রেমিট্যান্সে শীর্ষে ইসলামী ব্যাংক । খবরের কাগজ
ঢাকা ৩১ বৈশাখ ১৪৩১, মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪

রেমিট্যান্সে শীর্ষে ইসলামী ব্যাংক

প্রকাশ: ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১১:১৩ পিএম
রেমিট্যান্সে শীর্ষে ইসলামী ব্যাংক

চলতি এপ্রিল মাসের প্রথম ২৬ দিনে দেশে সর্বাধিক রেমিট্যান্স এসেছে ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে। একক ব্যাংক হিসেবে আবারও সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স এলো এই ব্যাংকে।

রবিবার (২৮ এপ্রিল) বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

প্রতিবেদনে জানা যায়, ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে ২৬ এপ্রিল পর্যন্ত রেমিট্যান্স এসেছে ৪৬ কোটি ৫০ লাখ ৫০ হাজার ডলার। যা বাংলাদেশি টাকায় পাঁচ হাজার ১১৫ কোটি ৫৫ লাখ টাকা (প্র‌তি ডলার ১১০ টাকা হিসাবে)। অন্য কোনো ব্যাংক এর ধারেকাছেও নেই।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন বলছে, চলতি মাসের প্রথম ২৬ দিনে দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ১৬৮ কোটি ৯ লাখ ৭০ হাজার ইউএস ডলার। বাংলাদেশের মুদ্রায় যার পরিমাণ ১৮ হাজার ৪৯০ কোটি ৬৭ লাখ টাকা।

এর আগে চলতি বছরের জানুয়ারিতে দেশে রেমিট্যান্স আসে ২১১ কোটি ৩১ লাখ ৫০ হাজার ডলার। ফেব্রুয়ারিতে ২১৬ কো‌টি ৪৫ লাখ ৬০ হাজার ডলার এবং মার্চে ১৯৯ কোটি ৬৮ লাখ ৫০ হাজার ডলার।

এই তালিকায় পরের অবস্থান ব্র্যাক ব্যাংকের। এই ব্যাংকের মাধ্যমে ১০ কোটি ৫৬ লাখ ২০ হাজার ডলার রেমিট্যান্স এসেছে।

এছাড়া সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে ৯ কোটি ১৯ লাখ ৩০ হাজার ডলার, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের মাধ্যমে আট কোটি ৯৮ লাখ ডলার এবং জনতা ব্যাংকের সাত কোটি ৪৩ লাখ ৪০ হাজার ডলার রেমিট্যান্স।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাপ্তাহিক হিসাবে দেখা যায়, ১ থেকে ৫ এপ্রিল পর্যন্ত ৪৫ কোটি ৫৪ লাখ ২০ হাজার ডলার, ৬ থেকে ১২ এপ্রিল পর্যন্ত ৪২ কোটি ১৬ লাখ ৮০ হাজার ডলার, ১৩ থেকে ১৯ এপ্রিল পর্যন্ত ৪০ কোটি ৪৪ লাখ ১০ হাজার ডলার এবং ২০ থেকে ২৬ এপ্রিল পর্যন্ত ৩৯ কোটি ৯৪ লাখ ৬০ হাজার ডলার রেমিট্যান্স এসেছে।

অমিয়/

এমএমএফ খাতে চীনের বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগের আহ্বান বিজিএমইএর

প্রকাশ: ১৩ মে ২০২৪, ০৭:৩৩ পিএম
এমএমএফ খাতে চীনের বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগের আহ্বান বিজিএমইএর
চীনের পোশাক ও টেক্সটাইল এন্টারপ্রাইজের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে একটি প্রতিনিধিদল সেমবার বিজিএমইএ পরিদর্শনে আসে। এ সময় তাদের স্বাগত জানান বিজিএমইএর সভাপতি এস এম মান্নান (কচি)। এ সময় বিজিএমইএর অন্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশের পোশাকশিল্পে ম্যান-মেইড ফাইবারভিত্তিক (এমএমএফ) ফ্যাব্রিক্সের ক্রমবর্ধমান চাহিদার উল্লেখ করে চীনের বিনিয়োগকারীদের এই খাতে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ)। সেই সঙ্গে টেক্সটাইল মেশিনারি, কারিগরি টেক্সটাইল ও পুনর্ব্যবহারযোগ্য শিল্পের মতো উদীয়মান খাতগুলোতেও বিনিয়োগের আহ্বান জানানো হয়।

সোমবার চীনের নেতৃস্থানীয় পোশাক ও টেক্সটাইল এন্টারপ্রাইজের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে একটি উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বিজিএমইএর বৈঠকে এই আহ্বান জানানো হয়। চীনের প্রতিনিধিদলটির নেতৃত্ব দেন চায়না ন্যাশনাল গার্মেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের (সিএনজিএ) এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট জি কিং।

