ঢাকা ২১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, বুধবার, ০৪ জুন ২০২৫
English

ফজর নামাজের ১০ পুরস্কার

প্রকাশ: ১৯ জুলাই ২০২৪, ০৯:০০ এএম
ফজর নামাজের ১০ পুরস্কার
ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত ভোরের সূর্যদয়ের সুন্দর ছবি

ইসলামের পাঁচ স্তম্ভের একটি নামাজ। কিয়ামতের দিন প্রথমে মানুষের নামাজের হিসাব হবে। নামাজ ঠিক হলে সব আমল সঠিক বিবেচিত হবে। নামাজ বিনষ্ট হলে সব আমলই বিনষ্ট বিবেচিত হবে। (তাবরানি, ১৯২৯)। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের মধ্যে ফজর নামাজের আলাদা গুরুত্ব ও পুরস্কার রয়েছে। এখানে ফজর নামাজ আদায়ের কয়েকটি পুরস্কার নিচে তুলে ধরা হলো—

১. ফজরের নামাজ আদায়ে সারা রাত দাঁড়িয়ে নামাজ পড়ার সমান সওয়াব পাওয়া যায়: রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে জামাতের সঙ্গে এশার নামাজ আদায় করল, সে যেন অর্ধেক রাত জেগে নামাজ পড়ল। আর যে ফজরের নামাজ জামাতের সঙ্গে পড়ল, সে যেন পুরো রাত জেগে নামাজ পড়ল।’ (মুসলিম, ১০৯৬)

২. কেয়ামতের দিন আল্লাহতায়ালার দায়িত্বে থাকার সৌভাগ্য অর্জন হয়: রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ফজরের নামাজ আদায় করল, সে আল্লাহর দায়িত্বে রইল...।’ (তিরমিজি, ২১৮৪)

৩. ফজরের নামাজ কিয়ামতের দিন আলো হয়ে দেখা দেবে: রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যারা আঁধারে (ফজর নামাজে) মসজিদের দিকে হেঁটে যায়, তাদের কিয়ামতের দিন পরিপূর্ণ আলোপ্রাপ্তির সুসংবাদ দাও।’ (আবু দাউদ, ৪৯৪)

৪. জাহান্নাম থেকে মুক্তি এবং জান্নাতপ্রাপ্তির সুসংবাদ: আবু জুহাইর উমারা ইবনে রুয়াইবা (রা.) বলেন, ‘আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে বলতে শুনেছি, যে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের আগে (ফজর ও আসরের নামাজ) আদায় করবে, সে কখনো জাহান্নামে প্রবেশ করবে না।’ (মুসলিম, ৬৩৪)

৫. মুনাফিকি থেকে মুক্তি পাওয়া যায়: রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘মুনাফিকদের ওপর ফজর ও এশার নামাজ অপেক্ষা অধিক ভারী নামাজ আর নেই। যদি তারা এর ফজিলত ও গুরুত্ব জানত, তাহলে হামাগুড়ি দিয়ে বা পাছায় ভর করে হলেও অবশ্যই (মসজিদে) উপস্থিত হতো।’ (বুখারি, ৬৫৭)

৬. আল্লাহর দরবারে ফজর নামাজ আদায়কারীর নাম আলোচিত হয়: রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমাদের কাছে পালাক্রমে দিনে ও রাতে ফেরেশতারা আসে। তারা আসর ও ফজরের সময় একত্রিত হয়। যারা রাতের কর্তব্যে ছিল তারা ওপরে ওঠে যায়। আল্লাহ তো সব জানেন, তবু ফেরেশতাদের প্রশ্ন করেন, আমার বান্দাদের কেমন রেখে এলে? ফেরেশতারা বলে, আমরা তাদের নামাজরত রেখে এসেছি। যখন গিয়েছিলাম তখনো তারা নামাজরত ছিল।’ (বুখারি, ৫৪০)

