ঢাকা ১৮ বৈশাখ ১৪৩২, বৃহস্পতিবার, ০১ মে ২০২৫
English
বৃহস্পতিবার, ০১ মে ২০২৫, ১৮ বৈশাখ ১৪৩২

ডাস্টবিনে মিলল ২ নবজাতকের মরদেহ

প্রকাশ: ১৫ মে ২০২৪, ১১:১৯ এএম
ডাস্টবিনে মিলল ২ নবজাতকের মরদেহ
ছবি: খবরের কাগজ

চট্টগ্রামের নাসিরাবাদ এলাকায় ডাস্টবিন থেকে দুই নবজাতকের দেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

মঙ্গলবার (১৪ মে) সন্ধ্যা ৭টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

জানা গেছে, খুলশী থানার পূর্ব নাসিরাবাদ এলাকায় আপন নিবাসের গেটের সামনের ডাস্টবিনে মরদেহগুলো দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেয় স্থানীয়রা। পরে খুলশী থানার পুলিশ মরদেহ দুটি উদ্ধার করে।

খুলশী থানার উপ-পরিদর্শক গাফফার পারভেজ বলেন, ‘আমরা ডাস্টবিন থেকে দুই নবজাতকের মরদেহ উদ্ধার করেছি। নির্দেশনা পেলে এগুলোর ময়নাতদন্ত করা হবে।’

ইফতেখারুল/ইসরাত চৈতী/অমিয়/  

অর্থাভাবে জবিতে ভর্তি  হতে পারছেন না ময়নুল

প্রকাশ: ০১ মে ২০২৫, ০৩:৩৭ পিএম
অর্থাভাবে জবিতে ভর্তি  হতে পারছেন না ময়নুল
দাসিয়ারছড়ার দোলাটারী গ্রামের মেধাবী শিক্ষার্থী ময়নুল হক। ছবি: খবরের কাগজ

কুড়িগ্রামের সীমান্তঘেঁষা ফুলবাড়ী উপজেলার সাবেক ছিটমহল দাসিয়ারছড়ার দোলাটারী গ্রামের মেধাবী শিক্ষার্থী ময়নুল হক। ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন তিনি। কিন্তু অর্থের অভাবে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে ভর্তি হতে পারছেন না। এ নিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় আছেন সদ্য বাবা হারানো ময়নুল। ছেলের ভর্তির খরচ জোগাতে মা মায়া বেগম দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।

ময়নুল হক গংগারহাট এমএএস উচ্চবিদ্যালয় থেকে ২০২২ সালে এসএসসিতে বিজ্ঞান বিভাগে জিপিএ ৫ এবং ফুলবাড়ী ডিগ্রি কলেজ থেকে ২০২৪ সালে এইচএসসিতে বিজ্ঞান বিভাগে জিপিএ ৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হন।

ময়নুল হকের বাড়িতে গিয়ে জানা যায়, জবির ভর্তি পরীক্ষার ফলাফলের খবর পাওয়ার দিন রাতেই মারা যান তার অসুস্থ বাবা। বাবাকে হারিয়ে ভর্তি ও পড়াশোনা নিয়ে দুশ্চিন্তায় দিন পার করছেন তিনি। তাদের তিন শতক জমিতে জরাজীর্ণ টিনসেড ঘর। সেই ঘরের এক পাশে থাকেন মা মায়া বেগম ও ছোট বোন লুৎফা খাতুন। এক পাশে থাকেন ময়নুল হক ও তার ছোট ভাই মেরাজ। 

ময়নুল হকের বাবা লুৎফর রহমান ছিলেন ইটভাটার শ্রমিক। অনেক কষ্ট করে সংসার চালাতেন তিনি। শত কষ্টের মধ্যেও তিন সন্তানের পড়াশোনা চালিয়ে গেছেন। ময়নুল হক পড়ালেখার পাশাপাশি প্রাইভেট পড়াতেন। নিজের পড়াশোনার খরচ চালিয়ে বাবার সংসারে সহযোগিতা করতেন। মাঝে মধ্যে দিনমজুরের কাজও করতেন ময়নুল। বাবা মারা যাওয়ার পর অন্ধকার নেমে এসেছে তাদের পরিবারে। বড় ছেলের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির খরচ জোগাড়, ছোট ছেলে ও মেয়ের পড়াশোনা এবং সংসারের খরচ চালানো নিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন মা মায়া বেগম।