বৈঠকে বিজিএমইএর পক্ষে নেতৃত্ব দেন সংগঠনটির সভাপতি এস এম মান্নান (কচি) এবং আলোচনায় অংশ নেন বিজিএমইএর সিনিয়র সহসভাপতি খন্দকার রফিকুল ইসলাম, সহসভাপতি আরশাদ জামাল (দীপু), সহসভাপতি (অর্থ) মো. নাসির উদ্দিন, সহসভাপতি আব্দুল্লাহ হিল রাকিব, পরিচালক মো. ইমরানুর রহমান ও মো. নুরুল ইসলাম।

ঢাকার উত্তরায় বিজিএমইএ কমপ্লেক্সে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকের লক্ষ্য ছিল বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়ানোর সম্ভাব্য উপায়গুলো অনুসন্ধান করা। বৈঠকে উভয়পক্ষ মতবিনিময় করেন এবং পারস্পরিক সুবিধার সম্ভাব্য ক্ষেত্রগুলোতে একসঙ্গে কাজ করার কথা জানান।

বৈঠকে তারা সম্ভাব্য যৌথ উদ্যোগ, বিনিয়োগের সুযোগ ও কৌশলগত অংশীদারত্ব নিয়েও আলোচনা করেন। এই আলোচনার লক্ষ্য হলো পোশাক ও বস্ত্রখাতে টেকসই প্রবৃদ্ধি সহজতর করা।

চীনা প্রতিনিধিদলটি পারস্পরিক সহযোগিতার ভিত্তিতে পোশাকশিল্পে উদ্ভাবন ও সাসটেইনেবিলিটি বাড়াতে বাংলাদেশি সরবরাহকারীদের সঙ্গে অংশীদারত্ব বাড়ানোর প্রতি গভীর আগ্রহ প্রকাশ করেন।

বৈঠকে বিজিএমইএর নেতারা বাংলাদেশের পোশাকশিল্পে দেশের শক্তিশালী অবকাঠামো, দক্ষ কর্মীবাহিনী ও ব্যবসার অনুকূল পরিবেশ তুলে ধরেন। তারা বৈশ্বিক মান ও ভোক্তাদের প্রত্যাশার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে টেকসই চর্চা এবং উৎপাদনে বাংলাদেশের প্রতিশ্রুতি তুলে ধরেন। সেই সঙ্গে তারা শিল্পের বিকাশে প্রযুক্তিগত জ্ঞান ও দক্ষতার গুরুত্ব স্বীকার করে, বাংলাদেশি কোম্পানিগুলোর উন্নয়নে সহায়তা করার জন্য সর্বোত্তম অনুশীলন এবং প্রযুক্তিগত জ্ঞান বিনিময়ের ওপর জোর দেন।

ইসমাঈল/

‘উৎসে কর’ থেকে আরও বেশি রাজস্ব আদায় করতে চায় এনবিআর

প্রকাশ: ১৩ মে ২০২৪, ০১:২৮ পিএম
‘উৎসে কর’ থেকে আরও বেশি রাজস্ব
আদায় করতে চায় এনবিআর
খবরের কাগজ গ্রাফিক্স

আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছরে উৎসে কর কর্তন থেকে আরও বেশি রজস্ব আদায় করার পরিকল্পনা নিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। মূলত আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) শর্ত পূরণে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে এনবিআর আয়কর বা প্রত্যক্ষ কর থেকে বছরে যে পরিমাণ রাজস্ব আহরণ করে থাকে তার ৬০ শতাংশ আসে উৎসে কর কর্তন থেকে। আগামী অর্থবছরের বাজেটে এই খাত থেকে ৬৫ শতাংশ রাজস্ব সংগ্রহ করার পরিকল্পনা নিয়েছে আয়কর বিভাগ।

জানা যায়, আইএমএফের লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) আগামী অর্থবছরে বাড়তি ২৬ হাজার ৪০০ কোটি টাকা ইনকাম ট্যাক্স বা আয়কর আদায় করতে হবে। আর এই লক্ষ্য অর্জনের সহজ উপায় হিসেবে এনবিআর মূলত ‘ট্যাক্স ডিডাকশন অ্যাট সোর্স’ (টিডিএস) বা উৎসে কর কর্তনের দিকে নজর দিতে চাচ্ছে। 

এনবিআরের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, কর আদায়ের একটি রোডম্যাপ তৈরি করেছে আয়কর বিভাগ। ওই রোডম্যাপ অনুযায়ী, আগামী অর্থবছরে লক্ষ্যমাত্রার বাড়তি রাজস্বের ২২ হাজার ৬৯০ কোটি টাকা টিডিএস হিসেবে আদায় করতে চায় সরকারি সংস্থাটি। 