৭. দুনিয়া ও আখেরাতের তুলনায় শ্রেষ্ঠ জিনিস লাভ হয়: রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘ফজরের দুই রাকাত নামাজ দুনিয়া ও তার মধ্যে যা কিছু আছে, সবকিছুর চেয়ে শ্রেষ্ঠ।’ (মুসলিম, ১২৪০)

৮. হজ ও ওমরার সওয়াব পাওয়া যায়: রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে জামাতের সঙ্গে ফজরের নামাজ আদায় শেষে বসে আল্লাহর জিকিরে মশগুল থেকে সূর্য উদয় হওয়ার পর দুই রাকাত নফল নামাজ (ইশরাক) আদায় করবে, সে পরিপূর্ণ এক হজ ও ওমরার সওয়াব পাবে। ‘পরিপূর্ণ’ এ শব্দটি তিনি (নবিজি) তিনবার বলেছেন।’ (তিরমিজি, ৫৮৬)

৯. তুলনাহীন গণিমত লাভ হয়: উমর ইবনে খাত্তাব (রা.) বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) নাজদের দিকে এক অভিযানে একটি সেনাদল পাঠান। তারা প্রচুর গণিমতের সম্পদ অর্জন করে এবং তাড়াতাড়ি ফিরে আসে। তাদের সঙ্গে যায়নি এমন এক লোক বলল, অল্প সময়ের মধ্যে এত পরিমাণে উত্তম গণিমত নিয়ে এদের চেয়ে তাড়াতাড়ি আর কোনো সেনাদলকে আমরা ফিরে আসতে দেখিনি। তখন রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, আমি কি তোমাদের এমন এক দলের কথা বলব না, যারা এদের চেয়ে তাড়াতাড়ি উত্তম গণিমত নিয়ে ফিরে আসে? যারা ফজরের নামাজের জামাতে হাজির হয়, (নামাজ শেষে) সূর্যোদয় পর্যন্ত বসে আল্লাহতায়ালার জিকির করতে থাকে, তারাই অল্প সময়ের মধ্যে উত্তম গণিমতসহ প্রত্যাবর্তনকারী।’ (তিরমিজি, ৩৬৪১)

১০. কিয়ামতের দিন সরাসরি আল্লাহকে দেখার সৌভাগ্য লাভ হয়: জারির ইবনে আবদুল্লাহ আল-বাজালি (রা.) বলেন, ‘এক রাতে আমরা রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে ছিলাম। হঠাৎ তিনি পূর্ণিমার রাতের চাঁদের দিকে তাকিয়ে বললেন, শোন, নিশ্চয়ই তোমরা তোমাদের প্রতিপালককে তেমনি স্পষ্ট দেখতে পাবে, যেমন স্পষ্ট ওই চাঁদকে দেখতে পাচ্ছো। তাঁকে দেখতে তোমরা কোনো ভিড়ের সম্মুখীন হবে না। কাজেই তোমরা যদি সূর্য ওঠার আগের নামাজ ও সূর্য ডোবার আগের নামাজ আদায়ে সমর্থ হও, তাহলে তাই করো। তারপর তিনি এ আয়াত তেলাওয়াত করলেন, ‘সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের পূর্বে আপনি আপনার প্রতিপালকের প্রশংসার তাসবিহ পাঠ করুন।’ (বুখারি, ৫৭৩)

লেখক: খতিব, আউচপাড়া জামে মসজিদ, টঙ্গী

কখন আপনার ওপর কোরবানি ওয়াজিব হবে?

প্রকাশ: ০৩ জুন ২০২৫, ১০:০০ পিএম
আপডেট: ০৪ জুন ২০২৫, ১১:১২ এএম
কখন আপনার ওপর কোরবানি ওয়াজিব হবে?
আলোচনায়রত দুই মুমিনের ছবি । সংগৃহীত

