ঢাকা ২১ বৈশাখ ১৪৩২, রোববার, ০৪ মে ২০২৫

শিকলে বেঁধে ২৫ দিন ধর্ষণ, গ্রেপ্তার ৪ জন রিমান্ডে

প্রকাশ: ০১ এপ্রিল ২০২৪, ০৭:৫৬ পিএম
শিকলে বেঁধে ২৫ দিন ধর্ষণ, গ্রেপ্তার ৪ জন রিমান্ডে
ছবি : সংগৃহীত

রাজধানীর মোহাম্মদপুরের একটি বাসায় শিকলে বেঁধে রেখে এক তরুণীকে টানা ২৫ দিন ধরে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ ও ভিডিও ধারণ করার অপরাধে এক নারীসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ধর্ষণের অভিযোগে করা মামলায় এ চার আসামিকে রিমান্ডে পাঠিয়েছেন আদালত। 

সোমবার (১ এপ্রিল) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জসিমের আদালত এই আদেশ দেন। 

গ্রেপ্তার চার আসামি হলেন সান (২৬), হিমেল (২৭), রকি (২৯) ও সালমা ওরফে ঝুমুর (২৮)।

পুলিশের আবেদনের ওপর শুনানি নিয়ে আদালত তাদের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। মামলাসূত্রে জানা যায়, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদপুর থানার উপপরিদর্শক ফারুকুল ইসলাম আসামিদের আদালতে হাজির করে তাদের সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন। আর আসামিপক্ষ এর বিরোধিতা করে জামিন আবেদন করে। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরাও জামিনের বিরোধিতা করেন। সব পক্ষের শুনানি নিয়ে রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।

আদালতে আসামি সান ঘটনার বিষয়ে কিছু জানেন না বলে আইনজীবীর মাধ্যমে দাবি করেন। আইনজীবী বলেন, আসামির সঙ্গে বাদীর প্রেমের সম্পর্ক ছিল। বিয়ে করতে না চাওয়ার কারণে এই মামলা হয়েছে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকে উদ্দেশ করে বিচারক বলেন, ‘যত বড় ব্যক্তি হোক না কেন, জড়িতদের নামগুলো যেন অভিযোগপত্রে আসে।’

এর আগে সোমবার সকালে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান তেজগাঁও বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার এইচ এম আজিমুল হক। তিনি জানান, মোহাম্মদপুরের নবীনগর হাউজিংয়ের একটি ভবন থেকে ৯৯৯-এর কলে শিকলবন্দি অবস্থায় তরুণীকে উদ্ধার করে পুলিশ। ভুক্তভোগী তরুণী জানান, তার বাবা-মায়ের বিচ্ছেদ এবং পরে তারা অন্যত্র বিয়ে করায় ওই তরুণী তার বড় বোনের বাসায় থাকতেন। সে সময় ভগ্নিপতির মাধ্যমে মাসুদ নামের এক ব্যারিস্টারের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। ব্যারিস্টার মাসুদ বেশির ভাগ সময় বিদেশে অবস্থান করতেন এবং দেশে এলে ভুক্তভোগী ওই তরুণীর সঙ্গে থাকতেন। পরে মাসুদের মাধ্যমে আরেক প্রবাসীর স্ত্রী সালমা ওরফে ঝুমুরের সঙ্গে পরিচয় হয়। পরে সালমার সঙ্গে নবীনগরের ভাড়া ফ্ল্যাটে ওঠেন ওই তরুণী। তাদের সব খরচ বহন করতেন মাসুদ।