এর মধ্যে কর ছাড় বা সুবিধা সীমিত করার মাধ্যমে ১ হাজার কোটি টাকা, কমপ্লায়েন্স ইমপ্রুভ বা উন্নতি করে ৫০০ কোটি টাকা, নতুন করদাতা সন্ধানের মাধ্যমে ২০০ কোটি টাকা এবং অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক বিষয়গুলো একীভূতকরণের মাধ্যমে আরও ৫০০ কোটি টাকা সংগ্রহ করতে চায় রাজস্ব বোর্ডের ট্যাক্স বিভাগ।

এ ছাড়া উইথহোল্ডিং রিটার্নের অডিট, অনলাইন করপোরেট ইনকাম ট্যাক্স রিটার্ন জমাদান, উন্নত অডিট ব্যবস্থা এবং করদাতাদের জন্য উন্নত পরিষেবা নিশ্চিত করে অতিরিক্ত আরও ১ হাজার ৩০০ কোটি টাকা সংগ্রহ করতে চাইছে এনবিআর।

বিশেষজ্ঞরা বলেছে, উৎসে কর কর্তনের মাধ্যমে বাড়তি যে রাজস্ব আদায়ের পরিকল্পনা করেছে এনবিআর, তা বাস্তব সম্মত নয়। তারা মনে করছেন, এর ফলে বিদ্যমান করদাতাদের ওপর করের চাপ আরও বাড়তে পারে। 

সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, উৎসে কর বা টিডিএস আদায় করা সহজ। কারণ রেট বাড়িয়ে দেওয়ার মাধ্যমে আর কিছু ফাইন বাড়িয়ে দিয়ে এ খাত থেকে বাড়তি আদায় করা যায়। কিন্তু আইএমএফের শর্ত পূরণ করতে যদি এ পথে এনবিআর হাঁটে, তা যৌক্তিক হবে না।

এতে বিদ্যমান করদাতাদের ওপর চাপ আরও বাড়তে পারে। এর চেয়ে এনবিআরের উচিত হবে, নতুন করদাতা বাড়ানোর মাধ্যমে তাদের কাছ থেকে বাড়তি রাজস্ব আদায়ের পথ তৈরি করা, বলেন তিনি।

বর্তমানে এনবিআর ৫০টির বেশি খাত থেকে টিডিএস হিসেবে আয়কর আদায় করে থাকে, যা মোট আয়করের প্রায় ৬০ শতাংশ। 

এনবিআর সূত্র জানায়, ২০২২-২৩ অর্থবছরে এনবিআর টিডিএস হিসেবে প্রায় ৭০ হাজার কোটি টাকার আয়কর আদায় করেছে। লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরে এই উপায়ে ৮৩ হাজার কোটি টাকা আদায় করতে চায়। আর নতুন যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে, তাতে আগামী অর্থবছরে কেবল টিডিএস হিসেবেই আদায় হবে ১ লাখ ৬ হাজার কোটি টাকার মতো। সে ক্ষেত্রে মোট রাজস্বে টিডিএসের অংশ আরও বেড়ে ৬৫ শতাংশ হবে।

রাজশাহীর আম বাজারে আসছে ১৫ মে

প্রকাশ: ১৩ মে ২০২৪, ০১:২৫ পিএম
রাজশাহীর আম বাজারে আসছে ১৫ মে
ছবি : খবরের কাগজ

চলতি মৌসুমে আম পাড়ার সময় নির্ধারণ করে দিয়েছে রাজশাহী জেলা প্রশাসন। সে হিসাবে আগামী ১৫ মে থেকে গাছ থেকে নিরাপদ গুটি জাতীয় আম পাড়া, সংরক্ষণ এবং বাজারজাতকরণ শুরু হবে। তবে ম্যাঙ্গো ক্যালেন্ডার মেনে প্রথমেই পাড়া হবে গুটি জাতের আম। গোপালভোগ, রানিপছন্দ ও লক্ষণভোগসহ মিষ্টি জাতের আম বাজারে আসতে শুরু করবে আগামী ২৫ মে থেকে। এরপর ১০ জুলাই আশ্বিনা ও ২০ আগস্ট গৌরমতি আম নামবে রাজশাহীর বাজারে।

রবিবার (১২ মে) জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে কৃষিবিদ, ফল গবেষক, আমচাষি ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা শেষে রাজশাহী জেলা প্রশাসন থেকে আম বাজারজাতের জন্য দিন নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে।

সভায় বলা হয়, আগামী ১৫ মে গুটি আম সংগ্রহের মধ্য দিয়ে শুরু হবে এবারের আম পাড়া কার্যক্রম। গোপালভোগ, লকনা বা লক্ষণভোগ ও রানিপছন্দ আম সংগ্রহ করা যাবে ২৫ মে থেকে। এ ছাড়া হিমসাগর ও খিরসাপাত ৩০ মে, ল্যাংড়া ও ব্যানানা আম ১০ জুন, আম্রপালি ও ফজলি আম ১৫ জুন নামানোর সময় নির্ধারণ করা হয়েছে। আর ৫ জুলাই বারি-৪, আশ্বিনা আম ১০ জুলাই, গৌড়মতি ১৫ জুলাই ও ইলামতিসহ সব জাতের নাম ২০ আগস্ট থেকে বাজারে পাওয়া যাবে।