শুধু জিলহজের ১০ তারিখে কোরবানির নেসাব পরিমাণ সম্পদ না থাকলে কোরবানি ওয়াজিব হবে না বলে ধারণা করা হয়। ফলে জিলহজের ১১ বা ১২ তারিখে কারো কাছে হঠাৎ কোনভাবে নেসাব পরিমাণ সম্পদ আসলে সে আর কোরবানি করে না। যেমন, যে অবিবাহিত মেয়ের ওপর কোরবানি ওয়াজিব নয় কোরবানির পরদিন তথা যিলহজ্বের ১১ তারিখে তার বিয়ে হল, সেদিন স্বামী তাকে স্বর্ণ, টাকা-পয়সা ইত্যাদি দিলে, যা সাড়ে ৫২ তোলা রুপার সমপরিমাণ বা তার চেয়েও বেশি। তখন সে এই ভেবে কোরবানি করে না যে, কোরবানির দিন তো অতিবাহিত হয়ে গেছে। এধারণা ভুল। মাসআলা হলো, জিলহজের ১০ তারিখ সুবহে সাদিক থেকে ১২ তারিখ সূযার্স্ত পর্যন্ত মোট তিন দিন কোরবানি করা যায়। এ তিন দিনের মধ্যে যেকোন সময় কেউ নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হলে তাকেই কোরবানি দিতে হবে। (বাদায়েউস সানায়ে ৪/১৯৮; আলমগীরী ৫/২৯৫)

 

লেখক: আলেম ও সাংবাদিক

কাদের ওপর কোরবানি ওয়াজিব?

প্রকাশ: ০৩ জুন ২০২৫, ০৬:০০ পিএম
আপডেট: ০৪ জুন ২০২৫, ১১:১১ এএম
কাদের ওপর কোরবানি ওয়াজিব?
দুই মুমিনের আলোচনার ছবি। সংগৃহীত

অনেকে মনে করেন, যাকাত ফরয হওয়ার জন্য যে ধরনের সম্পদ জরুরি যেমন, টাকা-পয়সা, সোনা-রুপা, ব্যবসায়িক সম্পদ, তেমনি কোরবানি ওয়াজিব হওয়ার জন্যও একই শর্ত। ফলে কোন কোন সচ্ছল পরিবারের লোকজনকেও কোরবানি দিতে দেখা যায় না। এটি ভুল ধারণা। সঠিক মাসআলা হল, যে প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির নিকট কোরবানির দিনগুলোতে সাড়ে ৫২ তোলা রুপার মূল্য পরিমাণ প্রয়োজনের অতিরিক্ত যেকোন ধরনের সম্পদ থাকবে তার ওপরই কোরবানি ওয়াজিব। (রদ্দুল মুহতার ৬/৩১২)

লেখক: আলেম ও সাংবাদিক

কোরবানির পশু জবাইকারীকে কোন পারিশ্রমিক দিতে হবে কী?

প্রকাশ: ০৩ জুন ২০২৫, ০৩:০০ পিএম
কোরবানির পশু জবাইকারীকে কোন পারিশ্রমিক দিতে হবে কী?
কোরবানির পশু জবাইকারার প্রস্তুতির ছবি। সংগৃহীত

কোরবানি আল্লাহর নৈকট্য লাভের এক মহান ইবাদত। এই ইবাদত পালনের ক্ষেত্রে শরিয়তের বিধি-বিধান সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা থাকা অত্যন্ত জরুরি। কোরবানির পশু জবাই করার পর জবাইকারীকে পারিশ্রমিক দেওয়া-নেওয়া প্রসঙ্গে অনেকেই দ্বিধায় ভোগেন। এ বিষয়ে ইসলামের বিধান অত্যন্ত পরিষ্কার।

ইসলামি শরিয়ত অনুযায়ী, কোরবানির পশু জবাইকারীকে পারিশ্রমিক দেওয়া জায়েজ। অর্থাৎ, আপনি আপনার কোরবানির পশু জবাই করার জন্য কাউকে নিযুক্ত করলে তাকে তার শ্রমের বিনিময়ে অর্থ বা অন্য কোনো হালাল বস্তু পারিশ্রমিক হিসেবে দিতে পারবেন। এতে কোনো সমস্যা নেই। এটি শ্রমের মূল্যায়নের অন্তর্ভুক্ত।

