![শরীয়তপুরে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে সরিষার আবাদ](uploads/2024/02/22/1708585189.mustard.jpg)
করোনা পরবর্তী সময়ে দেশে ভোজ্যতেলের সংকট দেখা দেয়। তখন ২০২৫ সালের মধ্যে দেশে ৪০ শতাংশ তেল ফসল উৎপাদন বাড়ানোর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। একক জেলা হিসেবে শরীয়তপুর ইতোমধ্যে সে লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করেছে।
উন্নত জাতের স্বল্পমেয়াদি সরিষার আবাদের ফলে চার বছরের ব্যবধানে ইতোমধ্যে জাতীয় লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করে ৬২ দশমিক ৭৫ শতাংশ উৎপাদন বাড়ার কথা জানিয়েছে জেলা কৃষি বিভাগ।
এর মাধ্যমে শুধু জেলার নিরাপদ ভোজ্যতেলের ঘাটতিই কমবে না জাতীয় পর্যায়ের ঘাটতি কমাতেও সহায়ক ভূমিকা পালন করবে বলে মনে করছে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। এ বছর জেলায় ১৪ হাজার ৪৫০ হেক্টর জমিতে অধিক তেল উৎপাদনশীল জাতসহ স্থানীয় জাতের সরিষা আবাদ হয়েছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক রবীআহ নুর আহমেদ বলেন, ‘২০২০-২০২১ অর্থবছরে সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী ২০২৫ সালের মধ্যে ভোজ্যতেলের ৪০ শতাংশ উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি। আমরা লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করে ৬২ দশমিক ৭৫ শতাংশ সরিষার আবাদ বৃদ্ধি করতে সক্ষম হয়েছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘২০২১-২২ অর্থবছরে শরীয়তপুরে ১০ হাজার ৮৮০ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ হয়। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে সেখানে ১৪ হাজার ৪৫০ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছে। আবাদ করা জাতের মধ্যে রয়েছে স্বল্পমেয়াদি বারি-১৪, বারি-১৫, বারি-১৭, বিনা-৯ ও বিনা-১০ জাতের সরিষা। বোরো আবাদ স্বাভাবিক রেখে অতিরিক্ত ফসল হিসেবে সরিষা উৎপাদন বাড়াতে মাঠ পর্যায়ে আমরা বিভিন্ন উন্নত জাতের স্বল্পমেয়াদি জাতের সরিষা আবাদে কৃষকদের পরামর্শ ও সহায়তা দিয়ে আসছি। যেন বোরোর মধ্যবর্তী অতিরিক্ত ফসল হিসেবে সরিষা আবাদ করে তেলের উৎপাদন বৃদ্ধিসহ কৃষক অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হতে পারেন। এতে করে শুধু কৃষক পর্যায়ে নিরাপদ ভোজ্যতেলের ঘাটতিই কমবে না জাতীয় ঘাটতি পূরণেও গুরুত্বপূর্ণ সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। কমবে ভোজ্যতেলের আমদানি নির্ভরতা।’
জেলার ভেদরগঞ্জ উপজেলার কাচিকাটা ইউনিয়নের বোরোকাঠি গ্রামের কৃষক আবুল হাশেম সরদার বলেন, ‘আগে আমরা স্থানীয় জাতের রোপা আমন ধান আবাদ করলে বোরো আবাদের মাঝে সরিষা আবাদ করার সুযোগ পেতাম না। তবে দুই বছর ধরে কৃষি বিভাগের পরামর্শে বিনা-৭ জাতের রোপা আমন করায় ধান কেটে আবার বারি-১৪ জাতের সরিষা আবাদ করছি। এতে খুব সহজেই ওই জমিতে বোরো আবাদ করতে পারছি। এতে অতিরিক্ত ফসল হিসেবে বিঘাপ্রতি ৭ থেকে ৮ মণ সরিষাও পাচ্ছি।’
ডামুড্যা উপজেলার পূর্ব ডামুড্যা ইউনিয়নের চর ঠেঙ্গারবাড়ি গ্রামের কৃষক কামাল উদ্দিন বলেন, ‘বাজারে খাবার তেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় উপজেলা কৃষি বিভাগের পরামর্শে আমরা তিন বছর ধরে বেশি তেল হয় এমন জাতের সরিষার আবাদ বাড়িয়েছি। তাই দুই বছর ধরে নিজেদের সরিষা ভাঙিয়ে তেল খেতে পারছি। এখন আর বাজার থেকে বেশি দামে সয়াবিন তেল কিনতে হয় না। নিজেরা যেমন নিরাপদ সরিষার তেল খেতে পারছি, বিক্রি করতে পারছি, আবার আত্মীয়-স্বজনকেও কিছু দিতে পারছি।’ সূত্র: বাসস