সভায় সময়ের আগে যদি কোনো কৃষক বা ব্যবসায়ী অপরিপক্ব আম নামান তাহলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও সতর্ক করা হয়। তবে আবহাওয়াগত কারণে কোথাও আগেই আম পেকে গেলে স্থানীয় উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার কাছ থেকে প্রত্যয়নপত্র নিয়ে তারপর গাছ থেকে নামিয়ে বাজারজাত করা যাবে।

সভায় জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ বলেন, বাজারে পরিপক্ব ও নিরাপদ আম নিশ্চিত করতে প্রতি বছরই তারিখ নির্ধারণ করে দেওয়া হয়। এবারও কৃষক, কৃষি কর্মকর্তা, ব্যবসায়ীসহ সংশ্লিষ্ট সবার মতামতের ভিত্তিতেই ‘ম্যাঙ্গো ক্যালেন্ডার’ নির্ধারণ করা হয়েছে। এই সময়ের আগে যদি কোনো কৃষক বা ব্যবসায়ী অপরিপক্ব আম নামান তাহলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। হাটগুলোয় সার্বক্ষণিক পুলিশ থাকবে। সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং সহকারী কমিশনাররাও বিষয়টি দেখভাল করবেন বলে জানান তিনি।

রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানিয়েছে, গত মৌসুমে জেলায় ১৮ হাজার ৫১৫ হেক্টর জমিতে আম চাষ হয়েছিল। এ বছর জেলায় আম চাষ হয়েছে ১৯ হাজার ৫৭৮ হেক্টর জমিতে। গত বছর জেলায় আম উৎপাদনের পরিমাণ ছিল ২ লাখ ৬ হাজার ১৫৬ টন। এ বছর জেলায় আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২ লাখ ৫৮ হাজার ৪৫০ টন। 

রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, জেলার ৯টি উপজেলায় ১৯ হাজার ৬০২ হেক্টর জমিতে আমবাগান রয়েছে। জেলায় এবার ২ লাখ ৬০ হাজার ১৬৪ টন আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। গতবার জেলার ১৯ হাজার ৫৭৮ হেক্টর জমি থেকে আমচাষিদের থেকে আয় হয়েছিল ১ হাজার ৫২৮ কোটি ২ লাখ ৯৯ হাজার ৭৭০ টাকা।

পুঁজিবাজারে তারল্যসংকট ৫ হাজার কোটি টাকার তহিবল চায় আইসিবি

প্রকাশ: ১৩ মে ২০২৪, ০১:১৪ পিএম
৫ হাজার কোটি টাকার তহিবল চায় আইসিবি
খবরের কাগজ গ্রাফিক্স

পুঁজিবাজারে চলছে তারল্যসংকট। সাম্প্রতিক সময় পুঁজিবাজারে ক্রয়ের তুলনায় শেয়ার বিক্রি হচ্ছে বেশি। এ সংকট থেকে বের হয়ে আসতে দেশের রাষ্ট্রায়ত্ত বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশের (আইসিবি) মাধ্যমে বাজারে অর্থের জোগান দিতে উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বাজারে তারল্যসংকট দূর করতে সরকারের পক্ষ থেকে প্রতিষ্ঠানটিকে দেওয়া হবে ৫ হাজার কোটি টাকা। এতে বাজারে তারল্যসংকট অনেকাংশে কেটে যাবে বলে মনে করছে বাজারসংশ্লিষ্টরা।

বাজারসংশ্লিষ্টরা বলেছেন, বাজারে আস্থার সংকট প্রকট। ব্যাংকে সুদের হার বাড়ায় সাধারণ বিনিয়োগকারী থেকে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী অনেকেই ব্যাংকমুখী হচ্ছেন। সাম্প্রতিক সময়ে অনেক বিনিয়োগকারী তাদের হাতে থাকা শেয়ার বিক্রি করে দিচ্ছেন। এসব কারণে শেয়ারবাজার তারল্যসংকটে পড়েছে। বাজারসংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, এ সংকট কাটাতে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ বাড়লে বাজার ঘুরে দাঁড়াবে।

সংশ্লিষ্টরা বলেন, ২০১০ সালের ভয়াবহ ধসের পর এখনো স্বাভাবিক হয়নি দেশের পুঁজিাবাজর। মাঝে মধ্যে কিছু শেয়ারের দর সাময়িকভাবে বাড়লেও বেশির ভাগ সময়ে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন সাধারণ বিনিয়োগকারীরা। দরপতন শুরু হলে নানা ধরনের উদ্যোগ নেয় বিএসইসি। কিন্তু তাতে খুব একটা কাজ হচ্ছে না। সর্বশেষ হস্তক্ষেপেও কাজ হয়নি; দরপতন চলছেই। বাজারে গতি ফেরাতে সব পক্ষের সঙ্গে বৈঠক করে বিএসইসি। সেখান থেকে সংশ্লিষ্ট স্টেক হোল্ডাররা বাজারে তারল্য সরবরাহের পরামর্শ দেয়।