ময়নুলের মা মায়া বেগম বলেন, ‘এতদিন আমার স্বামী সীমিত আয়ে ছেলেমেয়ের ভরণপোষণ ও পড়াশোনার খরচ চালিয়েছেন। বড় ছেলের মাধ্যমিক পরীক্ষা চলাকালীন আমার স্বামীর ব্রেইন টিউমার ধরা পড়ে। আমাদের কোনো কৃষিজমি নেই। তিন শতক জমিতে বাড়ির চালা। স্বামীর চিকিৎসার খরচ ভালো করে চালাতে পারিনি। ভর্তির রেজাল্টের দিন বড় ছেলে ঢাকায় থেকে তার অসুস্থ বাবাকে ফোন করে বলে, বাবা আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তির সুযোগ পেয়েছি। তখন তার বাবা ছেলের খুশির খবরটা শুনে অনেক দোয়া করেন। সেই রাতেই আমার স্বামী পৃথিবী ছেড়ে বিদায় নেন। এখন আমরা কী করব জানি না। ছেলের কাছে শুনলাম ৫ মে ভর্তির শেষ সময়। ঘরে একটি কানা-কড়িও নেই। ছেলের জন্য কান্না থামছে না।’ 

ময়নুল হক বলেন, ‘ছোটবেলা থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হওয়ার স্বপ্ন দেখেছি। বাবা অনেক কষ্ট করে ইটভাঙায় শ্রমিকের কাজ করে আমার পড়াশোনার খরচ চালিয়েছেন। আমিও পড়াশোনার পাশাপাশি প্রাইভেট ও দিনমজুরের কাজও করেছি। এখন বাবা নেই। ভরসাও নেই।’

‘ঢাকায় যে মেসে ছিলাম সেখানে এক বেলা খেয়ে টানা এক মাস রোজা করেছি। এক বড় ভাই জিজ্ঞেস করে রোজা রাখলে তো রেজাল্ট ভালো করতে পারবে না। পরে তিনি জানতে পারেন আমি অভাবের জন্য রোজা করছি। পরে তারা আমার খাওয়ার খরচ দিয়েছেন।’

ময়নুল বলেন, ‘যেদিন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তির রেজাল্ট হয়, ওইদিন বাবা-মাকে ফোনে জানাই। বাড়ির সবাইকে বলি আমি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ৩৫৮তম হয়েছি। ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগে পড়ার সুযোগ পেয়েছি। সবাই খুশি হয়। ওইদিন রাত ৪টায় বাবার মৃত্যুর খবর পাই। বাবার ইচ্ছা ছিল আমাকে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াবেন। এখন সুযোগ পেয়েও হয়তো বাবার ইচ্ছা পূরণ করতে পারব না।’

ময়নুল জানান, আগামী ৫ মে তার ভর্তির শেষ সময়। কিন্তু এখনো ভর্তির টাকা সংগ্রহ করতে পারেননি।

তবে ফুলবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রেহেনুমা তারান্নুম জানিয়েছেন, মইনুলের বিষয়ে খোঁজ-খবর নিয়ে তাকে ভর্তির জন্য সহায়তা করা হবে। তিনি ময়নুলের পড়ালেখার খরচের জন্য সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। 

চা-শ্রমিকদের মজুরি কম, তাও বকেয়া

প্রকাশ: ০১ মে ২০২৫, ০৩:২৩ পিএম
চা-শ্রমিকদের মজুরি কম, তাও বকেয়া
চা-পাতা তুলে নিয়ে যাচ্ছেন একদল শ্রমিক। সিলেট সদর উপজেলার লাক্কাতুড়া চা-বাগান। ছবি: মামুন হোসেন

চা-শ্রমিকদের সাপ্তাহিক মজুরি দেওয়া হয় প্রতি মঙ্গলবার। তাই সকালবেলা চা-পাতা তুলে বেলা ১টায় লাক্কাতুড়া চা-বাগানের ২ নম্বর লাইনে নিয়ে গেছেন মুক্তি লোহার, সুরবর্ণা নায়েকসহ একদল চা-শ্রমিক। লাইনে গিয়ে তারা শোনেন মাত্র তিন দিনের মজুরি দেওয়া হবে।

