চাঁদা না পেয়ে মব সৃষ্টি করে অধ্যক্ষকে মারধরের ঘটনায় প্রাথমিকভাবে আটক দুইজন। ছবি: খবরের কাগজ
চট্টগ্রামে চাঁদা না পেয়ে মব সৃষ্টি করে একটি কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষকে মারধরের ঘটনা ঘটেছে। জেলার চান্দগাঁও থানা ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পরিচয়ধারী রায়হানুল ইসলাম ও তার সহযোগীরা এই ঘটনা ঘটিয়েছে। রায়হান বিএনপি নেতা আবু সুফিয়ানের অনুসারী বলে জানা গেছে।
বুধবার (৯ জুলাই) দুপুরে চান্দগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আফতাব উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এ ঘটনায় প্রাথমিকভাবে দুইজনকে আটক করলেও পরবর্তীতে বিষয়টি সমঝোতা হওয়ায় তাদেরকে ছেড়ে দেয় পুলিশ।
ভুক্তভোগী ওই অধ্যক্ষের নাম- মো. আবদুল বাতেন। তিনি চট্টগ্রাম মহানগরের চান্দগাঁও এলাকায় ওয়াহিদ ইলেকট্রিশিয়ান্স ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশন নামক প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ।
জানা গেছে, চট্টগ্রাম মহানগরের চান্দগাঁও এলাকায় র্যাব ৭ অফিসের পাশের বিল্ডিংয়ে ওয়াহিদ ফাউন্ডেশন পলিটেকনিক নামক প্রতিষ্ঠানটি অবস্থিত। অধ্যক্ষের কাছে চাঁদা দাবি ও তাকে মারধর করে প্রতিষ্ঠানটির গেটে তালা দেওয়া হয়।
বিষয়টি নিয়ে অধ্যক্ষ লিখিত অভিযোগ দিলে মঙ্গলবার (৮ জুলাই) রাত ১১টার দিকে ঘটনাস্থলে চান্দগাঁও থানার টিম পৌঁছালে তাদের সামনেই ওই অধ্যক্ষকে মারধর করে রায়হান ও তার অনুসারীরা। পরিস্থিতি সামাল দিতে না পেরে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে পুলিশ। পরে ঘটনাস্থলে যান উপ-পুলিশ কমিশনার (উত্তর) আমিরুল ইসলাম । মব সৃষ্টি ও চাঁদা দাবি করায় হাতেনাতে রায়হান ও তার এক সহযোগীকে আটক করা হয়।
পরে রাত সাড়ে বারোটার দিকে থানায় জড়ো হতে থাকে রায়হানের অনুসারীরা। পুলিশের ওপর চাপ প্রয়োগ করে থানা থেকে আসামিদের ছাড়ানোর চেষ্টা করে তারা। রাত দেড়টা পর্যন্ত ভুক্তভোগী অধ্যক্ষ আব্দুল বাতেন ও আটক দুই আসামি থানায় অবস্থান করছিলেন। নিরাপত্তাহীনতায় থাকা অধ্যক্ষ থানা ত্যাগ করার আগেই থানা ঘিরে ফেলে রায়হানের অনুসারীরা।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী অধ্যক্ষ আবদুল বাতেন বলেন, ‘এই চক্রটি আমার কাছ থেকে চাঁদা দাবি ও হুমকি দিয়ে আসছে। আমার প্রতিষ্ঠানের পাশেই র্যাব-৭ এর অফিস। আমি গতবছরের ৩০ নভেম্বর এ বিষয়ে র্যাবকে জানিয়েছিলাম। কিন্তু কোনো সহযোগিতা পাইনি। সম্প্রতি তারা আমার কাছে আবারও চাঁদা দাবি করে। এই চাঁদার টাকা না পেয়ে তারা আমার বিরুদ্ধে বিভিন্ন ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।’
চান্দগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আফতাব উদ্দিন বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে আমরা উভয়পক্ষের সঙ্গে বৈঠক করি। একপর্যায়ে সবার সঙ্গে আলোচনা শেষে বিষয়টির সমাধান হয়েছে। তাই আমরা আটক দুইজনকে ছেড়ে দিয়েছি।’