তবে, একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এখানে বিশেষভাবে লক্ষণীয়। কোরবানির পশুর কোনো অংশ, যেমন - গোশত, চামড়া, মাথা ইত্যাদি পারিশ্রমিক হিসেবে জবাইকারীকে দেওয়া যাবে না। এর কারণ হলো, কোরবানির পশু সম্পূর্ণভাবে আল্লাহর উদ্দেশ্যে উৎসর্গীকৃত। এর গোশত, চামড়া বা অন্য কোনো অংশ বিক্রি করা বা পারিশ্রমিক হিসেবে প্রদান করা জায়েজ নয়। যদি এমনটা করা হয়, তাহলে কোরবানির উদ্দেশ্য ব্যাহত হতে পারে। ফিকাহশাস্ত্রের প্রসিদ্ধ গ্রন্থ 'কিফায়াতুল মুফতী' (৮/২৬৫) এবং 'খুলাসাতুল ফাতাওয়া' (৪/৩১৯) তে এই মাসআলাটি স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে।

অতএব, কোরবানির পশু জবাইকারীকে তার কাজের বিনিময়ে পারিশ্রমিক দিতে চাইলে নগদ অর্থ প্রদান করা উচিত। কোরবানির পশুর কোনো অংশ পারিশ্রমিক হিসেবে দেওয়া থেকে বিরত থাকা অপরিহার্য। এই বিধান মেনে চললে আমাদের কোরবানি আল্লাহর দরবারে মাকবুল হবে ইনশাআল্লাহ।

 

লেখক: আলেম ও সাংবাদিক

কোরবানির নিজ অংশের গোশত বিক্রি কী জায়েজ?

প্রকাশ: ০৩ জুন ২০২৫, ১২:০০ পিএম
কোরবানির নিজ অংশের গোশত বিক্রি কী জায়েজ?
চামড়া ও গোশতের ছবি। সংগৃহীত

কোরবানি, মুসলিম উম্মাহর এক মহান ইবাদত। ত্যাগের এই দিনে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য পশু কোরবানি করা হয়। কোরবানির গোশত বিতরণ ও ব্যবহার নিয়ে সমাজে কিছু ভুল ধারণা প্রচলিত আছে, যা নিরসনে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর নির্দেশনা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

মুসনাদে আহমাদ বর্ণিত এক হাদিসে বলা হয়েছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) প্রাথমিকভাবে কোরবানির গোশত তিন দিনের বেশি খেতে নিষেধ করেছিলেন, যাতে সবাই গোশত পায়। পরে তিনি এই নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়ে অনুমতি দেন যে, যতদিন ইচ্ছা কোরবানির গোশত খাওয়া যাবে। তবে, তিনি সুস্পষ্টভাবে কোরবানির গোশত এবং হাদী (হজের সময় কোরবানিকৃত পশু) এর গোশত বিক্রি করতে নিষেধ করেছেন। তাঁর নির্দেশ ছিল, নিজেরা খাও এবং অন্যদেরকে দান করো।’(হাদিস,১৬২১০)

একইভাবে, কোরবানির পশুর চামড়া বিক্রি করাও নিষেধ। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘এগুলোর চামড়া নিজেদের কাজে ব্যবহার করো। তা বিক্রি করো না।’ এর অর্থ হলো, চামড়া ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করা যাবে, যেমন জায়নামাজ বা বালিশের কভার বানানো। যদি চামড়া বিক্রি করতেই হয়, তবে সেই অর্থ দরিদ্রদের মাঝে সদকা করতে হবে; নিজের জন্য ব্যবহার করা যাবে না।

অতএব, এই হাদিসের আলোকে মাসয়ালাটি স্পষ্ট হয় যে, কোরবানির নিজ অংশের গোশত হোক বা অন্য কোনো অংশের, তা বিক্রি করা জায়েজ নয়। এর মূল উদ্দেশ্য হলো আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন এবং অভাবীদের মাঝে গোশত বিতরণ করে তাদের হক আদায় করা। কোরবানির এই মহৎ উদ্দেশ্যকে সমুন্নত রাখতে আমাদের শরিয়তের নির্দেশনা মেনে চলা আবশ্যক। যদি কেউ আপনাকে হাদিয়া হিসেবে কোরবানির গোশত দেয়, তবে তা আপনি খেতে পারবেন।

 

লেখক: আলেম, গবেষক ও সাংবাদিক

ইবলিস কী সরাসরি আল্লাহর সঙ্গে কথা বলেছিল?

