কানাডার অটোয়ায় বাংলাদেশ হাইকমিশনে ব্যাপক উৎসাহ ও উদ্দীপনায় স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৪তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস উদযাপন করা হয়েছে।
এ উপলক্ষে রবিবার (১৭ মার্চ) স্থানীয় সময় সকাল ১০টায় বাংলাদেশ হাউজে জাতীয় সংগীতের সঙ্গে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন হাইকমিশনার ড. খলিলুর রহমান।
এরপর বঙ্গবন্ধু ও ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টে সব শহিদ এবং মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে ৩০ লাখ শহিদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।
দিবসের পরবর্তী কর্মসূচি বাংলাদেশ হাইকমিশনের মিলনায়তনে শুরু হয় বিকেল ৩টায়।
‘বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ধরে, আনব হাসি সবার ঘরে’ প্রতিপাদ্য নিয়ে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন হাইকমিশনার ড. খলিলুর রহমান।
অনুষ্ঠানের শুরুতে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানানো হয়। এরপর হাইকমিশনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা এ দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বাণী পাঠ করেন।
এরপর দিবসটি উপলক্ষে একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।
তিনজন শিশুর বক্তব্যের মাধ্যমে মূল আলোচনা অনুষ্ঠান শুরু হয়। শিশুরা তাদের বক্তব্যে বঙ্গবন্ধুর মতো পৃথিবীর সব মানুষকে ভালোবাসার কথা বলে এবং তার আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে ভবিষ্যতে মানুষের সেবায় নিয়োজিত থাকবে বলে অঙ্গীকার করে।
আলোচনায় অংশগ্রহণকারী বাংলাদেশি-কানাডিয়ান কমিউনিটির নেতারা বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর সংগ্রামী জীবন প্রতিটি বাঙালির জন্য অনুকরণীয় ও গর্বের বিষয়।’
শিশুদের প্রতি জাতির পিতার অগাধ ও অকৃত্রিম ভালোবাসা ছিল বলে তারা তাদের বক্তব্যে উল্লেখ করেন।
আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা এবং জাতীয় ও সামাজিক অনুষ্ঠানাদির মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর সংগ্রামী জীবনের ইতিহাস আমাদের পরবর্তী প্রজন্মকে জানানোর ওপর বক্তারা গুরুত্বারোপ করেন।
সভাপতির বক্তব্যের শুরুতেই হাইকমিশনার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং মহান মুক্তিযুদ্ধের শহিদদের শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করে বলেন, বঙ্গবন্ধুর জন্ম না হলে বাংলাদেশের জন্ম হতো না, তাই আমাদের জাতীয় জীবনে এই দিনটি অতীব গুরুত্বপূর্ণ।
বঙ্গবন্ধুর জীবনের নানা ঘটনা থেকে শিশুদের প্রতি তার অগাধ ও অকৃত্রিম ভালোবাসার প্রমাণ পাওয়া যায় বলে তিনি উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশকে শিশুদের জন্য নিরাপদ আবাসভূমিতে পরিণত করার শপথ নিতেই বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনে জাতীয় শিশু দিবস পালন করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তিনি শিক্ষা, সংস্কৃতি চর্চা ও খেলাধুলার মাধ্যমে অসাম্প্রদায়িক চেতনায় দেশ গড়তে সবাইকে উদ্বুদ্ধ করেন।
দেশ ও মানুষকে ভালোবাসার মানসিকতা বিকাশের মাধ্যমে শিশুরা যাতে নিজেদের সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে পারে সে জন্য কাজ করতে উপস্থিত সবার প্রতি আহ্বান জানান হাইকমিশনার।
তিনি শিশুদের জন্য একটি বাসযোগ্য পৃথিবী রেখে যেতে এবং শিশুদের প্রতি মানবিক আচরণ করতে সবাইকে অনুরোধ জানান।
অনুষ্ঠানে কানাডায় বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশি শিশুরা দুই ক্যাটাগরিতে প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়। ৫-১২ বছর বয়সী শিশুদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার বিষয় ছিল ‘বঙ্গবন্ধু ও সোনার বাংলা’ এবং ১০-১৬ বছর বয়সী শিশুদের রচনা প্রতিযোগিতার বিষয় ছিল ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’।
পরে হাইকমিশনার চিত্রাঙ্কন ও রচনা প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করেন।
উপস্থিত সব শিশুকে বিশেষ উপহার দেওয়া হয়।
অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে শিশুদের সঙ্গে নিয়ে হাইকমিশনার ও উপস্থিত সবাই কেক কাটেন।
এ সময় হাইকমিশনের সব কর্মকর্তা ও কর্মচারী উপস্থিত ছিলেন।
অমিয়/