সওয়াবের কাজ। সৎ ও ভালো কাজে সুপারিশ করলে সওয়াব মেলে। পবিত্র কোরআনে এরশাদ হয়েছে, ‘কেউ কোনো ভালো কাজের সুপারিশ করলে, তাতে তার অংশ থাকবে এবং কেউ কোনো মন্দ কাজের সুপারিশ করলে তাতে তার অংশ থাকবে। আল্লাহ সর্ববিষয়ে নজর রাখেন।’ (সুরা নিসা, আয়াত : ৮৫)
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘মুমিন মুমিনের জন্য ভবনের ন্যায়, যার একাংশ অপর অংশকে সুদৃঢ় করে। এরপর তিনি (হাতের) আঙুলগুলো (অপর হাতের) আঙুলগুলোর (ফাঁকে) ঢোকালেন। তখন রাসুলুল্লাহ (সা.) বসা ছিলেন। এ সময় এক ব্যক্তি কিছু প্রশ্ন করার জন্য অথবা কোনো প্রয়োজন পূরণের জন্য এলো। তখন রাসুলুল্লাহ (সা.) আমাদের দিকে ফিরে তাকিয়ে বললেন, তোমরা তার জন্য (কিছু দেওয়ার) সুপারিশ করো। এতে তোমরা সওয়াব পাবে। আল্লাহ তাঁর নবির আবেদন অনুযায়ী যা ইচ্ছা তা করেন।’ (বুখারি, হাদিস: ৫৬৮০)
অন্যায় কাজে সুপারিশ করা গুনাহ
অন্যায় কোনো কাজে সুপারিশ করা যাবে না। অন্যায় কাজে সুপারিশ করলে গুনাহ হয়। অন্যায় কাজে সুপারিশ ব্যক্তির জন্য ধ্বংস ডেকে আনে। রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর যুগে এক নারীর ব্যাপারে চুরির প্রমাণ সত্য হয়। ওই নারীর গোত্রের লোকেরা তাঁর কাছে শাস্তি মওকুফের সুপারিশ নিয়ে এলে তিনি বলেন, ‘তোমাদের আগের লোকেরা ধ্বংস হয়েছে এ জন্য যে তাদের কোনো ধনী লোক চুরি করত, তাকে ছেড়ে দিত। আর যখন কোনো দুর্বল লোক চুরি করত, তারা তার ওপর হদ বা দণ্ড বাস্তবায়ন করত। আল্লাহর কসম, যদি ফাতেমা বিনতে মুহাম্মদও চুরি করত, তাহলে আমি তার হাতও কাটার নির্দেশ দিতাম।’ (নাসায়ি, হাদিস: ৪৯০১)
অর্থের বিনিময়ে সুপারিশ করা পাপ
অনেকে আছেন, অর্থের বিনিময়ে সুপারিশ করেন। অর্থের বিনিময়ে সুপাশির করা সুদের অন্তর্ভুক্ত। ইসলামে সুদ হারাম। সুদের রয়েছে ভয়াবহ শাস্তি। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘কোনো ব্যক্তি তার কোনো ভাইয়ের জন্য কোনো বিষয়ে সুপারিশ করার কারণে যদি সে তাকে কিছু উপহার দেয় এবং সে তা গ্রহণ করে, তাহলে সে সুদের একটি বড় দরজা দিয়ে প্রবেশ করল। ’ (আবু দাউদ, হাদিস: ৩৫৪১)
লেখক: আলেম ও সাংবাদিক