১৫ বছরে ব্যাংক খাতে লোপাট ৯২ হাজার কোটি টাকা : সিপিডি । খবরের কাগজ
ঢাকা ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪

১৫ বছরে ব্যাংক খাতে লোপাট ৯২ হাজার কোটি টাকা : সিপিডি

প্রকাশ: ২৩ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৩:৪৯ পিএম
১৫ বছরে ব্যাংক খাতে লোপাট ৯২ হাজার কোটি টাকা : সিপিডি
ছবি : সংগৃহীত

২০০৮ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত ১৫ বছরে বিভিন্ন আর্থিক অনিয়মের মাধ্যমে ব্যাংকিং খাত থেকে ৯২ হাজার ২৬১ কোটি টাকা লোপাট হয়েছে।

শনিবার (২৩ ডিসেম্বর) সকালে ধানমন্ডিতে সিপিডি কার্যালয়ে ‘বাংলাদেশের অর্থনীতি ২০২৩-২৪: চলমান সংকট ও করণীয়’ শীর্ষক মিডিয়া ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন।

তিনি বলেন, জাল কাগজপত্র দিয়ে ঋণ, অস্তিত্ববিহীন প্রতিষ্ঠানের নামে ঋণসহ নানা আর্থিক অনিয়ম হয়েছে। বিভিন্ন সময়ে ব্যাংকে যে কেলেঙ্কারি বা অনিয়মগুলো হয়, সেগুলো অফিসিয়াল সূত্রে পাওয়া যায় না। সেগুলো সংবাদমাধ্যমে আসে। গণমাধ্যমকর্মীরা সেগুলো হয়তো অফিসিয়াল সূত্রেই আনেন। 

ফাহমিদা খাতুন বলেন, এগুলো কম্পাইল করে ২০০৮-২০২৩ সাল পর্যন্ত গণমাধ্যমে ২৪টি ঘটনা প্রকাশ পেয়েছে। এসব ঘটনায় ৯২ হাজার ২৬১ কোটি টাকা লোপাট হয়েছে। বিশাল এ অর্থ দিয়ে কী হতে পারে তা আপনারা হিসাব করতে পারেন। আমাদের রাজস্ব ঘাটতি কত সেটা আপনারা হিসাব করতে পারেন। সামাজিক নিরাপত্তা খাতে কত ব্যয় হচ্ছে, শিক্ষা-স্বাস্থ্য খাতে কত ব্যয় করছি। এই পরিমাণ দিয়ে আমরা কী করতে পারতাম।

তিনি আরও বলেন, এই পরিমাণ টাকা আত্মসাৎ হচ্ছে, অপচয় হচ্ছে। ব্যাংকে যে টাকা সেটা জনগণের টাকা। সেটা কীভাবে ব্যয় হচ্ছে তা চিন্তার বিষয়। সেই পরিপ্রেক্ষিতে ব্যাংকিং খাতে নিয়মকানুন বাস্তবায়ন ও সংস্কার করা জরুরি হয়ে পড়েছে।

সবকিছুর দামই বাড়তি

প্রকাশ: ১৭ মে ২০২৪, ১১:২৪ এএম
সবকিছুর দামই বাড়তি
ছবি : সংগৃহীত

কোরবানি ঈদ আসতে এখনো এক মাস বাকি। কিন্তু এখনই রসুনের দাম কেজিতে ৩০-৫০ টাকা বেড়ে গেছে। এলাচ ও জিরার দামও চড়ে গেছে। ভারত থেকে পেঁয়াজ রপ্তানির নিষেধাজ্ঞা তুলে নিলেও কমছে না দাম। খরার অজুহাতে মুরগির দামও চড়া। পোলট্রি ২০০-২২০ টাকা ও সোনালি মুরগি ৩৪০-৩৫০ টাকা কেজি। গ্রামাঞ্চলে খুবই কম দামে সবজি বিক্রি হলেও রাজধানীতে ৬০-৮০ টাকার নিচে মেলে না কোনো সবজি। এখনো বেগুনের কেজি ৮০-১০০ টাকা। সারা দেশে বোরো ধান উঠলেও কমছে না চালের দাম। বিক্রেতারা বলছেন, গোড়াতে দাম বেশি। তাই কম দামে বিক্রি করা যাচ্ছে না। 

