‘মনে হচ্ছে জীবনের শেষ ভোট দিলাম’ । খবরের কাগজ
ঢাকা ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, সোমবার, ২০ মে ২০২৪

‘মনে হচ্ছে জীবনের শেষ ভোট দিলাম’

প্রকাশ: ০৯ মে ২০২৪, ১১:১৫ এএম
‘মনে হচ্ছে জীবনের শেষ ভোট দিলাম’
টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার কাকরাইদ আখালিয়া গ্রামের ৬৫ বছর বয়সী তারা মিয়া। খবরের কাগজ

‘জীবনের শেষ ভোট দিলাম আজকে মনে হচ্ছে, আর ভোট দিতে পারব কি না জানি না, বয়স তো কম হলো না। দীর্ঘ ১০ বছর ধরে অসুস্থ হয়ে পড়ে রয়েছি। কোথাও বের হতে পারি না। আজকে উপজেলায় ভোট হচ্ছে। তাই ভোট দিলাম স্ত্রীর সহযোগিতা নিয়ে। ভোট দিয়ে খুবই শান্তি পেলাম। অনেক দিন পর সুষ্ঠু ভোট হচ্ছে।’ কথাগুলো বলছিলেন, টাঙ্গাইল জেলার মধুপুর উপজেলার কাকরাইদ আখালিয়া গ্রামের মৃত সামাদ আলীর ছেলে ৬৫ বছর বয়সের তারা মিয়া।

তারা মিয়া আরও বলেন, ‘অসুস্থ থাকার কারণে সংসারে অভাব অনটন। কোনো মেম্বার বা চেয়ারম্যান আমাকে সহযোগিতা করে নাই। আজকে সুষ্ঠু নির্বাচন হচ্ছে শুনলাম। তাই মনের মতো একজন চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী হয়েছে। তাই নিজের স্ত্রীকে বললাম যে, আমাকে ভোটকেন্দ্রে নিয়ে যাও, ভোট দিব। তারপর স্ত্রী রহিমা আমাকে নিয়ে এসেছে ভোটকেন্দ্রে।’

তারা মিয়ার স্ত্রী রহিমা বেগম খবরের কাগজকে বলেন, ‘হুইল চেয়ারের জীবন আমাদের। ছেলে সন্তান যা সহযোগিতা করে, তা দিয়ে সংসার চালাই। দীর্ঘদিন ধরে আমার স্বামী অসুস্থ। কিন্তু কোনো সহযোগিতা পাই না কোথাও থেকে। এবার আমাদের পরিচিত ও কাছের মানুষ নির্বাচন করছে, যার কারণে হুইল চেয়ারে করে স্বামীকে ভোটকেন্দ্রে নিয়ে এসেছি ভোট দেওয়ার জন্য।’

কাকরাইদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার মেহেদী হাসান বলেন, ‘কাকরাইদ কেন্দ্রে মোট ভোটার সংখ্যা ৪ হাজারের ওপরে। আনসার সদস্যরা তারা মিয়াকে সহযোগিতা করেছেন ভোট প্রয়োগ করতে। এখন পর্যন্ত কোনো সহিংসতার খবর পাওয়া যায়নি।’

জেলা সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মাদ মতিয়ুর রহমান বলেন, ‘প্রথম ধাপে নির্বাচনের সকল প্রস্তুতি শেষে টাঙ্গাইলের দুটি উপজেলায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। নির্বাচনের পরিবেশ অবাধ ও সুষ্ঠু করতে ইতোমধ্যে ৭ প্লাটুন বিজিবি, ২ প্লাটুন র‍্যাব, প্রতিটি কেন্দ্রে ৪ জন পুলিশ, ১৫ জন আনসার সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। এ ছাড়া দুটি উপজেলায় একজন করে দুজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করছেন।’