এ সময় আইসিবির কাছেও বাজারে গতি আনতে সহায়তা চেয়েছে বিএসইসি। কারণ আগে দেশের পুঁজিবাজারে বড় ধরনের সহায়তা করে আসছিল আইসিবি। আইসিবির পক্ষ থেকে জানানো হয়, এই মুহূর্তে বড় ধরনের বিনিয়োগ সহায়তা দেওয়ার মতো আর্থিক সামর্থ্য সংস্থাটির নেই। তবে অর্থ সংস্থানের নানা চেষ্টা চলছে। বিভিন্ন সময়ে বাজারে সহায়তা করতে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর কাছ থেকে উচ্চ সুদে মেয়াদি আমানত নিয়েছে।

পুঁজিবাজারের বর্তমান সংকট থেকে গতি ফেরাতে বিনিয়োগ বৃদ্ধি এবং মেয়াদি ঋণ পরিশোধ করতে ৫ হাজার কোটি টাকার তহবিল চায় আইসিবি। কমিশনের পরামর্শে ইতোমধ্যে এ তহবিলের জন্য কাজ শুরু করেছে আইসিবি। আইসিবি শিগগিরই এ সংক্রান্ত প্রস্তাব অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠাবে। মন্ত্রণালয়ের এ প্রস্তাব বিচার-বিশ্লেষণ করবে। তার পর অনুমোদন দিলে টাকা ছাড় দেওয়া হবে। 

আইসিবির চেয়ারম্যান ড. সুবর্ণ বড়ুয়া খবরের কাগজকে বলেন, দেশের পুঁজিবাজারে যেকোনো সংকটে আইসিবি সহায়তা করে আসছে। বিভিন্ন ব্যাংকের কাছ থেকে মেয়াদি ঋণ নিয়েই সহায়তা করা হয়েছে। পুঁজিবাজারের জন্য সরকারের কাছ থেকে তহবিল সহায়তা পাওয়ার ব্যাপারে আমরা খুবই আশাবাদী। 

তিনি বলেন, তহবিলের একটি অংশ পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করা হবে। কিছু টাকা রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোর উচ্চমূল্যের মেয়াদি ঋণ পরিশোধ করা হবে। আশা করি, দ্রুততম সময়ে আমরা এ ঋণ পাব। এটি পেলে বাজারে বড় ধরনের ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে। 

বর্তমান বাজার পরিস্থিতিতে সরকারের কাছ থেকে বড় ধরনের তহবিল পেলে বাজার গতিশীল হবে বলে মনে করেন বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) সাবেক সভাপতি মো. ছায়েদুর রহমান। তিনি খবরের কাগজকে বলেন, এ তহবিল পেলে সরকারের জনপ্রিয়তা বাড়বে। আর পুঁজিবাজারে ভালো চললে সরকার বড় বড় প্রকল্প বাস্তবায়নের অর্থ বাজার থেকেই তুলতে পারবে।

অর্থনীতিবিদ ও পুঁজিবাজার বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক আবু আহমেদ খবরের কাগজকে বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে অনেক মন্দ কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে। এমনকি বন্ধ কোম্পানির শেয়ারের দামও বেড়েছে। এসব কোম্পানির শেয়ারদর এখন কমছে। এতে বাজারে দরপতন বাড়ছে। এ ছাড়া তারল্যসংকট রয়েছে বাজারে। তবে বাজার নিয়ে হতাশ হওয়ার কিছু নেই।  সূচক কমেছে, আবার বাড়বে।

তিনি বলেন, বাজারে তারল্যসংকট দূর করতে সরকার যে উদ্যোগ গ্রহণ করেছে তাতে পুঁজিবাজারে গতি আনতে বিশেষ ভূমিকা রাখবে। তবে এমন তহবিল দক্ষতার সঙ্গে ব্যবহারের জন্য তিনি পরামর্শ দেন। 

আইসিবির আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা যায়, অস্থিতিশীল বাজারের কারণে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে আইসিবি ২৬৭ কোটি টাকা লোকসান করেছে প্রতিষ্ঠানটি। একই সঙ্গে মূলধন লাভ ৫৯ শতাংশ কমে ১০৫ কোটি টাকা হয়েছে।

বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি), অর্থ মন্ত্রণালয় এবং আইসিবি-সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলেন, অর্থ মন্ত্রণালয়ের ঋণ নিশ্চয়তার (সভরেইন গ্যারান্টি) সাপেক্ষে বাংলাদেশ ব্যাংক বিনিয়োগ ব্যাংকটিকে এ তহবিল সরবরাহ করবে।

