ঢাকা ১৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, শুক্রবার, ৩১ মে ২০২৪

মাদারগঞ্জে কয়লাবাহী ট্রাক উল্টে চালক নিহত

প্রকাশ: ০৬ মে ২০২৪, ১২:২৬ পিএম
মাদারগঞ্জে কয়লাবাহী ট্রাক উল্টে চালক নিহত
দুর্ঘটনাকবলিত ট্রাক। ছবি: খবরের কাগজ

জামালপুরের মাদারগঞ্জে কয়লাবাহী ট্রাক উল্টে এর চালক নিহত হয়েছেন। দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন চালকের সহকারী এনামুল হক (১৮)।

সোমবার (৬ মে) সকালে উপজেলার কড়ইচড়া ইউনিয়নের ঘুঘুমারী গ্রামে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত চালকের নাম সাইদুর রহমান (৪০)।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার কড়ইচড়া ইউনিয়নের ঘুঘুমারী গ্রামের ভাই ভাই ব্রিকসে ইট পোড়ানোর জন্য ট্রাকটি কয়লা নিয়ে যাচ্ছিল। গত রাতে বৃষ্টিতে ওই ইটভাটার কাঁচা রাস্তার মাটি নরম হয়ে যায়। ফলে কয়লাবাহী ট্রাকটি ইটভাটার কাছাকাছি পৌঁছালে হঠাৎ উল্টে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই চালক সাইদুর রহমান নিহত হন।

আহত ট্রাকচালকের সহকারী এনামুল হককে মাদারগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

মাদারগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদুল হাসান খবরের কাগজকে বলেন, লাশ উদ্ধার করে থানায় আনা হয়েছে। নিহতের বাড়ি মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার গোপালপুর গ্রামে। আহত এনামুলের বাড়ি কুড়িগ্রামের রাজীবপুর উপজেলার মণ্ডলপাড়া গ্রামে। নিহতের স্বজনদের সংবাদ পাঠানো হয়েছে। তারা এলে লাশ হস্তান্তর করা হবে।

এ ঘটনায় অপমৃত্যু মামলা হবে বলে জানান তিনি।

আসমাউল আসিফ/অমিয়/

চট্টগ্রাম বন্দরে আরটিজি চাপায় নিহত ১

প্রকাশ: ৩১ মে ২০২৪, ১১:৩৯ এএম
চট্টগ্রাম বন্দরে আরটিজি চাপায় নিহত ১

চট্টগ্রাম বন্দরে কনটেইনার হ্যান্ডলিং ইক্যুইপমেন্ট ‘রাবার টায়ার গ্যান্ট্রিক্রেন’ (আরটিজি) চাপায় এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৩০ মে) বিকেল ৫টার দিকে বন্দরের এনসিটি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

নিহত মো. আনিস (২৩) ট্রেইলারের (পণ্য পরিবহনে ব্যবহৃত গাড়ি) হেলপার (সহযোগী) ছিলেন। তিনি চট্টগ্রামের কর্ণফুলী এলাকার বাসিন্দা। 

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মো. ওমর ফারুক খবরের কাগজকে জানান, কনটেইনার হ্যান্ডলিং ইক্যুইপমেন্ট আরটিজি চলাচলের পথে মানুষ যাওয়ার কথা নয়। হয়তো অন্যমনস্ক হয়ে আরটিজির পথে চলাচলের সময় এমন ঘটনা ঘটেছে। আহতাবস্থায় তাকে বন্দর অ্যাম্বুলেন্সযোগে শ্রমিক হাসপাতালে পাঠানো হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

ইফতেখারুল/ইসরাত চৈতী/  

বিলাইছড়িতে গুলিবিদ্ধ ইউপি চেয়ারম্যানের মৃত্যু

প্রকাশ: ৩১ মে ২০২৪, ১১:৩৩ এএম
বিলাইছড়িতে গুলিবিদ্ধ ইউপি চেয়ারম্যানের মৃত্যু
নিহত চেয়ারম্যান আতুমং মারমা

দুর্বৃত্তদের গুলিতে আহত রাঙামাটির বিলাইছড়ি উপজেলার বড়থলি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আতুমং মারমা মারা গেছেন। 

বৃহস্পতিবার (৩০ মে) রাত সাড়ে ১১টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে মারা যান তিনি।

বিলাইছড়ি পুনঃনির্বাচিত উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীরোত্তম তনচংগ্যা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।     