বৃহস্পতিবার (১৬ মে) বিভিন্ন বাজার ঘুরে ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।

পেঁপের কেজি ৭০ টাকা

দেশের বিভিন্ন গ্রামাঞ্চলে কম দামে সবজি বিক্রি হলেও রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে তীব্র তাপের অজুহাতে বেশি দামেই বিক্রি হচ্ছে। বিভিন্ন বাজারে দেখা গেছে, সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ১০-২০ টাকা বেড়ে ৪০-৫০ টাকার পেঁপে ৬০-৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বেগুনের কেজি ৫০-৮০ টাকা। টমেটোর কেজি ৪০-৫০ টাকা, করলা ৬০-৭০, ঢ্যাঁড়স ৪০, শিম ৪০, মিষ্টিকুমড়া ৩০-৪০, শসা ৪০-৬০, ঝিঙে ও ধুন্দুল ৬০, সজনে ডাঁটা ৮০-১২০, পটোল ৫০-৬০, গাজর ৫০, কাঁচামরিচ ১২০-১৪০, বরবটি ৫০ টাকা কেজি। 

মোহাম্মদপুরের টাউনহল বাজারের সবজি বিক্রেতা কালু মিয়া বলেন, ‘আমরাও চাই কম দামে বিক্রি করতে। কিন্তু কিনতে তো পারি না।’ কারওয়ান বাজারের আল আমিন বলেন, ‘ঈদের পর অনেক বেড়ে গেছে দাম। তাই কম দামে বিক্রি করা যায় না।’ 

গরুর মাংসের দামও চড়া

কোরবানির ঈদ ঘনিয়ে আসায় গরুর মাংসের এখন বাড়তি দাম। ঈদুল ফিতরের পর প্রতি কেজি গরুর মাংস ৭৫০ টাকায় বিক্রি হলেও বর্তমানে ৭৮০-৮০০ টাকা। কারওয়ান বাজারের মাংস ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর ও সেগুনবাগিচা বাজারের মোরতজা মন্টু বলেন, ৭৮০-৮০০ টাকা কেজি। খাসির মাংস ১ হাজার ৫০ থেকে ১ হাজার ১০০ টাকা কেজি। কারওয়ান বাজারসহ বিভিন্ন বাজারের মাংস বিক্রেতারা জানান, কোরবানির ঈদ উপলক্ষে কিছুটা দাম বাড়তে শুরু করেছে। কমবে না দাম।

বিভিন্ন পণ্যের মতো মাছের দামও কিছুটা বেড়েছে। কারওয়ান বাজারের সোহেলসহ অন্য বিক্রেতারা জানান, রুই ও কাতল ৩৫০-৫৫০ টাকা কেজি, চিংড়ি ৬০০ থেকে ১ হাজার ২০০, পাবদা ৫০০-৭০০, পাঙাশ ২০০, তেলাপিয়া ২৫০, শিং ও মাগুর ৪০০-৬০০ টাকা কেজি। পানি কমে যাওয়ায় নদী-খাল-বিলে মাছ কমে গেছে। এ জন্য দাম একটু বেশি। 

আদার কেজি ৩০০ টাকা

কোরবানি ঈদে মসলার মধ্যে পেঁয়াজ, আদা, রসুন, জিরাসহ অন্যান্য মসলা বেশি দরকার হয়। এবার দেশে প্রচুর পেঁয়াজ উৎপাদন হয়েছে। তার পরও দাম কমছে না। ভারত পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করলেও হঠাৎ করে দাম বেড়ে যায়। কিন্তু সম্প্রতি তা প্রত্যাহার করলেও সেই ঘোষণার কোনো প্রভাব দেখা যায় না। কারওয়ান বাজারের মিনহাজ বাণিজ্যালয়ের খলিল বলেন, ‘ভারতের ঘোষণায় কমবে না পেঁয়াজের দাম। কারণ মৌসুম শেষ। বেপারিরা আস্তে আস্তে ছাড়বেন বাজারে।’ পাইকারিতেই ৬০-৭২ টাকা কেজি। সেই পেঁয়াজই বিভিন্ন বাজারে ৭০-৮০ টাকা কেজি। 

