ব্যক্তি জমিতে অবৈধ কাঁচাবাজার, রাজস্ব হারাচ্ছে কেসিসি । খবরের কাগজ
ঢাকা ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, সোমবার, ২০ মে ২০২৪

ব্যক্তি জমিতে অবৈধ কাঁচাবাজার, রাজস্ব হারাচ্ছে কেসিসি

প্রকাশ: ০৮ মে ২০২৪, ০৯:১৪ এএম
ব্যক্তি জমিতে অবৈধ কাঁচাবাজার, রাজস্ব হারাচ্ছে কেসিসি
খুলনার ডুমুরিয়ায় ব্যক্তিমালিকানাধীন জমিতে গড়ে ওঠা অবৈধ কাঁচাজারের একাংশ/ খবরের কাগজ

খুলনার ডুমুরিয়ায় শহিদ স্মৃতি মহিলা কলেজের পাশে ব্যক্তিমালিকানাধীন জমিতে অবৈধভাবে দুটি কাঁচাবাজার গড়ে উঠেছে। নতুন বাজার স্থাপনের ক্ষেত্রে ‘হাট ও বাজার আইন’ না মেনেই এখানে ‘আল্লার দান কাঁচামাল পাইকারি বাজার’ ও ‘বিশ্বাস পাইকারি সবজি বাজার’ গড়ে তুলে ১১০টি আড়তঘর বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। প্রতিটি ঘর বাবদ এক থেকে দুই লাখ টাকা অগ্রিম ও প্রতিদিন ৯০ থেকে ১০০ টাকা হারে ঘর ভাড়া বাবদ অর্থ আদায় করা হচ্ছে। ব্যক্তি ব্যবস্থাপনায় বাজার দুটি পরিচালিত হওয়ায় রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার।

এদিকে খুলনা-সাতক্ষীরার ব্যস্ততম সড়কের পাশে সবজিবাহী ট্রাক, পিকআপ, নসিমন, করিমন ও ইজিবাইকের চাপে দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়ছে। সেই সঙ্গে গাড়ির হর্ন, কোলাহল ও রাস্তাঘাটে উচ্ছৃঙ্খল তরুণদের আনাগোনা বেড়েছে। জনভোগান্তি কমাতে অবৈধ কাঁচাবাজার দুটি উচ্ছেদের দাবিতে ডুমুরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে গণস্বাক্ষরসহ আবেদন করেছেন এলাকাবাসী।

অন্যদিকে ডুমুরিয়ার বিভিন্ন গ্রাম থেকে ট্রাক বা ইঞ্জিনভ্যানে সবজি নিয়ে খুলনার সোনাডাঙ্গা কেসিসি কাঁচাবাজারে আসার পথে ব্যবসায়ীদের বাধা দেওয়া হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। ‘আল্লার দান কাঁচামাল পাইকারি বাজার’ ও ‘বিশ্বাস পাইকারি সবজি বাজার’ আড়ত মালিক ও কর্মচারীরা পথে পথে ব্যবসায়ীদের আটকে দিয়ে ওই সবজি নিজেদের বাজারে নিয়ে যেতে বাধ্য করছেন।

তবে অভিযোগের বিষয়ে ‘বিশ্বাস পাইকারি সবজি বাজার’ মালিক আনিসুর রহমান বলেন, ‘বর্তমান সবজির বাজার থেকে কিছুটা দূরে একটি বৈধ বাজার ছিল। তবে সড়ক থেকে দূর হওয়ায় সেখানে সবজি ব্যবসায়ীরা যেতে চাইতেন না। তাই ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা মিলে আমরা এই পাইকারি বাজারটি গড়ে তুলেছি।’

ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীরা জানান, আদালতের নির্দেশনার পর বিগত আট মাসেও অবৈধ বাজার দুটি উচ্ছেদ করা হয়নি। ২০২৩ সালের ৩ সেপ্টেম্বর উচ্চ আদালতের বিচারপতি জাফর আহমেদ ও বিচারপতি বশির উল্লাহের যৌথ বেঞ্চ তিন মাসের মধ্যে বাজার দুটির বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন। কিন্তু এ ব্যাপারে এখনো পদক্ষেপ নেয়নি স্থানীয় প্রশাসন।

ডুমুরিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গাজী হুমায়ুন কবির লিখিত অভিযোগে জানান, ব্যক্তিমালিকানাধীন জমিতে অবৈধ বাজার গড়ে ওঠায় বৈধ বাজারগুলোতে পণ্য আমদানি-বিক্রি কমেছে। অবৈধ বাজার থেকে জমির মালিকরা ঘর ভাড়া বাবদ অর্থ আদায় করছেন। এতে সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব হারাচ্ছে।

জানা যায়, হাট ও বাজার (স্থাপন ও ব্যবস্থাপনা) আইন, ২০২৩ এর বিধি-৩ এর ১ ও ২ উপধারায় বলা হয়, ‘সরকার ও স্থানীয় জেলা প্রশাসক বিধি অনুযায়ী নতুন হাট ও বাজার স্থাপন করতে পারবেন। তবে স্থাপিত হাট ও বাজারের মালিকানা ভূমি মন্ত্রণালয়ের ওপর ন্যস্ত থাকবে। কিন্তু ব্যক্তিমালিকানাধীন জমিতে বাজার তৈরি করা যাবে না। আইনের বিধান লঙ্ঘন করে হাট ও বাজার স্থাপন করলে ভূমিসহ সমস্ত স্থাপনা সরকার বাজেয়াপ্ত করতে পারবে।’

অবৈধ বাজার দুটির বিষয়ে ২০২৩ সালের ১৬ আগস্ট খুলনা সিটি করপোরেশনের (কেসিসি) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা লস্কার তাজুল ইসলাম জেলা প্রশাসক বরাবর দেওয়া চিঠিতে বলেন, ডুমুরিয়ায় ব্যক্তিমালিকানাধীন জায়গায় অবৈধ কাঁচাবাজার তৈরি করা হয়েছে। এতে শহরের একমাত্র পাইকারি কাঁচাবাজারে পণ্যের সংকট দেখা দিচ্ছে। কৃষক ও ব্যাপারীরা সোনাডাঙ্গা ট্রাক স্ট্যান্ডের কেসিসি কাঁচাবাজারে না এসে ডুমুরিয়ায় গিয়ে পণ্য বেচাকেনা করছেন। ফলে সিটি করপোরেশন রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

এরই মধ্যে কেসিসি পাইকারি কাঁচাবাজারের সভাপতি মো. নজরুল ইসলাম উচ্চ আদালতে ডুমুরিয়ার অবৈধ বাজার দুটি উচ্ছেদে রিট করেন। এতে ভূমি মন্ত্রণালয়ে সচিব, বাজার মালিকসহ সাতজনকে বিবাদী করা হয়। বিচারপতি জাফর আহমেদ ও বিচারপতি মো. বশির উল্লাহ যৌথ বেঞ্চ নির্দেশ পাওয়ার তিন মাসের মধ্যে বাজার দুটির বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন। কিন্তু বাজার দুটি উচ্ছেদ না হওয়ায় আবারও আদালতে যাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা।

সোনাডাঙ্গা কেসিসি কাঁচাবাজারের সাধারণ সম্পাদক মঈনুল ইসলাম নাসির জানান, ব্যক্তিগত জায়গায় বাজার হয় না। এর আগে হাইকোর্ট ২০০৬ সালে নিরালা হাজী রাহেজ উদ্দিন পাইকারি কাঁচা বাজারটি অবৈধ ঘোষণা করে। পরে ২০০৮ সালে বাজারের ব্যবসায়ীদের উচ্ছেদ করা হয়। আমরাই তার ভুক্তভোগী ছিলাম।’

