জাপানি মা ও বাঙালি বাবার নিজ নিজ হেফাজতে সন্তানদের রাখার দাবিতে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে করা মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে আদালতকে না জানিয়ে বড় মেয়েকে নিয়ে মা জাপানি নাগরিক এরিকো নাকানো বাংলাদেশ ছেড়ে নিজ দেশে গেছেন। এ ঘটনায় এরিকোর বিরুদ্ধে বাঙালি বাবা ইমরান শরীফ আদালত অবমাননার অভিযোগ এনেছেন। উভয় পক্ষের মামলা ও আদালত অবমাননার অভিযোগের শুনানি আগামী ১৩ জুলাই নির্ধারণ করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। ওই দিন মেয়েকে নিয়ে এরিকো নাকানোকেও আদালতে হাজির থাকতে বলা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৯ মে) প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে আপিল বিভাগের ৮ বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ এ নির্দেশনা দেন।
এই দম্পতির তিন মেয়ে। দাম্পত্য কলহের জেরে মেয়েদের পূর্ণ হেফাজত চেয়ে ঢাকার পারিবারিক আদালতে মামলা হয়। বিচারিক আদালতের রায়ে বড় ও ছোট মেয়েকে মায়ের কাছে এবং মেজো মেয়েকে বাবার হেফাজতে দেওয়া হয়। এ রায়ের বিরুদ্ধে শিশুদের বাবা হাইকোর্টে আবেদন করেন। আবেদন নাকচ করে গত ১৩ ফেব্রুয়ারি রায় দেন হাইকোর্ট।
রায়ে বলা হয়, ব্যতিক্রমী পরিস্থিতি বিবেচনায় প্রাপ্তবয়স্ক হওয়া পর্যন্ত মেজো মেয়েটি তার বাবা ইমরান শরীফের কাছে থাকবে। বড় ও ছোট মেয়ে থাকবে মা এরিকো নাকানোর কাছে। উভয় পক্ষেরই (শিশুদের বাবা ও মা) সন্তানদের দেখার অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। সন্তানের সঙ্গে মা-বাবা দেখা করতে পারবেন। আর এটি করতে ইমরান শরীফ এবং এরিকো নাকানোর একে অপরকে অনুমতি দেওয়া দায়িত্ব।
হাইকোর্টের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ইমরান শরীফ ও এরিকো উভয়ই আপিল বিভাগে আবেদন করেন। এ দুটি আবেদন বিচারাধীন অবস্থায় এরিকো গত ১৫ এপ্রিল বড় মেয়েকে নিয়ে জাপান চলে যান। ফলে এরিকোর বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ এনে আপিল বিভাগে আবেদন করেন ইমরান শরীফ। এরপর দুই দফা তারিখ পরিবর্তন হয়ে আগামী ১৩ জুলাই শুনানি ধার্য করলেন আপিল বিভাগ।
আদালতে নাকানো এরিকোর পক্ষে ব্যারিস্টার আজমালুল হোসেন কেসি, অ্যাডভোকেট আহসানুল করিম ও অ্যাডভোকেট শিশির মনির এবং ইমরান শরীফের পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন ব্যারিস্টার আখতার ইমাম।