টাউনহল বাজারের খুচরা বিক্রেতা রফিক বলেন, পেঁয়াজের কেজি ৭০-৮০ টাকা। অন্য খুচরা বিক্রেতারাও বলছেন, কমবে না পেঁয়াজের দাম। 

গত সপ্তাহে ২৩০ টাকা কেজিতে রসুন বিক্রি হলেও সপ্তাহের ব্যবধানে ২৪০ টাকা হয়ে গেছে। দেশি রসুনও ২০০ টাকা। কোথাও ২৩০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে বলে বিক্রেতারা জানান। তারা জানান, কাঁচামাল সকালে এক রেট তো বিকেলে আরেক দর। 

কারওয়ান বাজারের এরশাদ বলেন, ঈদের আগে আদার দাম বেড়ে গেছে। কেরালার (ভারত) আদার কেজি ৩০০ টাকা। বার্মারটা ২৮০ টাকা, চায়না আদার কেজি ২৪০ টাকা। 

কারওয়ান বাজারের আল্লাহর দান স্টোরের শাহ আলম বলেন, এলাচের কেজিতে ২০০-৩০০ টাকা বেড়ে ২ হাজার ৪০০ টাকা কেজি হয়ে গেছে। ৬০০ টাকা জিরার কেজি ৭৫০-৮০০ টাকা হয়ে গেছে। তবে লবঙ্গ ও দারুচিনির দাম তত বাড়েনি।

ব্যাপকভাবে আলোচনা হলেও আলুর দাম কমেনি। তবে বাড়েওনি। টাউনহল বাজারের রফিক বলেন, বর্তমানে ৫০-৫৫ টাকা কেজি। দাম কমবে কি না? এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘আমরা বেশি দামে কিনেছি। আড়তেই বেশি দাম। তাই কম দামে বিক্রি করা যাচ্ছে না।’ 

কমে না মুরগির দাম 

এপ্রিলে দেশে চলমান দাবদাহে খামারের মুরগি মরে যাওয়ার অজুহাতে কমে না মুরগির দাম। টাউনহল বাজারের ব্রয়লার হাউসের বেল্লাল হোসেন বলেন, গত সপ্তাহের মতোই পোলট্রি মুরগির কেজি ২০০-২২০ টাকা, সোনালি ৩৮০-৩৯০ টাকা। 

কারওয়ান বাজারের কিচেন ব্রয়লার হাউসের হেফাজত বলেন, পোলট্রি ২২০ টাকা, সোনালি ৪০০ ও দেশি মুরগি ৭০০ টাকা কেজি। অন্যান্য বাজারের খুচরা বিক্রেতারাও বলেন, তাপপ্রবাহের কারণে কয়েক দিন থেকে মুরগির সরবরাহ কমে গেছে। এ জন্য দাম বাড়ছে। ঈদের পর ডিমের দাম ছিল ১১০-১২০ টাকা ডজন। বাড়তে বাড়তে এখন ডজন ১৪০-১৫০ টাকা হয়েছে বলে বিক্রেতারা জানান।

কমে না চালের দাম 

হাওরসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় বোরো ধান উঠতে শুরু করেছে। তার পরও চালের দাম কমছে না। আগের মতোই প্রতি কেজি নাজিরশাইল মানভেদে ৭০-৮০ টাকা, মিনিকেট ৭২-৭৫, আটাশ চাল ৫৫-৬০ ও মোটা চাল ৪৮-৫২ টাকা কেজি বলে বিক্রেতারা জানান। পোলাওয়ের প্যাকেট চাল ১৭০-১৮০ টাকা কেজি ও বস্তার পোলাওয়ের চাল ১৪০-১৪৫ টাকা কেজি। 