উপপুলিশ কমিশনার আরও জানান, আসামি সালমার মাধ্যমে ভুক্তভোগী তরুণীর পরিচয় হয় আসামি হিমেল ও সানের সঙ্গে। একপর্যায়ে সানের সঙ্গে ওই তরুণীর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। প্রেমের সুবাদে হিমেল ও সান ভিকটিমের বাসায় আসা-যাওয়া করতেন। এ বিষয়টি ব্যারিস্টার মাসুদকে সালমা জানিয়ে দিলে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। ভুক্তভোগী তরুণীকে শিক্ষা দিতে তার পর্নো ভিডিও ধারণ করতে বলেন সালমাকে। মাসুদের পরিকল্পনা ও নির্দেশনা অনুযায়ী সালমা ভুক্তভোগী তরুণীকে আটক এবং পর্নো ভিডিও ধারণ করার বিষয়টি হিমেল, সান ও রকিকে জানান। গত ২৩ ফেব্রুয়ারি ওই তরুণীর বাসায় আসামি সান তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেন। ধর্ষণের ঘটনাটি সালমা রুমে গোপন ক্যামেরা স্থাপন করে ভিডিও ধারণ করেন। পরে সান একাধিকবার ওই তরুণীকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ৫ মার্চ আসামিরা ভুক্তভোগী তরুণীর হাত-পা বেঁধে মুখে স্কচটেপ লাগিয়ে দেন এবং সেদিন হিমেল তাকে ধর্ষণ করেন। এরপর সালমা বাইরে গিয়ে শিকল ও তালা কিনে এনে তরুণীর হাতে ও পায়ে লাগিয়ে রুমের দরজা ও বাথরুমের দরজার সঙ্গে আটকে রাখেন। শুধু খাওয়ার সময় তরুণীর হাতের শিকল খুলে দিতেন তারা। এরপর গত ৭ মার্চ রাতে আসামি রকি ওই তরুণীকে ধর্ষণ করেন। আর এর পর থেকে ব্যারিস্টার মাসুদের নির্দেশনা অনুযায়ী আসামি সান, হিমেল, রকি ও সালমা বিভিন্ন সময়ে ভুক্তভোগী নারীকে নির্যাতন করে তাদের দেখানো পর্নো ভিডিওর মতো করে আলাদা আলাদা ভিডিও ধারণ করেন। প্রতিদিনের ধারণ করা ভিডিও আসামি সালমা ব্যারিস্টার মাসুদের কাছে পাঠাতেন। আসামিরা ওই তরুণীর ওপর পাশবিক নির্যাতন চালান ও অমানুষিক আচরণ করেন।

তিনি আরও জানান, গত ২৯ মার্চ সন্ধ্যায় সালমা ভুক্তভোগী তরুণীকে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে বাইরে যান। রাত আনুমানিক ১১টার দিকে তার ঘুম ভেঙে গেলে বাসায় কেউ নেই বুঝতে পেরে তিনি জানালা দিয়ে চিৎকার দেন। তার চিৎকার শুনে এক পথচারী জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ কল দিয়ে মোহাম্মদপুর থানা পুলিশকে সংবাদ দেন। পরে মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ তাকে শিকল বাঁধা অবস্থায় উদ্ধার করে। বর্তমানে ওই তরুণী ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) চিকিৎসাধীন।

আবরার ফাহাদ হত্যা মামলার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ

প্রকাশ: ০৩ মে ২০২৫, ১২:৪১ পিএম
আবরার ফাহাদ হত্যা মামলার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ
ছবি: সংগৃহীত

সম্প্রতি বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যা মামলার ১৩১ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ পেয়েছে। মামলায় হাইকোর্ট ২০জনের মৃত্যুদণ্ড ও পাঁচজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায় বহাল রেখেছেন।

এর আগে, ২০২৪ সালের ১৬ মার্চ বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আসামিদের ডেথ রেফারেন্স, আপিল ও জেল আপিলের ওপর শুনানি শেষে এ রায় ঘোষণা করেন।

২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর বুয়েটের শেরেবাংলা হলে তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক প্রকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। পরদিন তার বাবা বরকতউল্লাহ চকবাজার থানায় মামলা করেন। পরে তদন্ত শেষে ২০১৯ সালের ১৩ নভেম্বর বুয়েটের ২৫জন শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশ।

অভিযোগপত্রে বলা হয়, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে ছাত্রশিবিরের কর্মী সন্দেহে মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন অভিযোগ তুলে আবরারকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করেছে।

এর পর ২০২১ সালের ৮ ডিসেম্বর ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক এ মামলার রায় দেন।

মেহেদী/

চিন্ময় দাসের জামিন স্থগিতে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের শুনানি হতে পারে রবিবার

প্রকাশ: ০১ মে ২০২৫, ০৭:৫৫ পিএম
আপডেট: ০১ মে ২০২৫, ০৭:৫৭ পিএম
চিন্ময় দাসের জামিন স্থগিতে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের শুনানি হতে পারে রবিবার
ফাইল ছবি।

রাষ্ট্রদ্রোহের মামলায় প্রাক্তন ইসকন নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে হাইকোর্টের দেয়া জামিন স্থগিত চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের চেম্বার কোর্টে দায়েরকৃত আবেদনের শুনানি হতে পারে রবিবার।

বিষয়টি বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা-বাসসকে জানিয়েছেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ আরশাদুর রউফ।

এর আগে বুধবার (৩০ এপ্রিল) চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিন প্রশ্নে জারি করা রুল যথাযথ ঘোষণা করে তাকে জামিন দেন বিচারপতি মো. আতোয়ার রহমান ও বিচারপতি মো. আলী রেজার সমন্বয়ে গঠিত একটি হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ।