তথ্যে দেখা যায়, ২০২২ সালের জুলাই মাসে ফ্লোর প্রাইস ব্যবস্থা চালুর প্রায় দুই বছর পর জানুয়ারিতে তা অপসারণের পরে বাজার মূলধন প্রায় এক লাখ কোটি টাকা কমে যায়। ফ্লোর প্রাইস হলো কোনো স্টক বেচাকেনার সর্বনিম্ন মূল্য। আর শেয়ার নির্ধারিত ফ্লোর প্রাইসের নিচে নামতে পারে না। বাজারের অস্থিরতা রোধের পদক্ষেপের অংশ হিসেবে বিএসইসি ২৪ এপ্রিল তালিকাভুক্ত কোনো কোম্পানির শেয়ারের দাম দিনে ৩ শতাংশের বেশি কমতে পারবে না বলে আদেশ দেয়।

২০২২-২৩ অর্থবছরে বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠানটির মুনাফা ৪৬ শতাংশ হ্রাস পেয়ে ৭৭ কোটি টাকা হয়। এ ছাড়া ফ্লোর প্রাইস সীমাবদ্ধতার মধ্যে শেয়ার বিক্রি করতে না পারায় আইসিবি এটির আমানতের অর্থ ফেরত দিতে ব্যর্থ হয়েছে।

২০২২-২৩ অর্থবছরের বার্ষিক প্রতিবেদন অনুসারে, সাধারণ জনগণ, ব্যাংক, নন-ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠান থেকে আইসিবির ৮ হাজার ৮৭৭ কোটি টাকা মেয়াদি আমানত রয়েছে।

আইসিবিতে ব্যাংক ও নন-ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মেয়াদি আমানত ৫ হাজার ৩২২ কোটি টাকা এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের মেয়াদি আমানত ৩ হাজার ৫৪৬ কোটি টাকা।

এদিকে সোনালী ব্যাংক, সাধারণ বিমা করপোরেশন, অগ্রণী ব্যাংক এবং জনতা ব্যাংকের আইসিবিতে মেয়াদি আমানত রয়েছে ৩ হাজার ৫৬৩ কোটি টাকা। বার্ষিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, মেয়াদি আমানতের জন্য বিনিয়োগ ব্যাংকটি সুদ পরিশোধ করেছে ৬৬৩ কোটি টাকা।

কর্মকর্তাদের মতে, আইসিবির প্রায় এক হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ রয়েছে। এর বেশির ভাগই দুর্বল ব্যাংক এবং নন-ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে। কেবল পদ্মা ব্যাংকেই আটকে রয়েছে সংস্থাটির ১৫৪ কোটি টাকা।

আমানতের মেয়াদ পূর্ণ হলেও আইসিবি এসব তহবিল ফেরত পায়নি। অর্থ পেতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাহায্য চেয়েছিল এটি। কিন্তু নন-ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো আমানত ফেরত দিতে পারেনি। ফলে বেশির ভাগ তহবিলের মেয়াদ নবায়ন করতে হয়েছে।

মন্দা থেকে বেরিয়ে এসেছে যুক্তরাজ্য!

প্রকাশ: ১৩ মে ২০২৪, ০১:০৫ পিএম
মন্দা থেকে বেরিয়ে এসেছে যুক্তরাজ্য!
বাজার থেকে ফেরার পথে লন্ডনের অক্সফোর্ড স্ট্রিটে কয়েকজন ক্রেতা। ছবি : সংগৃহীত

বছরের শুরুতে প্রত্যাশার চেয়ে বেশি শক্তিশালী প্রবৃদ্ধির ফলে যুক্তরাজ্য অবশেষে মন্দার কবল থেকে বেরিয়ে এসেছে। সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, জানুয়ারি থেকে মার্চ মাসের মধ্যে অর্থনীতি দশমিক ৬০ শতাংশ হারে বেড়েছে, যা গত দুই বছরের মধ্যে সবচেয়ে দ্রুতগতির বৃদ্ধি। খবর বিবিসির।

ব্রিটিশ সম্প্রচার মাধ্যমটির খবরে বলা হয়, এর আগে টানা দুটি ত্রৈমাসিকে অর্থনীতি সঙ্কুচিত হওয়ার পর, গত বছরের শেষের দিকে যুক্তরাজ্য মন্দার মধ্যে পড়েছিল।

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক বলেছেন, দেশের অর্থনীতি ক্রান্তিকাল পার করে উন্নতির দিকে যাচ্ছে। কিন্তু লেবার পার্টি বলেছে, আসলেই বিজয় উল্লাসের সময় এটি নয়।

ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের গভর্নর অ্যান্ড্রু বেইলি বিবিসিকে বলেছেন, যুক্তরাজ্য একটি পুনরুদ্ধার দেখছে, যদিও এটি খুব একটা শক্তিশালী ছিল না।