কারওয়ান বাজারের আল্লাহর দান রাইস এজেন্সির আলাউদ্দিন বলেন, ‘ধান উঠে গেছে। তার পরও মিলে কমছে না চালের দাম। আমাদের বেশি দামেই কিনতে হচ্ছে। সিন্ডিকেট করেই মিল থেকে দাম বাড়াচ্ছে। সরকার কঠোর না হলে কমবে না দাম। মিলে ধরলেই সব ঠিক হয়ে যাবে।’ 

এই বাজারের হাজি রাইস এজেন্সির মাঈনুদ্দিনও বলেন, ‘আপনারা জানতে চান দাম কমেছে কি না। এভাবে দাম কমবে না। সিন্ডিকেট করেই চালের দাম বাড়ানো হচ্ছে। আমনে কমেনি। বোরো মৌসুমেও কমবে না। কারণ সরকার শুধু বাজারে অভিযান করে। মিলে না করা পর্যন্ত দাম কমবে না।’

চোরাই চিনি কম দামে বিক্রি 

বিভিন্ন বাজারে বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৬৭ টাকা ও পাঁচ লিটার ৮১০-৮১৮ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। কারওয়ান বাজারের ইউসুফ স্টোরের ইউসুফ বলেন, রমজানে চাহিদা বাড়ায় দাম বাড়ে। কিন্তু এক মাসেরও বেশি আগে ঈদ হয়েছে। তার পরও আগের মতো ছোলা ১১০ টাকা কেজি, বেসন ১২০, খোলা চিনি ১৪০, প্যাকেট চিনি ১৪৫ টাকা। তবে ভারতের চোরাই চিনি বিভিন্ন বাজারে ছেয়ে গেছে। এ জন্য কম দামে পাওয়া যাচ্ছে। ১২০-১৩০ টাকা কেজি বলে বিক্রেতারা জানান। দুই কেজি আটা ১১০-১৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

একক গ্রাহক ঋণসীমা শিথিল চান ব্যবসায়ীরা

প্রকাশ: ১৭ মে ২০২৪, ১১:১২ এএম
একক গ্রাহক ঋণসীমা শিথিল চান ব্যবসায়ীরা

ডলারের বিপরীতে টাকার দর ৭ টাকা পতনের কারণে শিল্পোদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ীদের একক গ্রাহক ঋণসীমা বেড়ে গেছে, দাবি করে ওই ঋণসীমা শিথিলের আবেদন করেছেন শীর্ষ ব্যবসায়ী নেতারা। 

বৃহস্পতিবার (১৬ মে) ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশন (এফবিসিসিআই) সভাপতির নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে এ আবেদন জানিয়েছে। এর আগে গত বুধবার একক গ্রাহক ঋণসীমা বাড়ানো হবে না, মর্মে আদেশ জারি করে বাংলাদেশ ব্যাংক। 

গভর্নরের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে এ বিষয়ে এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, একক গ্রাহক ঋণসীমা হঠাৎ বেড়েছে ডলার রেটের কারণে। ডলারের দাম এক সঙ্গে ৭ টাকা বৃদ্ধির কারণে যে পরিমাণ ঋণ বেড়েছে, সে পরিমাণ টাকার দীর্ঘমেয়াদি ঋণের আবেদন করেছেন ব্যবসায়ীরা।  

তিনি জানান, এখানে বিশেষ বিবেচনায় ছাড় দেওয়ার কথা জানিয়েছেন গভর্নর।

গত সপ্তাহের বুধবার সুদহারের করিডোর পদ্ধতি বা ট্রেজারি বিলের গড়হারের সঙ্গে তিন শতাংশ যোগ করার স্মার্ট (সিক্স মান্থ এভারেজ রেট অব ট্রেজারি বিলস) পদ্ধতি প্রত্যাহারের পর অনানুষ্ঠানিক এ নতুন ঘোষণা এল। গত বুধবারের ওই আদেশে সুদহার ব্যাংক গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে বা বাজারের ওপর ছেড়ে দেওয়া হয়।

