বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘বিএনপির ভাবনায় ওবায়দুল কাদের ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন। মুরগির বাচ্চার জন্য চিল যেমন মায়া কান্না করে তার কান্নাও সে রকম। তিনি মাঝে মাঝে আওয়াজ দেন, বিএনপি নাকি দুর্বল হয়ে গেছে, বিএনপি ক্লান্ত, হতাশ, বিদেশ চলে যাচ্ছে। তারা যে ভেতর থেকে ধসে গেছে, ভেঙে গেছে এটা ধামাচাপা দেওয়ার জন্যই তিনি এসব কথা বলেন।’
সোমবার (৬ মে) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এক মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বেগম খালেদা জিয়া, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, সহস্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল কাদির ভূঁইয়া জুয়েলসহ রাজবন্দিদের মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও মুক্তির দাবিতে মানববন্ধনের আয়োজন করে হাবিব উন নবী খান সোহেল মুক্তি পরিষদ।
রিজভী বলেন, ‘প্রতিদিনই জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে। মানুষ তিন বেলা খেতে পায় না। আজ মায়ের গর্ভ থেকে যে শিশুটা জন্মগ্রহণ করছে তার ঋণ হচ্ছে এক লাখ টাকারও বেশি। তারপরও সরকার ঋণ চাচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘জনগণের সঙ্গে বারবার বিশ্বাসঘাতকতা করা, তাদের মালিকানা ছিনিয়ে নেওয়া। এ কারণে জনসমর্থন নেই সরকারের। যারা বাজার সিন্ডিকেট করে দ্রব্যের দাম বাড়ায়, যারা ব্যাংক লুটপাট করে টাকা বিদেশে পাচার করে তাদের সঙ্গে দেশের জনগণ থাকে না। এখন ফাঁকা বুলি মারে। টিনের বক্সে যদি মুড়ি না থাকে তাহলে সেই টিন ঝনঝন করে, তেমনি আওয়ামী লীগ এখন শূন্য মুড়ির টিন। এ কারণে আওয়ামী লীগের নেতারা ঝনঝন করে কথা বলছে।’
উপজেলা নির্বাচনের কথা উল্লেখ করে বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, ‘সরকার আবার একটি ডামি নির্বাচন করতে যাচ্ছে। ওবায়দুল কাদের আপনার দল যে শূন্য মুড়ির টিন হয়ে গেছে, ওইটা আগে ভরেন। তারপর বিএনপির কথা বলুন। বিএনপি দুর্বল নাকি হতাশ এটা তো টের পান প্রতি মুহূর্তে। বিএনপিকে মোকাবিলা করার সাহস আওয়ামী লীগের নেই। এজন্য পুলিশ দিয়ে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় জনগণকে দমন করে, জনগণের গলায় রশি দিয়ে আজ কথা বলছেন।’
রিজভী বলেন, ‘ভাঙা কলসি বাজে বেশি। আপনাদের আওয়ামী লীগ ভাঙা কলসি। তাই আপনারা বাজছেন বেশি। জনগণকে যা দেখিয়েছেন, যা বলেছেন সব মিথ্যা। ফ্লাইওভার, মেট্রোরেল,পদ্মা সেতু দেখান তাহলে এবার বাজেটে লাখ কোটি টাকার ঋণ চাচ্ছেন কেন? জনগণকে আরামে থাকতে দিচ্ছেন না কেন? জনগণের গলায় পাড়া দিয়ে বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানির বিল বাড়াচ্ছেন কেন?’
সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনী হত্যার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘সাগর-রুনীর তদন্ত প্রতিবেদন আজ পর্যন্ত জমা দিতে পারেনি। ১০৯ বার এই তদন্ত প্রতিবেদন তৈরি করার পরেও জমা দিতে পারেনি। তারিখ শুধু পেছাচ্ছে। সাংবাদিক দম্পতির হত্যার বিচার এখন পর্যন্ত করতে পারেননি। কেন পারেননি এটা দেশের জনগণ জানে।’
খালেদা জিয়াকে সাজানো মামলায় বন্দি করে রাখা হয়েছে মন্তব্য করে বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, ‘তিনি অসুস্থ, এমনকি তার উন্নত চিকিৎসার সুযোগও দেওয়া হচ্ছে না। আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে বিদেশে রাখা হয়েছে। তারপরও তিনি এদেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায়, জনগণকে তাদের মালিকানা ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য কাজ করে যাচ্ছেন।’
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, সহঅর্থনৈতিক বিষয়ক সম্পাদক মাহমুদুর রহমান সুমন, ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন নাছির, স্বেচ্ছাসেবক দল দক্ষিণের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম নোমান, স্বেচ্ছাসেবক দলের সহ সভাপতি ডা. জাহিদুল কবির, সাবেক যুগ্ম সম্পাদক ছাদরেজ জামান, যুবদলের সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক মেহবুব মাসুম শান্ত, শাহ আলম বেপারী, নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবদলের সদস্য সচিব মশিউর রহমান রনি, বিএনপি নেতা জাকির হোসেন, ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তৌহিদুর রহমান আউয়াল, নুরুল মজুমদার মিশু, ঢাবি ছাত্রদলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মাসুদুর রহমান মাসুদ, যুগ্ম সম্পাদক রাজু আহমেদ, তিতুমীর কলেজ ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ইমাম হোসেন প্রমুখ।
শফিকুল/সালমান/