উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ঢাকার ধামরাইয়ে হামলা পাল্টা হামলার ঘটনায় দুই চেয়ারম্যান প্রার্থী পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করে থানায় মামলা করেছেন। গত শনিবার ওই দুই প্রার্থী থানায় মামলা করেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, উপজেলার রোয়াইল ইউনিয়নের চর সুঙ্গর এলাকায় আনারসের প্রার্থী আব্দুল লতিফের ক্যাম্প ভেঙে ক্যাম্পে তালা ঝুলিয়ে দেয় মোটরসাইকেল প্রতীকের প্রার্থী খালেদ মাসুদ খান লাল্টুর কর্মী-সমর্থকরা।
গত ১৪ মে মঙ্গলবার প্রথমে মোটরসাইকেলের কর্মী-সমর্থকরা আনারসের লোকজনকে মারধর করে। ওই দিনই আনারসের প্রার্থী আব্দুল লতিফ তার নির্বাচনি প্রচারের ক্যাম্প দেখতে গেলে খালেদ মাসুদ খান লাল্টুর লোকজন তাদের ওপর চড়াও হয়। দেশীয় অস্ত্র, বাঁশের লাঠি, গাছের লাঠি দিয়ে হামলা চালায়। এতে আনারসের সমর্থক ছামের আলীকে ধাওয়া করলে তিনি নিজের বাড়িতে আশ্রয় নিলে সেখানে গিয়েই হামলা চালায় মোটরসাইকেলের লোকজন। এ সময় ছামের আলীর অন্তঃসত্ত্বা বোন সানজিদা আক্তার বাধা দিলে তাকেও মারধর করে মোটরসাইকেলের কর্মীরা। সানজিদা আহত হয়ে বর্তমানে ধামরাই সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
অপরদিকে মোটরসাইকেলের প্রার্থী খালেদ মাসুদ খান লাল্টুর লোকজনও ওই দিন হামলার ঘটনায় আহত হয়েছেন। এ ঘটনার ৫ দিন পর ধামরাই থানায় উভয় পক্ষই মামলা করে।
আনারসের প্রার্থী ঢাকা উত্তরের সাবেক যুবলীগের সদস্য আব্দুল লতিফ নিজে বাদী হয়ে মাহবুবুর রহমান মনি, ইউপি সদস্য সাহাবুর রহমান, আব্দুল হালিম, আব্দুল করিমসহ মোট ১৪ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করা হয়েছে।
আব্দুল লতিফ মামলায় উল্লেখ করেছেন, ‘আমার নির্বাচনি ক্যাম্পে মোটরসাইকেলের প্রার্থী খালেদ মাসুদ খান লাল্টুর লোকজন হামলা করে আমার কর্মীদের মারধর করেছে। অন্তঃসত্ত্বা নারীকেও বাদ দেয়নি। অপরদিকে ক্যাম্প ভেঙে প্রায় দেড় লাখ টাকার ক্ষতি করেছে এবং ৭৫ লাখ টাকার আসবাবপত্র নিয়ে গেছে মোটরসাইকেলের সন্ত্রাসী বাহিনীরা।’
অপরদিকে মোটরসাইকেলের প্রার্থী ধামরাই উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক খালেদ মাসুদ খান লাল্টুর সমর্থক সাহাবুর রহমান বাদী হয়ে সেলিম খান, শুকুর আলী, মাহবুব, ইসলাম মিয়াসহ ৯ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেন।
দুই প্রার্থীর মামলাই ঘটনার ৫ দিন পর গত শনিবার ধামরাই থানায় রেকর্ড হয়েছে। উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে হামলার ঘটনায় এলাকায় সাধারণ ভোটারের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে।
হামলার ঘটনায় আনারসের প্রার্থী আব্দুল লতিফ বলেন, ‘প্রতিবাদ আমরা করতে পারি। কিন্তু আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। কোনো ঝগড়ায় যাব না। শান্তিপূর্ণ নির্বাচনকে বানচাল করার জন্য মোটরসাইকেলের প্রার্থী খালেদ মাসুদ খান লাল্টুর লোকজন এমন কাজ করেছে।’
এ বিষয়ে মোটরসাইকেলের প্রার্থী খালেদ মাসুদ খান লাল্টুর সমর্থক সাহাবুর রহমান বাদী হয়ে প্রতিপক্ষ আনারসের প্রার্থী আব্দুল লতিফের কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা করেন। তিনি বলেন, ‘আমরা একসঙ্গে বসে নির্বাচনি কাজ করছিলাম। তখন আনারসের লোকজন এসে আমাদের ওপর হামলা চালায়। এতে কয়েকজন আহতও হয়েছে।’
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই আতাউল বাবু বলেন, ‘আনারস ও মোটরসাইকেলের দুই প্রার্থীই মামলা করেছেন। ঘটনাটি তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’