তাই তারা সবাই ক্ষোভ প্রকাশ করে মজুরি না নিয়ে পাতা জমা দিয়ে যার যার বাড়ি চলে যান। এ সময় চা-শ্রমিক মুক্তি লোহার খবরের কাগজকে বলেন, ‘১০ সপ্তাহের মজুরি পাওনা। আমাদের বলা হইল আজকে এ সপ্তাহের মজুরি দেওয়া হবে। এখন পাতা জমা দিতে এসে শুনি মাত্র তিন দিনের বেতন দেবে বাবু। এই তিন দিনের বেতন নিয়ে আমরা কি করমু। পাতা যেন নষ্ট না হয় এ জন্য ঝড়বৃষ্টির সময়ও আমরা পাতা তুলি। এখন যদি বেতন না দেয়, আমাদের পেটে খানা না থাকে, আমরা কীভাবে কাজ করব।’ 

চলতি সপ্তাহসহ ১১ সপ্তাহের মজুরি পাওনা সিলেট সদরের লাক্কাতুড়া চা-বাগানের শ্রমিকদের। স্বল্প মজুরি নিয়ে কাজ করে চা-শিল্পকে টিকিয়ে রাখছেন এই শ্রমিকরা। কিন্তু এই স্বল্প মজুরিও তাদের নিয়মিত দেওয়া হয় না। আক্ষেপ করে চা-শ্রমিক সুরবর্ণা নায়েক খবরের কাগজকে বলেন, ‘এমনিতেই অল্প মজুরি দেওয়া হয় আমাদের। এই অল্প মজুরিও ঠিকমতো দেওয়া হয় না। আমরা কীভাবে বাঁচব। রোদে পুড়ে, মেঘে ভিজে আমরা কাজ করি পেটের জন্য, বাচ্চাকাচ্চার জন্য। এক সপ্তাহ কাজ করে তিন দিনের বেতন দেয় বাবুরা। এখন এই বেতন দিয়ে আমার বাচ্চাকাচ্চা পড়ালেখা করাব, না পেটে খানা দেব।’ আজ মে দিবস সামনে রেখে চা-শ্রমিকদের বঞ্চনার কথা এখানে তুলে ধরা হয়েছে।

মজুরিবৈষম্যের কথা উল্লেখ করে চা-শ্রমিক রাধামনি খবরের কাগজকে বলেন, ‘এখন একজন রাজমিস্ত্রির জোগালিও দিনে ৫০০ টাকা করে মজুরি পায়। কিন্তু আমাদের মজুরি বাড়ে না। যে মজুরি দেওয়ার কথা, সেটাও ঠিকমতো দেওয়া হয় না। সারা বছরই মজুরি বকেয়া রাখে বাবুরা। আমরা যখন বকেয়া বেতনের জন্য আন্দোলন করি, তখন দুয়েক সপ্তাহের বেতন দিয়ে কাজে আনে। কিন্তু সব সমই তারা নানা অজুহাতে বেতন আটকিয়ে রাখে। দোকানদার আমারে বাকিতে জিনিসপাতি দেয় না। কারণ আমরা সঠিক সময়ে টাকা দিতে পারি না। আধা পেট খেয়ে কাজ করি আমরা।’ 

সারা দেশে চা-বাগান আছে ১৬৮টি। এর মধ্যে ১৩৪টি চা-বাগান আছে সিলেট বিভাগের মধ্যে। চা-শিল্পে বর্তমানে প্রায় দেড় লাখের বেশি শ্রমিক নিয়োজিত। এই শ্রমিকদের মধ্যে বেশির ভাগই নারী। এক কাপ চায়ের দাম বছরে বছরে বাড়লেও চা-শ্রমিকদের মজুরি বাড়ে না। ব্রিটিশ শাসনামল থেকে বাংলাদেশে চা চাষ শুরু হলেও এখন পর্যন্ত চা-শ্রমিকদের ন্যায্য মজুরি প্রতিষ্ঠা করতে পারেনি কেউ। তাই যুগ যুগ ধরে এই চা-জনগোষ্ঠী লড়ছে দারিদ্র্যের সঙ্গে। বিভিন্ন সময় নামেমাত্র মজুরি বৃদ্ধি করা হলেও বাজারমূল্যের সঙ্গে সেটা কখনোই সামঞ্জস্যপূর্ণ ছিল না। বাংলাদেশ শ্রম আইন অনুযায়ী শ্রমিকদের বাসস্থান, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ অন্যান্য সুবিধা দেওয়ার কথা থাকলেও এসব থেকে সব সময়ই বঞ্চিত চা-শ্রমিকরা।