এফবিসিসিআই সভাপতি সাংবাদিকদের জানান, বারবার সুদহার পরিবর্তন করায় ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, মর্মে অবহিত করলে গভর্নর তাদের আশ্বাস দেন যে, ‘সুদহার ১৪ শতাংশের বেশি হবে না।’ গভর্নর তাদের আরও জানান যে, ‘ইতোমধ্যে সুদহার বাজারের ওপর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে এবং এর ফলে একটা ভারসাম্য ফিরে আসতে শুরু করেছে।’ 

এর আগে অর্থনীতিবিদরা পরামর্শ দিয়েছিলেন যে, সুদহার যেন কোনো রকম হস্তক্ষেপ করা না হয় এবং তা বাজারভিত্তিক করা হয়। 

এফবিসিসিআই নেতৃবৃন্দ গভর্নরের সঙ্গে বৈঠকে আগামী বাজেটের বিভিন্ন ইস্যুতে সরকারের আর্থিক নীতিমালার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নীতি নির্ধারণের গুরুত্ব তুলে ধরে ব্যবসা ও বিনিয়োগ বান্ধব পরিবেশ সৃষ্টির তাগিদ দেন।

মাহবুবুল আলম বলেন, ডলারের দাম হঠাৎ করেই ৭ টাকা বেড়ে যাওয়ার ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ব্যবসায়ীরা। আমরা গভর্নরকে বলেছি এটি যেন ১১৭ টাকায় থাকে।

তিনি জানান, গভর্নর বলেছেন, ‘ডলারসংকট রয়েছে। আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে সংকট পুরোপুরি কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হবে।’

সাক্ষাতের সময় উপস্থিত ছিলেন বিজিএমইএ সভাপতি এস এম মান্নান কচি, বিটিএমএ সভাপতি মোহাম্মদ আলী খোকন, বিকেএমইএর নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম, এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি জসিম উদ্দিন এবং প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের চেয়ারম্যান ও সিইও আহসান খান চৌধুরী।

পুঁজিবাজারের পতন ঠেকানো যাচ্ছে না

প্রকাশ: ১৭ মে ২০২৪, ১১:১০ এএম
পুঁজিবাজারের পতন ঠেকানো যাচ্ছে না
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ

দেশের পুঁজিবাজারে পতন ঠেকানো যাচ্ছে না। টানা দরপতনের চক্রে আটকে গেছে দেশের পুঁজিবাজার। সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসেও পতন অব্যাহত ছিল। টানা পাঁচ কার্যদিবসের পতনে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রধান মূল্যসূচক হ্রাস পেয়েছে ১৪৩ পয়েন্ট।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রিজার্ভ কমে যাওয়ার সংবাদ, রিজার্ভ চুরি হওয়ার গুঞ্জন, আগামী অর্থবছরের বাজেটে ক্যাপিটাল গেইন ট্যাক্স আরোপের গুঞ্জন এবং দাম কমার সর্বোচ্চ সীমা ৩ শতাংশ বেঁধে দেওয়ার কারণে পুঁজিবাজারে এই টানা দরপতন হচ্ছে।

মিডওয়ে সিকিউরিটিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আশিকুর রহমান খবরের কাগজকে বলেন, পুঁজিবাজারে কয়েকটি কারণে দরপতন হচ্ছে। এর মধ্যে একটি কারণ জাতীয় দৈনিকগুলোতে খবর প্রকাশিত হয়েছে যে, রিজার্ভ ১৩ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে গেছে। আবার ভারতীয় গণমাধ্যমে সংবাদ হয়েছে, রিজার্ভ চুরি হয়েছে। রিজার্ভ নিয়ে এমন সংবাদ প্রকাশ হওয়ায় বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। ফলে পুঁজিবাজারে টানা দরপতন দেখা যাচ্ছে। এখন রিজার্ভের প্রকৃত চিত্র কী, সেটা বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে স্পষ্ট করা উচিত।

