বাসের ধাক্কায় চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) দুই ছাত্র নিহতের ঘটনায় ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন করে বিক্ষোভ করেছে শিক্ষার্থীরা। দুই শিক্ষার্থী সড়কে নিহতের ঘটনায় উত্তপ্ত হয়েছে চুয়েট ক্যাম্পাস। শিক্ষার্থীরা ১০দফা দাবি জানিয়েছেন।
মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) সকাল ৮টা থেকে চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়ক অবরোধ করে শিক্ষার্থীরা।
অন্যদিকে নিহত দুই শিক্ষার্থীর পরিবারকে ৫ লাখ টাকা করে সহায়তার ঘোষণা দিয়েছে জেলা প্রশাসন।
জানা গেছে, চট্টগ্রাম-কাপ্তাই মহাসড়ক বন্ধ করে বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থীরা। এতে সকাল ৮টা থেকে যান চলাচল বন্ধ থাকে।
শিক্ষার্থীরা নিরাপদ সড়ক, দুই শিক্ষার্থী হত্যার বিচার, কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করা এক শিক্ষকের বহিষ্কারসহ ১০দফা দাবি জানান।
এর আগে সোমবার রাতেও বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের সড়কে একটি বাসে আগুন দিয়ে বিক্ষোভ করে। শিক্ষার্থীরা ১০ দফা বাস্তবায়নে ৭২ ঘন্টার আল্টিমেটাম দেয়।
সূত্র জানায়, মঙ্গলবার সকাল থেকে শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা অংশ না নিয়ে বিক্ষোভে নামে। এতে চুয়েট গেটে চট্টগ্রাম-কাপ্তাই মহাসড়ক বন্ধ করে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করে শিক্ষার্থীরা। ফলে মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এ সময় প্লেকার্ডে লিখে শিক্ষার্থীরা তাদের ১০ দফা তুলে ধরেন।
পরে চুয়েটের ভিসি গিয়ে শিক্ষার্থীদের শান্ত করে পরীক্ষায় ফেরানো চেষ্টা চালায় বলে জানা গেছে।
এ প্রসঙ্গে চুয়েটের ভিসি ড. মো. রফিকুল আলম বলেন, ‘আমরা চাই দুই শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় যথাযত বিচার হোক। কিন্তু শিক্ষার্থীরা ক্লাসে না গিয়ে বিক্ষোভ করবে তা হতে পারে না। দুই শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনার শান্তিপূর্ণ বিচার হোক আমি সেটি কামনা করি।’
চুয়েটের শিক্ষার্থী ফুয়াদ ইকবাল খবরের কাগজকে বলেন, ‘আমাদের দুই ভাই নিহত হয়েছেন। আমারা বিচারের দাবিতে ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন করেছি। অথচ আমাদের ভিসি মহোদয় চাইছেন আমরা আন্দোলন না করে পরীক্ষা দিতে যাই। একজন শিক্ষক এ নিয়ে বাজে মন্তব্য করেছেন ফলে আমরা সুমন দে নামের ওই শিক্ষকেরও বহিষ্কার দাবি করছি।’
শিক্ষার্থী তালহা জুবাইয়ের বলেন, ‘আমরা ৭২ ঘন্টার আল্টিমেটাম দিয়েছি। ৭২ ঘটনার মধ্যে আমাদের দাবি পুরণ না হলে আন্দোলন দীর্ঘ হবে। আমরা চাই এ ধরণের ঘটনার যাতে পুনরাবৃত্তি না ঘটে। এর আগেও আমাদের প্রচুর শিক্ষার্থী আহত-নিহত হয়েছেন। আমরা আর কোনো শিক্ষার্থীকে হারাতে চাই না। ফলে আমরা ১০ দফা দাবি জানিয়েছি প্রশাসনকে। আমাদের দাবি মানা হোক। সকাল ৮টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সড়ক অবরোধ করা আছে।’
এর আগে গত সোমবার (২২ এপ্রিল) বিকেল ৩টার দিকে চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়কের সেলিমা কাদের কলেজ গেট এলাকায় বাস ও মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে শান্ত সাহা ও তৌফিক হোসেন নামে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) দুই ছাত্র নিহত হন।
নিহত শান্ত সাহা পুরকৌশল বিভাগের ২০ ব্যাচের শিক্ষার্থী (আইডি-২০০১১০০)। তিনি নরসিংদীর কাজল সাহার ছেলে। তৌফিক হোসেন একই বিভাগের ’২১ ব্যাচের শিক্ষার্থী (আইডি-২১০১০০৬)। তিনি নোয়াখালী সুধারামের নিউ কলেজ রোডের মোহাম্মদ দেলোয়ারের ছেলে।
আবদুস সাত্তার/অমিয়/