আদালতে জামিন আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী অপূর্ব কুমার ভট্টাচার্য ও প্রবীর রঞ্জন হালদার। আর রাষ্ট্র পক্ষে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল অনিক আর হক ও অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মুহাম্মদ আবদুল জব্বার ভুঞা।

গত ২৫ অক্টোবর চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের নেতৃত্বে চট্টগ্রামে সনাতনী সম্প্রদায়ের একটি বড় সমাবেশ হয়। গত ৩১ অক্টোবর তার বিরুদ্ধে জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা হয়। এ মামলায় আরও ১৮ জনকে আসামি করা হয়।

রাষ্ট্রদ্রোহের মামলায় চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গত ২৫ নভেম্বর গ্রেপ্তার করা হয়। পরদিন জামিন আবেদন করা হলে তা নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট। আদালত চিন্ময়কে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিলে সেদিন চট্টগ্রামে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও আইনজীবীদের সঙ্গে চিন্ময়ের অনুসারীদের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। এ সময় আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে আদালত চত্বরের বাইরে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। সেই থেকে কারাগারে আছেন চিন্ময়। গত ২ জানুয়ারি চিন্ময় দাসের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন চট্টগ্রামের মহানগর দায়রা জজ আদালত। এরপর হাইকোর্টে জামিন আবেদন করেন চিন্ময় দাস।

সূত্র: বাসস

সিফাত/

সাংবাদিককে হত্যার অভিযোগ শেখ হাসিনাসহ ১৬২ জনের বিরুদ্ধে মামলা

প্রকাশ: ০১ মে ২০২৫, ০৫:০৫ পিএম
শেখ হাসিনাসহ ১৬২ জনের বিরুদ্ধে মামলা
খবরের কাগজ গ্রাফিকস

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে পুলিশের গুলিতে সাংবাদিক আব্দুন নূর নিহতের ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১৬২ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।

এ মামলার উল্লেখযোগ্য অন্য আসামিরা হলেন, সাবেক মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, আসাদুজ্জামান খান কামাল, আনিসুল হক, হাসান মাহমুদ, শেখ হাসিনার উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন, সাবেক ডিবি প্রধান হারুন-অর-রশিদ, সাবেক অতিরিক্ত যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার ।

বুধবার (৩০ এপ্রিল) নিহতের বাবা হাফেজ মো. আবুল বাশার বাদী হয়ে নালিশী (সিআর) মামলাটি দায়ের করেন।

ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিষ্ট্রেট এম মিজবাউর রহমান বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করেন। এ ঘটনায়  নিয়মিত (জিআর) মামলা হয়েছে কি না আগামী ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে ওই তথ্য আদালতকে অবগত করতে যাত্রাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) নিদেশ দেন।

বাদী জানান, নিহত আব্দুন নূর ময়মনসিংহের গফরগাঁও এলাকায় ‘অভিযান নিউজ’ নামক পত্রিকার সাংবাদিক ছিলেন।

মামলার আরজিতে বলা হয়, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে গত বছরের ১ আগস্ট আব্দূন নুর ঢাকায় আসেন। ৫ আগস্ট দুপুর ১২টার দিকে যাত্রাবাড়ী থানার সামনে ছাত্র-জনতার ওপর পুলিশ গুলি চালালে আব্দুন নূরের মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়। গুরুতর অবস্থায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে।

প্রসঙ্গত, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সরকারি আলিয়া মাদ্রাসার শিক্ষার্থী সাইফুদ্দিন মোহাম্মদ এমদাদকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল ও বোন শেখ রেহানাসহ ২০১ জনের বিরুদ্ধে আদালতে দায়ের  করা নালিশী (সিআর) মামলা সরাসরি এজাহার হিসেবে গণ্য করতে শাহাবাগ থানাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

গত ২৩ মার্চ ফ্যাসিস্ট উৎখাত আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির প্রধান সমন্বয়ক ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার কমিশন বাংলাদেশের চ্যাপ্টারের সভাপতি এম এ হাশেম রাজু‌ বাদি হয়ে মামলাটি দায়ের করার পর জবানবন্দি নিয়ে এই ঘটনায় কোন নিয়মিত মামলা রয়েছে কি না তা সাত (০৭) কার্যদিবসের মধ্যে আদালতকে অবহিত করতে শাহাবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) নির্দেশ দেওয়া হয়।