তিনি জানান, গত ২১ মে দ্বিতীয় ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের দিন রাতের আঁধারে দুর্বৃত্তদের হামলায় গুলিবিদ্ধ হন আতুমং মারমা। হাতে ও ঊরুতে গুলি লাগে তার। চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়েছে।   

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ঘটনার পরদিন ২২ মে ভোরে স্থানীয়রা আহত আতুমংকে বান্দরবানের রুমা সদর হাসপাতালে পাঠায়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য প্রথমে বান্দরবান জেলা হাসপাতাল ও সর্বশেষ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে ৯ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর গতকাল (৩০ মে) রাতে মারা যান তিনি। 

হামলার ঘটনার জন্য বান্দরবানকেন্দ্রিক সাম্প্রতিককালে আলোচিত সশস্ত্র সংগঠন কেএনএফকে (কুকি-চিন) সন্দেহ করছে পুলিশ। 

জিয়াউর রহমান/ইসরাত চৈতী/   

মগড়া নদী দূষণমুক্ত করার দাবি পৌরবাসীর

প্রকাশ: ৩১ মে ২০২৪, ১১:১০ এএম
মগড়া নদী দূষণমুক্ত করার দাবি পৌরবাসীর

নেত্রকোনা পৌরশহর দিয়ে বয়ে গেছে মগড়া নদী। এ নদীর সঙ্গে পৌরবাসীর নিত্যদিনের সম্পর্ক। শহরের বিভিন্ন জায়গার ময়লা-আবর্জনা ফেলা হচ্ছে এ নদীতে। ফলে ময়লার ডাস্টবিনে পরিণত হচ্ছে শহরসংলগ্ন নদীটি। দূষিত হচ্ছে নদীর পানি, দূষিত হচ্ছে শহরের পরিবেশ। তাই মগড়া নদী দূষণমুক্তকরণ পৌরবাসীর দীর্ঘদিনের দাবিতে পরিণত হয়েছে। 

মগড়া নদী একসময় খুবই খরস্রোতা ছিল। নদী দিয়ে চলত লঞ্চ, পালতোলা নৌকা। কিন্তু কালের আবর্তে এই নদীর পুরোনো ঐতিহ্য এখন আর নেই। নদীর পাড় দখল হয়ে গেছে। গড়ে উঠেছে অট্টালিকা। নেই আর আগের সেই স্বচ্ছ পানি। পৌরসভার বিভিন্ন এলাকায় বসবাসরত মানুষ নদীর তীরে ময়লা-আবর্জনা ফেলছে। মগড়া যেন ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে।

নদীর তীর ছাড়িয়ে সড়কের ওপর ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ছে ময়লা-আবর্জনা। দুর্গন্ধের হাত থেকে বাঁচার জন্য নাকে-মুখে কাপড় চেপে চলাচল করতে হয়। এতে এলাকায় অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ সৃষ্টি হচ্ছে। দুর্গন্ধের পাশাপাশি এলাকায় নানারকম রোগজীবাণু ছড়াচ্ছে। দুর্গন্ধ থেকে নিজেদের রক্ষার জন্য ময়লার স্তূপের পাশের বাসিন্দারা টিন দিয়ে বেড়া দিয়েছেন। এ ছাড়া জেলা শহরের আরামবাগ এলাকার পুরাতন জেলখানা, পুরাতন হাসপাতাল, সাতপাই কালীবাড়ির সামনে থেকে নেত্রকোনা চক্ষু হাসপাতাল, নদীর পাড়, ও মালনী অগ্রণী ব্যাংকের সামনে মগড়ার তীরে ময়লা-আবর্জনা ফেলা হচ্ছে।

জয়নগর কালীবাড়ি এলাকার জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘দুর্গন্ধ থেকে বাঁচার জন্য আমি ও আমার প্রতিবেশী টিন দিয়ে বেড়া দিয়েছি। এরপরও মানুষ ময়লা ফেলছে। ওই ময়লার স্তূপ থেকে এলাকায় দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে।’

জেলা শহরের ছোট বাজারের ব্যবসায়ী নজরুল ইসলাম বলেন, ‘পর্যাপ্ত ডাস্টবিন না থাকায় মানুষ মড়গা নদীর পাড়ে ময়লা-আবর্জনা ফেলছে। এতে এলাকার পরিবেশ দূষিত হচ্ছে।’ 

জয়নগর এলাকার সুলতান আহমেদ বলেন, ‘ময়লা-আবর্জনার গন্ধে নদীর পাড়ের পথ দিয়ে চলতে অনেক কষ্ট হচ্ছে। দীর্ঘদিন আবর্জনার স্তূপ হয়ে পড়ে থাকায় মশা-মাছির জন্ম হচ্ছে। তাছাড়া এখান থেকে জন্ডিস, কলেরাসহ নানা জটিল রোগের জীবাণু সৃষ্টি হচ্ছে।’ 

বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা বারসিকের আঞ্চলিক সমন্বয়কারী অহিদুর রহমান বলেন, ‘মানুষের সুস্থভাবে, সুন্দরভাবে বেঁচে থাকার জন্য আমাদের এগিয়ে আসতে হবে। নদীর তীরে ময়লা-আবর্জনা ফেলা বন্ধ করতে সবাই মিলে কাজ করতে হবে। তা না হলে প্রাকৃতিক পরিবেশ নষ্ট হবে।’

পৌরসভার মেয়র মো. নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘পৌরসভার পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা শহরকে পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে বিভিন্ন এলাকায় নিয়মিত কাজ করে যাচ্ছেন। এলাকাবাসীকে সচেতন হতে হবে। যত্রতত্র ময়লা না ফেলে নির্দিষ্ট জায়গায় ফেলতে হবে। সবাই সতর্ক হলে নদীর তীরবর্তী পরিবেশ দূষণমুক্ত হবে। সরকারিভাবে নদী খনন করা হলে পানি দূষণমুক্ত হবে।’

রাস্তা করছেন গ্রামবাসী

প্রকাশ: ৩১ মে ২০২৪, ১১:০৩ এএম
রাস্তা করছেন গ্রামবাসী
কুমিল্লার বরুড়া উপজেলায় স্বেচ্ছাশ্রমে ফসলি মাঠের মাঝখান দিয়ে রাস্তা তৈরি করেছেন দেওড়া গ্রামের বাসিন্দারা। ছবি: সংগৃহীত

কুমিল্লা জেলার বরুড়া উপজেলায় নিজেদের উদ্যোগে স্বেচ্ছাশ্রমে ফসলি মাঠের মাঝখান দিয়ে রাস্তা তৈরি করেছেন পৌর শহরের দেওড়া গ্রামের বাসিন্দারা। উপজেলার খোশবাস দক্ষিণ ইউনিয়নের জয়নগর গ্রাম থেকে বরুড়া পৌরসভার দেওড়া গ্রাম পর্যন্ত প্রায় দেড় কিলোমিটার সড়ক নির্মাণ করার উদ্যোগ নিয়েছেন তারা।

বার্তা সংস্থা বাসস জানায়, বরুড়া পৌর শহরের দেওড়া গ্রামের উত্তর পাশে বিশাল আয়তনের একটি ফসলি মাঠ রয়েছে। স্থানীয়দের কাছে এটি জলা হিসেবে পরিচিতি রয়েছে। এখানে প্রায় অর্ধশত জমির মালিক রয়েছেন। আর এ মাঠে সারা বছরই ধানসহ নানা ধরনের ফসল উৎপাদন করে থাকেন এখানকার কৃষকরা। এ মাঠের উত্তর অংশে পার্শ্ববর্তী উপজেলার খোশবাস দক্ষিণ ইউনিয়নের জয়নগর গ্রামের সঙ্গে উপজেলা সদরের সংযোগ অন্য সড়ক দিয়ে। ফলে উপজেলা সদরে আসা-যাওয়া করতে অনেক পথ ঘুরে আসতে হয় ওই এলাকার প্রায় ১০ গ্রামের বাসিন্দাকে। এ ছাড়া সড়ক না থাকায় ওই মাঠের জমি চাষাবাদের জন্য হালচাষের ট্রাক্টর নেওয়া, ফসল ঘরে তুলতে কৃষকরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়াসহ দীর্ঘদিন ধরে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। এ ভোগান্তি নিরসনে ওই মাঠে একটি সড়ক নির্মাণের জন্য এখানকার বাসিন্দারা প্রায় ৫ বছর আগে সেই সময়ের পৌর মেয়রকে অবহিত করেও কোনো ফল পাননি। এমন অভিযোগ ওই গ্রামের বাসিন্দাদের। অবশেষে উপায়ান্তর না দেখে গ্রামের বাসিন্দারা নিজেরাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে সড়ক নির্মাণের উদ্যোগ নেন। গত ১৩ মে সোমবার সকাল থেকে গ্রামবাসীদের মধ্যে ৬০ জন লোক জমি থেকে কোদাল দিয়ে মাটি কেটে এ সড়ক নির্মাণকাজ শুরু করেন। এ নির্মাণকাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত প্রত্যেক দিন সকাল ৮টা থেকে দুপুর প্রায় ১টা পর্যন্ত এ নির্মাণকাজ অব্যাহত থাকে।