জানা যায়, শহিদ স্মৃতি মহিলা কলেজের পাশে লুৎফর রহমান গাজীর ছেলে আনিসুর রহমান গাজী তার বরফ কলের সামনে ব্যক্তি জমিতে আল্লার দান কাঁচামাল পাইকারি বাজার স্থাপন করে ৪৮টি আড়ত বরাদ্দ দিয়েছেন। প্রতিটি ঘরে ন্যূনতম এক লাখ টাকা অগ্রিম ও প্রতিদিন ১০০ টাকা হারে আদায় করা হয়।

অপরদিকে স্থানীয় মো. শামসুর রহমান বিশ্বাসের ছেলে আনিসুর রহমান বিশ্বাস তার জমিতে বিশ্বাস পাইকারি সবজি বাজার স্থাপন করে ৬২টি আড়ত ঘর বরাদ্দ দিয়েছেন। সেখানে আড়তদারদের কাছ থেকে প্রতিদিন ৯০ টাকা হারে অর্থ আদায় করা হয়।

চাঁদপুরে ভালো নির্বাচন উপহার দিতে চাই: ডিসি

প্রকাশ: ২০ মে ২০২৪, ০৩:৪৮ পিএম
চাঁদপুরে ভালো নির্বাচন উপহার দিতে চাই: ডিসি
ছবি: খবরের কাগজ

নির্বাচন কমিশনকে চাঁদপুরে একটি ভালো নির্বাচন উপহার দিতে চাই বলে মন্তব্য করেছেন চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) কামরুল হাসান।

সোমবার (২০ মে) বেলা ১১টায় চাঁদপুর শহরের স্টেডিয়াম মাঠে চাঁদপুর জেলা পুলিশ আয়োজিত উপজেলা পরিষদ নির্বাচন উপলক্ষে আইন-শৃঙ্খলা সংক্রান্ত ব্রিফিং প্যারেড তিনি এ কথা বলেন। 

এতে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) কামরুল হাসান। 

তিনি বলেন, ‘প্রিসাইডিং অফিসারের সঙ্গে সমন্বয় করে পুলিশ কর্মকর্তারা কাজ করবেন। কেন্দ্রে গিয়ে কোনো ধরনের ত্রুটি থাকলে সেগুলো সমাধান করবেন। ইভিএমসহ সরকারি যত সম্পদ আছে সবকিছুর নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করবেন। একই সঙ্গে ভোটারদের কেন্দ্রে এসে ভোট দেওয়ার শেষ পর্যন্ত সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।’

সভাপতির বক্তব্য দেন চাঁদপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম। 

তিনি বলেন, ‘নির্বাচনের দায়িত্ব পালন করার বিষয়ে আপনাদের পূর্বের অভিজ্ঞতা আছে এবং ইতোপূর্বে আপনাদেরকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। আমরা খুবই নিরাপদ পরিবেশে নির্বাচন সম্পন্ন করতে চাই। এ ক্ষেত্রে কেউ যদি বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে, তাহলে আপনারা সর্বোচ্চ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। আপনাদের বিষয়গুলো আমরা সার্বিকভাবে দেখব। কোন সমস্যা হলে আপনাদের হয়ে আমরা কথা বলব। কোনভাবেই বিশৃংখলা সৃষ্টি করতে দেওয়া যাবে না।’

চাঁদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) ইয়াসির আরাফাতের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন চাঁদপুর জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ তোফায়েল হোসেন ও জেলা আনসার ভিডিপির কমান্ডার উজ্জ্বল কুমার পাল।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন চাঁদপুর প্রেসক্লাব সভাপতি শাহাদাত হোসেন শান্ত, সহকারী পুলিশ সুপার (মতলব সার্কেল) খায়রুল কবির, চাঁদপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শেখ মুহসিন আলম, চাঁদপুর জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এনামুল হক চৌধুরীসহ পুলিশ কর্মকর্তারা।