থানা কর্তৃপক্ষ আদালতকে অবহিত করলে একইদিন বুধবার (৩০ এপ্রিল) সংশ্লিষ্ট বিচারক সালিশী (সিআর) মামলার আরজিতে নিয়মিত (জিআর) মামলার এজাহার হিসেবে গণ্য করার নির্দেশ দেন।

এর আগে গত মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) হত্যাচেষ্টার অভিযোগে শেখ হাসিনা ও তার সরকারের সংশ্লিষ্ট ২৮৩ জন ও অজ্ঞাতনামা ৩০০-৪০০ জনের বিরুদ্ধে আদালতে করা (সিআর) মামলাএজাহার হিসেবে গণ্য করতে  ভাটারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

গত ২৭ মার্চ এনামুল হক বাদী হয়ে  মামলাটি করেছেন মর্মে আদালত সূত্রে  জানা গেছে।

এম এ জলিল উজ্জ্বল/এমএ/

পুতুলের বাড়ি, রেহানা-জয়ের জমি জব্দ

প্রকাশ: ০১ মে ২০২৫, ১২:২২ পিএম
পুতুলের বাড়ি, রেহানা-জয়ের জমি জব্দ
শেখ রেহানা, সজীব ওয়াজেদ জয় ও সায়মা ওয়াজেদ পুতুল

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের বাড়ি, ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় ও শেখ রেহানাসহ তার দুই সন্তানের নামে থাকা জমি জব্দ করার আদেশ দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে জব্দ করা সম্পত্তিগুলোর দেখাশোনার জন্য তত্ত্বাবধায়ক (রিসিভার) নিয়োগেরও আদেশ দেওয়া হয়েছে। 

এর মধ্যে রাজধানীর বারিধারায় পুতুলের ৪ কোটি ৯৮ লাখ টাকা মূল্যের বাড়ি, শেখ রেহানা, সায়মা পুতুল ও জয়ের নামে খুলনার দিঘলিয়ায় থাকা ৬১ লাখ ৮৭ হাজার টাকা মূল্যের ৮৭ দশমিক ৭০ শতাংশ জমি, একই জায়গায় শেখ রেহানার ছেলে রাদওয়ান মুজিব ববি ও মেয়ে আজমিনা সিদ্দিকের ৪১ লাখ ২৪ হাজার ৫০০ টাকা মূল্যের ৮৭ দশমিক ৭০ শতাংশ জমি এবং গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় শেখ রেহানার ২০ লাখ ৫০ হাজার টাকা মূল্যের ১৯ শতাংশ জমি রয়েছে।

বুধবার (৩০ এপ্রিল) ঢাকার মেট্রোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল জজ জাকির হোসেন গালিব এ আদেশ দেন।

আদালত সূত্র জানায়, দুদকের উপপরিচালক মনিরুল ইসলাম তাদের বাড়ি ও জমি জব্দ করার আবেদন দাখিল করেন। 

আবেদনে বলা হয়, পুতুলসহ অন্যরা তাদের স্থাবর সম্পদ অন্যত্র হস্তান্তর, স্থানান্তর বা বেহাত করার চেষ্টা করছেন বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়। মামলা নিষ্পত্তির আগে ওই সম্পদ হস্তান্তর বা স্থানান্তর হয়ে গেলে অনুসন্ধান কার্যক্রম ব্যাহত হবে। অভিযোগের সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে এসব সম্পদ জব্দ করা প্রয়োজন।

‘২২৬ জনকে হত্যার লাইসেন্স পেয়েছি’ শেখ হাসিনাকে কারণ দর্শানোর নির্দেশ ট্রাইব্যুনালের

প্রকাশ: ৩০ এপ্রিল ২০২৫, ১০:৩৫ পিএম
আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০২৫, ১০:৩৭ পিএম
শেখ হাসিনাকে কারণ দর্শানোর নির্দেশ ট্রাইব্যুনালের
শেখ হাসিনা। ছবি: সংগৃহীত

অনলাইনে ছড়িয়ে পড়া ‘২২৬টি মামলা হয়েছে, ২২৬ জনকে হত্যার লাইসেন্স পেয়ে গেছি’ মর্মে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্যসংবলিত অডিওর ফরেনসিক রিপোর্ট আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দাখিল করা হয়েছে। রিপোর্টে বক্তব্যটি শেখ হাসিনার বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে। বিষয়টি আদালত অবমাননা বলে উল্লেখ করে শেখ হাসিনাসহ ছাত্রলীগ নেতা শাকিল আহমেদকে কারণ দর্শানোর নোটিশ জারি করা হয়েছে। তাদের আগামী ১৫ মে’র মধ্যে জবাব দিতে বলেছেন ট্রাইব্যুনাল। 