গ্রামের বাসিন্দাদের মধ্যে মোশারফ হোসেন বাবলু, আবু জাফর মো. নুরউদ্দিন খন্দকার স্বপন, মো. সেলিম, মমতাজ, মো. জাহাঙ্গীর, আবু তাহের, মো. আমির হোসেনসহ অনেকে জানান, এ মাঠটির মাঝে কোনো সড়ক না থাকায় এখানে হালচাষের ট্রাক্টর ব্যবহার করা যেত না। উৎপাদিত ফসল ঘরে তুলতে বেকায়দায় পড়তে হতো তাদের। সব মিলে তাদের সীমাহীন ভোগান্তিসহ আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে হতো। এ ছাড়া এ সড়কটি নির্মাণের ফলে পার্শ্ববর্তী খোশবাস দক্ষিণ ইউনিয়নের চালিয়া, সুরিচো, জয়নগর, কালামুড়িসহ ১০টি গ্রামের প্রায় ১০ হাজার মানুষ উপজেলা সদরে সহজে যাতায়াতে সুবিধা ভোগ করতে পারবেন। গ্রামবাসী আরও জানান, প্রায় ১০ দিনের মধ্যে এ সড়কের নির্মাণকাজ সম্পন্ন হবে বলে তারা আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে পৌরসভা মেয়র মো. বকতার হোসেন বলেন, ‘দেওড়া গ্রামের বাসিন্দাদের উদ্যোগে স্বেচ্ছাশ্রমে সড়ক নির্মাণের বিষয়টি অবগত হওয়ার পর আমি ঘটনাস্থলে গিয়েছি। এ নির্মাণকাজে পৌরসভা থেকে আর্থিক সহায়তা দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছি।’

স্বেচ্ছাশ্রমের কাজের কৃতিত্ব চায় পাউবো

প্রকাশ: ৩১ মে ২০২৪, ১০:৫১ এএম
স্বেচ্ছাশ্রমের কাজের কৃতিত্ব চায় পাউবো
খুলনার পাইকগাছার সোলাদানা বাঁধ স্বেচ্ছাশ্রমে গ্রামবাসী মেরামত করছেন। ছবি : খবরের কাগজ

ঘূর্ণিঝড় রিমালের তাণ্ডবে খুলনার উপকূলীয় কয়রা, পাইকগাছা ও দাকোপ উপজেলার ৩৬টি পয়েন্টে বাঁধ ভেঙে যায়। এ ছাড়া ৩৫টি পয়েন্টে বাঁধ উপচে লবণপানি লোকালয়ে ঢোকে। মোট ৭১টি পয়েন্টে প্রায় সাড়ে পাঁচ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এরপরও পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) কোনো কর্মকাণ্ড না থাকায় স্থানীয়রা স্বেচ্ছাশ্রমে ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ মেরামত শুরু করেন। জেলার বিভিন্ন প্রান্তে গত চার দিন ধরে তারা বাঁধ মেরামতের কাজ করছেন। 

কিন্তু হঠাৎ পানি উন্নয়ন বোর্ড দাবি করছে, বাঁধের জরুরি মেরামত কাজ তাদের তত্ত্বাবধায়নেই করা হচ্ছে! বাঁধ মেরামতের প্রয়োজনীয় উপকরণ বাঁশ, সিনথেটিক বস্তা দিয়ে তারাই সহায়তা করছেন। এমনকি শ্রমিকদের মজুরি পর্যন্ত দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, বাঁধ মেরামতের এই টাকা কীভাবে, কোথায় ব্যয় করা হচ্ছে। এই টাকা কারা নেবেন? এর আগেও বিভিন্ন ঝড়ে বাঁধ ভেঙেছে। তখনো এলাকাবাসী স্বেচ্ছাশ্রমে বাঁধ মেরামত করেছেন। প্রতিশ্রুতি দিয়ে তখনো কাউকে মজুরি দেওয়া হয়নি। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়দের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। দুজন জনপ্রতিনিধি নিশ্চিত করেছেন, বাঁধ মেরামতে পানি উন্নয়ন বোর্ড কোনো সহায়তা করেনি। একটি টাকাও তারা খরচ করেনি। খোদ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পানি উন্নয়ন বোর্ডের এ দাবি নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন।

