ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) সমাজকল্যাণ বিভাগের সভাপতি সহকারী অধ্যাপক শ্যামসুন্দর সরকারের নেতৃত্বে ‘অসুন্দর ব্যবস্থাপনায়’ চলছে বিভাগটির কার্যক্রম। সেশনজট, শিক্ষকদের স্বেচ্ছাচারিতাসহ নানামুখী সমস্যা ও অব্যবস্থাপনার অভিযোগ করেছে বিভাগটির শিক্ষার্থীরা। গত মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. এ কে এম মতিনুর রহমানের সঙ্গে মতবিনিময়কালে বিভাগটির শিক্ষার্থীরা এসব অভিযোগ করেন।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ক্যালেন্ডারে ছুটি না থাকলেও শিক্ষার্থীদের ছুটিতে থাকতে হয়। পুরো সেমিস্টারে একটিও ক্লাস না হওয়ার অভিযোগ রয়েছে। আবার কোনো কোনো সময় একটি ক্লাস নিলেও ৪-৫টি উপস্থিতি দেখানো হয়। এ ছাড়া রাত ১২টার পরও অনলাইনে ক্লাস নেওয়ার অভিযোগ শিক্ষকদের বিরুদ্ধে। রাত ১২টার পর কোনো শিক্ষার্থী ক্লাস না করতে অসম্মতি জানালে পড়তে হয় শিক্ষকদের রোষানলে।
শিক্ষার্থীরা আরও অভিযোগ করে বলেন, সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার পর ইনকোর্স পরীক্ষা নেওয়া হয়। যথাযথ ইনকোর্স না নেওয়ার ফলে শিক্ষক তার ইচ্ছা অনুসারে নম্বর দেন। কোনোরকম পরীক্ষা শেষ হলেও ফল প্রকাশ নিয়ে দেখা দেয় অনিশ্চয়তা।
২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের নবীন এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘দীর্ঘ ৮ মাস থেকে আমরা এই বিভাগে রয়েছি। এখন পর্যন্ত আমাদের মাত্র ৮টি ক্লাস নেওয়া হয়েছে। যেখানে একই সেশনের অন্য বিভাগগুলোর সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।’
বিভাগটির ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা জানান, দীর্ঘ ৬ বছর পরও স্নাতক শেষ করতে পারেননি তারা। সমস্যার কথা শিক্ষকদের জানালেও শিক্ষক সংকটকে দায়ী করছেন তারা। কিন্তু শিক্ষক নিয়োগের ব্যাপারেও নেই বিভাগের চেয়ারম্যান সহকারী অধ্যাপক শ্যামসুন্দরের আগ্রহ। এ ছাড়াও যথাসময়ে দেওয়া হয় না পরীক্ষার সময়সূচি। আবার কোনো কোনো সময় পরীক্ষার আগের রাতে পরীক্ষা বাতিল করা হয়। শ্রেণিকক্ষে নেই কোনো সাউন্ড সিস্টেম। এর ফলে পেছনে বসা শিক্ষার্থীরা পড়েন ভোগান্তিতে।
এ বিষয়ে সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. এ কে এম মতিনুর রহমান বলেন, ‘প্রত্যেক বিভাগের সংকট নিরসনের লক্ষ্যে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময়ের পরিকল্পনা করেছি। এর ধারাবাহিকতায় সমাজকল্যাণ বিভাগের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময়ে বসেছিলাম। সেখানে তারা একাধিক গুরুতর অভিযোগ করেছেন, যা অত্যন্ত দুঃখজনক। আমি এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করে নিরসনের জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করব।’
বিভাগের চেয়ারম্যান সহকারী অধ্যাপক শ্যামসুন্দর সরকার বলেন, ‘আমার বিভাগে চরম শিক্ষক সংকট। মাত্র দুজন শিক্ষক নিয়ে একটা বিভাগ চলছে। আরেকজন মাতৃত্বকালীন ছুটিতে রয়েছেন। তবে আমরা আমাদের মধ্যে যথেষ্ট আন্তরিকভাবে চেষ্টা চালাচ্ছি। আমরা মাঝে অনলাইনে চার-পাঁচটা ক্লাস নিয়েছি। তারা না জেনে বলছে- একটাও ক্লাস হয়নি।’