শরীফুল ইসলাম/সাদিয়া নাহার/অমিয়/

গজারিয়ায় সাংবাদিকের উপর হামলা, অবস্থান কর্মসূচি

প্রকাশ: ২০ মে ২০২৪, ০৩:১৩ পিএম
গজারিয়ায় সাংবাদিকের উপর হামলা, অবস্থান কর্মসূচি
ছবি: খবরের কাগজ

দৈনিক যুগান্তর ও যমুনা টিভির গজারিয়া উপজেলা প্রতিনিধি মোহাম্মদ জসিম উদ্দিনের উপর সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তার ও শাস্তি দাবিতে গজারিয়া থানার সামনে অবস্থান নিয়েছে উপজেলায় কর্মরত সাংবাদিকরা।

সোমবার (২০ মে) বেলা ১১টা গজারিয়ার ভবেরচর বাস স্যান্ড এলাকায় এই হামলার ঘটনা ঘটে।

গজারিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রাজিব খান বলেন, ‘খবর পাওয়া মাত্রই ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। ঘটনায় যারা জড়িত তাদের আটকে আমাদের চেষ্টা অব্যহত রয়েছে। বিস্তারিত পরে বলা যাবে।’

হামলায় আহত সাংবাদিক জসিম উদ্দিন বলেন, ‘বিভিন্ন বিষয় নিয়ে পুরান বাউশিয়া গ্রামের চিহ্নিত সন্ত্রাসী ও আদম বেপারী আমিনুর রহমান হারুন শিকদার আমার উপর ক্ষুব্ধ ছিল। তার বাড়িতে মাদকের আসর বসানো হয় এই তথ্য আমি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জানানোয় ইতোপূর্বে হারুন শিকদার ও তার লোকজন আমার উপর হামলা করে। সম্প্রতি আমি বাউশিয়া মোহাম্মদ আব্দুল আজহার উচ্চবিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি নির্বাচনে অভিভাবক শ্রেণির সদস্য প্রার্থী হওয়ায় আমাকে প্রকাশ্যে হুমকি দেয় সে। এ ঘটনার জের ধরে সোমবার বেলা ১১টার দিকে ভবেরচর বাস স্যান্ড এলাকায় হারুন শিকদারের নেতৃত্বে আমার উপর হামলা চালায় তার লোকজন। আমি বিষয়টি মুন্সীগঞ্জ জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানিয়েছে। আমরা থানার সামনে অবস্থা নিয়েছি। এই ঘটনায় অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার না হলে আমি বাড়ি ফিরে যাব না।’

এই ঘটনায় মুন্সীগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি বাছির উদ্দিন জুয়েল, সাধারণ সম্পাদক সুজন হায়দার জনি, সিনিয়র সাংবাদিক মীর নাসির উদ্দিন উজ্জ্বল, কাজী সাব্বির আহমেদ দীপুসহ জেলা, উপজেলায় কর্মরত সাংবাদিকরা এই হামলার তীব্র নিন্দা জানায় এবং অভিযুক্তদের শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানায়।

এর আগেও বিজয় টিভির মুন্সীগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি আমরুল ইসলাম নয়ন, গজারিয়া উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইউনুস প্রধানসহ অসংখ্য মানুষ হারুন শিকদার ও তার লোকজন দ্বারা মারধরের শিকার শিকার হয়েছেন।

সাদিয়া নাহার/অমিয়/

সাভারে অজ্ঞাত পরিবহনের চাপায় নিহত ১

প্রকাশ: ২০ মে ২০২৪, ০২:৫২ পিএম
সাভারে অজ্ঞাত পরিবহনের চাপায় নিহত ১
ছবি: খবরের কাগজ

সাভারে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের অজ্ঞাত পরিবহনের চাপায় মোটরসাইকেল আরোহী এক পুলিশ কর্মকর্তার স্ত্রীর মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন এক পুলিশ কর্মকর্তা। তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

সোমবার (২০ মে) সকালে সাভার হাইওয়ে থানার পরিদর্শক (ওসি) আইয়ুব আলী এই তথ্য নিশ্চিত করেন। 

