চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) দুই ছাত্র নিহতের ঘটনায় ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন করে তিন দিনব্যাপী সড়ক অবরোধ চলছে। ফলে সোমবার বিকাল থেকে বুধবার পর্যন্ত চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়কে সব ধরণের যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।
শিক্ষার্থীরা সড়কে অবস্থান নিয়ে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করছে। চুয়েট প্রশাসনের পক্ষ থেকে শিক্ষার্থীদের ক্ষান্ত করার চেষ্টা করা হলেও প্রশাসনকে ১০ দফা দাবি তুলে ধরেন শিক্ষার্থীরা। এ দাবি না মানা পর্যন্ত বিক্ষোভ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা।
বুধবার (২৪ এপ্রিল) সকাল ৮টা থেকে তৃতীয় দিনের মতো শিক্ষার্থীরা চুয়েট গেইটে চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়কে অবস্থান নিয়েছে।
দুই সহপাঠী নিহতের ঘটনায় শিক্ষার্থীরা নিরাপদ সড়ক, দুই শিক্ষার্থী হত্যার বিচার, কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করা এক শিক্ষকের বহিষ্কারসহ ১০দফা দাবি পেশ করেছেন। এ দাবি মেনে নেওয়ার জন্য শিক্ষার্থীরা ৭২ ঘন্টার আল্টিমেটাম দিয়েছেন। দাবি না মানা পর্যন্ত সড়ক অবরোধ অব্যাহত রাখবে শিক্ষার্থীরা।
চুয়েটের ভিসি ড. মো. রফিকুল আলম বলেন, ‘আমরা চাই দুই শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় যথাযথ বিচার হোক। কিন্তু শিক্ষার্থীরা ক্লাসে না গিয়ে বিক্ষোভ করবে তা হতে পারে না। দুই শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনার শান্তিপূর্ণ বিচার হোক আমি সেটি কামনা করি।’
চুয়েটের শিক্ষার্থী ফুয়াদ ইকবাল খবরের কাগজকে বলেন, ‘আমাদের দুই ভাই নিহত হয়েছেন। আমারা বিচারের দাবিতে ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন করেছি। অথচ আমাদের ভিসি চাইছেন আমরা আন্দোলন না করে পরীক্ষা দিতে যাই। একজন শিক্ষক এ নিয়ে বাজে মন্তব্য করেছেন ফলে আমরা সুমন দে নামের ওই শিক্ষকেরও বহিষ্কার দাবি করছি।’
শিক্ষার্থী তালহা জুবাইয়ের বলেন, ‘আমরা ৭২ ঘন্টার আল্টিমেটাম দিয়েছি। ৭২ ঘটনার মধ্যে আমাদের দাবি পুরণ না হলে আন্দোলন দীর্ঘ হবে। আমরা চাই এ ধরণের ঘটনার যাতে পুনরাবৃত্তি না ঘটে। এর আগেও আমাদের প্রচুর শিক্ষার্থী আহত-নিহত হয়েছেন। আমরা আর কোনো শিক্ষার্থীকে হারাতে চাই না। ফলে আমরা ১০ দফা দাবি জানিয়েছি প্রশাসনকে। আমাদের দাবি মানা হোক। সকাল ৮টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সড়ক অবরোধ করা আছে।’
এর আগে গত সোমবার (২২ এপ্রিল) বিকেল ৩টার দিকে চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়কের সেলিমা কাদের কলেজ গেট এলাকায় বাস ও মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে শান্ত সাহা ও তৌফিক হোসেন নামে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) দুই ছাত্র নিহত হন।
নিহত শান্ত সাহা পুরকৌশল বিভাগের ২০ ব্যাচের শিক্ষার্থী (আইডি-২০০১১০০)। তিনি নরসিংদীর কাজল সাহার ছেলে। তৌফিক হোসেন একই বিভাগের ’২১ ব্যাচের শিক্ষার্থী (আইডি-২১০১০০৬)। তিনি নোয়াখালী সুধারামের নিউ কলেজ রোডের মোহাম্মদ দেলোয়ারের ছেলে।
আবদুস সাত্তার/ইসরাত চৈতী/অমিয়/
< চুয়েটের ২ ছাত্র নিহতের ঘটনায় ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