কাপ্তাই হ্রদ থেকে ৮ মাসে সাড়ে ১৮ কোটি টাকার রাজস্ব আদায়

প্রকাশ: ০১ মে ২০২৫, ০৩:১৩ পিএম
কাপ্তাই হ্রদ থেকে ৮ মাসে সাড়ে ১৮ কোটি টাকার রাজস্ব আদায়
ছবি: খবরের কাগজ

রাঙামাটির কাপ্তাই হ্রদে মাছ আহরণ থেকে চলতি মৌসুমে শুল্কবাবদ রেকর্ড পরিমাণ রাজস্ব আয় হয়েছে। এই মৌসুমে ১ সেপ্টেম্বর থেকে গত আট মাসে শুল্কবাবদ রাজস্ব আদায় হয়েছে ১৮ কোটি ৫০ লাখ টাকার বেশি, যা গত অর্থবছরের চেয়ে ৩ কোটি ৫০ লাখ টাকা বেশি। 

এ দিকে প্রজনন মৌসুম শুরু হওয়ায় গতকাল বুধবার মধ্যরাত থেকে তিন মাসের জন্য কাপ্তাই হ্রদে মাছ শিকারে নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হয়েছে। আগামী ৩১ জুলাই পর্যন্ত বলবৎ থাকবে এ নিষেধাজ্ঞা। এ সময় থেকে কাপ্তাই হ্রদের মাছ পরিবহন এবং বাজারজাতকরণও নিষিদ্ধ থাকবে। 

হ্রদে কার্প জাতীয় মাছের সুষ্ঠু প্রাকৃতিক প্রজনন ও বিকাশের স্বার্থে গত ১৬ এপ্রিল কাপ্তাই হ্রদ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিব উল্লাহ এ নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। সাধারণত প্রজনন মৌসুমে প্রতি বছর ১ মে থেকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত মাছ শিকার বন্ধ থাকে। হ্রদে মাছ শিকারে নিষেধাজ্ঞার সময় মৎস্য আহরণের ওপর নির্ভরশীল প্রায় ২৭ হাজার জেলেকে বিশেষ ভিজিএফ কার্ডের মাধ্যমে খাদ্য সহায়তা দেওয়া হয়। 

কাপ্তাই জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের হাত ধরে ১৯৬০ সালে এ হ্রদের সৃষ্টি হলেও এখন মিঠা পানির মৎস্য উৎপাদন ও সরকারের রাজস্ব আদায়ে ভূমিকা রাখছে। ৭২৫ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের কাপ্তাই হ্রদে বছরে প্রায় ২০ হাজার টন মাছ উৎপাদন হয়। যার বাজার মূল্য প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকা। 

তবে বাণিজ্যিক যাত্রায় এই মাছের কেবল অর্ধেক থেকেই রাজস্ব পায় সরকার। বাকিটা ব্যয় হয় চাহিদা পূরণে। যেখানে ২০১৯ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত গত ৫ অর্থবছরে ৩৫ হাজার ৭ টন মাছ থেকে শুল্ক আদায় হয়েছে ৬৪ কোটি ৭০ লাখ টাকা। ব্যবসায়ীরা বলছেন, হ্রদে রুই, কাতল, মৃগেল, আইড়, বোয়ালসহ ৩০-৩৫ প্রজাতির মাছ ধরা পড়লেও এর ৯০-৯৫ ভাগই চাপিলা আর কাচকি। মিঠাপানির মাছ এবং সুস্বাদু হওয়ায় ভোক্তা পর্যায়ে এর চাহিদাও বেশি।

