ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানি ও মানসিক নিপীড়নের অভিযোগের তদন্তে প্রাথমিক সত্যতা পেয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট গঠিত ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটি। তাই তাদের একাডেমিক ও প্রশাসনিক কাজ থেকে অব্যাহতি দিয়েছে সিন্ডিকেট।
মঙ্গলবার (৭ মে) রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম সিন্ডিকেট বৈঠকে তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়।
সেই সঙ্গে অধিকতর তদন্তের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন নিপীড়ন প্রতিরোধ সেলে পাঠানো হয়েছে।
তদন্ত প্রতিবেদনে বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ড. নাদির জুনাইদ ও ফলিত গণিত বিভাগের শিক্ষক মোহাম্মদ ফেরদৌসের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানি ও মানসিক নিপীড়নের অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা মিলেছে- উল্লেখ করে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়।
সেই সঙ্গে যৌন নিপীড়ন সেলের অধিকতর তদন্ত চলাকালীন দুই অধ্যাপককে ওই অব্যাহতির সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। বিষয়টি একাধিক সিন্ডিকেট সদস্য নিশ্চিত করেছেন।
গত ৭ ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের স্নাতকোত্তর (২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষ) ১২তম ব্যাচের স্নাতকোত্তর চূড়ান্ত পরীক্ষার সমন্বিত কোর্সে (লিখিত ও মৌখিক) কম নম্বর দিয়ে ফলাফল ধস নামানোর অভিযোগ তুলে অধ্যাপক নাদির জুনাইদের বিরুদ্ধে ২৮ জন শিক্ষার্থী উপাচার্যের কাছে লিখিত অভিযোগ দেন। অভিযোগে ওই শিক্ষার্থীরা উল্লেখ করেন ব্যক্তিগত আক্রোশ থেকে এবং উদ্দেশ্যমূলকভাবে তাদের নম্বর কম দিয়েছেন।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন নাদির জুনাইদ।
তারই তিন দিনের মাথায় যৌন হয়রানির অভিযোগ এনে বিভাগের এক শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের কাছে অভিযোগ দেন। সঙ্গে কিছু অডিও রেকর্ড ও মেসেজের স্ক্রিনশটও জমা দেন তিনি। এ ছাড়া রাজধানীর একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীও তার বিরুদ্ধে ঢাবিতে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
পরে গত ১২ ফেব্রুয়ারি অভিযুক্ত এই অধ্যাপককে তিন মাসের বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
যদিও অধ্যাপক নাদির জুনাইদ এসব অভিযোগ অস্বীকার করে এর পেছনে অন্য কিছু দেখছেন।
বিভাগের পরবর্তী চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পাওয়ার আগে ব্যক্তিগত আক্রমণের শিকার হচ্ছেন বলে দাবি করেন তিনি।
অন্যদিকে ফলিত গণিত বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ফেরদৌস জিন প্রকৌশল ও জীবপ্রযুক্তি বিভাগে একটি কোর্সে খণ্ডকালীন শিক্ষক। একই বিভাগের এক শিক্ষার্থীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে।
আরিফ জাওয়াদ/সাদিয়া নাহার/অমিয়/