প্রথম ধাপে টাঙ্গাইলের তিনটি উপজেলা ধনবাড়ী, মধুপুর ও গোপালপুর উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু গোপালপুর উপজেলায় নারী ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী ম‌রিয়ম আখতার মুক্তা গত শুক্রবার ময়মন‌সিংহ মে‌ডি‌কেল ক‌লেজ হাসপাতা‌লে চি‌কিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। পরে গত রবিবার নির্বাচন কমিশনের উপসচিব মো. আতিয়ার রহমান স্বাক্ষরিত চিঠিতে গোপালপুর উপজেলা পরিষদের সব পদের নির্বাচন স্থগিত ঘোষণা করেন। 

শিক্ষকের অনিয়ম-অসৌজন্যমূলক আচরণের প্রতিবাদ

প্রকাশ: ২০ মে ২০২৪, ১০:২২ এএম
শিক্ষকের অনিয়ম-অসৌজন্যমূলক আচরণের প্রতিবাদ

জামালপুরের ইসলামপুরে শেখ হাসিনা ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজির শিক্ষক ডা. শাহ মো. মোখলেছুর রহমানের বিভিন্ন অনিয়ম, শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণের প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছে শিক্ষার্থীরা। গতকাল রবিবার সকাল থেকে ইনস্টিটিউটের ক্যাম্পাসে এই বিক্ষোভ করে শিক্ষার্থীরা। 

বিক্ষোভ কর্মসূচিতে প্রতিষ্ঠানটির চতুর্থ, পঞ্চম এবং ষষ্ঠ ব্যাচের শিক্ষার্থী কৌশিক, মেহেদী হাসান, আতিক কাওসার ও বৈশাখী আক্তারসহ অন্য শিক্ষার্থীরা বক্তব্য রাখেন। এ সময় তারা অভিযোগ করে বলেন, শেখ হাসিনা ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজির শিক্ষক ডা. শাহ মো. মোখলেছুর রহমান যোগ দেওয়ার পর থেকেই পাঠদানে অবহেলা, হোস্টেলে সিট বাণিজ্য, নিম্নমানের খাবার সরবরাহসহ নানাভাবে শিক্ষার্থীদের জিম্মি করে রেখেছেন। শ্রেণিকক্ষে পাঠের বাইরের নানা বিষয় নিয়ে কথা বলে তিনি দুই থেকে তিন ঘণ্টা সময় ব্যয় করলেও ১০ মিনিটের বেশি পাঠ দেন না। হোস্টেলের ছাত্রদের মাদকাসক্ত ও ছাত্রীরা দেহ ব্যবসার সঙ্গে জড়িত উল্লেখ করে নানা কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করেন তিনি। এসবের প্রতিবাদ করলেই শিক্ষার্থীদের পরীক্ষায় নম্বর কম দেওয়া, শ্রেণিকক্ষে উপস্থিত থাকলেও অনুপস্থিত দেখানো, অকৃতকার্য করানো, ছাত্রত্ব বাতিল, হোস্টেলের সিট বাতিলের হুমকিসহ অভিভাবকদের ডেকে এনে শিক্ষার্থীদের হয়রানি ও অসৌজ্যমূলক আচরণ করেন। এ ছাড়া হোস্টেল সুপার রবিউল ইসলামের যোগসাজশে হোস্টেলের খাবারে সরাসরি হস্তক্ষেপ করেন। 

তারা আরও বলেন, মো. মোখলেছুর রহমান নিজের পছন্দ অনুযায়ী হোস্টেলে ম্যানেজার নির্ধারণ করে খাবারের টাকা আত্মসাৎ করেন। শিক্ষার্থীরা খাবার না খেলেও মাসিক খাবারের টাকা গুনতে হয়। কলেজটিতে আউট সোর্সিংয়ের মাধ্যমে আয়া, বুয়া, বাবুর্চিদের বেতন দেওয়া হলেও প্রতিমাসে ৪০০ জন শিক্ষার্থীর প্রত্যেকের কাছ থেকে ১০০ টাকা করে ৪০ হাজার টাকা উত্তোলন করা হয়। মো. মোখলেছুর রহমানের এমন কর্মকাণ্ডে অতিষ্ঠ হয়ে শিক্ষার্থীরা আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন। ক্যাম্পাসে শিক্ষার সুস্থ পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে শিগগিরই ওই শিক্ষককে বহিষ্কারের দাবি জানান শিক্ষার্থীরা। তাদের দাবি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কর্তৃপক্ষ কোনো পদক্ষেপ না নিলে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ায় ঘোষণা দেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। 

