হাসান আবিদুর রেজা জুয়েল ও শাফিন আহমেদ
খ্যাতিমান ব্যান্ড তারকা শাফিন আহমেদ যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়ার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। এই তারকার লাশ দেশে আনার জন্য ইতোমধ্যেই আমেরিকায় পৌঁছেছেন শাফিন আহমেদের বড় ভাই ব্যান্ড তারকা হামিন আহমেদ। তবে কবে নাগাদ শাফিনের লাশ দেশে আনা হবে এ বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যায়নি। শাফিনের শোকে যখন শোবিজ অঙ্গন কাতর, ঠিক তখনই নন্দিত সংগীতশিল্পী ও অনুষ্ঠান নির্মাতা হাসান আবিদুর রেজা জুয়েলের দুঃসংবাদ পেল সবাই। আর তা হলো জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে রয়েছেন এই শিল্পী। রাজধানীর একটি হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টেও রয়েছেন তিনি। এমন সংবাদ পেয়ে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন সংগীতাঙ্গনের মানুষরা। কারণ শাফিন আহমেদকে নিয়ে সবাই যখন স্মৃতি হাতড়ে বেড়াচ্ছিলেন ঠিক তখনই জুয়েলের এমন সংবাদে থমকে আছেন তারা।
জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে ক্যানসারের সঙ্গে লড়াই করছেন জুয়েল। এজন্য দেশের পাশাপাশি বিদেশেও বিভিন্ন সময় চলছিল তার চিকিৎসা। শারীরিক অসুস্থতা নিয়েও মিডিয়াতে সরব ছিলেন তিনি। উপস্থাপনা, গান নিয়ে তার ব্যস্ততা ভালোই ছিল। কিন্তু হঠাৎ করেই গত ২৩ জুলাই রাতে শ্বাসকষ্ট শুরু হলে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাকে। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসকরা তাকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) লাইফ সাপোর্টে রাখেন।
গণমাধ্যমকে এ বিষয়টি জানিয়েছেন জুয়েলের স্ত্রী উপস্থাপিকা ও সংবাদ পাঠিকা সঙ্গীতা। তিনি বলেন, ‘জুয়েলের প্লাটিলেট কমে গেছে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও কমে গেছে। শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে মঙ্গলবার রাত থেকে তাকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছে। দোয়া করবেন সবাই। জুয়েল যেন লাইফ সাপোর্ট থেকে ফিরে আসতে পারে।’
জুয়েলের পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, ২০১১ সালে তার লিভার ক্যানসার ধরা পড়ে। এরপর ফুসফুস এবং হাড়েও ক্যানসার সংক্রমিত হয়। তখন থেকেই দেশে ও দেশের বাইরের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা চলছিল তার।
ব্যান্ড সংগীতের জনপ্রিয়তার সময়ে ভিন্নধর্মী গান দিয়ে শ্রোতাদের মন জয় করেন জুয়েল। বাবার চাকরি সূত্রে শৈশব-কৈশোরে দেশের নানা জায়গায় কাটিয়েছেন তিনি।
১৯৮৬ সালে ঢাকায় আসেন জুয়েল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি কেন্দ্রিক সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েন। এভাবেই এক সময় গানে জড়িয়ে যান তিনি।
আইয়ুব বাচ্চুর সুরে প্রথম অ্যালবাম ‘কুয়াশা প্রহর’ প্রকাশ হয় ১৯৯৩ সালে। প্রথম অ্যালবামেই বাজিমাত করেন জুয়েল। এরপর একে একে প্রকাশিত হয় ‘এক বিকেলে’ (১৯৯৪), ‘আমার আছে অন্ধকার’ (১৯৯৫), ‘একটা মানুষ’ (১৯৯৬), ‘দেখা হবে না’ (১৯৯৭), ‘বেশি কিছু নয়’ (১৯৯৮), ‘বেদনা শুধুই বেদনা’ (১৯৯৯), ‘ফিরতি পথে’ (২০০৩), ‘দরজা খোলা বাড়ি’ (২০০৯) এবং ‘এমন কেন হলো’ (২০১৭)। এ ছাড়া বেশ কিছু সিঙ্গেল ও মিশ্র অ্যালবামে গেয়েছেন জুয়েল।
কলি