কাপ্তাই হ্রদ মৎস্য উন্নয়ন ও বিপণন কেন্দ্রের মার্কেটিং অফিসার আইয়ুব আফনান জানান, কাপ্তাই হ্রদের মাছের শুল্কবাবদ রাজস্ব আদায়ে এটি রেকর্ড। এ মৌসুমে ১ সেপ্টেম্বর থেকে গত আট মাসে ৮ হাজার ৯০০ টন মাছ থেকে শুল্কবাবদ রাজস্ব আদায় হয়েছে ১৮ কোটি ৫০ লাখ টাকার বেশি। যেখানে গত অর্থবছরে সাড়ে ৭ হাজার টন মাছ থেকে শুল্কবাবদ রাজস্ব আদায় হয়েছে সাড়ে ১৫ কোটি টাকা। এবার ৩ কোটি ৫০ লাখ টাকা বেশি রাজস্ব আয় এসেছে।

এই মৌসুমে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল সাড়ে ১৬ কোটি টাকা। তিনি আরও জানান, প্রজনন মৌসুমের এই সময়ে কার্প জাতীয় মাছের উৎপাদন বাড়ানোর জন্য আগামী ১২ মে থেকে কাপ্তাই হ্রদে ৫৬ টন কার্প জাতীয় মাছের পোনা অবমুক্ত করা হবে। 

ঈশ্বরদীতে শ্রমিক দিবসে বিশাল সমাবেশ

প্রকাশ: ০১ মে ২০২৫, ০২:২৮ পিএম
আপডেট: ০১ মে ২০২৫, ০২:২৯ পিএম
ঈশ্বরদীতে শ্রমিক দিবসে বিশাল সমাবেশ
শ্রমিক দিবস উপলক্ষে স্থানীয় শ্রমিক দলের আয়োজনে ঈশ্বরদী শহরে বিশাল শোভাযাত্রা। ছবি: খবরের কাগজ

পাবনার ঈশ্বরদীতে নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস পালন করা হয়েছে। 

বৃহস্পতিবার (১ মে) স্থানীয় শ্রমিক সংগঠনগুলো দিবসটি পালন করে। 

কর্মসূচির মধ্যে ছিল- জাতীয় পতাকা উত্তোলন, শোভাযাত্রা ও আলোচনা সভা।

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের আয়োজনে মে দিবস উপলক্ষে বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯টায় বিশাল শোভাযাত্রা বের করা হয়। 

শোভাযাত্রাটি শহরের আলহাজ্ব মোড় থেকে শুরু হয়। সেখান থেকে ঈশ্বরদী-পাবনা সড়ক হয়ে রেলগেট ট্রাফিক মোড়ে বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে গিয়ে সমাবেশের মধ্য দিয়ে শেষ হয়। 

শোভাযাত্রায় শ্রমিক দল ঈশ্বরদী উপজেলা ও পৌর শাখা, রেলওয়ে শ্রমিক দল, রাজমিস্ত্রি ও রডমিস্ত্রি শ্রমিক ইউনিয়ন, নেসকো শ্রমিক দল, রিকশাচালক, সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালক সমিতিসহ বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠন অংশ নেয়।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা ও জেলা বিএনপির আহ্বায়ক হাবিবুর রহমান হাবিব, ঈশ্বরদী পৌর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া পিন্টু, শ্রমিকদল নেতা আহসান হাবিব, বিএনপি নেতা হুমায়ন কবির দুলাল, আজমল হোসেন ডাবলু, মাহবুবুর রহমান পলাশ, আজিজুর রহমান শাহীন, এসএম ফজলুর রহমান, আতাউর রহমান পাতা, আমিনুর রহমান স্বপন, ইসলাম হোসেন জুয়েল, সাবেক ছাত্রদল নেতা ভিপি রেজাউল করিম শাহীন, আনোয়ার হোসেন জনি, রফিকুল ইসলাম নয়নসহ বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের শত শত নেতা-কর্মী।

শোভাযাত্রা শেষে বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। জাতীয়, দলীয় ও কালো পতাকা উত্তোলনের পর সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বিএনপি নেতা হাবিবুর রহমান হাবিব, জাকারিয়া পিন্টু, আহসান হাবিব, মাহবুবুর রহমান পলাশ প্রমুখ।

