ভ্রমণের সঙ্গী যদি হয় নিজের গাড়ি, তাহলে ঘোরাঘুরিতে আর ঝক্কিঝামেলা থাকে না। বর্তমান বাজারে নতুন গাড়ির দাম একেবারে উচ্চবিত্ত ছাড়া বাকিদের নাগালের বাইরে চলে গেছে। অনেকেরই গাড়ি কেনার সাধ আছে সাধ্য নেই। সাধ ও সাধ্যের মধ্যে সমন্বয় ঘটাতে পারে সেকেন্ড হ্যান্ড বা ব্যবহৃত গাড়ি।
যাদের একদম ঝা চকচকে ব্র্যান্ডেড নতুন গাড়ি কেনার সামর্থ্য বা সুযোগ নেই, তাদের জন্য সেকেন্ড হ্যান্ড গাড়ি হতে পারে এক সুন্দর সুযোগ। সেকেন্ড হ্যান্ড গাড়ি মানে পুরোনো বা ব্যবহৃত গাড়িকে বোঝানো হয়। সেকেন্ড হ্যান্ড মানেই সব সময় খারাপ বা নেতিবাচক অর্থ প্রকাশ করে এমন নয়। সেকেন্ড হ্যান্ড মানেই নকল বা খারাপ মানের গাড়ি এমনটা না হয়ে ভালো কিছুও হতে পারে।
পুরোনো বা অল্প কিছু দিন ব্যবহৃত ভালো গাড়িগুলো পুনরায় বেচাকেনার জন্য দেশে গড়ে উঠেছে অসংখ্য প্রতিষ্ঠান। দেশ-বিদেশ থেকে সংগ্রহ করা এসব গাড়ি এমন প্রতিষ্ঠান থেকে সাধ্যের মধ্যে কেনা যায়। এসব প্রতিষ্ঠান সরাসরি ও অনলাইনে সেকেন্ড হ্যান্ড বা ব্যবহৃত গাড়ি বেচাকেনার প্রচার করে থাকে। এ ছাড়া ব্যক্তিগতভাবে অনেকের কাছে ব্যবহৃত গাড়ির সংগ্রহ থাকতে পারে। আবার গাড়ির ওয়ার্কশপেও ব্যবহৃত গাড়ি বিক্রির খোঁজ মিলবে। এসব গাড়ি সারাইয়ের দোকানগুলোতেও অল্প বিস্তর সংগ্রহ থাকতে পারে।
নতুন গাড়ির থেকে প্রায় অর্ধেক বা তারও কম দামে এসব গাড়ি পাওয়া যায়। এতে করে কিছুটা কম খরচে গাড়ি কিনতে পাওয়া যায়। ব্যবহৃত এসব গাড়ির রেজিস্ট্রেশন, বিমা বা ভিতরের সাজসজ্জা নিয়েও ভাবতে হয় না। শুধু গাড়ি কেনার আগে ট্যাক্স টোকেন ও ফিটনেস সনদসহ অন্যান্য কাগজপত্র যাচাই করে নিতে হবে। দেখেশুনে কিনতে পারলে পুরোনো গাড়ি হবে টেকসই ও দীর্ঘস্থায়ী।
সেকেন্ড হ্যান্ড গাড়ি যেহেতু আগে ব্যবহার করা হয়েছে, তাই এই গাড়ি কেনার সময় খেয়াল রাখতে হবে। কারণ অনেক সময় বিক্রেতা বেশি পুরোনো, নষ্ট বা অকেজো গাড়ি বাইরে রং করে বেচতে চায়। তাই কষ্টের টাকায় সেকেন্ড হ্যান্ড বা ব্যবহৃত গাড়ি কিনলেও যাচাইবাছাই করেই কিনতে হবে।
গাড়ির মডেল ও বার্তমান অবস্থা বিবেচনায় দর কষাকষি করবেন। বিক্রেতা যে দামে গাড়িটি বেচতে চায়, তাতেই কিনতে রাজি হবেন না। কারণ শুধু গাড়ি কিনলেই হবে না, সেই সঙ্গে গাড়ির পরবর্তী রক্ষণাবেক্ষণ খরচও হিসাব করতে হবে। তাই প্রায় নতুন গাড়ির দামের কাছাকাছি মূল্যে ব্যবহৃত গাড়ি কেনা যাবে না। এসব গাড়ির বিষয়ে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের রিভিউ, পোস্ট, ভিডিও থেকে তথ্য ও ধারণা নিতে পারেন। যাতে আপনি অন্য সবার মতামতের ওপর ভিত্তি করে বাস্তব পরিস্থিতি বুঝতে পারবেন।
যদি নিজে গাড়ি চালাতে পারেন তাহলে পছন্দের গাড়িটি টেস্ট ড্রাইভ দিয়ে দেখবেন। আর নিজে ড্রাইভিং না জানলে, গাড়ি বিষয়ে অভিজ্ঞ এমন কেউ গাড়ি চালাতে পারে তাকে দিয়ে টেস্ট ড্রাইভ দিতে পারেন। যারা গাড়ির সঠিক হালচাল বুঝতে পারবে। এতে গাড়ির কোনো ত্রুটি থাকলে তা সহজে বোঝা যাবে।
গাড়ির অতীত ইতিহাস জানতে হবে। যাতে বুঝতে পারবেন গাড়িটি চোরাই, দুর্ঘটনাকবলিত, পুলিশি কেসে জড়িত কি না। গাড়ির বিভিন্ন যন্ত্রাংশ ও এক্সেসরিজ কিছুদিন পর পাল্টাতে হবে নাকি ঠিক আছে সেসব বিষয় খুঁটে খুঁটে দেখবেন।
যেসব গাড়ির যন্ত্রাংশ বাজারে পাওয়া যায় এমন গাড়ি কিনতে হবে। এ ছাড়া প্রয়োজনীয় যন্ত্রাংশের অভাবে গাড়িটি আর ব্যবহার করতে পারবেন না। গাড়ির আইডেন্টিফিকেশন নম্বর যাচাই করার মাধ্যমে গাড়ির সার্ভিস রেকর্ড ও ম্যানুফ্যাকচারিং ডেট জানা যাবে। এ ছাড়া ওডোমিটারও যাচাই করে নিতে হবে।
এ.জে/জাহ্নবী