এর আগে রবিবার গভীর রাতে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের হেমায়েতপুরে ঢাকামুখী লেনে এই দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত তানিয়া রশিদ (২৮) রাজধানীর ধানমন্ডি থানায় কর্মরত উপ-পরিদর্শক (এসআই) আরিফ হাসানের স্ত্রী। তিনি জামালপুর জেলার বাসিন্দা বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। 

হাইওয়ে পুলিশ জানায়, রবিবার রাত ১০ টার দিকে মোটরসাইকেলে ঢাকায় যাচ্ছিলেন আরিফ হাসান ও তার স্ত্রী তানিয়া রশিদ। এ সময় ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের হেমায়েতপুরে পৌঁছলে অজ্ঞাত পরিবহন তাদের চাপা দিয়ে পালিয়ে যায়। এতে গুরুতর আহত অবস্থায় তাদের উদ্ধার করে সাভারের এনাম মেডিকেলে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তানিয়া রশিদকে মৃত ঘোষণা করেন।

ওসি বলেন, ‘আহত আরিফ হাসান ধানমন্ডি থানায় কর্মরত আছেন। তিনি স্ত্রীসহ কর্মস্থলে যাওয়ার সময় দুর্ঘটনার শিকার হন। এ ঘটনায় তার স্ত্রী তানিয়া রশিদ মারা গেছেন। নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে থানায় আনা হয়েছে। এ ব্যাপারে ঘাতক পরিবহনটি শনাক্তের চেষ্টা চলছে এবং পরবর্তী আইনানুগ কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।’

ইমতিয়াজ উল ইসলাম/সাদিয়া নাহার/অমিয়/

আইসিটি মামলা: দুই সপ্তাহ বিদ্যালয়ে আসছেন না ৪ শিক্ষক

প্রকাশ: ২০ মে ২০২৪, ০২:৩৪ পিএম
আইসিটি মামলা: দুই সপ্তাহ বিদ্যালয়ে আসছেন না ৪ শিক্ষক
ছবি : খবরের কাগজ

নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চার শিক্ষক গত ১৪ দিন ধরে অনুপুস্থিত। এতে শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হলেও বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নীরব ভূমিকার অভিযোগ উঠেছে। পুলিশ জানায়, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে এক শিক্ষক ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করার পর থেকে তারা পলাতক।

জানা গেছে, হাতিয়া উপজেলার জাহাজামারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আমির হোসেন (৫২), মধ্য রেহানিয়া আবদুল্যাহ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুর উদ্দিন তানবীর (৩৫), ম্যাক পার্শ্বান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক জিন্নাত আরা বেগম (৩৫) ও হাসান উদ্দিন বিপ্লব (সাময়িক বরখাস্ত) গত ৬ মে থেকে বিদ্যালয়ে অনুপুস্থিত।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এসব শিক্ষকসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে গত ৫ মে নোয়াখালীর সুধারাম (সদর) থানায় পর্ণোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ (আইসিটি) আইনে মামলা করেন হাতিয়ার ম্যাক পার্শ্বান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সিনিয়র সহকারী শিক্ষক মামুন অর রশিদ। ওই মামলায় প্রধান আসামি সদর উপজেলার মাইজভান্ডার শরীফ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আমজাদ হোসেনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। তিনি এখন কারাগারে।

মামলার এজাহারে জানা গেছে, আসামিরা পরস্পরের যোগসাজশে বাদি মামুন অর রশিদের স্ত্রী নলুয়া রেহান আলী চৌধুরীহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকার মোবাইল থেকে ব্যক্তিগত আপত্তিকর ছবি হ্যাক করে ভাইরাল করার ভয় দেখিয়ে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবিসহ অনৈক সম্পর্কের প্রস্তাব করেন।

সুধারাম মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর জাহেদুল হক রনি খবরের কাগজকে বলেন, অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পেয়ে মামলা করা হয়েছে। পরে মামলার প্রধান আসামি আমজাদ হোসেনকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। বাকি আসামিরা পলাতক। তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