তিনি বলেন, ‘দরপতনের আর একটি কারণ হলো ক্যাপিটাল গেইন ট্যাক্স নিয়ে ছড়িয়ে পড়া গুঞ্জন। আমরা শুনেছিলাম পুঁজিবাজারে ক্যাপিটাল গেইনের ওপর ট্যাক্স বসানো হবে না। কিন্তু এখন আবার গুঞ্জন ছড়িয়েছে আগামী বাজেটে ক্যাপিটাল গেইনে ট্যাক্স বসানো হতে পারে। ফলে বাজারের ওপর বিনিয়োগকারীদের আস্থাহীনতা সৃষ্টি হয়েছে। এর সঙ্গে দাম কমার সর্বনিম্ন সীমা ৩ শতাংশ বেঁধে দেওয়ায় বাজারে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে।’

আশিকুর রহমান বলেন, বিনিয়োগকারীরা স্বাভাবিক লেনদেন করতে চান। কিন্তু দাম কমার সীমা ৩ শতাংশ বেঁধে দেওয়ার কারণে স্বাভাবিক লেনদেন-প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। টাকা আটকে যেতে পারে- এমন শঙ্কায় একশ্রেণির বিনিয়োগকারী শেয়ার বিক্রির চাপ বাড়াচ্ছেন। আর বিক্রির চাপ বাড়ায় বাজারে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।

বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, গতকাল বৃহস্পতিবার লেনদেনের শুরুতে পুঁজিবাজারে বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়তে থাকে। এতে লেনদেনের শুরুতে সূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা লক্ষ করা যায়। তবে লেনদেন শুরুর আধা ঘণ্টা পর থেকে বিনিয়োগকারীরা শেয়ার বিক্রির চাপ বাড়ান। এতে বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম হ্রাস পেতে থাকে। এতে সূচকেরও পতন হতে থাকে। 

গতকাল ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেন হওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে দাম বেড়েছে ১২২ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। বিপরীতে দাম কমেছে ২১৫ প্রতিষ্ঠানের। একই সঙ্গে অপরিবর্তিত ছিল ৫৭টি প্রতিষ্ঠান। এতে দিন শেষে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ৯ পয়েন্ট কমে ৫ হাজার ৫১৯ পয়েন্টে অবস্থান করছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ সূচক আগের দিনের তুলনায় শূন্য দশমিক ৮০ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ২১২ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে এবং বাছাই করা ভালো ৩০ কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৩ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৯৭৩ পয়েন্টে অবস্থান করছে। দিন শেষে ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬৭৬ কোটি ৭৯ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৫২৬ কোটি ৩৩ লাখ টাকা। সে হিসাবে লেনদেন বেড়েছে ১৫০ কোটি ৪৬ লাখ টাকা।

একনেকে ২ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকার এডিপি অনুমোদন

প্রকাশ: ১৬ মে ২০২৪, ০৩:৫৯ পিএম
একনেকে ২ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকার এডিপি অনুমোদন
ছবি : সংগৃহীত

২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য ২ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন বাজেট বা বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) অনুমোদন দেওয়া হয়েছে, যা গত অর্থবছরের তুলনায় দুই হাজার কোটি টাকা বেশি। 

বৃহস্পতিবার (১৬ মে) রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদ (এনইসি) সভায় এ অনুমোদন দেওয়া হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। 

সভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত তুলে ধরেন পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব সত্যজিৎ কর্মকার। এ সময় পরিকল্পনামন্ত্রী মেজর জেনারেল (অব.) আব্দুস সালাম ও প্রতিমন্ত্রী শহীদুজ্জামান সরকার উপস্থিত ছিলেন। 

পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, এবারের এডিপিতে রয়েছে ১ হাজার ৩২১টি প্রকল্প। এতে সরকারি ব্যয় হবে ১ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকা। আর বিদেশি ঋণ ও অনুদান থেকে আসবে ১ লাখ কোটি টাকা।