আজও পিছিয়ে চা-শ্রমিকরা, রক্তঝরা ‘মুল্লুক চলো’ দিবস আজ

আজও পিছিয়ে চা-শ্রমিকরা, রক্তঝরা ‘মুল্লুক চলো’ দিবস আজ
রোদ বৃষ্টি উপেক্ষা করে প্রতিদিন বাগানে চা পাতা তোলেন শ্রমিকরা। ছবিটি সিলেটের লাক্কাতুড়া চা-বাগান থেকে তোলা। ছবি: মামুন হোসেন

উন্নত জীবনের আশায় জন্মভিটা ছেড়ে চা বাগানে কাজ করতে আসেন একদল মানুষ। কিন্তু কাজে এসে তাদের সেই সোনালি স্বপ্ন গুঁড়িয়ে যায়। স্বপ্নভঙ্গের জ্বালা নিয়ে তারা ফিরতে চান নিজের দেশে। শতবর্ষ আগের চা-শ্রমিকদের স্বভূমিতে ফিরে যাওয়ার আন্দোলনই ইতিহাসে লিপিবদ্ধ হয় ‘মুল্লুক চলো’ আন্দোলন হিসেবে।

বিভিন্ন তথ্য থেকে জানা যায়, ১৯২১ সালের ২০ মে সিলেট অঞ্চলের প্রায় ৩০ হাজার চা জনগোষ্ঠীর সদস্যরা সিলেট থেকে পায়ে হেটে চাঁদপুরের মেঘনা স্টিমার ঘাটে পৌঁছান। তারা জাহাজে চড়ে নিজ দেশে ফিরে যেতে চাইলে ব্রিটিশ গোর্খা বাহিনীর সৈনিকরা নির্বিচারে গুলি চালিয়ে তাদের হত্যা করে মেঘনা নদীতে লাশ ভাসিয়ে দেয়। যারা পালিয়ে এসেছিলেন তাদেরও আন্দোলন করার অপরাধে পাশবিক নির্যাতনের শিকার হতে হয়। ফলে চা জনগোষ্ঠীর সদস্যরা পাননি ফিরে স্বভূমির অধিকার।

এরপর থেকেই প্রতিবছর ২০ মে নিজেরাই চা-শ্রমিক দিবস হিসেবে দিনটি পালন করে আসছেন, নাগরিক সুবিধাবঞ্চিত শোষণ-বঞ্চনা ও বৈষম্যের শিকার চা-শ্রমিকরা।

আরও জানা যায়, ১৮৫৪ সালে পরীক্ষামূলকভাবে সিলেটের মালিনীছড়া চা বাগানে চাষ শুরু করে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি। সে সময় চা বাগান তৈরির জন্য ভারতের আসাম, ওড়িশা, বিহার, উত্তর প্রদেশসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে শ্রমিকদের স্থানান্তর করা হয়। ‘গাছ হিলেগা, রুপিয়া মিলেগা’ (গাছ নড়লে টাকা মিলবে) এমন প্রলোভনে শ্রমিকদের নিয়ে এলেও তাদের ভুল বুঝতে বেশি সময় লাগেনি। বিশাল পাহাড় পরিষ্কার করে চা বাগান করতে গিয়ে হিংস্র পশুর কবলে পড়ে অনেক চা-শ্রমিকের জীবন অকালে ঝড়েছে। এর সঙ্গে ছিল ব্রিটিশদের অব্যাহত অত্যাচার। নির্যাতনের প্রতিবাদে তৎকালীন চা-শ্রমিক নেতা পণ্ডিত গঙ্গাচরণ দীক্ষিত ও পণ্ডিত দেওসরন ‘মুল্লুকে চলো’ (মাতৃভূমিতে ফিরে যাওয়ার) আন্দোলনের ডাক দেন।