হাতিয়ার বিদ্যালয়গুলোতে খবর নিয়ে জানা গেছে, প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকরা অনুপুস্থিত থাকায় বিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানানোর পরও অদৃশ্য কারণে কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছেন না। 

এই বিদ্যালয়গুলোর সভাপতিরা জানান, কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া শিক্ষকরা এতোদিন অনুপুস্থিত থাকা অস্বাভাববিক। 

হাতিয়া উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আবদুল জব্বার খবরের কাগজকে বলেন, ‘আমার জানা মতে শিক্ষকরা বিদ্যালয়ে উপস্থিত আছেন।’ কিন্তু খবরের কাগজের হাতে আসা হাজিরা খাতা অনুযায়ী তারা ১৪ দিন অনুপস্থিত বলার পর তিনি ফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন। পরে অনেক বার ফোন করলেও তিনি রিসিভ করেননি।

হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শুভাশীষ চাকমা খবরের কাগজকে বলেন, বিষয়টি কেউ আমাকে জানায়নি। খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নিতে বলব।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ডিপিও) মো. মনসুর আলী খবরের কাগজকে বলেন, খোঁজ নিয়ে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ইকবাল হোসেন মজনু/জোবাইদা/অমিয়/

ময়মনসিংহে ৩ উপজেলায় নির্বাচন, বিভক্ত আ.লীগ নেতাকর্মীরা

প্রকাশ: ২০ মে ২০২৪, ০২:৩২ পিএম
ময়মনসিংহে ৩ উপজেলায় নির্বাচন, বিভক্ত আ.লীগ নেতাকর্মীরা
ছবি : খবরের কাগজ

রাত পোহালেই দ্বিতীয় ধাপে ময়মনসিংহ সদর, মুক্তাগাছা এবং গৌরীপুর উপজেলা পরিষদ নিবার্চন অনুষ্ঠিত হবে। পোস্টারে পোস্টারে ছেয়ে রয়েছে পুরো নির্বাচনি এলাকা। এই তিন উপজেলায় ৪৩ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে চেয়ারম্যান পদে ১৩ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ১৭ জন এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ১৩ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

প্রত্যেকটি উপজেলায় আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা প্রার্থী হয়েছেন। এতে নেতাকর্মীরাও বিভক্ত হয়ে তাদের পছন্দের প্রার্থীর পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন।

সদর উপজেলার চেয়ারম্যান জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য আশরাফ হোসাইন ঘোড়া প্রতীক নিয়ে এবারও প্রার্থী হয়েছেন। ২০১৯ সালে দলীয় মনোনয়ন নিয়ে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারম্যান হন তিনি। এর আগে ২০১৪ সালে উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান থেকে দলীয় প্রার্থী হয়ে চেয়ারম্যান হতে চাইলেও বিএনপি নেতা কামরুল ইসলাম মো. ওয়ালিদের কাছে হেরে যান। 

এবার তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী হয়েছেন সদর উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সিরতা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু সাঈদ (দোয়াত)। আবু সাঈদ সদর আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য মোহিত উর রহমান শান্তর অনুসারী। 

আশরাফ হোসাইনের পক্ষের নেতা-কর্মীরাও প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে তাকে নির্বাচিত করতে মাঠঘাট চষে বেড়িয়েছেন। 

এ ছাড়াও প্রার্থী হয়েছেন জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সদস্য আল আমিন আলভি (আনারস), মো. মনিরুজ্জামান (জোড়া ফুল) এবং হোসাইন নূর মুহাম্মদ (মোটরসাইকেল)। 

এছাড়া ভাইস চেয়ারম্যান পদে সাতজন এবং নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে দুইজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

মুক্তাগাছায় নির্বাচনকে ঘিরে পাঁচ ভাগে বিভক্ত আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। সাবেক প্রতিমন্ত্রী কেএম খালেদের অনুসারীরা দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছেন। 