বুধবার (৩০ এপ্রিল) ফরেনসিক রিপোর্ট দাখিলের পর প্রসিকিউশনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন ট্রাইব্যুনাল ওই নোটিশ জারি করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।

তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার পক্ষ থেকে আমাদের কাছে একটা আবেদন পাঠানো হয়। তারা তদন্তকালে সোশ্যাল মিডিয়া ও সাধারণ গণমাধ্যমে তথ্য পান যে, এই ট্রাইব্যুনালের একজন আসামি- অভিযুক্ত শেখ হাসিনা এবং আরও একজন গাইবান্ধার আওয়ামী লীগ নেতা শাকিল আহমেদের মধ্যে টেলিফোনে একটা কনভারসেশন হয়, যা সামাজিকমাধ্যমে প্রথমে ভাইরাল হয় এবং পরে প্রিন্ট মিডিয়ায় অনেক নিউজ হয়। সেই কনভারসেশনে দেখা গেছে, আসামি শেখ হাসিনা শাকিল আহমেদকে বলছেন, ‘আমার বিরুদ্ধে সারা দেশে যে ২২৬টা মামলা হয়েছে, যারা এই মামলাগুলো করেছে, তাদের মারার আমি লাইসেন্স পেয়ে গেছি।’ এদের বাড়িঘর ভাঙচুর করার জন্য তিনি নির্দেশ দেন। তাদের কারও বাড়িঘর যেন অক্ষত না থাকে। একই সঙ্গে তিনি পুলিশ কর্মকর্তাদের হুমকি দেন যে, তারা যেন মনে রাখে, ভবিষ্যতেও চাকরি করতে হবে।” 

এই কথোপকথনের মাধ্যমে তদন্ত সংস্থার কাছে সুস্পষ্ট হয়েছে যে, আসামি শেখ হাসিনা ও শাকিল আহমেদ তাদের কথোপকথনের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চলমান বিচার প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা করেছেন এবং সাক্ষীদের ভয়ভীতি দেখিয়েছেন। 

এরই পরিপ্রেক্ষিতে তদন্তকারী কর্মকর্তা মনে করেছেন, ‘এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা না নেওয়া হলে সাক্ষীরা সাক্ষ্য দিতে ভয় পাবেন। তদন্ত ও বিচার-প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হবে। এই কনভারসেশন সিআইডির ফরেনসিক ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা করা হয়েছে এবং ফরেনসিক প্রতিবেদন অনুযায়ী শেখ হাসিনা ও শাকিল আহমেদরই কনভারসেশন এটি। বানানো কোনো কিছু নয়। এ জন্য আমরা আদালতের কাছে আবেদন করেছিলাম শেখ হাসিনা ও শাকিলের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননা মামলা প্রক্রিয়া শুরু করার জন্য। শুনানি শেষে ট্রাইব্যুনাল ওই দুজনের বিরুদ্ধে নোটিশ ইস্যু করেছেন। আগামী ১৫ মে অথবা তার আগে ট্রাইব্যুনালে সশরীরে হাজির হয়ে কিংবা আইনজীবীর মাধ্যমে তাদের কথোপকথনের বিষয়ে ব্যাখ্যা উপস্থাপন করতে বলা হয়েছে।’

জুলাই অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিদ্বেষমূলক বক্তব্য প্রচারে নিষেধাজ্ঞা জারি করে গত বছরের ৫ ডিসেম্বর আদেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। গণমাধ্যম ও সামাজিকমাধ্যমে বিশেষ করে ফেসবুক, ইউটিউব ও এক্স হ্যান্ডেলে প্রকাশিত শেখ হাসিনার বক্তব্য সরিয়ে ফেলার নির্দেশ দেওয়া হয়। 

ট্রাইব্যুনালের ওই আদেশের কয়েক দিন আগে শেখ হাসিনার কিছু কিছু বক্তব্য ও ফোনালাপ সোশ্যাল মিডিয়া, প্রিন্ট মিডিয়া ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় ফাঁস হয়েছে। সেখানে একটি কনভারসেশনে শেখ হাসিনা বলেছেন ২২৬টি মামলা হয়েছে। অতএব তিনি ২২৬ জনকে হত্যার সার্টিফিকেট পেয়ে গেছেন, লাইসেন্স পেয়ে গেছেন। তিনি আরও বলেছেন, ‘তোমাদের বাড়িঘর পোড়াচ্ছে, তাদের বাড়িঘর নেই।’

আন্দোলনের মুখে গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রিত্ব থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে ভারতে যান।