এ দিকে ঈশ্বরদী উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে মে দিবস উপলক্ষে শোভাযাত্রা ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। 

সকাল ১০টায় শোভাযাত্রার পর উপজেলা সম্মেলন কক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সুবীর কুমার দাস। 

জাহাঙ্গীর/পপি/

পাবনায় গুঁড়িয়ে দেওয়া হলো সেই অবৈধ ইটভাটাগুলো

প্রকাশ: ০১ মে ২০২৫, ০২:১৮ পিএম
পাবনায় গুঁড়িয়ে দেওয়া হলো সেই অবৈধ ইটভাটাগুলো
পাবনার বেড়া উপজেলার আমিনপুর থানার সিন্দুরিয়া গ্রামে অবৈধ ইটভাটাগুলো গুঁড়িয়ে দিয়েছে প্রশাসন। ছবি: খবরের কাগজ

পাবনার বেড়া উপজেলার আমিনপুর থানার সিন্দুরিয়া গ্রামে পরিবেশের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়ানো ছয়টি ইটভাটার কার্যক্রম বন্ধসহ সেগুলো গুঁড়িয়ে দিয়েছে পরিবেশ অধিদপ্তর।

বুধবার (৩০ এপ্রিল) সকাল থেকে দিনব্যাপী চলে এ অভিযান। পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারাসহ পুলিশ, র‌্যাব, আনসারসহ যৌথ বাহিনীর সদস্যদের অংশগ্রহণে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হয়।

এলাকাবাসী জানান, সিন্দুরিয়া গ্রামে উপজেলার প্রভাবশালীরা একজোট হয়ে ছয়টি ইটভাটা গড়ে তুলেছিলেন। সেগুলো হলো মাস্টার্স ব্রিকস, রাকা ব্রিকস, সততা, সততা প্লাস, একতা ও মণ্ডল ভাটা। এসব ইটভাটার কোনো অনুমোদন নেই। শুধু পেশিশক্তি ও রাজনৈতিক আশ্রয়ের জোরে সাত-আট বছর ধরে টিকেছিল ইটভাটাগুলো। এমনকি ভাটাগুলো গড়তে এর আশপাশের সাধারণ গ্রামবাসীর প্রায় ৫০ বিঘা কৃষিজমি দখল করা হয়েছিল বলে অভিযোগ রয়েছে।

এ ছাড়া ভাটাগুলোর কারণে সিন্দুরিয়াসহ আশপাশের চার-পাঁচটি গ্রামের ফসল উৎপাদনে বিপর্যয় নেমে এসেছিল। আম, কলা, লিচুসহ বিভিন্ন ফলের গাছগুলো শুকিয়ে যাচ্ছিল এবং এগুলোর ফল গুটি অবস্থাতেই কালো হয়ে শুকিয়ে ঝরে যাচ্ছিল। এলাকাবাসী শ্বাসকষ্টসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছিলেন। বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন সময়ে দেশের প্রথম সারির জাতীয় দৈনিকগুলোতে এ বিষয়ে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এলাকাবাসী জেলা প্রশাসক ও পরিবেশ অধিদপ্তরে বারবার অভিযোগ দিলেও এত দিন এসব অবৈধ ভাটা বন্ধ হয়নি।

অবশেষে বুধবার সকাল ১০টার দিকে যৌথ বাহিনীর সদস্যরাসহ পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা সিন্দুরিয়া গ্রামে গিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ইটভাটাগুলোর কার্যক্রম বন্ধসহ সেগুলো গুঁড়িয়ে দেওয়ার আদেশ দেন। এতে উপজেলা ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট ভাটার চুলায় পানি দিয়ে প্রথমে আগুন নিভিয়ে দেয়। পরে বুলডোজার ও ভেকু দিয়ে অবৈধ ছয়টি ইটভাটার চিমনিসহ বিভিন্ন অবকাঠামো গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়।

অভিযানে পরিবেশ অধিদপ্তরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রেজওয়ান-উল ইসলাম, পাবনা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আব্দুল গফুর, পরিদর্শক আব্দুল মোমিনসহ বিভিন্ন কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।