ওই ঘটনার ১০৩ বছর পর কেমন আছেন চা শ্রমিকরা? সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে যাওয়া হয় শ্রীমঙ্গলের ভাড়াউড়া চা বাগানে। দেখা গেল ভাঙাচোরা কাঁচা মাটির ঘরে শুয়ে আছেন বৃদ্ধা সীতা বাউড়ি। কথা হয় তার সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘চা-শ্রমিক দিবস আবার কী? দিনে একবেলা খেতেই পাই না, আমাদের আবার দিবস? কয়েকদিন ধরে আমি অসুস্থ, কিন্তু বাগানের মধ্যে যে হাসপাতাল রয়েছে তা সাইনবোর্ডসর্বস্ব। ডাক্তার-ওষুধ কোনোটাই পাওয়া যায় না। অধিকাংশ সময় হাসপাতাল তালাবদ্ধ থাকে। চিকিৎসক, নার্স ও কর্মচারী কাউকে সার্বক্ষণিক নিয়োগ দেওয়া হয় না। বিনা চিকিৎসায় মারা যাওয়াকে তারা নিয়তি হিসেবে মেনে নেন।’

কয়েকটি চা বাগানে শ্রমিকদের বাসস্থানে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে মানবেতর জীবন যাপন করছেন তারা। চুক্তি কিংবা খাতাপত্রে শ্রমিকদের সুস্বাস্থ্যের প্রথম শর্ত হিসেবে একটি পরিকল্পিত বাসস্থান নির্মাণের কথা থাকলেও বাস্তবে এর কোনো নজির পাওয়া যায় না। ছন ও বাঁশ দিয়ে তৈরি ছোট ছোট ঘরে গাদাগাদি করে শ্রমিকদের পরিবার নিয়ে থাকতে হয়। ঝড়বৃষ্টিতে ঘরে বসে থেকে তাদের ভিজতে হয়। টিনের চাল দিলে আর এ অসুবিধা হতো না। বিষ্ণু রাজু নামের এক শ্রমিক জানান, স্ত্রী-সন্তানসহ তার পরিবারের সদস্য নয়জন। অথচ চা বাগান মালিকপক্ষ থেকে যে ঘর তুলে দেওয়া হয়েছে সেখানে দুই থেকে তিনজন বসবাস করতে পারেন। বাকিরা উঠানে ঘুমান। বৃষ্টি হলে তখন এক ঘরে গাদাগাদি করে সবাইকে ঘুমাতে হয়।

শ্রীমঙ্গলসহ দেশের প্রায় ১৬৫টি চা বাগানের শ্রমিকরা মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন। প্রায় ২০০ বছর ধরে মৌলভীবাজারের ৯২টি চা বাগানে বংশপরম্পপরায় কাজ করছেন চা শ্রমিকরা। তাদের শ্রমে এই শিল্পের উন্নয়ন হলেও শ্রমিকদের ভাগ্যের পরিবর্তন হচ্ছে না। দৈনিক একজন শ্রমিকের মজুরি ১৭০ টাকা। আর সেই সঙ্গে সপ্তাহ শেষে তিন কেজি আটা।

চা জনগোষ্ঠীর সদস্য মিন্টু দেশোয়ারা বলেন, আমরা আমাদের অধিকারের জন্য লড়ছি। আজ ১০০ বছর পরও মনে হচ্ছে আমরা আগের চেয়ে আরও বঞ্চিত হচ্ছি বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা থেকে।

চা-শ্রমিক ইউনিয়নের মনু ধলাই ভ্যালির সভাপতি ধনা বাউরি বলেন, চা বাগানের শ্রমিকদের ভাগ্যে আজও উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। এমনকি মৌলিক অধিকারও ভোগ করার সুযোগ পাচ্ছেন না চা জনগোষ্ঠীর সদস্যরা।

বাংলাদেশ চা-শ্রমিক ইউনিয়নের প্রধান উপদেষ্টা রাম ভজন কৈরী জানান, চা-শ্রমিকদের বিভিন্ন দাবি মালিকপক্ষকে লিখিত দেওয়ার পর কয়েক দফা দ্বিপক্ষীয় আলোচনা হয়েছে। তবে মালিকপক্ষ কালক্ষেপণ করছেন বলে অভিযোগ করেন তিনি।