খবরে বলা হয়, যুক্তরাজ্যের সুদের হার বর্তমানে ১৬ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ স্তরে রয়েছে, এর অর্থ হলো মানুষকে গৃহস্থালি ঋণ এবং অন্যান্য ঋণ পরিশোধের ক্ষেত্রে বেশি টাকা ব্যয় করতে হচ্ছে, তবে সঞ্চয়কারীরাও ভালো রিটার্ন পেয়েছেন।

ব্যাংক অব ইংল্যান্ড কখন ঋণ নেওয়ার খরচ কমিয়ে দেবে তার পূর্বাভাস দেওয়ার পরে সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে বন্ধকী ঋণের সুদহার বেড়েছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকটি বলেছে, মূল্যবৃদ্ধির হার পরিমাপকারী মূল্যস্ফীতি, আগামী কয়েক মাসের মধ্যে তার লক্ষ্যমাত্রার কাছাকাছি নেমে আসবে। এটি জুনে হার কমানোর প্রত্যাশা বাড়িয়ে দিয়েছিল। তবে প্রত্যাশার চেয়ে বেশি শক্তিশালী জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার সেই প্রত্যাশাকে ম্লান করে দিয়েছে।

লন্ডনভিত্তিক অর্থনৈতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ক্যাপিটাল ইকোনমিকস এর ডেপুটি চিফ রুথ গ্রেগরি বলেন, এটা (জিডিপির প্রবৃদ্ধির হার) দেখিয়েছে যে, ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের সুদহার কমানোর জন্য তাড়াহুড়ো করার দরকার নেই।

রুথ গ্রেগরি বলেন, সুদহার কমানোর বিষয়টি আসন্ন কর্মসংস্থান এবং মুদ্রাস্ফীতির সর্বশেষ পরিসংখ্যান দ্বারা নির্ধারিত হবে।

জাতীয় পরিসংখ্যান দপ্তর (ওএনএস) জানিয়েছে, চলতি বছরের প্রথম দিকে (জানুয়ারি-মার্চ) অর্থনীতির প্রধান চালিকাশক্তি ছিল সেবা খাত। এ খাতের মধ্যে রয়েছে হসপিটালিটি, শিল্পকলা ও বিনোদনের মতো ক্ষেত্রগুলো। এই প্রবৃদ্ধিতে সম্ভবত মার্চ মাসে খ্রিষ্টানদের প্রধান উৎসব ইস্টার সানডে কিছুটা প্রভাব ফেলেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। গত বছর ইস্টার সানডে উৎসব ছিল এপ্রিলে।

ক্রেডিট ও ডেবিট কার্ডের লেনদেন পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, অনেক ক্রেতা পোশাক ও ঘরের সাজসজ্জার জিনিসপত্র কিনে নিজেদের আনন্দ দিচ্ছেন- এমন কিছু প্রমাণ পাওয়া গেছে।

ওএনএস বলেছে, গাড়ি প্রস্তুতকারকদের জন্যও (বছরের শুরুতে) একটি ভালো প্রান্তিক ছিল, যদিও নির্মাণখাত ‘দুর্বল’ ছিল।
যদিও সামগ্রিক অর্থনীতি আবার ক্রমবর্ধমান হচ্ছে, তবুও অনেক মানুষের অবস্থা আগের মতোই থাকতে পারে। কারণ মূল্যবৃদ্ধির হার (মুদ্রাস্ফীতি) ও জনসংখ্যা বৃদ্ধির প্রভাব বাদ দিলে, মাথাপিছু আয় বৃদ্ধির হার গত বছরের তুলনায় এখনো দশমিক ৭০ শতাংশ কম রয়েছে।

জিনিসপত্রের দাম আবার বাড়ছে
ব্রিস্টলে রোলকুইক সাইকেল দোকানের মালিক এড বিয়ার্ডওয়েল। গত ১১ মাস ধরে তিনি এখানে ব্যবসা করে আসছেন। এড বিয়ার্ডওয়েল বলেছেন, তার ব্যবসা এখন প্রায় বন্ধের পথে।

জীবনযাত্রার ব্যয়কে একটি সমস্যা হিসেবে উল্লেখ করে বিয়ার্ডওয়েল বলেন, ‘লোকেরা ব্রিস্টলে বেশ খরচ-সংবেদনশীল। প্রচুর বাইক চুরি হয়ে যায় এবং এর ফলে যারা বাইক কিনতে ইচ্ছুক তারা কম দাম দিতে চায়।

মন্দার সময় খারাপ বিক্রির কারণে বাইক সার্ভিসিংয়ের ওপর ফোকাস দেওয়া হয়েছে, যা এখন তার টার্নওভারের ৭০ শতাংশ।

