ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে কুম্ভমেলা দেখতে গিয়ে বিএসএফের হাতে আটক ১৩ বাংলাদেশি তিন মাস পর দেশে ফিরেছেন। অবৈধভাবে অনুপ্রবেশের দায়ে আদালতের মাধ্যমে কারাদণ্ড দিয়ে তাদের জেলে পাঠানো হয়েছিল।
মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) দুপুরে আটক ১৩ বাংলাদেশি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া স্থলবন্দরের ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দিয়ে দেশে ফেরেন। এদের মধ্যে দুই শিশু ও এক নারী রয়েছেন।
ফেরত ব্যক্তিরা হলেন- নাহিদা আক্তার, ফয়েজ ইসলাম, ফাইজা, রুবেল কুমার নাথ, রাজীব বিশ্বাস, শংকর দে, জয় দাস, সঞ্জয় দাস, উল্লাস দাস, দীপক দাস গুপ্তা, রুমান ঘোষ, রুবেল ঘোষ ও প্রান্ত দাস।
পরে আইনি প্রক্রিয়া শেষে তাদের স্বজদের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয়।
এ সময় সীমান্তের শূন্যরেখায় ভারতের ত্রিপুরায় নিযুক্ত বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনের কনস্যুলেট অফিসার ওমর শরীফ, আখাউড়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এসএম রাহাতুল ইসলাম, আখাউড়া স্থলবন্দরের ইমিগ্রেশন ইনচার্জ ও পুলিশ পরিদর্শক মো. খাইরুল আলমসহ দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
চট্টগ্রাম রাউজানের রুমান ঘোষ বলেন, ‘তিন মাস আগে কুম্ভমেলা দেখতে আমরা ১০ জন খাগড়াছড়ির পানছড়ি সীমান্ত দিয়ে ভারতে প্রবেশ করি। মেলা দেখতে গিয়ে শহরের দিকে গেলে সেখানকার পুলিশ আমাদের আটক করে। পরে এক মাস কারাবাস ও দুই মাস সেফ হোমে থাকার পর আজ আমরা দেশে ফিরে আসি।’
শংকর দে নামে আরেক ব্যক্তি বলেন, ‘কুম্বমেলা উপলক্ষে নির্দিষ্ট একটা সময়ের জন্য সীমান্ত খুলে দেওয়া হয়। এ সময় হাজার হাজার মানুষ সেখানে যায়। আমরা তাদের সাথে ঘুরতে গিয়ে ভারতীয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে আটক হই। পরে আদালতের মাধ্যমে আমাদের কারাগারে পাঠানো হয়। এক মাস কারাভোগ ও আরও দুই মাস সেখানকার সেফ হোমে থাকার পর বাংলাদেশ সরকারের সহযোগিতায় আজ আমরা দেশে ফিরেছি। দেশে ফিরতে পেরে অনেক আনন্দ লাগছে।’
ভারতের ত্রিপুরায় নিযুক্ত বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনের কনস্যুলেট ওমর শরীফ খবরের কাগজকে বলেন, ‘বাংলাদেশে ফেরত আসাদের মধ্যে এক নারী শিশুসহ তার স্বামীকে নিয়ে মুম্বাই গিয়েছিলেন। তার স্বামী লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত হয়ে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়। পরবর্তী সময়ে তার স্ত্রী ও বাচ্চারা ভারতীয় বিএসএফের হাতে আটক হয়। আর বাকি দশজন কুম্বমেলা দেখতে ভারতে প্রবেশ করে। মেলা শেষে তারা ফেরত না এসে আগরতলা শহরে ঘুরতে যায়। পরে তারা বিএসএফের হাতে আটক হয়।’
তিনি আরও বলেন, তাদের নাগরিক শনাক্তকরণ ও দুই দেশের আইনি প্রক্রিয়া শেষে আজ তাদের দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে হাইকমিশনের এই কনস্যুলেট বলেন, ত্রিপুরার সেফ হোমসহ বিভিন্ন জায়গায় এ রকম আরও ২০-২৫ জন আটক রয়েছেন। তাদের ফেরত পাঠানোর জন্য আইনি প্রক্রিয়া চলছে।
জুটন বনিক/ইসরাত চৈতী/অমিয়/