বজ্রাঘাতে তিন জেলায় ৫ জন নিহত

প্রকাশ: ২০ মে ২০২৪, ০৯:৫৯ এএম
বজ্রাঘাতে তিন জেলায় ৫ জন নিহত
ছবি : খবরের কাগজ

বজ্রাঘাতে ফেনী, কুমিল্লা ও সাতক্ষীরায় ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে।

রবিবার (১৯ মে) এই তিন জেলায় নিহতরা হলেন- ফেনীর মাহাদি হাসান ও শাহীন মাহমুদ অভি, কুমিল্লার আনোয়ারুল হক ও রিমন এবং সাতক্ষীরার মাসুম বিল্লাহ। মাহাদি হাসান ছাগলনাইয়ার রাধানগর ইউনিয়ন উত্তর কুহুমা গ্রামের বাসিন্দা। সে ২০২৩ সালে এইচএসসি পাস করেছে। 

অপরদিকে শাহীন মাহমুদ অভি একই উপজেলার দক্ষিণ লাঙ্গল মোড়া ৬নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা। সে নিজকুঞ্জরা ফাজিল ডিগ্রি মাদ্রাসার ১০ম শ্রেণির ছাত্র।

পুলিশ ও পরিবার সূত্রে জানা গেছে, দুপুর ২টার দিকে বৃষ্টি শুরু হলে মাহাদি ও অভি মাঠে গরু আনতে যায়। সেখানেই হঠাৎ বজ্রপাতে তাদের শরীরের বিভিন্ন অংশ ঝলসে যায়। পরে স্থানীয়রা উদ্ধার করে ছাগলনাইয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।

রাধানগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোশারাফ হোসেন  বলেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ তাদের বাড়িতে গিয়েছেন। সন্তানের এমন আকস্মিক মৃত্যুতে পরিবারে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। গোপাল ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. সেলিম বলেন, ‘মৃত্যুর খবর শুনে আমি গিয়ে হাসপাতালে কথা বলে তার দাফনের জন্য লাশ বাড়িতে পাঠিয়েছি।’ 

এ ব্যাপারে ছাগলনাইয়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাসান ইমাম বলেন, ‘দুপুরে বজ্রাঘাতে দুই তরুণের মৃত্যু হয়েছে। পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে লাশ ময়নাতদন্ত ছাড়াই পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।’

অন্যদিকে, রবিবার দুপুরে চৌদ্দগ্রাম উপজেলার মুন্সীরহাট ইউনিয়নের খিরনশাল-লনিশ্বর মাঠে বজ্রাঘাতে আনোয়ারের মৃত্যু হয়। এ সময় মুজিবুর রহমান নামে আরেকজন আহত হন। আহত মজিবুর রহমান বলেন, ‘লনিশ্বর গ্রামের মাওলানা দেলোয়ার হোসেনের কৃষি জমিতে সকাল থেকে আমরা ১০ থেকে ১২ জন শ্রমিক মাটি কাটার কাজ করছিলাম। দুপুরে হঠাৎ আকাশ মেঘাচ্ছন্ন হয়ে থেমে থেমে বজ্রপাতের ঘটনা ঘটে। এ সময় বজ্রপাত আনোয়ারুল হকসহ আমাদের কয়েকজনের ওপর পড়ে। এতে ঘটনাস্থলেই আনোয়ারুলের মৃত্যু হয়।’
 
অপরদিকে বিকেলে কুমিল্লার কোটবাড়ি এলাকায় মাঠে খেলতে গিয়ে বজ্রাঘাতে নিহত হয় পলিটেকনিকেল কলেজের প্রথমবর্ষের শিক্ষার্থী রিমন। নিহত রিমনের প্রতিবেশী মহিউদ্দিন জানান, বিকেলে কোটবাড়ি মাঠে খেলতে যায় রিমন। এ সময়ে বজ্রপাত হলে সে মাঠে লুটিয়ে পড়ে। গুরুতর আহত অবস্থায় রিমনকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

অপরদিকে, সাতক্ষীরা সদর উপজেলার বল্লী ইউনিয়নে বজ্রাঘাতে মাসুম বিল্লাহ নামে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। গতকাল বিকেলে রায়পুর মাঠে এ ঘটনা ঘটে। 