বিয়ার্ডওয়েল বিবিসিকে বলেছেন, শীতকালটা বেশ হতাশাজনক ছিল, তখন মনে হচ্ছিল ব্যবসা কোণঠাসা হয়ে পড়েছে। পরিস্থিতি দেখে এখন এটা মনে হচ্ছে যে, জিনিসপত্রের দাম আবার বাড়তে চলেছে। আপনি বিক্রয় পরিসংখ্যানের দিকে তাকালে দেখতে পাবেন, আমরা গত বছর এই পয়েন্টে নেমে এসেছি। তবে গত বছরের শেষের তুলনায় এখন ভালো উন্নতি করছি। গত বছরের দ্বিতীয়ার্ধে অর্থনীতি হলেও সাম্প্রতিক পরিসংখ্যান বলছে, এখন মন্দা সবচেয়ে কম।

খবরে বলা হয়, মন্দার আংশিক কারণ লোকদের কম খরচ করা। কারণ তারা দোকানে (পণ্য কিনতে গিয়ে) উচ্চমূল্যের মুখোমুখি হয়েছিল এবং উচ্চ সুদের হার বন্ধকী ঋণের খরচ বাড়িয়ে দিয়েছিল।

পরামর্শক সংস্থা কেপিএমজি ইউকের প্রধান অর্থনীতিবিদ ইয়ায়েল সেলফিন বলেছেন, সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতিকে পেছনে ফেলেছে যুক্তরাজ্যের অর্থনীতি। 

ইয়ায়েল সেলফিন বলেন, আমরা এই বছরের বাকি অংশে অব্যাহত প্রবৃদ্ধি দেখা প্রত্যাশা করছি। পতনশীল মুদ্রাস্ফীতি ও ক্রমবর্ধমান মজুরি পারিবারিক আয়ের কিছু ক্ষতি পুষিয়ে নিতে এবং পরিবারের ভোগে সহায়তা করতে সাহায্য করে।

অর্থনীতি যখন নির্বাচনি ইস্যু
অর্থনীতির আকার মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) দ্বারা পরিমাপ করা হয়, যা একটি দেশের কোম্পানি, সরকার ও জনগণের সব অর্থনৈতিক কার্যকলাপের দিকে নজর দেয়।

বেশির ভাগ অর্থনীতিবিদ, রাজনীতিবিদ ও ব্যবসায়ী চান জিডিপি ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পাক। কারণ এর মানে হলো, সাধারণত মানুষ বেশি খরচ করছে, অতিরিক্ত কর্মসংস্থান তৈরি হচ্ছে, সরকারকে আরও বেশি কর দেওয়া হয়েছে এবং শ্রমিকদের বেতন ভালোভাবে বাড়ছে। 

খবরে বলা হয়, অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের শক্তি সম্পর্কে বিতর্ক সাধারণ নির্বাচনের প্রচারে একটি কেন্দ্রীয় যুদ্ধক্ষেত্র হতে চলেছে।

যুক্তরাজ্যের প্রধান অর্থমন্ত্রী জেরেমি হান্ট বলেছেন, গত কয়েক বছর যুক্তরাজ্যের অর্থনীতির জন্য একটি কঠিন সময় ছিল। ‘আজকের বৃদ্ধির পরিসংখ্যান প্রমাণ করে যে, মহামারির পরে অর্থনীতি প্রথমবারের মতো পূর্ণ স্বাস্থ্যে ফিরে আসছে।’

বিবিসির টুডে প্রোগ্রামে দেওয়া বক্তব্যে জেরেমি হান্ট বলেন, ‘পরিবারগুলো সত্যিই কঠিন সময় পার করছে। আমি মনে করি, তারা এখন দেখতে পাচ্ছে যে মহামারির পরে অর্থনীতিকে তাদের অনুকূলে ফিরিয়ে আনতে আমরা খুব কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সেই সঙ্গে জ্বালানি সংকটের পর আমরা অর্থনীতি স্বাভাবিক করতে যেসব কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়েছি, তার ইতিবাচক ফল পাওয়া যাচ্ছে। তবে এই ইতিবাচক পরিবর্তন ধরে রাখতে আমাদের আরও কিছুদিন এই সিদ্ধান্তের মধ্য দিয়ে যেতে হবে।

লেবার পার্টির ছায়া অর্থমন্ত্রী র‌্যাচেল রিভস, চলতি সপ্তাহের শুরুতে অর্থনীতির অবস্থা সম্পর্কে সরকারের পরিসংখ্যানকে বিভ্রান্তিকর বলে অভিযুক্ত করেছিলেন। তিনি বলেছেন, এটি কনজারভেটিভ পার্টির মন্ত্রীদের জন্য বিজয় উদযাপনের সময় নয়।

রিভস আরও বলেছেন, ‘১৪ বছরের অর্থনৈতিক বিশৃঙ্খলার পরে, শ্রমজীবী মানুষ এখন আরও খারাপ অবস্থায় আছে।’

লিবারেল ডেমোক্র্যাট ট্রেজারি মুখপাত্র সারাহ ওলনি বলেছেন, পরিসংখ্যানটি উদযাপনের জন্য একটি যতসামান্য কারণ ছিল।

অর্থাৎ উদযাপন করার মতো কোনো বিষয় এখানে নেই।