চেয়ারম্যান প্রার্থী ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি দেবাশীষ ঘোষ বাপ্পী (হেলিকপ্টার) এবং পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি আরব আলীর (দোয়াত-কলম) পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন নেতাকর্মীরা। 

বর্তমান সংসদ সদস্য নজরুল ইসলামের অনুসারীরা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাই আকন্দের (মোটরসাইকেল) অবস্থান নিয়েছেন। 

এই তিনজন ছাড়াও প্রার্থী হয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. শহিদুল ইসলাম (ঘোড়া) ও ময়মনসিংহ মহানগর আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য মুহাম্মদ রেজাউল করিম (আনারস)। 

এছাড়া ভাইস চেয়ারম্যান পদে ছয়জন এবং নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে পাঁচজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

গৌরীপুরে ২০১৯ সালের উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মোফাজ্জল হোসেন খান। এবার তিনি দোয়াত-কলম প্রতীক নিয়ে প্রার্থী হয়েছেন। সোমনাথ সাহা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। গত সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নৌকার প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নিলুফার আনজুম পপির কাছে অল্প ভোটে হেরে যান তিনি। এবার আনারস প্রতীক নিয়ে উপজেলা নির্বাচনে লড়ছেন সোমনাথ। 

বর্তমান সংসদ সদস্য পপি প্রকাশ্যে কোনো প্রার্থীর পক্ষে অবস্থান না নিলেও তার অনুসারী নেতাকর্মীরা মোফাজ্জল হোসেন খানের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। নেতাকর্মীদের একটি বড় অংশ অবস্থান নিয়েছেন সোমনাথের পক্ষে। 

এদিকে চেয়ারম্যান পদে ঘোড়া প্রতীকের অপর প্রার্থী এইচ এম খায়রুল বাসার আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় যুব ও ক্রীড়া উপ-কমিটির সদস্য ও ময়মনসিংহ জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য। তিনিও প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে নির্বাচনি মাঠে সরব। 

এছাড়া ভাইস চেয়ারম্যান পদে চারজন এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ছয়জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

ময়মনসিংহ আঞ্চলিক নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা যায়, সদর উপজেলার ১১টি ইউনিয়নের ১০৩টি কেন্দ্রের ৮৯৯টি কক্ষে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। সদরে মোট ভোটার তিন লাখ ১৬ হাজার ৪৮১ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার এক লাখ ৫৯ হাজার ৯৩৫ জন, নারী ভোটার এক লাখ ৫৬ হাজার ৫৪৫ জন এবং তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার একজন।

মুক্তাগাছা উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের ১১৮টি কেন্দ্রের ৯১৬টি কক্ষে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এই উপজেলায় মোট ভোটার তিন লাখ ৬৯ হাজার ৪১ জন। এরমধ্যে পুরুষ ভোটার এক লাখ ৮৫ হাজার ৩৯৫ জন, নারী ভোটার এক লাখ ৮৩ হাজার ৬৪৪ জন এবং তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার দুইজন।

গৌরীপুর উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের ৯৫টি কেন্দ্রের ৭৩৩টি কক্ষে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এই উপজেলায় মোট ভোটার দুই লাখ ৭৯ হাজার ৯৪৮ জন। এরমধ্যে পুরুষ ভোটার এক লাখ ৪১ হাজার ৮৫৯ জন এবং নারী ভোটার রয়েছে এক লাখ ৩৮ হাজার ৮৯ জন।

এ বিষয়ে ময়মনসিংহ আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মো. সফিকুল ইসলাম বলেন, সকাল ৮টা থেকে বিকেল চারটা পর্যন্ত বিরতিহীন চলবে ভোটগ্রহণ। কোনো প্রার্থীর পক্ষের লোকজন কেন্দ্রসহ আশপাশে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটানোর চেষ্টা করলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কঠোরভাবে দমন করবে। তবে, আশা করছি, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশেই ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হবে।

কামরুজ্জামান মিন্টু/জোবাইদা/অমিয়/