সালমান/ 

পুঁজিবাজার উন্নয়নে দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগ চায় ডিএসই

প্রকাশ: ১৬ মে ২০২৪, ০১:০২ পিএম
পুঁজিবাজার উন্নয়নে দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগ চায় ডিএসই
মার্চেন্ট ব্যাংক প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকে ডিএসই চেয়ারম্যান

একটি উন্নত দেশের পুঁজিবাজার সে দেশের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। অন্যান্য দেশে দেখা যায়, সে দেশের মানি মার্কেট যতটা সাপোর্ট দেয় পুঁজিবাজারও ততটুকুও সাপোর্ট দেয়। আমরা সব সময় বলে আসছি যে পুঁজিবাজারে দীর্ঘ মেয়াদে বিনিয়োগ না করলে পুঁজিবাজার স্থিতিশীল হবে না‌। । আপনারা ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের নিয়ে কথা বলেছেন। আমাদের প্রধানমন্ত্রীও কিন্তু বলে থাকেন বাজারে উত্থান পতন থাকবে। কিন্তু আমাদের সাধারণ বিনিয়োগকারীরা এখানে এসে পরের দিনই লাভ তুলতে চান। আর এ কারণেই বড় পতন হয়। সে জায়গাতে আমাদের সকলের কাজ করার সুযোগ রয়েছে। 

গতকাল বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মাজেদা খাতুনের নেতৃত্বে ১৫ সদস্যের কমিটির সঙ্গে বৈঠককালে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ পিএলসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. হাফিজ মুহম্মদ হাসান বাবু এসব কথা বলেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ডিএসইর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. এ টি এম তারিকুজ্জামান, সিপিএ, প্রধান রেগুলেটরি কর্মকর্তা খায়রুল বাসার আবু তাহের মোহাম্মদসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

তিনি আরও বলেন, পুঁজিবাজারের অন্যতম স্টেকহোল্ডার হলো মার্চেন্ট ব্যাংক। 

শেয়ারবাজারের টেকসই উন্নয়নে ভালো শেয়ারের সরবরাহ বাড়ানো, সংশ্লিষ্ট অংশীজনের মধ্যে সমন্বয় এবং বিনিয়োগকারীদের সচেতনতা বাড়ানো মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোর অন্যতম প্রধান কাজ। দীর্ঘদিন ধরে দেশের পুঁজিবাজার পরিস্থিতি অনুকূলে নয়। বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত থেকে বোঝা যায়, বাজারে অর্থের জোগান কম ছিল। সাম্প্রতিক সময়ে প্রধানমন্ত্রী পুঁজিবাজার উন্নয়নে সরকারি কোম্পানিগুলোকে পুঁজিবাজারে আনার নির্দেশ দিয়েছেন, যা এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ। যা ইতোমধ্যে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আগ্রহ ও সাহস জোগাচ্ছে। মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোর ব্যাপক ভূমিকা পালনের মাধ্যমেই প্রধানমন্ত্রীর সুদূরপ্রসারী দিকনির্দেশনা বাস্তবায়ন সম্ভব। 

ড. হাসান বাবু আরও বলেন, তালিকাভুক্ত ও অ-তালিকাভুক্ত কোম্পানির মধ্যে করের উল্লেখযোগ্য ব্যবধান না করা গেলে ভালো কোম্পানি বাজারে তালিকাভুক্ত করা যাবে না। বাংলাদেশে যেসব গ্রিন ফ্যাক্টরি রয়েছে সেগুলো তালিকাভুক্তিতে কাজ করতে হবে।

মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোর উদ্দেশে তিনি বলেন, বাজারের গভীরতা বৃদ্ধি তথা ভালো কোম্পানিগুলোকে তালিকাভুক্তিতে উৎসাহিত করার পাশাপাশি মার্চেন্ট ব্যাংকের প্রধান কাজ হচ্ছে পুঁজিবাজারে ভালো ভালো কোম্পানি তালিকাভুক্ত করা। যা পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগে  আকৃষ্ট করে। বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে সুনির্দিষ্ট ইস্যু নিয়ে কথা বলতে হবে। নতুন নতুন কর্মপরিকল্পনা নিয়ে তিনি সামনে এগিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান। বাজার উন্নয়নে যদি ডিএসই, মার্চেন্ট ব্যাংক এবং ডিবিএ একসঙ্গে কাজ করে তাহলে এগিয়ে যাওয়ার পথ সুগম হবে বলে আমি বিশ্বাস করি।

ডিএসইর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. এ টি এম তারিকুজ্জামান, আমরা বিগত ২৫ বছর ধরে এ কাজটি করার চেষ্টা করছি। আমরা গত ৫ মে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগে একটি চিঠি দিয়ে সরকারি কোম্পানিগুলোর সঙ্গে সচেতনতামূলক কর্মসূচির আয়োজন করতে চেয়েছি, যাতে তারা সহজে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হতে পারে। এর কিছুদিন পর প্রধানমন্ত্রী এই যুগান্তকারী নির্দেশনাটি দিয়েছেন। আশা করছি আগামী জুন মাসের মধ্যে আমরা সচেতনতামূলক কর্মসূচিটি করতে পারব। আর এই বিষয়ে আপনাদের আমরা সহযোগী হিসেবে চাই।

তার আগে মার্চেন্ট ব্যাংকের সভাপতি মাজেদা খাতুন ও অন্য বক্তারা বলেন, প্রধানমন্ত্রী নিজেই চিন্তা করছেন কীভাবে মার্কেটের উন্নয়ন করা যায়। এতে আমরা মার্চেন্ট ব্যাংকার্সরা উৎসাহিত হয়েছি। আমাদের মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশন থেকে দীর্ঘদিনের একটি দাবিছিল রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন কোম্পানিগুলো পুঁজিবাজারে আসুক। কারণ রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন কোম্পানিগুলো অনেক বড় সাইজের কোম্পানি। এই কোম্পানিগুলো মার্কেটে এলে মার্কেটের কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন হবে, যা আমরা দেখতে পারব। যে জটিলতায় হোক বা যে কারণেই হোক বিষয়টি এতদিন আটকে ছিল। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনাটা যেহেতু চলে এসেছে, আশা করছি এই বিষয়টি নিয়ে আমরা খুব শিগগির কাজ শুরু করতে পারব।

এ ছাড়া অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে বাজার উন্নয়নে বেশ কিছু প্রস্তাবনা তুলে ধরা হয়। এর মধ্যে দ্বৈত কর পরিহার,  গুণগত মানসম্পন্ন আইপিও আনা, আইপিও প্রাইসিং সিস্টেম, প্রাতিষ্ঠানিক সুশাসন, মার্জার একুইজেশন, পলিসিগত প্রতিবন্ধকতা, ঘন ঘন আইন-কানুন পরিবর্তন না করা, কাট-অফ মূল্যের অধিক মূল্যে বিডকারীদের প্রোরাটার ভিত্তিতে সিকিউরিটিজ প্রদান, আইপিওর কোটা ও লক-ইন পিরিডের কিছু সংশোধনী আনা, সিকিউরিটিজ ভ্যালুয়েশনের ক্ষেত্রে মার্কেট অ্যাপ্রোচ ও ইনকাম অ্যাপ্রোচ মেথড অনুসরণ করা, বিডিংয়ের সম্মতি পাওয়ার পরই রোডশোর আয়োজন করা, মার্জিন ঋণের আইনে কিছু পরিবর্তন আনা, গবেষণায় জোর দেওয়া ইত্যাদি বিষয় অন্যতম।  আমরা আশা করি, বিএসইসি, বাংলাদেশ ব্যাংক, এনবিআরসহ সব রেগুলেটর এ সকল সমস্যা সমাধানে একসঙ্গে কাজ করবে।