স্ত্রী টিকটক ভিডিও করতেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও থাকতেন সক্রিয়। সেদিন বাপের বাড়ি যেতে মনোমালিন্য হয়। এসব মেনে নিতে না পেরে মাত্র চারদিন আগে বিয়ে করা স্ত্রীকে গলাকেটে হত্যা করে সৌদি আরব প্রবাসী স্বামী হামিদুল ভূঁইয়া। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে এসব কথা স্বীকার করেন হামিদুল।
বুধবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার ফকিরমোড়া সীমান্ত এলাকা দিয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সময় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সদস্যরা তাকে আটক করে।
হামিদুল উপজেলার হিরাপুর গ্রামের মৃত আব্দুল লতিফের ছেলে।
প্রায় ছয় মাস আগে সদর উপজেলার বাসুদেব গ্রামের আব্দুর রাজ্জাকের মাদ্রাসাপড়ুয়া মেয়ে তাছলিমাকে পারিবারিকভাবে মোবাইল ফোনে বিয়ে করেন সৌদি আরব প্রবাসী হামিদুল। ১০-১২ দিন আগে হামিদুল দেশে আসলে গত ৯ ফেব্রুয়ারি তাছলিমার পরিবার আনুষ্ঠানিকভাবে তাকে তুলে দেয়।
বিয়ের পরদিন থেকেই দাম্পত্য কলহ শুরু হয়। এর জের ধরে মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে হামিদুল শয়নকক্ষে তাছলিমাকে ধারালো ছুরি দিয়ে প্রথমে বুকের বাম পাশে আঘাত করে। পরে ঠাণ্ডা মাথায় গলাকেটে মৃত্যু নিশ্চিত করে।
এ সময় তিনি তার বড় ভাই হানিফকেও আঘাত করে। হানিফের চিৎকারে পাশের বাড়ির লোকজন ছুটে এলে হামিদুল পালিয়ে যায়। পরে ৯৯৯-এ সংবাদ পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়।
এদিকে রাতেই নিহত তাছলিমার বড় ভাই আব্দুল কুদ্দুস বাদী হয়ে থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। মামলায় হামিদুলকে একমাত্র আসামি করা হয়।
পুলিশ জানায়, ঘটনার পর পরই হত্যাকারীকে আটক করতে পুলিশ চিরুনি অভিযান চালায়। এ সময় হামিদুল এলাকার বিভিন্ন জায়গা পালিয়ে বেড়ায় এবং বার বার নিজের অবস্থান পরিবর্তন করে। পরে তার সঙ্গে থাকা মোবাইল ফোনটি বন্ধ করে দেয়। সীমান্ত দিয়ে যেন পালিয়ে যেতে না পারে সেই জন্য পুলিশ বিজিবিকে বিষয়টি জানিয়ে রাখে।
বুধবার সকালে ফকিরমোড়া সীমান্ত দিয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সময় বিজিবি সদস্যরা তাকে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেয়।
আখাউড়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. শফিকুল ইসলাম খবরের কাগজকে বলেন, স্ত্রীর টিকটক ভিডিও করা এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চ্যাট করে একাধিক সম্পর্ক গড়ে তোলা নিয়ে স্বামীর সন্দেহ হয়। এক পর্যায়ে দুজনের মধ্যে মনোমালিন্যও হয়। বিষিয়টি মানতে না পারায় স্ত্রীকে হত্যা করেছে বলে তিনি প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন।
তাকে আদালতে সোপর্দ করার প্রক্রিয়া চলছে বলেও জানান তিনি।
জুটন বনিক/অমিয়/