পুণ্ড্র ইউনিভার্সিটিতে এইচএসসিতে জিপিএ-৫ প্রাপ্তদের সংবর্ধনা

প্রকাশ: ২০ মে ২০২৪, ০৯:৩০ এএম
পুণ্ড্র ইউনিভার্সিটিতে এইচএসসিতে জিপিএ-৫ প্রাপ্তদের সংবর্ধনা
ছবি : সংগৃহীত

বগুড়ার বিভিন্ন কলেজ থেকে ২০২৩ সালে এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা দিয়েছে পুণ্ড্র ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি। 

রবিবার (১৯ মে) বিশ্ববিদ্যালয় মিলনায়তনে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. চিত্তরঞ্জন মিশ্র। 

অনুষ্ঠানে অনলাইনে যুক্ত হয়ে গেস্ট অব অনার হিসেবে বক্তব্য দেন বোর্ড অব ট্রাস্টিজের (বিওটি) চেয়ারম্যান এবং টিএমএসএসের প্রতিষ্ঠাতা নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক ড. হোসনে আরা বেগম।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে উপাচার্য বলেন, ‘জীবনে বড় হতে হলে শুধু মেধা দিয়ে হবে না, পরিশ্রমীও হতে হবে।’ এ সময় তিনি শিক্ষার্থীদের সময়ের মূল্য সম্পর্কে সচেতন ও প্রযুক্তির যথাযথ ব্যবহারে আরও অধিক সতর্ক এবং যত্নবান হওয়ার পরামর্শ দেন। 

উপাচার্য আরও বলেন, ‘পুণ্ড্র ইউনিভার্সিটি আগামী দিনে স্মার্ট নাগরিক গড়ে তুলতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।’ 

অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, জিপিএ-৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের অভিভাবক ও কলেজগুলোর অধ্যক্ষরা উপস্থিত ছিলেন। বিজ্ঞপ্তি

প্রতিবন্ধী শিশুকে ধর্ষণ, বৃদ্ধের যাবজ্জীবন

প্রকাশ: ২০ মে ২০২৪, ০৯:১০ এএম
প্রতিবন্ধী শিশুকে ধর্ষণ, বৃদ্ধের যাবজ্জীবন

বুদ্ধি প্রতিবন্ধী এক শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জে চৈতন্য চন্দ্র ওরফে চৈত্য মাহাতো (৬০) নামের একজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে ১ লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ১ বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

রবিবার (১৯ মে) বিকেলে সিরাজগঞ্জের নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনাল-২-এর বিচারক বেগম সালমা খাতুন এই কারাদণ্ডের আদেশ দেন। নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনালের পেশকার মোক্তার হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, ধর্ষণের শিকার বুদ্ধি প্রতিবন্ধী শিশু ও চৈতন্য চন্দ্র সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলার ক্ষীরতলা সোনাকান্দা গ্রামের বাসিন্দা। তারা উভয়ে প্রতিবেশী। চৈতন্য বুদ্ধি প্রতিবন্ধী শিশুকে প্রায়ই প্রেম নিবেদন ও কুপ্রস্তাব দিয়ে আসছিলেন। বিষয়টি জানার পর শিশুটির মামা নরেশ চন্দ্র মাহাতো আসামিকে শাসন করলে তিনি শিশুটির ক্ষতি করার চেষ্টা করেন। ২০২২ সালের ৭ জানুয়ারি দুপুরে শিশুটির বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে চৈতন্য তার বাড়ির ভেতর যান। এ সময় শিশুটিকে ধর্ষণ করেন তিনি।
 
এ ঘটনায় শিশুটির মামা নরেশ চন্দ্র মাহাতো বাদী হয়ে চৈতন্য চন্দ্রকে আসামি করে রায়গঞ্জ থানায় মামলা করেন। মামলার সাক্ষ্য প্রমাণ শেষে গতকাল আদালত চৈতন্য চন্দ্র ওরফে চৈত্য মাহাতোকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন।