![ভোটের মাঠে চা-শ্রমিক সন্তান গীতার লড়াই](uploads/2024/05/25/5.-Mowlovibazar.-1716609275.jpg)
দারিদ্র্যসহ নানা প্রতিকূলতার সঙ্গে লড়াই করে এগিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন দেখছেন পিছিয়ে থাকা চা জনগোষ্ঠীর সন্তান গীতা রানী কানু। আগামী ২৯ মে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে একমাত্র নারী প্রার্থী গীতা রানী কানু গত ১৩ মে চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে ঘোড়া প্রতীক পেয়ে এখন নির্বাচনি প্রচারে ব্যস্ত।
শুক্রবার (২৪ মে) কমলগঞ্জের পতনঊষার ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, একমাত্র নারী চেয়ারম্যান প্রার্থী গীতা রানী কানু চা-বাগান এলাকা ও গ্রামগঞ্জে হাতে মাইক নিয়ে তার পক্ষে প্রচার চালাচ্ছেন। নারী চা-শ্রমিকদের তিনি বলেছেন, ‘বিগত কয়েক বছর চা-শ্রমিকদের বিভিন্ন দাবি আদায়ে তাদের পাশে ছিলেন। এখন চা-শ্রমিকরা ভোট দিয়ে তাকে চেয়ারম্যান নির্বাচিত করলে উপজেলা পরিষদ থেকে চা-শ্রমিকদের বিভিন্নভাবে সহায়তা করতে পারবেন।’
জানা গেছে, তিনি গত চতুর্থ কমলগঞ্জ উপজেলা পরিষদে নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হন। তবে নির্বাচিত হতে পারেননি। তবে কমলগঞ্জে ব্যাপক সাড়া পড়েছিল। তারপর থেকেই চা-শ্রমিকদের বিভিন্ন দাবি আদায়ে মাঠে থেকে গীতা ব্যাপক পরিচিতি লাভ করেন। চা-শ্রমিকদের জন্য কিছু করার তাগিদ বোধ করেন। এখন তিনি বাংলাদেশ চা-শ্রমিক নারী ফোরামের আহ্বায়ক, চা জনগোষ্ঠী অধিকার আন্দোলন পরিষদের সদস্যসচিব এবং চা-শ্রমিক মহাসংগ্রাম কমিটির সাধারণ সম্পাদক।
গীতা জানান, তিনি দরিদ্র চা-শ্রমিককন্যা। তার সম্পদ ও টাকা পয়সা নেই। ভোটে প্রার্থী হওয়ার মতো সাহস অর্জন করতে অনেকটা কষ্টের পথ পাড়ি দিতে হয়েছে। উপজেলার চা-বাগান কুরমাতে তার জন্ম ও বেড়ে ওঠা। বাড়ির কাছে ইসলামপুর পিএনপি হাইস্কুলে তিনি পড়ালেখা করেছেন। বাবার মুদি দোকান ছিল, পাশাপাশি ছিলেন চা-বাগানের শ্রমিক। মা ছিলেন গৃহিণী। ছয় ভাইবোনের মধ্যে তিনি চতুর্থ।
তিনি আরও জানান, তাকে পরিচিতজন ও শুভাকাঙ্ক্ষীরা সহায়তা করে মনোনয়ন ফি, প্রচারের লিফলেট, মাইকিং খরচ দিচ্ছেন। সঙ্গে নেতা-কর্মী ও সমর্থক নিয়ে প্রচার চালানোর খরচ নেই তার। তাই একাই প্রার্থী একই প্রচার চালাচ্ছেন। উপজেলার বিভিন্ন চা-বাগান, গ্রামগঞ্জে মানুষের কাছে যান। কখনো হেঁটে, কখনো সিএনজিচালিত অটোরিকশায় এখান থেকে ওখানে ছুটে বেড়ান।
তিনি বলেন, ‘উপজেলা নির্বাচন আমাদের জন্য ভোট উৎসব না। এক কঠিন পরিবর্তনের জন্য নীরব লড়াই। আমার কপাল অনেক ভালো যে, আমি কিছু মানুষের আস্থার প্রতীক হয়ে উঠেছি।’
কমলগঞ্জ উপজেলায় এবার চেয়ারম্যান পদে তিনজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। অপর প্রার্থীরা হচ্ছেন বর্তমান উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সদস্য মো. রফিকুর রহমান এবং আওয়ামী লীগ নেতা ও কৃষিমন্ত্রী আব্দুস শহীদের ছোট ভাই মো. ইমতিয়াজ আহমেদ। কমলগঞ্জে মোট ভোটার ২ লাখ ১১ হাজার ৫৪৭ জন।