প্রকাশ: ০৩ জুন ২০২৫, ০৮:৩০ এএম
ইবলিস কী সরাসরি আল্লাহর সঙ্গে কথা বলেছিল?
কোরআনুল কারিমের ছবি। সংগৃহীত

কোরআনে বিভিন্ন প্রিয় নবির সঙ্গে আল্লাহর বিশেষ সম্পর্কের কথা এসেছে। যেমন- আল্লাহ সরাসরি কথা বলেছেন হজরত মুসা (আ.)-এর সঙ্গে ‘তুর’ পাহাড়ে এবং মুহাম্মদ (সা.)-এর সঙ্গে মিরাজে আরশের উচ্চাসনে। এটি নবিদের জন্য ছিল এক অনন্য সম্মান। সাধারণ কোনো বাদশার সঙ্গেও কথা বলা যেমন মর্যাদার, তেমনি সৃষ্টিকর্তা আল্লাহর সঙ্গে কথা বলার সৌভাগ্য নিঃসন্দেহে সর্বোচ্চ সম্মান।

কিন্তু ইবলিস যে অবাধ্য ও অভিশপ্ত তাকে নিয়েও কোরআনে আল্লাহর প্রশ্নোত্তরের বর্ণনা রয়েছে। এতে প্রশ্ন ওঠে, সে কি আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথা বলেছিল? আল্লাহ বলেন, ‘আমি যখন তোকে আদেশ করলাম, তখন তুই কেন সিজদা করলি না?’(সুরা আরাফ, ১২)

জবাবে ইবলিস বলেছিল, ‘আমি আদমের চেয়ে শ্রেষ্ঠ। আপনি আমাকে আগুন থেকে সৃষ্টি করেছেন, আর তাকে সৃষ্টি করেছেন মাটি থেকে।’

এই আয়াতগুলো সরাসরি কথোপকথনের ইঙ্গিত দেয়। তবে বহু আলেমের মতে, এই কথাবার্তা হয়েছে ফেরেশতাদের মাধ্যমে। যেমন- ইমাম সুয়ুতি তাঁর গ্রন্থ লুকতুল মারজান ফি আহকামিল জান-এ ইবনু আকিল হাম্বলির বরাতে বলেন, ইবলিস কখনো আল্লাহর সাথে সরাসরি কথা বলেনি। বরং সব কিছু হয়েছে ফেরেশতাদের মাধ্যমে।’

তবে অধিকাংশ তাফসিরবিদ ও কোরআনের সরল পাঠ অনুসারে এই সংলাপ হয়েছিল সরাসরি, তবে তা ঘটেছে ইবলিস অভিশপ্ত ও বিতাড়িত হওয়ার আগেই। তখন সে ছিল মর্যাদাসম্পন্ন, এমনকি ফেরেশতাদের সর্দারদের একজন হিসেবে বিবেচিত। কিন্তু আল্লাহর আদেশ অমান্য করে অহংকারে ডুবে যাওয়ায় সে চিরদিনের জন্য অভিশপ্ত হয়। এর পর আর কখনোই সে আল্লাহর সান্নিধ্য পায়নি।

এ থেকেই শিক্ষা, আল্লাহর নিকটবর্তী হওয়া কোনো গুণ বা পদমর্যাদার কারণে স্থায়ী হয় না, বরং তা নির্ভর করে আনুগত্য, বিনয় ও বিনম্রতার ওপর।

 

লেখক: আলেম ও সাংবাদিক