পাইকগাছার সোলাদানা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান এস এম এনামুল হক খবরের কাগজকে বলেন, ‘গত চার দিন ধরে দক্ষিণ কাইনমুখি, হরিকাঠি, হাজতের ভিটা, সোলাদানা বাজার, বয়ারঝাপা আবাসন ও দেলুটি ইউনিয়নের কালিনগরে প্রতিদিন প্রায় এক হাজার মানুষ স্বেচ্ছাশ্রমে বাঁধ মেরামতের কাজ করছেন। এর মধ্যে সোলাদানা মাধ্যমিক স্কুলের পাশে বাঁধ মেরামত কাজে সড়ক ও জনপথ বিভাগ কিছু বস্তা দিয়েছিল। কিন্তু কোথাও পানি উন্নয়ন বোর্ড এক মুঠো চিড়া বা কোনো অর্থ সহায়তা দেয়নি। কোনো শ্রমিককে টাকা দেয়নি।’ 

তিনি বলেন, ‘খাতা-কলমে জরুরি বাঁধ মেরামতের নামে তারা (পাউবো) সরকারি টাকা নয়ছয় করছে। তারা কোনো জায়গায় এখন পর্যন্ত এক টাকা ব্যয় করেছে বলে আমি শুনিনি।’

কয়রার মহারাজপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘বাঁধ না ভাঙা পর্যন্ত পানি উন্নয়ন বোর্ড গুরুত্ব দেয় না। বাঁধের ভেঙে যাওয়া অংশ দিয়ে জোয়ার-ভাটার পানি আসা-যাওয়া করছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড চরম উদাসীনতা দেখিয়েছে।’

তবে পাউবোর বিভাগীয় উপসহকারী প্রকৌশলী জসিম উদ্দিনের দাবি, ‘সার্বক্ষণিক বাঁধ তদারকি করা হচ্ছে। বাঁধ মেরামতের সরঞ্জামাদি সরবরাহ করা হয়েছে। শ্রমিকের মজুরিও পরিশোধ করা হবে।’

পাউবো কয়রার উপসহকারী (এসও) প্রকৌশলী সোলায়মান হোসেন বলেন, ‘কয়রার বিভিন্ন জায়গায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধীনে বাঁধ মেরামতের কাজ হয়েছে। সব কাজে জরুরি ভিত্তিতে স্থানীয়দের সাপোর্ট নেওয়া হয়। সবক্ষেত্রেই লজিস্টিক সাপোর্ট পানি উন্নয়ন বোর্ড দিয়েছে।’ 

কয়রা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বি এম তারিক-উজ-জামান বলেন, ‘বাঁধ রক্ষার দায়িত্ব পানি উন্নয়ন বোর্ডের। কোনো কোনো কর্মকর্তা বলছেন বাঁধ মেরামতে তাদের বাজেট নেই। এটা হতে পারে না। এখন পর্যন্ত স্থানীয়রা স্বেচ্ছাশ্রমে সব জায়গায় বেড়িবাঁধ মেরামতের কাজ করেছেন। পানি উন্নয়ন বোর্ড কীভাবে এখানে সহায়তার দাবি করেছে তা জানি না।’ 

এবার ভেসে গেছে দশালিয়া বাঁধ

ঘূর্ণিঝড় রিমালের তাণ্ডবে কয়রার দশহালিয়ায় ভেঙে যাওয়া বাঁধ মেরামতে স্থানীয়রা দুই দিন ধরে কাজ করছিলেন। ভেঙে যাওয়া বাঁধের দুটি জায়গাকে ঘিরে বাঁশ, মাটির বস্তা দিয়ে রিং বাঁধ দেওয়ার চেষ্টা করা হয়ে। কিন্তু পর্যাপ্ত জিও ব্যাগ ও বালিভর্তি বড় টিউব না থাকায় ওই জায়গাগুলো তুলনামূলক দুর্বল থেকে যায়। বৃহস্পতিবার দুপুরে জোয়ারে আবারও ওই বাঁধ ভেঙে লবণপানি ঢুকে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়। 

পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের দাবি, তাদের কাছে বাঁধের ভাঙন ঢেকানোর মতো বড় টিউব ছিল। কিন্তু বালু সরবরাহ করার জন্য সময়মতো ভলগেট (জাহাজ) না পাওয়ায় সেখানে বালুভর্তি টিউব ফেলা যায়নি। তাই দুর্বল বাঁধ জোয়ারের পানিতে আবারও ভেঙে গেছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড যখন সব দোষ ভলগেটের ওপর চাপিয়েছে তখন সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘আমি নিজ উদ্যোগে ১০০ জনকে স্বেচ্ছায় বাঁধ মেরামতের জন্য নিয়ে এসেছিলাম। পাউবোর পক্ষ থেকে তাদের কাউকে একটি পয়সাও দেওয়া হয়নি।’